নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেহ নই।

শরীফ আজাদ

আমি সব, আমি সবাই, আমিই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড। আমি নীরবতা, আমিই কোলাহল। আমি অনুভূতিহীন, আমিই সকল অনুভূতি! আমিই তুমি।

শরীফ আজাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক রিভিওঃ সিদ্ধার্থ, হারমান হেস

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৩৫



সিদ্ধার্থ। গৌতম বুদ্ধের অপর নাম। যার অর্থ অস্তিত্বের আসল অর্থ খুঁজে পাওয়া। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নামও সিদ্ধার্থ, কিন্তু তিনি বুদ্ধ নন। বুদ্ধকে ছাড়িয়ে সম্পূর্ণ নতুন ও অন্য এক বুদ্ধকে সৃষ্টি করা হয়েছে এই উপন্যাসে। জ্ঞান পিপাসু সংসার ত্যাগী সিদ্ধার্থ সর্বদা ছুটে বেড়ায়।উদ্দেশ্য নিজেকে খুঁজে পাওয়া। জাগতিক সকল দুঃখ কষ্টকে জয় করা। সিদ্ধি লাভ। নির্বাণ লাভ। উদ্দেশ্য পূরণে শরণাপন্ন হয় গুরুর। উপদেশ নেয়, শিক্ষা নেয়। বরন করে সন্ন্যাস জীবন। দেখা করে গৌতম বুদ্ধের সাথে। মুগ্ধ হয় বুদ্ধের বুদ্ধত্বে। কিন্তু কোন কিছুতেই তাঁর মন ভঁরে না, তৃষ্ণা মেটে না। তৃপ্ত হয়না তাঁর হৃদয়। উপলব্ধি করে গুরু দিয়ে তাঁর কাজ হবেনা। উপদেশের কোন মূল্য নেই, যা স্রেফ কথা ছাড়া আর কিছুই না। সিদ্ধান্ত নেয় নিজেই হবে নিজের গুরু। শুরু হয় নতুন যাত্রা। আগের সিদ্ধার্থ মরে গিয়ে জন্ম হয় নতুন এক সিদ্ধার্থের। শিশুর চক্ষে নতুন করে দেখা শুরু করে নিজের চারিপাশ, যে পারিপার্শ্বিকতাকে সম্পূর্ণ অবহেলা করত আগের সিদ্ধার্থ। এভাবেই এগুতে থাকে সিদ্ধার্থের আধ্যাত্মিক যাত্রা। কিছুদিন নারী, সংসার,অর্থ –বিত্তে ডুবে থাকে। সব ছেঁড়ে দিয়ে অবশেষে থিতু হয় এক নদীতীরে। নদীর কাছেই শিখে, নদীর সাথেই কথা বলে। এখানেই খুঁজে পায় তৃষ্ণা মেটানোর উপায়।

সিদ্ধার্থ উপলব্ধি করে জ্ঞানের প্রকৃত স্বরূপ জানাটাই জীবনের লক্ষ্য। যার জন্য মানুষ ঘুরে ফেরে পথে পথে। খুঁজে ফেরে সারাটি জীবন। খুঁজেই মরে। খোঁজার শেষ হয় না, হবেও না হয়তো কোনদিন। কিন্তু কেন? কারণটা হল আগেই “লক্ষস্থল” নির্ধারণ করে ফেলা। নির্ধারিত লক্ষ মানুষকে অন্ধ করে দেয়। মানুষ নির্দিষ্ট কোন কিছুকে খুঁজতে বেরোলে শুধু তা দেখার জন্যই উৎসুক হয়ে থাকে, অন্য কিছু দেখতে চায়না। ফলে চোখের নিচে বিদ্যমান জিনিসও দেখতে পায়না। তবে কি খোঁজার কোন অর্থ নেই? খোঁজার অর্থঃ মুক্ত হওয়া, উন্মুক্ত অন্তরে সবকিছু গ্রহণ করা, নির্দিষ্ট লক্ষ না রাখা। যে জ্ঞানের স্বরূপ জানার জন্য এত ছোটাছুটি সে “জ্ঞান” আসলে কি? জ্ঞান (Wisdom) এমনই এক জিনিস যা দিয়ে বিস্ময় সৃষ্টি করা যায় কিন্তু বিতরণ করা যায়না। কাউকে শিখানো যায়না। যা বিতরণ করা যায় তা হল বিদ্যা (Knowledge)। জ্ঞান অর্জিত হয় সাধনায়, তা ভাষায় প্রকাশ করলেই তাঁর সমগ্রতা, পূর্ণতা ও ঐক্য ক্ষুণ্ণ হয়।

সময়। এক অদ্ভুত ভ্রান্ত জাল! যাকে সত্য মনে করে মানুষ ভুল করে। সময়ের অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যৎ রূপ মানুষকে অস্থির করে রাখে। ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তার সাথে মানুষ বর্তমানের তুলনা করে। সবাই আশায় থাকে “পাইবে, একদিন ইহাকে পাইবে”। এই ‘একদিন’ শুধুই মায়া। সময় আসলে অখণ্ড। প্রতিটি মুহূর্তই অনন্তকাল। প্রতি মুহূর্তেই জগত পূর্ণ। প্রতিটি শিশু, প্রতিটি বৃদ্ধ, প্রতিটি বস্তুকণার ভিতরেই অতীত- বর্তমান- ভবিষ্যৎ, পাপ ও পুণ্য, ভালো ও মন্দ, জ্ঞান ও নির্বুদ্ধিতা বিদ্যমান। তাই ভালবাসতে হবে সব কিছুকেই। প্রতিটি প্রাণী ও বস্তুকে ভালোবেসে, শ্রদ্ধা করে এই সৃষ্টির সাথে এক হয়ে গেলে তবেই পাওয়া যাবে প্রকৃত পথের সন্ধান।

উপন্যাসটি হারমান হেসের নিজস্ব দর্শনের প্রতিফলন। পড়ে শেষ করার পর এক ঘোরলাগা অনুভূতি কাজ করে। এই বই শেষ করেই প্রকৃত পথের সন্ধান পাওয়া যাবে বিষয়টা হয়তো এমন নয়। তবে পাওয়া যাবে কিছু একটা। চিন্তায় যোগ হবে নতুন মাত্রা। জ্ঞান পিপাসু সকল পথিকের জন্য বইটি সুপাঠ্য।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩

অগ্নি কল্লোল বলেছেন: +

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬

শরীফ আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

জুন বলেছেন: তাই ভালবাসতে হবে সব কিছুকেই। প্রতিটি প্রাণী ও বস্তুকে ভালোবেসে, শ্রদ্ধা করে এই সৃষ্টির সাথে এক হয়ে গেলে তবেই পাওয়া যাবে প্রকৃত পথের সন্ধান।
কিন্ত এ বানী কি আরাকানের রাখাইন বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আচরনে প্রকাশ পায় ! ?
মনে হয়না তারা বুদ্ধের শান্তির বানী বুকে ধারন করে না ।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:০৬

শরীফ আজাদ বলেছেন: আরাকানের রাখাইনরা এখানে অপ্রাসঙ্গিক।

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩১

দরবেশমুসাফির বলেছেন: অসাধারন বই। আসলেই অসাধারন। এটা পড়ার অনুভুতি শুধু ভাষা ব্যবহার করে বোঝান সম্ভব নয়।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:২৩

শরীফ আজাদ বলেছেন: ঠিকি বলেছেন :)

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:০০

সুমন কর বলেছেন: জ্ঞান অর্জিত হয় সাধনায়, তা ভাষায় প্রকাশ করলেই তাঁর সমগ্রতা, পূর্ণতা ও ঐক্য ক্ষুণ্ণ হয়। -- পুরো রিভিউটা চমৎকার হয়েছে।

বইটি পড়া হয়নি। পোস্টে +।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮

শরীফ আজাদ বলেছেন: পড়ে ফেলুন। ধন্যবাদ :)

৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৮

নিয়ার বলেছেন: পড়া হয়নি। পড়তে হবে।

ধন্যবাদ আপনাকে।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩১

শরীফ আজাদ বলেছেন: পড়ে ফেলুন। আপনাকেও ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৩

মারুফ তারেক বলেছেন: আপনার লিখাটি ভাল ছিল।
ধন্যবাদ

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭

শরীফ আজাদ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ :)

৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২০

ঘুম হ্যাপি বলেছেন: অসাধারন এবং পুরো রিভিউটা চমৎকার হয়েছে।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

শরীফ আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩২

শ্রাবণধারা বলেছেন: অনেক দিন আগে বাংলায় বইটা পড়েছিলাম । কার অনুবাদ আজ আর মনে নেই, তবে খুব সম্ভব বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র পকাশনীর বই ছিল । বেশ ছোট একটা বই - কিন্তু প্রত্যেকটা লাইন ভাবায় । যাকে বলে ঠাস বুননের দার্শনিক চিন্তার বই, উপন্যাসের কাঠামোয় লেখা ।

আপনার রিভিউটা চমৎকার হয়েছে । শুভকামনা ।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩৮

শরীফ আজাদ বলেছেন: আমি বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রেরটাই পড়েছি। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য :)

৯| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১১

আহসানের ব্লগ বলেছেন: পড়তে হবে । দেখি পাই কিনা ।

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০৯

শরীফ আজাদ বলেছেন: পড়ে ফেলুন।

১০| ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:০৮

আহসানের ব্লগ বলেছেন: দাম কেমন ভাইয়া ?

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:২৫

শরীফ আজাদ বলেছেন: খুব বেশী হওয়ার কথা না। পাতলা বই। আমি ঠিক বলতে পারছিনা কারন আমি নরম কপি পড়েছি নেট থেকে নামিয়ে।

১১| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৬

তাহসিনুল ইসলাম বলেছেন: ভালো পোস্ট :)

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৩

শরীফ আজাদ বলেছেন: ধন্যবাদ :)

১২| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪৪

মিশু মিলন বলেছেন: আমার অসম্ভব প্রিয় একটি বই। ধন্যবাদ রিভিউ করার জন্য।

@আহসান, কিনলে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রেরটা কিনতে পারেন, ভাল অনুবাদ। আমি অনেকদিন অাগে কিনেছি, গায়ের মূল্য ছিল পঁয়ষট্টি টাকা।

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:৫৯

শরীফ আজাদ বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ।

১৩| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১১:৫৭

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: আমি যখন বইটা হাতে পেয়েছিলাম তখন বোঝার মতো ম্যাচিউরিটি ছিল না। একদম বোগাস লেগেছিল। বিস্ময় জেগেছিল মনে, এমন বই কেন এতো নন্দিত!
বইটা নেই এখন, বোধহয় সংগ্রহ করতে পারবো।
আপনার রিভিউটা সুন্দর।

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

শরীফ আজাদ বলেছেন: আবার পড়ে দেখুন। চিন্তার ধাঁরা বদলে যেতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.