![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
শেষ বিকেলের ছাদে গোধূলির আলোয় বই পড়ছিলো শাহানা। আরেকটা দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা নামলো আকাশে। বইয়ের মলাটে এলোকেশী কোন মেয়ের ছবি সন্ধ্যার আলোয় ঝাপসা হয়ে আসছে।ঝাপসা চোখে আকাশে তাকালো সে।অল্প কয়েক পৃষ্ঠার জন্যে বই্টা শেষ করা গেলোনা। এক দীর্ঘশ্বাসে রাত নামাতে পারলে ভালোই হতো। ছাদ থেকে নামবে কিনা ভাবতে ভাবতে রেলিং ছাড়া ছাদের দক্ষিনে তাকালো সে। রেলিং এর শেষ প্রান্তে দাঁড়ানো তার ছয় বছর বয়সের ছেলে নীরব। যেকোন সময় পা ফসকে পড়ে যেতে পারে। সন্ধ্যার আলোয় অশরীরী লাগছে ছেলেকে। ডাক দিতে নিয়েও থেমে গেলো শাহানা।ছাদের প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকতে সম্ভবত রোমাঞ্চকর লাগছে তার।
রাতে খাবার টেবিলে বসে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার কথা বেশ আয়োজন করে বর্ননা করলো নীরব। বেশী ভাড়া চাওয়ার জন্যে এক রিকশাআলাকে মেরে মোটামোটি রক্তাক্ত করে ফেলসে এলাকার কেউ একজন। বিপর্যস্ত রিকশাআলা এলাকাবাসীর সাহায্যে মোটামোটি সুস্থ। পুত্রের ব্যবহারে মোটামোটি বিরক্ত শাহানা। সে ভেবেছিলো ছেলে আইনস্টাইন গোত্রে নাম লেখাতে যাচ্ছে। ঘটনা সম্পূর্ন বিপরীত। ছেলে এই বয়েসেই এলাকার গরম খবর নিয়ে চিন্তিত। বিরক্তমুখে খাবার টেবিল ছাড়লো শাহানা।
গোলাগোলির শব্দে বইয়ের শেষ পৃষ্ঠা ছেড়ে উঠতে বাধ্য হলো শাহানা। কোন এক আজগুবি লিলিপুটের দেশে বেশ মারামারি করতে ব্যস্ত নীরব। শাহানার ধারনা ছিলো কম্পিউটার নিয়ে রাতারাতি দুই একটা প্রোগ্রামিং লাংগুয়েজ শিখে ফেলবে সে। ঘটনা বিপরীত। মিশন কমপ্লিট করে দাঁত বের করে মায়ের দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো বিজয়ী পুত্র। গেমের নাম জিজ্ঞেস করতে লিলিপুটের দেশের সব কার্যক্রম বুঝিয়ে দিতে বসলো নীরব। অর্ধেক বুঝে বিরক্তমুখে উঠে গেলো শাহানা। গোলাগোলির শব্দে তখনো নীরবের রুমের বাতাস ভারী।
সারাদিনের কাজ শেষে বিরক্তমুখে বই শেষ করতে বসলো শাহানা। শেষ দুই পৃষ্ঠা বাকি। গল্প শেষ হয়ে যাবে এই দুঃখে বইটা শেষ করবে কিনা ভাবতে ভাবতে ঘোরের বশে শেষ দুই পৃষ্ঠা শেষ করলো শাহানা। গল্প শেষ। গল্পটা কিছুক্ষন মাথায় নিয়ে এক কাপ চা খাওয়ার ইচ্ছা ছিলো তার। চা এর বদলে ঠান্ডা লেবুর শরবত খেয়ে মাথায় পানি ঢাললো শাহানা। গল্পের শেষটুকু মাথা থেকে বের হচ্ছেনা। কিছু গল্প এমন হয় কেন ?
টবে ঘেরা বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করতে করতে ছোটবেলার মতো ঘুমপরী ডেকে আনা যায় কিনা ভাবতে ভাবতে রাত দুইটা বাজালো শাহানা। মাঝরাতের নিঃশব্দ শহর আজকে নিঃসঙ্গ আকার ধারন করেছে। দুই চারটা রিকশাআলাও দেখা যাচ্ছেনা। ছেলের রুমের গোলাগোলির শব্দ বন্ধ হয়েছে অনেক আগে। অন্ধকার ঘরে পা টিপে টিপে ছেলের রুমে ঢুকলো শাহানা। ডিম লাইটের আবছা আলোয় নিষ্পাপ লাগছে ঘুমন্ত ছেলেকে।
দরজায় দাঁড়িয়ে ঘুমন্ত ছেলের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো শাহানা। সে কি ঘুমিয়ে গিয়ে আইনস্টাইনের মতো কোন চিন্তা ভাবনা করছে?
©somewhere in net ltd.
১|
০৯ ই জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫১
জাহাঙ্গীর.আলম বলেছেন:
চমৎকার উপস্থাপন ৷ বানানের দিকে লক্ষ্য রাখবেন আশা করি ৷
ভাল লাগলো ৷
চর্চা অব্যাহত থাকুক ৷