![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুই জানি না নিজের সম্পর্কে...। যখনই জানতে চেয়েছি তখনই হোঁচট খেয়েছি...।
সন্ধ্যা থেকে অস্থির অস্থির লাগছিল। একজনের সাথে খুব কথা বলতে ইচ্ছে করছিল। তাকে ফোন দিলাম। ইচ্ছে ছিল আমার অস্থিরতার কিছুটা তার মাঝেও ছড়িয়ে দেয়ার। কিন্তু সে ফোন রিসিভ করেনি। অস্থিরতা আরো বেড়ে গেলো। টিভি ছেড়ে বসলাম। দেখি অস্থিরতা কমে কিনা ! কমেনি বরং বেড়েছে। টিভি বন্ধ করে রুমে এসে দরজা লক করে বসলাম। লাইট বন্ধ করে ঘর অন্ধকার করে ঝিম ধরে বসে আছি। ঝিম ধরে বসে থাকতেও বিরক্ত লাগছিল। উঠে এসে ইজি চেয়ারে বসলাম। চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষণ সামনে পিছনে ঝুললাম।মনের মধ্যে তার সাথে কথা বলার ইচ্ছাটা তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল। মনের একটা অংশ বলছে- এখনি তাকে আবার ফোন করো। ফোন করে কথা বলে এই অস্থিরতা দূর করো। আরেকটা অংশ বলছে- 'ফোন করার দরকার নেই। যে কারণে মন অস্থির হয়েছে সে কারণটা যদি পূর্ণ হয়ে যায় তাহলে তোমার মন স্থির হবে। আবার অস্থির হলে ফোন দিয়ে আবার স্থির করবে। এতে তুমি অভ্যস্থ হয়ে যাবে। তোমার মনও একটা ছন্দে অভ্যস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু যখন এই ছন্দের পতন ঘটবে তখনকার অস্থিরতা সামাল দেয়ার ক্ষমতা তোমার থাকবেনা। তাই এখন থেকেই তুমি তোমার মনকে এই ছন্দে অভ্যস্থ হতে দিয়োনা। তাহলে যখন এই ছন্দের পতন ঘটবে তখন তুমি এই পতনটাকে খুব ভালোভাবেই সামাল দিতে পারবে। সুতরাং ফোন দিয়োনা। কিছুক্ষণ তার সাথে কথা না বলে থাকো। অস্থিরতা এসেছে, অস্থিরতা এম্নিতেই দূর হয়ে যাবে'। চেয়ারে বসে ঝুলছি আর ভাবছি কি করলে অস্থিরতা আরো বেড়ে যাবে। বিষে বিষে বিষক্ষয় এর মতো অস্থিরতা অস্থিরতায় অস্থিরতাক্ষয়।কোন একটা বই খুলে নিয়ে বসতে পারি। অস্থির অবস্থায় সবচেয়ে কঠিন কাজ হচ্ছে মনোযোগ দিয়ে কোন বই পড়া। হুমায়ূন আহমেদের 'মধ্যাহ্ন' খুলে নিয়ে বসলাম। ধীরে ধীরে বইয়ের মধ্যে ঢুকে গেলাম। ভিতরের অস্থিরতা অনেকটাই দূর হয়ে গেলো। মাঝে মাঝে মনের এক কোণে জেগে উঠছে- তার সাথে আজ সারাদিন কথা হয়নি। সাথে সাথেই অন্যকোণে জেগে উঠছে -তাতে কি হয়েছে! কিছুক্ষণ পর কথা হবে। আজ না হলেও কাল হবে। এখন আর ভিতরে সেই অস্থিরতাটা নেই। অস্থিরতার জায়গাটা এক ধরণের আনন্দ এসে পূর্ণ করে দিয়েছে। তার সাথে কথা বলার জন্য অপেক্ষা করছি। অস্থির অপেক্ষা না, আনন্দময় অপেক্ষা। এই অপেক্ষার প্রহরটা যদি দীর্ঘ হয় তাতেও সমস্যা নেই। বার বার একটা গান মনে পড়ছে- এত ---- এত যারে চাই, মনে হয় না তো সে যে কাছে নাই। যদিও সে আমার থেকে চার পাঁচশ মাইল দূরে কিন্তু মনে হচ্ছে সে আমার পাশেই বসে আছে। তার নিঃশ্বাসের গরম বাতাস আমার শরীরে এসে লাগছে। ইচ্ছে করলেই হাত দিয়ে তাকে ছুঁয়ে দেখতে পারবো, মন খুলে তার সাথে কথা বলতে পারবো। একবারই তাকে ছুঁয়ে দেখেছিলাম। কিছুসময়ের জন্য তার হাতটি ধরে ছিলাম। মনে মনে ভাবছিলাম- সময়ের নিয়ন্ত্রণ যদি আমার হাতে থাকতো তাহলে সময়টাকে এখানেই থামিয়ে দিতাম। অনন্তকাল তার হাত ধরে বসে থাকতাম। এই সময়টুকো ছিল আমার জীবনে পার করা শ্রেষ্ঠ সময়গুলোর একটি। মনের মধ্যে ঝড় বয়ে যাচ্ছিল। উথাল পাতাল ঝড়। তার মাঝেও একই ধরণের অনুভূতি হয়েছিলো কিনা জানিনা। জানার উপায়ও নেই। মানুষকে আল্লাহ অনেক ক্ষমতা দিয়েছেন। কিন্তু মন বোঝার ক্ষমতা দেননি। দিলে হয়তো ভালোই হতো আবার খারাপও হতো।
কখন তার সাথে কথা হবে জানিনা। অপেক্ষায় রইলাম সেই প্রতীক্ষিত মূহুর্তটির............।।
(লেখার শিরোনাম দিয়েছি 'কিছুটা অস্থিরতা তোমার জন্য'। কিন্তু যার জন্য এই অস্থিরতা তাকে কখনোই তুমি করে বলা হবে না। "আপনি"তেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। আসলে আমার বলা উচিত ছিল- কিছুটা অস্থিরতা আপনার জন্য। কিন্তু 'আপনার' শব্দটি এখানে বেমানান।তাই কি আর করা! দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলা ছাড়া কিছুই করার নেই। সামনাসামনি যেহেতু কখনোই তুমি করে বলা হবেনা তাই এখানেই বলি। দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো হলেও কথা ছিল। কিন্তু এখানে দুধের স্বাদ ভাতের মাড়ে মেটানোর মত অবস্থা। সবই আমার কপাল।)
©somewhere in net ltd.