![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আল্লাহকে পেতে মাধ্যম গ্রহণ
মুল: শাইখুল ইসলাম আহমাদ ইবনে আব্দুল হালীম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)
অনুবাদ: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
ভূমিকা
{আলোচ্য ভূমিকাটি ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় মদীনা’ কর্তৃক উপস্থাপিত}
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করছি, তাঁর কাছেই সাহায্য চাচ্ছি। আর তার কাছেই ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমাদের মন্দ কৃতকর্ম, এবং আত্মার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আল্লাহর দরবারে আশ্রয় নিচ্ছি, আল্লাহ তা'আলা যাকে হিদায়াত করেন তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়াত করার কেউ নেই, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোন মাবুদ নেই, তার কোন শরীক নেই, আর ও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।
স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম মানার ব্যাপারটা অত্যন্ত বিপজ্জনক বিষয়। পরিতাপের বিষয় যে, অনেক মুসলমানই এ সম্পর্কে পরিষ্কার কোন ধারণা রাখেনা। ফলে আমরা আল্লাহর সাহায্য সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছি, যে সাহায্য করার কথা তিনি কুরআনে তাঁর কাছে আশ্রয় কামনা এবং তাঁর শরীয়তের অনুসরণ করার শর্তে ঘোষণা করেছেন।
আল্লাহ বলেন : (আর মু'মিনদের সাহায্য করা আমার দায়িত্ব)। {সূরা আর-রূম: ৪৭} (যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর তবে তিনিও তোমাদের সাহায্য করবেন, এবং তোমাদের পদযুগলে স্থিতি দিবেন)। {সূরা মুহাম্মাদ: ৭}
(আল্লাহর জন্যই যাবতীয় সম্মান, আর তাঁর রাসূলের জন্য, এবং মু'মিনদের জন্য)। {সূরা আল-মুনাফিকূন: ৮}
(তোমরা দুর্বল হয়োনা, এবং তোমরা চিন্তা করোনা, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা ঈমানদার হও)। {সূরা আলে-ইমরান: ১৩৯}
সৃষ্টি ও স্রষ্টার মাঝে মাধ্যম বলতে কি বুঝায়, এ ব্যাপারে মানুষ তিনটি দলে বিভক্তঃ
একঃ একদল হচ্ছে তারা যারা শরীয়ত প্রণেতা হিসাবে প্রেরিত একমাত্র মাধ্যম রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)কেও মানতে নারাজ, বরং তারা দাবী করছে, - আর কত জঘন্যই না তাদের এ দাবী - যে, শরীয়ত শুধুমাত্র সাধারণ মানুষের জন্য, উপরন্ত তারা এ শরীয়ত কে "ইলমে জাহীর" বা প্রকাশ্য বিদ্যা হিসাবে নামকরণ করেছে, তারা তাদের ইবাদতের ক্ষেত্রে কতেক বাজে চিন্তা-ধারণা ও কুসংস্কারকে গ্রহণ করে "ইলমে বাতেন" বা গোপন বিদ্যা নামে চালু করেছে, আর এর দ্বারা যা অর্জিত হয় তার নাম দিয়েছে (কাশ্ফ)। মূলত তাদের এই কাশ্ফ ইবলীশি কুমন্ত্রণা আর শয়তানী মাধ্যম ছাড়া কিছুই নয়, কারণ এটা ইসলামের সাধারণ মুলনীতির পরিপন্থী, এ ব্যাপারে তাদের দলগত শ্লোগান হলোঃ এ কথা (আমার মন আমার রব থেকে সরাসরি বর্ণনা করেছে)।
এতে করে তারা শরীয়তের আলেমদের সাথে ঠাট্টা করছে, এবং এ বলে দোষ দিচ্ছে যে, তোমরা তোমাদের বিদ্যা অর্জন করছ ধারাবাহিক ভাবে মৃতদের থেকে আর তারা তাদের বিদ্যা সরাসরি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী রব এর কাছ থেকে অর্জন করছে।
এ সমস্ত কথা দ্বারা তারা অনেক সাধারন মানুষকে আকৃষ্ট করে তাদের পথভ্রষ্ট করছে। আর শরীয়ত নিষিদ্ধ অনেক কাজ তারা এভাবে জায়েয করেছে যার বিবরণ তাদের কুসংস্কারপূর্ণ বই গুলিতে বিশদভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ফলে এ ব্যবস্থার অবসান কল্পে আলেমগণ তাদেরকে কাফের এবং ধর্ম বিচু্যতির কারণে তাদের হত্যা করার নির্দেশ দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। কারণ তারা জানতনা বা জেনেও না জানার ভান করত যে, ইসলামের প্রথম মূলনীতি হলোঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর অবতীর্ণ পদ্ধতির বাইরে কেউ আল্লাহর ইবাদাত করলে সে কাফের হিসাবে গণ্য হবে; কেননা আল্লাহ বলেন: (সুতরাং তারা যা বলছে তা নয় বরং আপনার রবের শপথ, তারা যতক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে তাদের মধ্যকার ঝগড়ার মাঝে বিচারক মানবেনা অতঃপর তাদের অন্তরে আপনার ফয়সালার ব্যাপারে কোন প্রকার দ্বিধা দ্বন্দ্বের অস্তিত্ব থাকবেনা, এবং পরিপুর্ণভাবে তা মেনে নিবেনা ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঈমানদার হতে পারবেনা)। {সূরা আন্-নিসা: ৬৫}
আর এভাবেই শরীয়তের ইলমের বিরোধীতা ও তার আলোকে নির্বাপিত করার কাজ শয়তান তাদের মনে সৌন্দর্য মন্ডিত করে দেখায়। ফলে তারা নিশ্চিদ্র অন্ধকারে ঘুরতে থাকে এবং তাদের খেয়াল খুশি মোতাবেক আল্লাহর ইবাদত করতে থাকে। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা তাদের যে চিত্র অংকন করেছেন তা তাদের ক্ষেত্রে সঠিক বলে প্রতিয়মান হয়। আল্লাহ তা'আলা বলেন : (বলুন: আমি কি তোমাদেরকে আমলের দিক থেকে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্তদের সংবাদ দেব? (তারা হলো ঐ সব লোক) যাদের দুনিয়ার জীবনের সমস্ত প্রচেষ্টা পন্ড হয়ে গেছে, অথচ তারা মনে করত কত সুন্দর কাজই না তারা করছে, তারাই সে সব লোক যারা তাদের রবের আয়াতসমূহ ও তার সাথে সাক্ষাৎকে অস্বীকার করেছে, ফলে তাদের সমস্ত আমল বিনষ্ট হয়ে গেছে, সুতরাং কিয়ামতের দিন তাদের জন্য কোন ওজন স্থাপন করবোনা)। {সূরা আল-কাহ্ফ: ১০৩-১০৫}
এ গ্রুপ শতধা বিভক্ত হয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লেগেছে, কারণ তারা সহজ সরল পথ থেকে দূরে সরে গেছে, যে পথ ছিল আল্লাহর নেয়ামতপ্রাপ্তদের পথ, অভিশপ্ত বা পথহারাদের পথ নয়।
তাদের সমস্ত গ্রুপই জাহান্নামে যাবে, কারণ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: (আমার উম্মত তিয়াত্তর ফেরকা বা গ্রুপে বিভক্ত হবে, বাহাত্তরটি জাহান্নামে আর একটি জান্নাতে যাবে - যারা আমি এবং আমার সাহাবাগণ যে পথে আছি, তার উপর থাকবে)। হাদিসটি আবু দাউদ, নাসায়ী, ইবনে মাজাহ, তিরমিযি সবাই আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আন্হু) থেকে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।
দুইঃ যারা মাধ্যম সাব্যস্ত করতে গিয়ে সীমালংঘন করেছে, আর মাধ্যমের ভুল ব্যাখ্যা করে এর উপর এমন কিছু জিনিস চাপিয়েছে, যা চাপানো কক্ষনো জায়েয নয়।
তারা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং অন্যান্য নবী ও নেক্কার ব্যক্তিবর্গকে এমনভাবে মাধ্যম মানতে শুরু করেছে যে তাদের বিশ্বাস আল্লাহ তা'আলা কারো কোন আমল এদের মাধ্যম হয়ে না আসলে কবুল করবেননা; কারণ এরাই হচ্ছে তার কাছে যাওয়ার অসীলা। (নাউজুবিল্লাহ)। এতে করে তারা আল্লাহ তা'আলাকে এমন সব অত্যাচারী বাদশাহদের বিশেষণে বিশেষিত করেছে যারা তাদের প্রাসাদে প্রচুর দারোয়ান নিযুক্ত করে রেখেছে যাতে করে কোন শক্তিশালী মাধ্যম ছাড়া তাদের কাছে পৌঁছা কক্ষনো সম্ভব হয়ে উঠেনা।
অথচ আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কুরআনে বলেন: (যখন আপনাকে আমার বান্দাগণ আমার সম্পর্কে প্রশ্ন করে তখন (বলুন) আমি নিকটে, আহবানকারী যখন আমাকে আহবান করে আমি তার ডাকে সাড়া দেই, সুতরাং তারা যেন আমার হুকুম মেনে নেয় এবং আমার উপরই ঈমান আনে যাতে করে তারা সৎপথ লাভ করে) আল্লাহ তা'আলার এ বাণীর সাথে পূর্ব বর্ণিত লোকদের বিশ্বাসের সংগতি কতটুকু?
এ আয়াত ইঙ্গিত করছে যে, আল্লাহর কাছে পৌঁছার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে তার উপর সঠিকভাবে ঈমান আনা এবং তার প্রর্দশিত পথে ইবাদাত করা। দৃশ্যনীয় যে, এ আয়াতে ইবাদতের কথা ঈমানের পূর্বে উল্লেখ করে নেক আমল বা সৎকাজের গুরুত্ব সম্পর্কে সাবধান করা হয়েছে; কেননা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও তার জান্নাত হাসিলের জন্য এটা প্রধান শর্ত।
আল্লাহ তা'আলা কুরআনে অসীলা শব্দের উল্লেখ করেছেন এবং তা দ্বারা পূর্ণ আনুগত্য করাকেই বুঝিয়েছেন কারণ এটা (অর্থাৎ আল্লাহ ও তার রাসূলের পূর্ণ আনুগত্যই) একমাত্র মাধ্যম যা তাঁর নৈকট্য দিতে পারে এবং তার রহমতের দরজা খুলতে ও জান্নাতে প্রবেশ করাতে সক্ষম। তাই বলছেনঃ (হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং তার কাছে অসীলা (পূর্ণ আনুগত্যের মাধ্যমে নৈকট্য) অন্বেষণ কর আর তার রাস্তায় জিহাদ কর যাতে করে তোমরা সফলকাম হতে পার।) {সূরা আল-মায়িদাহ্: ৩৫}
নেককার বান্দাদেরকে যারা অসীলা হিসাবে গ্রহণ করে এমন মুর্খ, চেতনাহীন লোকদেরকে আল্লাহ তা'আলা পরিহাস করেছেন কারণ তারা নেককার বান্দাদেরকে অসীলা বানাচ্ছে, অথচ নেককার বান্দারা নিজেরাই এই অসীলা তথা আল্লাহর আনুগত্য দ্বারা নৈকট্য হাসিলের অধিক মুখাপেক্ষী।
আর এ ছাড়া আল্লাহর নৈকট্য লাভের দ্বিতীয় কোন পথ নেই, যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেন: (তারা যাদের আহবান করছে তারা নিজেরাই তাদের প্রভূর নৈকট্য লাভের জন্য অসীলা খুঁজছে। তারা তার রহমতের আশা করছে, তার শাস্তির ভয় করছে, নিশ্চয়ই আপনার প্রভুর শাস্তি ভীতিপ্রদ)। {সূরা আল-ইসরা: ৫৭}
বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, এ সমস্ত অমনযোগী লোকেরা যাদেরকে মাধ্যম হিসাবে গ্রহণ করেছে তাদের সত্তার উপর ভরসা করে থাকার ফলে নেক আমল করা থেকে বিরত থাকছে, খারাপ কাজে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। যা মুসলমানদের অধঃপতনের কারণ হয়েছে। তারা ভুলে গেছে বা ভুলে থাকার ভান করছে যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর রাসূলকে - যিনি সমস্ত মানব সন্তানের নেতা - তাঁকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ (বলুনঃ আমি আমার নিজের কোন উপকার বা ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখিনা)। {সূরা আল-আ’রাফ: ১৮৮}
অনুরুপভাবে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কলিজার টুকরা কন্যাকে সম্বোধন করে বলেছেনঃ (হে ফাতিমা ! আমার কাছে যত সম্পদ আছে তার থেকে যা ইচ্ছা হয় চেয়ে নাও, আমি আল্লাহর কাছে তোমার কোন কাজে আসবনা )। {বুখারী ও মুসলিম}
তিনি আরো বলেন : (যখন কোন মানুষ মারা যায় তখন তার সমস্ত আমল বন্ধ হয়ে যায়, কেবলমাত্র তিনটি আমল ব্যতীত...)। {মুসলিম}
যদি নবীগণ ও নেক্কার লোকদের ব্যক্তিসত্তার অসীলা গ্রহণ জায়েয না হওয়ার ব্যাপারে কোন দলীল না থাকত, বরং আমাদের সামনে উমর (রাদিয়াল্লাহু আন্হু) এর সেই ঘটনাটিই শুধু থাকত, যাতে তিনি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর মৃতু্যর পর তাঁর অসীলা বাদ দিয়ে তার চাচা আব্বাসের দুআ'র শরণাপন্ন হয়েছিলেন, তবে অসীলাবাদী এ দলের মুলোৎপাটনে তাই যথেষ্ট হত।
ইমাম আবু হানীফা (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) কতই না সুন্দর বলেছেন: "আমি আল্লাহর কাছে আল্লাহ ব্যতীত অপর কিছুর মাধ্যমে কিছু চাওয়াকে হারাম মনে করি" দুররে মুখতার ও হানাফীদের অন্যান্য কিতাবে তা ইমাম সাহেব থেকে বর্ণিত আছে। যদি ব্যক্তি স্বত্বা দ্বারা অসীলা দেয়া জায়েজ হতো, তবে কুরআন ও হাদীসের যাবতীয় দুআ' যার সংখ্যা অগণিত তা ব্যক্তি সত্তার অসীলা দিয়েই আসত। (কিন্তু তার একটিও সেভাবে আসেনি)।
তিনঃ যারা স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম বলতে বুঝেছেন সেই রিসালাতকে যার মানে হলো দ্বীন প্রচার, শিক্ষাদান ও দ্বীনের প্রশিক্ষণ। তারা এই রিসালাতের উচ্চ মর্যাদা এবং এর প্রতি মানব জাতির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেছেন। ফলে তারা শরয়ী বিধান লাভের উদ্দেশ্যে এবং ঐশী বাণী বা ওহীর আলোকে আলোকিত হওয়ার জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বড় মাধ্যম এবং বৃহৎ অসীলা হিসাবে গ্রহণ করেছেন। যেমনিভাবে তারা কুরআন অধ্যয়ন করছেন তেমনিভাবে তারা রাসূলের পবিত্র জিবনী ও তার সুন্নাত অধ্যয়ন করছেন। এতে তাদের শ্লোগান হচ্ছে আল্লাহর বাণীঃ (নিশ্চয়ই তোমাদের কাছে আল্লাহর কাছ থেকে নূর এবং সুস্পষট গ্রন্থ এসেছে, এর দ্বারা যারা আল্লাহর সন্তুষটির পিছনে ধাবিত হয় আল্লাহ তাদেরকে হিদায়াত প্রদান করেন, আর তাদেরকে তাঁর ইচ্ছা মোতাবেক অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে যান, এবং সরল সোজা পথে পরিচালিত করেন )। {সূরা আল-মায়িদাহ্: ১৫, ১৬}
এরাই হলো মুক্তি প্রাপ্ত দল যাদের কথা পূর্বোক্ত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, এবং তাদেরকেই জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয়: এ গ্রুপের পথ বিপদসংকুল, কন্টকাকীর্ণ। কেননা সত্যিকার ইসলাম আজ অপরিচিত হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ মুসলমান এর থেকে অনেক দুরে সরে গেছে। তারা এ দ্বীনকে বিদআ'ত ও মনগড়া রসম রেওয়াজে পরিবর্তন করেছে।
এই রোগ অতি পুরাতন, এ ব্যাপারে সংস্কারকদের ভুমিকা খুব ভয়াবহ ও কষ্টসাধ্য।
উমর বিন আব্দুল আজীজ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেছেন (আমরা এমন কাজ সংসকার করতে চেষ্টা করছি যাতে আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কোন সাহায্যকারী নেই, যে কাজ করতে গিয়ে বৃদ্ধরা তাদের জীবন শেষ করেছে, আর ছোট ছোট ছেলেরা যুবক হতে চলেছে, বেদুঈনগণ তাদের বাস্তু ত্যাগ করে চলে গেছে। তারা এটাকে দ্বীন (ধর্ম) মনে করেছে অথচ এটা আল্লাহর কাছে দ্বীন বলে সাব্যস্ত নয়।)
অবশ্য এটা নতুন কিছু নয়, কারণ রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দ্বীনের এ করুণ দৃশ্যের কথা বর্ণনা করতে যেয়ে বলেছেন (ইসলাম অপরিচিত হিসাবে শুরু হয়েছে। যেভাবে তা শুরু হয়েছিল সেভাবে আবার (অপরিচিত) অবস্থায় ফিরে আসবে। সুতরাং গরীব (এই অপরিচিত) দের জন্যই সুসংবাদ) হাদীসটি মুসলিম শরীফে আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আন্হু)থেকে বর্ণিত।
অপর বর্ণনায় এসেছে (বলা হলঃ হে আল্লাহর রাসূল এই গরীব (অপরিচিত) রা কারা? বললেনঃ বিভিন্ন গোত্র থেকে উত্থিত বিক্ষিপ্ত কতক ব্যক্তিবর্গ) আহমাদ, ইবনে মাজা।
তিরমিযির এক (হাছান) বর্ণনায় এসেছে (এই গরীবদের জন্য সুখবর যারা আমার সুন্নাতের যে অংশ মানুষ নষ্ট করেছে তা পূণঃ সংস্কার করে চালু করেছে)।
মুসনাদে আহমাদে অপর এক সহীহ বর্ণনায় এসেছে (এই গরীব (অপরিচিত) গণ হলোঃ অনেক খারাপ লোকের মাঝখানে এমন কিছু ভাল লোক, যাদের অনুসারীর চেয়ে বিরোধীরাই হবে বেশী)।
সুতরাং এ গ্রুপকেই সংসকার কাজে এগিয়ে যেতে হবে, সংস্কারের আলোতে মুসলমানদের জাগিয়ে পুনরায় সঠিক ইসলামের দিকে ফিরিয়ে নিতে হবে। আর বিরোধীতা ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারীদের আমরা তাই বলব যা আল্লাহ তা'আলা তাদের পূর্বসুরীদেরকে বলেছেনঃ (আমাদের কি হলো যে, আমরা আল্লাহর উপর ভরসা করবনা অথচ তিনি আমাদেরকে যাবতীয় পথের দিশা দিয়েছেন? আর আমরা তোমাদের শত আঘাতের বিপরীতে ধৈর্য্য ধারণ করবো, ভরসাকারীগণ যেন শুধু আল্লাহর উপরই ভরসা করেন)। {সূরা ইব্রাহীম: ১২}
এবার আমরা শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহমাতুল্লাহ আলাইহি) এর কথায় এসে পৌছেছি, যিনি তার এই মুল্যবান প্রবন্ধে স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে মাধ্যম মানা সম্পর্কে ব্যাপক আলোচনা করবেন। প্রত্যেক মুসলমানকে এটা বুঝা, এবং এর আলোচনা করার আজ বড়ই প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।
আল্লাহ আমাদের নেতা যাবতীয় কল্যাণের পথ-প্রদর্শক মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর সালাত ও সালাম পাঠ করুন। অনুরূপভাবে তার যাবতীয় পরিবার-পরিজন ও সঙ্গী-সাথীদের উপরও। আমাদের সর্বশেষ দোআ' হলো: সমস্ত জগতের প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই যাবতীয় প্রশংসা।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
(বলুনঃ আল্লাহর জন্য সমস্ত প্রশংসা, সালাম তার মনোনীত বান্দাদের প্রতি, আল্লাহ তা'আলা কি শ্রেষ্ঠ, না সে সব সত্বা যাদেরকে তারা তার সাথে শরীক সাব্যস্ত করছে?)। {সূরা আন্-নমল: ৫৯}
২| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:৫১
নিভৃত পথচারী বলেছেন: ইসলাম সম্পর্কে তাইমিয়ার ব্যাখা বা মতবাদ বহুআগেই গ্রহণযোগ্য আলেম সমাজ কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত ও বর্জিত হয়েছে। একটু পড়াশুনা করলেই জানতে পারতেন। এ সকল বাতিল বর্জ্য দিয়ে মুসলিম অন্তকরণ আর কলুষিত না করলেই কি নয়?
প্রসিদ্ধ তাফসীর সমূহে প্রতিষ্ঠিত হাদীস শরীফের রেওয়াতে যথেষ্ট উত্তম রূপে নির্দেশ করা হয়েছে হাক্কানী পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম ই হচ্ছেন পবিত্র কোরান শরীফে বর্ণিত আল্লাহ প্রাপ্তির উসিলা।
পব্বিত্র কোরানকে তুলনা করা হয়েছে ফুলের সাথে। একই ফুলে মৌমাছি বসে পান করে সুমিষ্ট মধু। আর বোলতা বসে সংগ্রহ করে হলাহল তুল্য প্রাণনাশক বিষ। বিরুদ্ধবাদীরা, প্রবৃত্তধারীরা এই কোরান থেকেই যুক্তি তর্ক দিয়ে থাকে। কেহ কোরান পড়ে হয় শ্রেষ্ঠ মর্যাদার অধিকারী, আবার কেহ হয় চির অভিশপ্ত।
কেননা এতে রয়েছে সুস্পষ্ট নিদর্শন কেবলমাত্র প্রজ্ঞাবানদের জন্য। অত্যাচারী কিংবা পথভ্রষ্ট পন্ডিতেরা কুরআন হাদিস হতে প্রকৃত জ্ঞানের সৌরভটুকুও পাবে না। স্মরণ করুন পন্ডিতমূর্খ আবুল আলা মওদুদীর কথা অথবা আব্দুল্লাহ ইবনে ওয়াহাবের কথা! কি নিদারুন তাদের পরিণতি!
সময়ে সতর্ক হোন। আর এ সকল অভিশপ্ত মূর্খের তাবেদারী ও তাদের তাবলীগ করা হতে বিরত থাকুন।
১৫০০ বছরের পুরাতন সর্বাধুনিক ইসলামই আমাদের জন্য যথেষ্ট। কোন তাইমিয়া বা ইবনে বাজ, বা আব্দুল ওয়াহাব বা মওদুদীর ভ্রান্ত ব্যাখার প্রয়োজন আমাদের নেই।
২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫০
mamun বলেছেন: ভাই আপিন ওসিলা বেলতে কি বুঝাচ্ছেন? পীর ধরা নয় তো? যদি তাই হয় তাহলে আপনাকে হেদায়েত আল্লাহ পাক করুন এই কামনা করি। কারো নাম শুনে রাগ করবেন না। দেখে নিবেন তার লেখা কোথা থেকে এসেছে। কোরআনের অসিলা শব্দের ব্যাখ্যা যেভাবে আটরশির পির সাহেব করেছেন তাহা যদি আপনার বিশ্বাস হয় তাহলে আমার কিছু বলার নেই।
ওসিলা শব্দের সঠিক নিরপেক্ষ ব্যখ্যা যদি পড়তে চান তাহলে দেখুন ড. মুহাম্মদ মুযাম্মিল আলির "শির্ ক কি ও কেন?" বইটি।
ভদ্রলোক ১৯৮৯ সালে মদীনা ইসলামি বিশ্বঃ থেকে শরীয়ার উপর লিসান্স ডিগ্রি এবং ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্বঃ আরবী বিভাগ থেকে ১ম শ্রেনীতে ২য় স্থান অধিকার করেছে। বর্তমানে ইসলামী বিশ্বঃ আরবী বিভাগে প্রভাষক পদে চাকুরীরত আছেন। এবং হাদীস শাস্ত্রের উপর পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেছেন।
একেবারেই ক্লিয়ার হয়ে যাবে অসিলা শব্দের অর্থ আসলে কি। ভাই আল্লাহ আমাকে অনেক পড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং তাঁরই মেহেরবানীতে অনেক পড়াশুনাও করছি। অধিকাংশ পীর সাহেবদের লেখা বই পড়ে ফেলেছি। তাদের বক্তব্য সব একই। সত্যিকারের ওসিলা হচ্ছে ঈমান ও আমলে সালেহ করে এ দু'য়ের মাধ্যমে তাঁর নিকটবর্তী হতে চাওয়া।
"ওসীলা' শব্দটি আভিধানিক দিক থেকে মাধ্যম ও নৈকট্য এর অর্থ প্রকাশ করে থাকে। (লোসানুল আরব; ১১/৭২৪)
সুরা মায়দার ৩৫ নং আয়াতে বর্নিত "অসীলা' শব্দটিকে উভয় অর্থে ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে সাহাবা, তাবেঈন ও বিশিষ্ট মণীষীগণ অত্র আয়াতে এ শব্দটিকে 'মাধ্যম' অন্বেষণের অর্থে ব্যবহার না করে 'নৈকট্য' অন্বেষণের অর্থে ব্যবহার করেছেন। ফলে তাঁদের মতে এ আয়াতের অর্থ হচ্ছে- " হে ঈমানদারগণ ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, এবং ঈমান ও আমলে সালেহ দ্বারা তাঁর নৈকট্য অন্বেষন কর।" (বিশিষ্ট তাবেঈ আবূ ওয়াইল, হাসান, মুজাহিদ, ক্বাতাদাহ, আত্বা ও সুদ্দি এ আয়অতে বর্ণিত 'ওসীলা' শব্দটিকে 'কুরবাত' তথা নৈকট্য অর্থে ব্যবহার করেছেন। দেখুন কুরতবী, প্রাগুক্ত; ৬/১৫৯; ত্ববারী, প্রাগুক্ত; ৬/২২৫)
বিশিষ্ট তাবেঈ ক্বাতাদঃি (রহ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, 'তাঁর আনুগত্য এবং যে-সব কাজ তাঁকে সন্তুষ্ট করে সে-সব কাজের মাধ্যমে তাঁর নৈকট্য ও সান্নিধ্য অন্বেষন কর"। (ইবনে কাছীর, তাফসীরুর কুরআনিল আজীম; ২/৫৩)
যদি 'ওসীলা' শব্দটিকে 'মাধ্যম' অর্থে ব্যবহার করা হয় তাহলে উক্ত আয়াতের অর্থ হবে; 'তাঁর নিকটবর্তী হওয়ার জন্য মাধ্যম অন্বেষন কর।' যদি এই অর্থ করা হয় তা হলে প্রশ্ন দাড়াবে, মাধ্যম বলতে এখানে কি উদ্দেশ্য করা হয়েছে? এ প্রশ্নের সাভাবিক জাবার হচ্ছে ঈমার ও আমলে সালেহ করে এ দু'য়ের মাধ্যমে তাঁর নিকটবর্তী হতে চাও। 'আমলে সালেহ এর মধ্যে জীবিত সৎ মানুষদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা, তাঁদের সান্নিধ্যে থাকা, নবী-রাসূল ও অলিগনকে ভালবাসা, তাঁদরে শিক্ষার অনুসরণ ও অনুকরণ করা ইত্যাদি বিষয়াদি থাকলেও মৃত বা জীবিত কো অলিদের ব্যক্তিত্ব, তাঁদের মর্যাদা ও নামের মাধ্যম করে আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার অর্থনি এখানে একেবারেই অপ্রসাঙ্গিক। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় বা তাঁর ওফাতের পরেও তাঁর সাহাবীদের মাঝে তাঁর মর্যাদা ও নাম নিয়ে এমন ওসীলার কোন প্রচলন ছিল না। যে সব সহীহ হাদীস দ্বারা বাহ্যত এমন কিছু বুঝা যায়, আসলে সে সবের দ্বারা তাঁর দু'আর ওসীলাই উদ্দেশ্য করা হয়েছে। ব্যক্তি রাসূল, তাঁর নাম ও মর্যাদর ওসীলা উদ্দেশ্য করা হয়নি। এ প্রসংগে কিছু মারফু ও মাওকুফ হাদীস বর্ণিত হয়েছে ঠিকই, তবে হাদীস বিশেষজ্ঞদের মতে তা দুর্বল ও অগ্রহণযোগ্য। (ইবনে তাইমিয়্যাহ, আত-তাওয়াসসুলু ওয়াল ওয়াসীলাতু; ৪৭)
কিন্তু তা সত্বেও কিছু কিছু আলেম ও পীরদের মুখে এমনকি কোন কোন তাফসীরকারকদের কলমেও এ আয়াতের ব্যাখ্যায় শয়তান এ অপ্রাসঙ্গিক অর্থটি জুড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। যেমন মাওলানা মুফতী শফী এ আয়াতের ব্যাখ্যায় তাঁর তাফসীর গ্রন্হে এ অর্থটি জুড়ে দিয়ে লিখেছেনঃ 'ওসীলা শব্দের আভিধানিক ব্যাখ্যা এবং ছাহাবী ও তাবেয়ীগণের তফসীর থেকে জানা গেল যে, যে বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের মাধ্যম হয়, তা-ই মানুষের জন্য আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার ওসীলা। ঈমান ও সৎ কর্ম যেমন এর অর্ন্তভুক্ত। কেননা, এগুলোও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভেরই উপায়। এ কারণেই তাঁদের ওসীলা করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা জায়েয। (মাওলানা মুফতী শফী, প্রগুক্ত; পৃ. ৩২৭)
এখানে তিনি 'তাঁদের ওসীলা করে আল্লাহর দরবারে দোয়া করা জায়েয' এ মর্মে যে কথাটি বলেছেন এর দ্বারা তিনি যদি এ উদ্দেশ্য করে থাকেন যে জীবিত অলিদেরকে সাথে নিয়ে তাঁদের দু'আর ওসীলায় দু'আ করা জায়েয, তা হলে আপত্তির কিছু নেই। তবে আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়ার ওসীলা হিসেবে পয়গাম্বর ও সৎ কর্মীদের সংসর্গ ও মহব্বতের কথা বলার পর এ কথাটি পৃথক করে বলাতে প্রমাণিত হয় যে, আসলে তিনি তাঁর এ কথার দ্বারা তা উদ্দেশ্য করেননি। বরং মৃত নবী ও অলিদের মর্যাদা এবং তাঁদের নামের ওসীলায় আল্লাহ তা'আলার নিকট দু'আ করার যে প্রচলন সমাজে রয়েছে, সে ওসীলার কথাই তিনি তাঁর এ কথার দ্বারা উদ্দেশ্য করেছেন। অথচ তা সম্পূর্ন একটি ভ্রান্ত কথা। যার সাথে এ আয়াতে বর্ণিত নির্দেশের আদ্যে কোন সম্পর্ক নেই। এমন কি ওসীলা সম্পর্কে তিনি এ কথার পর যা বলেছেন তার সাথেও তাঁর এ কথার আদৌ কোন সম্পর্ক নেই। কেননা, নেক মৃত মানুষের মহব্বত করা এব জিনিষ আর তাঁদের নামের ওসীলায় দু'আ করা একটি ভিন্ন জিনিষ। প্রথমটি মানুষের ঈমানের পরিচায়ক, আর অপরটি শরী'আত বহির্ভুত একটি বেদ'আতি কর্ম। কিন্তু তা সত্ত্বেও শয়তান তাঁর মত ব্যক্তি ও অন্যান্য পীরদের মুখ ও লেখনীতে এক কথাটিকে চালিয়ে দিয়ে অজ্ঞ ও মুর্খ মুসলমানদের পথভ্রষ্ট করার একটি উত্তম সুযোগ করে নিয়েছে।
কুরআনে বর্ণিত 'ওসীলা' শব্দের অর্থ বর্ণনার ক্ষেত্রে তারা যদি তাদের সলফগণের পদাঙ্ক অনুসরণ করতেন তা হলে সমাজে 'ওসীলা' ধরা নিয়ে শয়তান এতো বিভ্রান্তি ছড়াতে পারতো না।
পীর সাহেবদের “ওছিলা” হওয়া ধোকাবাজী
আজ আমরা পীর ধরার জন্য এবং গোনাহ মাফের জন্য বিভিন্ন মাযারে মাযারে ধর্না দেই। মৃতঃ ব্যক্তির কাছে নিজের মঙ্গল কামনা করি। এগুলো কাজকে উদ্ভুদ্য করতে পীর সাহেবরা সাধারনত মূরা মায়দার ৩৫নং আয়াতের মাঝের অংশটুকু উল্লেখ করেনঃ “ওয়াবতাগু ইলাইহে ওছিলাতা” অর্থাৎ তাঁহার পথে ওছিলা অন্বেষন কর’। যেমন আদালতে ইষ্ট সিদ্ধির জন্য উকিল মুক্তারের দরকার ঠিক তেমনি তোমরা সংসারের ুদ্র কীট, সরাসরি আল্লাহর কাছে যেতে পারবে না। আল্লাহর কাছে যেতে হলে ওছিলা বা মাধ্যম তোমাদেরকে ধরতেই হবে, আর সেই মাধ্যম বা উকিল মুক্তার হচ্ছি আমরা এই পীরের দল। মনে রাখা প্রয়োজন যে, আমাদের দেশে নাসারাদের আইনানুযায়ী বিচার ব্যবস্থা চালু আছে। এই আইন অনুযায়ী বাদী ও বিবাদী সরাসরি বিচারকের সম্মুখীন হতে পারে না, তাই তাদেরকে উকিল বা মাধ্যমার প্রয়োজন হয়। ইসলামী আইনে ক্বাজী সাহেবগণ যে বিচার করতেন সেখানে কোন উকিলের স্থান ছিল না। বাদী ও বিবাদী এবং তাহাদের স্বাীর উপস্থিতির মাধ্যমেই ক্বাজীগণ বিচার কার্য্য সমাধা করতেন।
নাসারাদের আইন ব্যবস্থায় উকিলের উদাহরণ দেওয়া স্পষ্টতই পীরদের একটা ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপ এবং নাসারাদের স¤প্রীতি ছাড়া আর কিছু নহে। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, হিন্দুধর্ম মতে সৃষ্টিকর্তার কাছে যোগসাধন করার জন্য গুরু বা পুরোহিতের অবশ্যই প্রয়োজন। পীরদের ওছিলা হওয়ার দাবী স্পষ্টতই হিন্দু ধর্ম্মের প্রতি তাদের অনুরাগ ও ভালবাসার প্রমাণ। পীর ধরলে খৃষ্টান বা হিন্দু ধর্ম্মও মুরীদদের মানতে হয় যাহা বান্দার অন্তরের অন্তস্থলের যাবতীয় খবর রাখেন।
মহান আল্লাহ ত’আলা বলেনঃ
ক) “আমাকে ছাড়া আর কাহাকেও উকিল (মধ্যস্ততাকারী) বানাইও না” (সূরা বনী ইসরাইল, আঃ ২)
খ) “এবং তুমি কাফির ও মুনাফিকদের কথা শুনিও না, উহাদের নির্যাতন উপো করিও এবং নির্ভর করিও আল্লাহর উপর; মধস্ততাকারী রূপে আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা আহযাব, আঃ ৪৮)
গ) “আমি তোমাকে (রাসূল সঃ) তাহাদের উকিল (মধ্যস্ততাকারী) বানাইয়া পাঠাই নাই।’ (সুরা বনী ইস্রাইল, আঃ ৫৪)
ঘ) “প্রার্থনাকারী যখন আমার নিকট প্রার্থনা করে, তখন আমি তার প্রার্থনার জবাব দেই।” (সূরা বাকারা, আঃ ১৮৬)
এখানে আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের সরাসরি আল্লাহর নিকট তাদের ফরিয়াদ পেশ করার জন্য বলেছেন; কোন ওছিলা বা উকিল ধরার প্রয়োজন ইসলামে নেই, এমন কি স্বয়ং রাসূল (সঃ) কেও আমাদের উকিল বানাননি, আল্লাহ নিজেই সবার উকিল। প্রত্যেক মুসলিমকে মহান আল্লাহর সাথে সরাসরি আধ্যাতিœক সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। যারা কাফের, যারা মুশরেক ও যারা বিদআতী তাদের ধারণা রাজা আর প্রজাদের মধ্যে যেমন আড়াল বা ব্যবধান আছে। যারা সাধারণ মানুষ, হেদায়েতের ব্যপারে, রুজি রোজগারের ব্যপারে বা অন্যান্য দরকারী ব্যপারে সরাসরি আল্লাহর কাছে আবেদন জানানোর অধিকার নেই, কাজেই মাঝখানে একটি মাধ্যমের দরকার। এই মধ্যস্থের মাধ্যমেই তাদেরকে প্রার্থনা জানাতে হবে। যেমন হিন্দুগণ গুরু বা পুরোহিতের মাধ্যমে ঈশ্বরকে পাওয়ার জন্য প্রার্থনা করেন। সাধারণ মানুষও মনে করে এই মধ্যস্থদের কাছে আকুল ফরিয়াদ জানাবে আর মধ্যস্থগণ তাদের আবেদন আল্লাহর কাছে পৌঁছে দিবে, যেমন রাজার পরিষদরা লোকদের আবেদন নিবেদন রাজার কাছে পৌঁছে দিয়ে থাকে। রাজার পারিষদরা রাজার সান্নিধ্য লাভ করার দরুন তাদের কথা যেমন রাজার কাছে অত্যাধিক কার্যকারী হয়ে থাকে ঠিক তেমনি এই পীর ফকিরের দল মধ্যস্থরূপে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করেছে বলে তাদের সুপারিশও আল্লাহর কাছে অত্যধিক কার্যকরী হবে, এইরূপ ধারণা নিয়ে কোন ব্যক্তি কাউকে পীর, মুর্শেদ, গুরু বা পুরোহিত, যে নামেই হোক না কেন, মধস্থ মান্য করলে সে কাফের ও মুশরেক হয়ে যাবে। তাকে তওবা করানো ওয়াজিব।
সুরা মায়েদার ৩৫ নং আয়াতাংশে যে “ওছিলার” কথা বলা হল সেই ওছিলার অর্থ হল “নৈকট্য”। শাহ ওলীউল্লাহ দেহলবী “ওয়অবতাগু ইলাইহে ওছিলা” এর অর্থ করেছেন “আল্লাহর নৈকট্যঅšে¦ষণন কর।” কামুছ নামক বিখ্যাত অভিধান গ্রন্থে বলা হয়েছে বাদশা বা মহান আল্লাহর নৈকট্যের নাম ওছিলা। ক্বোরআনের ভাষ্যকারগণ সমবেতভাবে ওছিলার অর্থ “নৈকট্য” বলে উল্লেখ করেছেন। তফসীর জালালায়েনে “ওয়াবতাগু ইলইহে ওছিলা” এর মানে করেছেন- এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। তফসীর জামেউল বয়ানে “ওছিলার” অর্থে বলা হয়েছে, “এবাদতের দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য অšে¦ষণ করা।” তফসীল মাদারীতে “ওছিলা” প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ওছিলা ঐ কাজের নাম যার দ্বারা আল্লঅহর নৈকট্য লাভ করা যায়। তফসীর ফতহুল বয়ানে বলা হয়েছে-“ওছিলা” আল্লাহর নৈকট্যের নাম। হাফেজ ইবনে কাসীর বলেছেন, আল্লাহর নৈকট্যের নাম যে ‘ওসিলা’ এ বিষয়ে ক্বোরআনের ভাষ্যকারদের মধ্যে কোন মতভেদ নেই। তফসীর কবিরে বলা হয়েছে, ‘ওছিলা’ ওরই নাম, যার সাহায্যে উদ্দেশ্য পর্যন্ত পৌঁছাতে পারা যায়। এই ওছিলার উদ্দেশ্যে ঐ ওছিলা যা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে কাজে লাগে। এ ওছিলা এবাদত ও আনুগত্যের সাথে সম্পর্কিত।
আযানের দোয়ায় আমরা বলি ‘আতি মোহাম্মাদানিল্ ওছিলা’। হে আল্লঅহ ! মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে দান কর “ওছিলা” (বেহেস্তের একটি স্থান)। যদি ওছিলা মানে পীর হয়ে থাকে তাহলে এর অর্থ হবে “হে আল্লাহ! মোহাম্মদ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে একজন পীর দান কর।”
এক কথায় বলা যায় “ওছিলা” ঐ সব এবাদত ও সৎকর্মের নাম যা আল্লাহর “নৈকট্য” লাভে সহায়ক হয়। আল্লাহকে পেতে হলে এবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে, সৎকর্মের মাধ্যমে, ক্বোরআন ও সহীহ হাদীসের নির্দেশের মাধ্যমেই পেতে হবে। এ নহে যে, কোন মানুষকে মাঝখানে রেখে প্রার্থনা কর, আর শেষ পর্যন্ত এই “ওছিলা” কে আল্লাহর স্থানে বসিয়ে দেয়। আল্লাহ কোন মানুষকে পাপ মুক্ত করার শক্তি, হেদায়েত করার শক্তি, দেহ ও মনের পবিত্রতা সাধন করার শক্তি, পাপের বোঝা বহন করার শক্তি এবং আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে ওকালাতি করার শক্তি দেন নি। এখন যদি কেউ বলে, মানুষ মেরেছি, দুর্নীতি করেছি, গুন্ডামী করেছি, লাখ লাখ টাকা আতœসাৎ করেছি, গাড়ী বাড়ী করেছি, পর্বত প্রমাণ গোনাহর বোঝা হয়েছে, চতুর্দিকে অন্ধকার। আমাকে বাঁচাবে কে-আমার ঐ পীর; আমাকে হেদায়েত করবে কে- আমার ঐ পীর। ওকালতি করবে কে- আমার ঐ পীর। পীর ধরা মানেই হল নিজের ধনসম্পদ বিনাশ করে চিরস্থায়ী দোজখ ক্রয় করা। মুরীদগণ যেভাবে পীরকে তোয়াজ তামিজ করেন আর সম্মান এবং আদব দেখান তার এক শতাংশও আল্লাহর প্রতি মুরিদানরা দেখান না। পীরের আদেশ যেভাবে তারা পালন করে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আদেশ সেভাবে মানলে তার পরকাল হত উজ্জ্বল। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, আর তোমাদের আমলগুলি ধবংশ কর না।” (সুরা মোহাম্মদ, আঃ-৩৩)
মুরীদগণ আল্লাহ ও রাসূলের পায়রুবী না করে পীরের পায়রুবী করে নিজেদের আমল ধবংস করে চলেছেন। আল্লাহর পায়রুবী না করে, আল্লাহর পরিবর্তে মুরীদগণ তাদের পীরের পায়রুবী করেন; আল্লাহর স্থানে পীরকে বসালেন, পীরকে আল্লাহ শরীক করলেন এবং নিজে হয়ে গেলেন মুশরেক। আল্লাহ বলেন, “মুশরেকদেরকে আমি কোন সময়ই মা করব না, তাদেরকে চিরকাল জাহান্নামে রাখব, আর যত পাপ আছে আমি ইচ্ছা করলে মাফ করে দিতে পারি।” (সুরা নিসা, আঃ ৪৮ ও ১১৬)
আল্লাহ আরো বলেন, “হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাঁর (আল্লাহর) দেকে উপায়অšে¦ষণণ কর এবং তাঁর (আল্লাহর) পথে জেহাদ কর, যেন তোরমা সফলকাম হও।” (সুরা মায়েদা, আঃ-৩৫)
মহান আল্লাহর পথে জেহাদ করার কথা বলা হয়েছে। মহান আল্লাহর আদেশ নিষেধ ও রাসূল (সঃ) এর প্রদর্শিত এবাদাত ও নিয়ম-কানুনের মাধ্যমেই মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে আমাদেরকে সফলকাম হতে হবে। পীর সাহেবগণকে “ওছিলা” করে তার দেয়া নিয়মে ক্বলব পরিষ্কারের কাজে লাগলে এবং তাদের দেয়া ওজিফার নিয়ম-কানুন মানলে, মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সঃ) এর আনুগত্য ও অনুসরণ না করে পীরদের আনুগত্য ও অনুসরণ করা হবে। যারা এরূপ করবে তারাই মুশরিক হয়ে জাহান্নামে চিরকাল থাকবে, তাদের কোন মা নেই।
মহান আল্লাহ আরো বলেন, “তোমরা তোমাদের রবের প থেকে যাহা নাযিল হয় তার আনুগত্য কর, আল্লাহকে ছাড়া তোমরা আর কোন অলি-আওলিয়াদের আনুগত্য করিওনা। তোমরা কম লোকই উপদেশ গ্রহণ কর।” (সুরা আ’রাফ, আঃ ৩)
আমাদের রবের প থেকে নাযিল হয়েছে আল ক্বোরআন ও রাসূল (সঃ) এর বানী বা সহীহ হাদীস। অর্থাৎ আল্লাহর ক্বোরআন ও তাঁর রাসূলের সহীহ হাদীসই শুধু আমাদের মানতে হবে। অলি-আওলিয়া, পীর-দরবেশ, বুজুর্গানাদের আদেশ-নিষেধ মানতে আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে নিষেধ করেছেন। আল্লাহর এ আদেশ যারা অমান্য করে তারা কাফের। কাফেরদের জন্য আল্লাহ তা’আলা জাহান্নাম তৈরী করে রেখেছেন। আর আল্লাহর আদেশের বিপরীতে কোন পীরের আদেশ মানলে তারা মুশরেক। মুশরেকদেরকে আল্লাহ চিরকাল জাহান্নামে রাখবেন।
বর্তমান সমাজের পীরগণ কোন মতবাদে চলে এবং আল্লাহর আদেশকে অমান্য করে কিভাবে সরলমনা মানুষদের ধোকা দেয় তার কয়েকটি নমুনা আপনাদের খেদমতে পেশ করছিঃ
আলোনার প্রথমে সুফি সম্রাট দেওয়ান বাগী হুজুরের অনুমোদিত ও প্রকাশিত বই-
“এজিদের চক্রান্তে মোহাম্মাদী ইসলাম”..................................১ নং বই
“মোহাম্মাদী ইসলাম”.......................................................২ নং বই
“শান্তি কোনপথে”...........................................................৩ নং বই
উপরে উল্লেখিত কেতাবের মধ্যে ক্বোরআন ও হাদীদ বিরোধী, শিরকি, কুফুরী ও বিদআতী কতিপয় মন্তব্য সকলের অবগতি জন্য পেশ করা হল। উদ্ধৃত মন্তব্যের শেষে কেতাবের ক্রমিক নং ও পৃষ্ঠার নম্বর দে’য়া হয়েছে।
০১) অজ্ঞ দাবীদরাগণ বিষয়টির গুরুত্ব না বুঝে বলতো যে, “সৃষ্টি জগতের গাহা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর।” (১ নং বইয়ের ৬০পৃঃ)
অথচ আল্লাহ বলেছেন, “আকাশ মন্ডল ও পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে সমস্তই আল্লাহর।” (সুরা বাকারা, আঃ ২৫৫)
“তোমরা অস্বীকার করিলেও আকাশ ও জামীনে যাহা কিছু আছে সব আল্লাহরই।” (সুরা নিসা, আঃ ১৭০, ইব্রাহিম, আঃ ২, ত্বো-হা, আঃ ৬, আশ্শুরা, আঃ ৪, বাবারা, আঃ ২৮৪, ফোরকান, আঃ ২)
ক্বোরআনে আরও অনেক আয়াত আছে যাহাতে বলা হয়েছেঃ- “সৃষ্টি জগতের যাহা কিছু আছে সবই আল্লাহর।”
*** এখানে পীর সাহেব মহান আল্লাহকে অজ্ঞ দাবীদার বললেন এবং আরও বললেন আল্লাহ তা’আলা বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেন না। নাউজুবিল্লাহে মিন জালেক।
০২)“যারা শুধু শরীয়ত আমল করে তারা গোমরা বা জাহান্নামী।” (১ নং বইয়ের ৬২ পৃঃ)
“শুধু শরীয়ত করলে হক্ব পথের সন্ধান লাভ করবে না।” (১নং বইয়ের ২২২ পৃঃ)
আল্লাহ বলেন, “হে নবী ! ইহার পর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি শরীয়ত বিধানের উপর, সুতরাং তুমি উহারই অনুসরণ কর, অজ্ঞদিগের খেয়াল খুশীর অনুসরন করিও না।” (সুরা জাসিয়া, আঃ ১৮)
এখানে পীর সাহেব স্বয়ং রাসূল (সঃ) কে গোমরা বা জাহান্নামী করে ছাড়লেন, যেহেতু আল্লাহ তাঁর রাসূল (সঃ) কে শুধু শরীয়তেরই অনুসরণ করতে নির্দেশ দান করেছেন। রাসূল (সঃ) আল্লাহর অবাধ্য হয়ে নিশ্চয়ই শরীয়ত ব্যতিত মা’রেফত, ত্বরিকত এবং হক্বিকত মান্য করেন নি।
০৩) “দেশ রক অলী-আল্লাহদের সাহায্য ব্যতীত পৃথিবী এক মূহুর্তও কায়েম থাকতে পারে না। ইহা অত্যন্ত রহস্য জনক বিষয়।” (১ নং বইয়ের ২৪০ পৃঃ)
আর আল্লাহ বলেন, “আল্লাহ আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবীকে সংরণ করেন, যাহাতে উহারা স্থানচ্যুত না হয়, উহারা স্থানচ্যুত হইলে তিনি ব্যতীত কে উহাদেরকে সংরণ করিবে।” (সুরা কাহাফ, আঃ ২৬)
দেশ রক অলীদের সাহায্য ব্যতীত পৃথিবী কায়েম থাকতে পারে না, কথাটা ইবলিস ছাড়া আর কাহারো নয়। আর তথা কথিত অলি-আল্লাহ তারই দোসর। এখানে তথা কথিত অলি-আল্লাহগণ স্বয়ং মহান আল্লাহর স্থান দখল করে বসলেন।
০৪) “ক্বালব পরিশুদ্ধির মাধ্যমেই আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা যায়।” (১ নং বইয়ের ২১৯ পৃঃ)
আল্লাহ বলেন, “যে তাহার প্রতিপালকের নৈকট্য কামনা করে, সে যেন সৎকর্ম করে ও তাহার প্রতিপালকের ইবাদতে কাহাকেও শরীক না করে।” (সুরা কাহাফ, আঃ ১১০)
আমরা আল্লাহর দাস (আবেদ) এবং তাঁহারই শুধু দাসত্ব (এবাদত, তাবেদারী) করার নিমিত্তে আমাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন যদি আমরা পীর সাহেবদের কথা মেনে ক্বালব পরিস্কার করতে লেগে যাই, তাহা হলে পীরের দাসত্ব করা হল এবং তাহাকে আল্লাহর দাসত্বে শরীক করা হল। এটাই হচ্ছে মোশরেক যারা চিরকাল জাহান্মামে থাকবে।
০৫) “মোমেন ব্যক্তি আল্লাহর দর্শন লাভ করে থাকেন।” (১নং বইয়ের ২৬০ পৃঃ)
মহান আল্লাহ বলেছেন, “দৃষ্টি সমুহ তাঁহাকে (আল্লাহকে) দর্শন করিতে পারে না; তিনিই বরং দৃষ্টি সমুহকে আয়ত্ব করেন।” (সুরা আশ শুরা, আঃ-১১)
“আল্লাহর কোন সদৃশ স্থীর করিও না।” (সুরা নহল, আঃ-৭৪)
“বিশ্বলোকের কোন জিনিষই তাঁহার অনুরূপ নহে। তিনি সব শুনেন ও দেখেন।” (সুরা আনআম, আঃ-১০৩)
ইহ জাগতিক মানব চু দ্বারা আল্লাহকে দেখা যাবে না। তাই মুসা (আঃ) ইচ্ছা প্রকাশ করেও আল্লাহকে দেখতে পারেন নি। কারণ আল্লাহর নূরের তাজল্লি ইহ জগতের চোখ ধারণ করার মতা রাখে না।
স্বপ্নে আল্লাহকে দেখার দাবী একটা ধোকাবাজী, কারণ এমন কিছু স্বপ্নে দেখা যায় না, যার আকৃতিই আমাদের অজানা। কোন কোন পীর সাহেবগণ আল্লাকে মানব আকৃতিতে দেখে থাকেন বলে দাবী করেন; এবং সেই দাবীর জের ধরে কিছু মুর্খ মূরীদ বিশ্বাস করে উক্ত পীরের জন্য জীবন বাজি ধরতে পারে, তারা আল্লাহকে পাবার জন্য উক্ত পীরের মাজারে গিয়ে ধর্না দেয়। জগতের ভাল মন্দ করার দায়িত্ব উক্ত পীর সাহেবের উপর বর্তিয়ে দেয়। তাদের ধারণা পীর সাহেব ছাড়া কিছুতেই আল্লাহর কাছে যাওয়া যাবে না। আমাদের দেশে চট্টগ্রামে এর প্রভাব খুব বেশী। ঘরে ঘরে কোন না কোন পীরের মুরিদদের ল করা যায়। এরা হাদীস কোরআন খুলেও দেখে না যদিও বা কোরআন পড়ে তবে অর্থ পড়ে না। হয়তো ৩০ বার তম দিয়েছে অথচ কোনদিন অর্থ পড়ে দেখেন নি কি বলেছেন মহান আল্লাহ এই কোরআনের মধ্যে।
যদি পড়তেন তাহলে বুঝতেন যে উপরোক্ত কোরআনের আয়াত সমূহে স্পষ্ট বলা হয়েছে আল্লাহর আকৃতির সদৃশ নেই। অর্থাৎ বিশ্ব জগতের কোন কিছুর আকৃতির সাথে আল্লাহর আকৃতির মিল নেই। যে সকল পীর সাহেবগনের মুরিদরা বিশ্বাস করেন যে তাদের কামেল পীর আল্লাহকে দেখেছেন স্বপ্নে বা অন্য কোথাও সে সকল মুরিদদের বলতে চাই যে, উক্ত পীর সাহেব স্বপ্নে যাকে আল্লার রূপে দেখেছেন তিনি আর কেউ নন স্বয়ং ইবলিশ শয়তান নিজেই। ইবলিশ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য মাঝে মাঝে এসকল পীর সাহেবদের স্বপ্নে আসেন কারণ ইবলিশ ভাল করেই জানের ইনি আল্লাহর কামেল বান্দা নন বরং তার উত্তম সহযোগী বটে। ইসলামকে তথা মানব জাতিকে ধ্বংসের পথে নেবার জন্য ইবলিশ এসকল লোকদের ব্যবহার করে থাকেন এবং কাল কেয়ামত পর্যন্ত করতে থাকবেন।
০৬) “গোনাগার উম্মতের শাফায়াত কারী হিসেবে রাসূল (সঃ) এবং তার উত্তরাধিকারীগণের যে ভ’মিকা আল্লাহ প্রেমিক সাধকগণ অতি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন উহাকে তুচ্ছ করা হয়ে থাকে এই বলে যে, “বান্দা ও আল্লাহর ভিতরে কোন মধ্যস্থতা কারী নেই। এ ধারণা প্রকৃত পইে ভ্রান্ত ও ইসলাম বিরোধী শিা।” (১নং বইয়ের ২৬৯ পৃঃ, ২নং বইয়ের ১৯৭পৃঃ)
মহান আল্লাহপাক বলেন, “আমাকে ছাড়া কাহাকেও নিজেদের উকিল (মধ্যস্থতাকারী) বানাইওনা।” (সুরা বনী ইসরাইল, আঃ-২)
পীর সাহেব এখানে আল্লাহকে তুচ্ছকারী হিসাবে অপবাদ দিলেন। আমি কনফার্ম যে পীর সাহেব আল কোরআন অর্থ সহকারে পড়ে নাই।
মহান আল্লাহপাক আরো বলেন, “এবং তুমি কাফির ও মুনাফিকদের কথা শুনিও না, উহাদের নির্যতন উপাে করিও এবং নির্ভর করিও আল্লাহর উপর; মধ্যস্থতাকারী রূপে আল্লাহই যথেষ্ট।” (সুরা আহযাব, আঃ-৪৮)
“আমি আপনাকে (রাসূল সঃ) তাদের মধ্যস্থতাকারী (উকিল) বানাইয়া পাঠাই নাই।” (সুরা বনী ইসরাইল, আঃ- ৫৪)
আল্লাহ ছাড়া বান্দাদের জন্য ইসলাম ধর্মে কোন উকিল নেই। স্বয়ং রাসূল (সঃ) কেও আল্লাহ তা’আলা আমাদের উকিল বানান নাই।
হিন্দু ধর্মে সাধকগণ সাধরণ মানুষদের উকিল, তাহারা সৃষ্টের সহিত সৃষ্টিকর্তার যোগাযোগ ঘটাইয়া থাকেন। কোন হিন্দুই সাধক, পুরোহিত বা ঠাকুর ব্যতিত ভগবানের সাথে যোগাযোগ সাধন করতে পারে না। এই সাধক প্রথা, উকিল প্রথা বা মধ্যস্থতাকারীর প্রথা ইসলামে আল্লাহ তা’আলা রাখেন নাই। নবী মোহাম্মদ (সঃ) এর প্রদর্শিত পথে বান্দাগণ আল্লাহর সাথে সরাসরি যোগাযোগের প্রথাই ইসলামে স্বীকৃত।
এখানে পীর সাহেব কোরআনকেই ইসলাম বিরোধী শিা বলে আখ্যা দিলেন। এভাবে শয়তান মানুষকে আল্লাহর রাস্তা থেকে সরিয়ে নেবার জন্য মানুষের মনে ‘মানুষ শয়তানগুলি’ মন্ত্রণা দিয়েই চলেছে।
০৭) “কিভাবে ইবাদত করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন, সে পদ্ধতি একমাত্র অলি-আল্লাগণই বলে দিতে পারেন। তাহারা আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি।” (১নং বইয়ের ১৮৪পৃঃ)
আল্লাহ বলেন, “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করিয়া দিয়াছি।” (সুরা মায়েদা, আঃ-৩)
“কিতাবে (কোরআনে) কোন কিছুই আমি বাদ দেই নাই।” (সুরা আনআম, আঃ ৩৮)
কিভাবে ইবাদত করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন তাহা না বলেই আল্লাহ তা’আলা আমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ ঘোষনা করলেন? আবার আল্লাহ বলেন কিতাবে কোন কিছুই বাদ দেন নাই। নাউজুবিল্লাহে মিন জালিক। রাসূল (সঃ) ইবাদত কিভাবে করলে আল্লাহ সন্তুষ্ট হবেন তাহা না বলেই বিদায় হজ্বে আরাফাতের ময়দানে তাঁহার দায়িত্ব পূর্ণতার ঘোষণা দিলেন? তাহলে আল্লাহর কোরআন ও রাসূল (সঃ) এর প্রদর্শিত পথ কি এখানে ব্যর্থ? আসলে মনে রাখতে হবে শয়তানের পথ অনেক।
আল্লাহ বলেন, “আর শয়তানের প্রদর্শিত পথে চলিও না, সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“। সে তোমাদেরকে পাপ কাজ অশ্লীলতার আদেশ করে এবং যেসব কথা আল্লাহর বলিয়া তোমরা জান না, আল্লাহর নামে তাহা বলিয়া বেড়াইতে শিা দেয়।” (সুরা বাকারা, আঃ ১৬৮, ১৬৯)
“জ্বীনের মধ্যে হইতে অথবা মানুষের মধ্য হইতে (শয়তান)।” (সুরা নাস, আঃ-৬)
শয়তানই মানুষকে আল্লাহর পথ হইতে সরিয়ে নেয় এবং জাহান্নামের পথে পরিচালিত করে। বলা হয়, অলি-আল্লাহগণই আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি; আল্লাহ ওনাদের মনোনীত করার কথা কোরআনের কোথায় বলেছেন?
আল্লাহ বলেন, “হে মুসা! আর আমি তোমাকে মনোনীত করিয়া লইয়াছি। তুমি শুন যাহা কিছু অহি করা হয়।” (সুরা,ু ত্বো-হা, আঃ-১৩)
“আদমকে, নুহকে ও ইব্রাহীমের বংশধর এবং ইমরানের বংশধরকে আল্লাহ বিশ্বজগতে মনোনীত করিয়াছেন।” (সুরা ইমরান, আঃ-৩৩)
“নিশ্চয়ই আমি তাঁহাকে (ইব্রাহীমকে) দুনিয়াতে মনোনীত করেছি আর অবশ্যই সে পরকালে সৎ কর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” (সুরা, বাকারা, আঃ- ১৩০)
ইতিহাসে প্রমাণ পাওয়া যায় আমাদের পূর্ব পূরুষগণ বেশীরভাগই হিন্দু জাতির শুদ্র ও বৈশ্যদের বংশধর। আমাদেরকে আল্লাহ মনোনীত করেন নাই। মহান আল্লাহ নবী-রাসূল ছাড়া আর কাউকে মনোনীত করেন না। তারপর মোহাম্মদ (সাঃ) কে যদি শেষ নবী হিসাবে মানতে হয় তবে তাহার পর আর কাউকে আল্লাহর মনোনীত ব্যক্তি হিসাবে বিশ্বাস করা যায় না। আল্লাহ তা’আলা ইব্রাহীম ও ইমরানের বংশধরদের মনোনীত করেছেন সেই কারণেই সকল নবী ও রাসূলগণই এই দুই বংশের অন্তর্ভুক্ত। তবে ইবলিশ মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য আল্লাহর মনোনয়ন পেয়েছে। পীর সাহেবগনকে আল্লাহ মনোনিত করেছেন বলে মহান আল্লাহ তাঁর কোরআনে কোথাও বলেন নি। তবে বাংলাদেশের চট্টগ্রামে কিছু মুসাফীর ভাইকে হয়তো শয়তান কানে কানে বা স্বপ্নে বলে থাকতে পারেন। ওনারা বলে থাকেন পীরসাহেবরা আল্লাহর দিদার লাভ করেছেন তারা সার্টিফিকেট পেয়েছেন। অথচ এই কথা কোথায় আছে তাহা বলেন না, আবার সার্টিফিকেটের একটা কপিও দেখাতে পারেন না। হয়তো অদুর ভবিষ্যতে শয়তান একটা অদৃশ্য কালির সার্টিফিকেট জোগাড় করে দিবেন তার মুরীদদের দেখাবার জন্য আর বলবেন এটা আল্লাহর তরফ থেকে এসেছে এই দেখ তার প্রমান।
০৮) “দিলকে পবিত্র করার জন্য মারেফতের (খাঁটি) পীর অন্বেষণ করা প্রত্যেক নর নারীর জন্য ফরজ।” (১নং বইয়ের ৬৭পৃঃ)
এই ফরজ কাজের ঘোষক কে? আল্লাহ না কি শয়তান? এই খাঁটি পীরঅšে¦ষণ করার জন্য আল্লাহ তাঁর পাক কোরআনে কোথাও বলেন নি এবং রাসূল (সঃ) আমাদের পীর ছিলেন না, পীর ধরার কথা কোন সহীহ হাদীসে নেই। পীর প্রথা ইসলামে নেই এবং পীর পদ্ধতি একটা স্পষ্ট শির্ক প্রথা এবং ধোকাবাজী। এটা স্পষ্টতঃই শয়তানের অনুসারীদের দাবী। তবে হ্যা! কোরআন এবং রাসূল (সঃ) এর সুন্নাহের জ্ঞান অর্জন করে যারা আলেম হয়েছেন, তাদেরকে অবশ্যই মানতে হবে, যতন তারা কোরআন ও সহীহ হাদীস হতে দলীল পেশ করবেন। কেউ যদি তার নিজের বা অন্য কারোর দলিল শিা দেন, তাহলে তাদের কোন কথা মান্য করা যাবে না। প্রত্যেক নর নারীর পীর ধরার কথা মহান আল্লাহ কোরআনে কোথাও বলেন নি, তাঁর রাসূল (সঃ) ও পীর ধরার কথা কোথাও বলেন নি। “পীর ধরা ফরজ” এটা মিথ্যা ও প্রতারণামূলক কথা। যদি ফরজ হতো তাহলে আল্লাহ পাক তাঁর কোরআনে অবশ্যই বলতেন এবং রাসূল (সঃ) কেও একজন পীরের মুরীদ করেই পাঠাতেন। যেহেতু “ফরজ” তাই স্পষ্ট নির্দেশ অবশ্যই থাকতো।
০৯) “প্রকৃত নায়েবে নবীর আর একটি আলামত হল; তাঁর প্রধান চিন্তার কারণ হবে গুপ্ত বিদ্যা শিা।” (১নং বইয়ের ২১৮পৃঃ)
আল্লাহ বলেন, “হে রাসূল ! তোমার রবের তরফ হইতে তোমার প্রতি যাহা নাযিল করা হইয়াছে তাহা লোকদের পর্যন্ত পৌঁছাইয়া দাও। তুমি যদি ইহা না কর, তবে পৌছাইয়া দেওয়ার হক্ক তুমি আদায় করলে না।” ( সুরা, মায়েদা, আঃ-৬৭)
“আল্লাহ তা’আলা ফিরিশতা ও নবী রাসূল ছাড়া কাহারো প্রতি অহী নাযিল করেন না।” (সুরা হজ্ব, আঃ-৭৫)
নবী-রাসূলগণও আল্লাহর নাযিল করা কোন কিছুই লোকদের পর্যন্ত না পৌঁছাইয়া পারেন নাই। তাছাড়া আল্লাহর নাযিল করার কিছু অংশ কোন ব্যক্তি বিশেষের নিকট আলাদা করে পৌঁছানোর কথাও মহান আল্লাহ কোরআনে কোথাও বলেন নি। তা’হলে গুপ্ত বিদ্যা কার মাধ্যমে পীর সাহেবগণ পান, এটা চিন্তার বিষয়। আল্লাহ তা’আলা কোরআনে কোন কিছু গোপন করেন নাই। তবে বলতে হয় এই পথটা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথ নয়। এটা নিঃসন্দেহে ইবলিসের পথ।
১০) “এ পৃথিবীতে যত নবী ও রাসুল আগমন করেঠিলেন সকলেই মোরাকাবা বা ধ্যান সাধনার মাধ্যমেই নিজের ভিতরে আল্লাহকে খুঁজে পেয়েছেন।” (১নং বইয়ের ২৮৮ পৃঃ)
আল্লাহ বলেন, “সে (ঈসা আঃ) দোলনায় থাকা অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সহিত কথা বলিবে এবং সে হইবে পূন্যবানদের একজন।” (সুরা ইমরান, আঃ-৪৬)
সমস্ত নবী রাসূলগণকেই আল্লাহ মনোনীত করেছেন। আল্লাহ কাহারো ক্বালবে আসেন না, তিনি আকাশেই অবস্থান করেন। তার প্রমান নীচে দেখুন। আল্লাহ কোন নবী-রাসূলগনের ভিতরেও অবস্থান করেন নি। আমাদের রাসূর (সঃ) কখনও বলেন নি যে আল্লাহ তাঁর ভিতরে আছেন।
১১) দেওয়ানবাগী হুজুর ফরমান, “যারা সাধনার মাধ্যমে নিজেদের ক্বালবে আল্লাহর সন্ধান লাভ করেছেন এবং তার প থেকে প্রাপ্ত নির্দেশ মোতাবেক নিজেকে পরিচালিত করে থাকেন তারাই একমাত্র সঠিক পথে আছেন এবং তারাই প্রকৃত মুসলমান।” (১নং বই, পৃঃ-২৬১)
মহান আল্লাহ বলেন, “তুমি কি ল করিয়াছ তাহাকে, যে তাহার খেয়াল খুসীকে নিজ ‘ইলাহ’ বানাইয়া লইয়াছে? আল্লাহ জানিয়া শুনিয়াই উহাকে বিভ্রান্ত করিয়াছেন এবং উহার কর্ণ ও হৃদয় মোহর আটিয়া দিয়াছেন।” (সুরা জাসিয়া, আঃ-২৩)
মহান আল্লাহ কাহারো ক্বালবের সপ্তম স্তরে বসবাস করেন না বা ক্বলবেও আসেন না। এ ব্যপারে মহান আল্লাহ বলেন, “যিনি আকাশে অবস্থান করেন, তোমাদেরকেসহ যমীন ধ্বসিয়ে দেয়া থেকে কি তোমরা নির্ভয় হয়ে গিয়েছ? অতপর হঠাৎ যমীন কাঁপতে থাকবে। অথবা যিনি আকাশে অবস্থান করেন, তোমাদের উপর শিলা বৃষ্টি বর্ষণ করা থেকে নিরাপদ হয়ে গিয়েছ?” (সুরা মূলক, আ-১৬ ও ১৭)
“তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ যিনি আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী ছয়দিনে সৃষ্টি করেন, অতপর তিনি ’আরশে’ সমাসীন হন।” (সুরা আ’রাফ, আঃ-৫৪)
“দয়াময় আল্লাহ মহান আরশে সমাসীন হয়েছেন।” (সুরা ত্বা-হা, আঃ-৫)
আল্লাহ তা’আলা কোথায় অবস্থান করেন, তাঁর ভাষায়ই দেখুনঃ- সুরা মোমেনুন-১১৬, তওবা-১২৯, রা’দ-২, ফুরকান-৫৯, হুদ-৭, যুমার-৭৫, মুমিন-৭, বুরুজ-১৪ ও ১৫, মা’আরিজ-৪, নামল-২৬, ইউনুস-৩, হাক্কাহ-১৭, ত্বো-হা-৫)
হাদীসঃ- “আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সঃ) বলেছেন, মহান ও কল্যানময় আমাদের রব প্রতি রাতের শেষ তৃতীয়াংশে দুনিয়ার আকাশে অবতরন করে বলতে থাকেন, কে এমন আছ যে আমাকে ডাকতে চাও? (ডাকো) আমি তার ডাকে সাড়া দিব, কে এমন আছ, যে আমাকে নিজের অভাব জানিয়ে তা দুর করার জন্য প্রার্থনা করতে চাও? (প্রর্থনা কর) আমি তাকে প্রদান করব এবং কে এমন আছ, যে আমার কাছে মা প্রার্থনা করতে চাও? (মা প্রার্থনা কর) আমি তাকে মা করে দিব।” (সহীহ আল বুখারী, আধুনিক প্রকাশনী, ১ম খন্ড, হাদীস নং-১০৭৪)
আল্লাহকে খুশী করতে হলে পীরের মুরীদ হওয়ার দরকার নাই। সরাসরি আল্লাহকে ডাকলেই তিনি তা শুনতে পান। যারা বলে বেড়ায় ‘একমাত্র আমাদের মাধ্যমেই আল্লাহকে ডাকতে হবে অন্যথায় তোমরা তোমাদের কথা তাঁর দরবার পর্যন্ত পৌঁছাবে না’ এরা আল্লাহর আয়াতকে অবিশ্বাস করল।
মহান আল্লাহ বলেন, “যাহার আমার আয়াতকে বিশ্বাস করে তারাই মুসলিম।” (সুরা নামল, আ-৮১)
একথা যারা অবিশ্বাস করবে তারা কাফের নয় কি? পীর সাহেবগণ সাধনার মাধ্যমে যে আল্লাহর সন্ধান পান বলে প্রচার করেন সেই আল্লাহ হল, “যে মন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে, জ্বিনের মধ্য হইতে অথবা মানুষের মধ্য হইতে।” (সুরা নাস, আঃ-৫ ও ৬)
এই তথা কথিত আল্লাহর নির্দেশ মোতাবেক নিজকে পরিচালিত করলে সঠিক পথে থাকতে পারেন না। এটা ইবলিস শয়তানের পথ; সাধনার মাধ্যমে পীর সাহেবগণ নিজেদের ক্বলবে আল্লাহ ছাড়া হয়ত কোন শয়তানের সন্ধান লাভ করতে পারেন, যার নির্দেশে নিজকে ও অন্যান্যদেরকে পরিচালিত করে চলেছেন।
আল্লাহ বলেন, “তোমরা শয়তানের দাসত্ব করিও না, কারণ সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্র“। আর আমার “ইবাদত” কর ইহাই সঠিক পথ।” (সুরা ইয়াসিন, আঃ- ৬০, ৬১)
“নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার “রব” এবং তোমাদেরও “রব”। অতএব তাঁহারই এবাদত কর, ইহাই সঠ
৩| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১৬
সামছুল আরেফিন বলেছেন: ইমাম ইবনে তাইমিয়া একজন মুজাদ্দিদ, আল্লাহ ও তার রসুলের বাইরে তিনি কিছু বলেননি, যারা বিরোধিতা করেন, তাদের আরো নিরপেক্ষভাবে পড়ালেখা করা উচিত।
ধন্যবাদ লেখক।
২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৭
mamun বলেছেন: ভাই উনি একজন মুরীদ বুঝতে পারছেন না? আসুন ওনাকে ফেরানোর চেষ্টা করি। ওনাদের কাছে কোরআন পাঠ করলে এবং সেই আয়াত যদি পীর সাহেবদের কথার বাহিরে যায় তাহলে আপনাকে লাঠি নিয়ে তাড়া করবে। ওনারা হাদীসের কথা শুনলে তাদেরকে ভন্ড বলে আক্ষ্যা দিবে। এটাই ওনাদের বৈশিষ্ট আমি অনেক মুরীদের সান্নিধ্য হয়েছি এবং কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে যে পীরদেরকে মাধ্যম করতে নিষেধ করা হয়েছে তাহাও পড়ে শুনিয়েছি। কেউ কেউ বুঝেছে আর অন্ধরা বুঝে নাই। তারা পাপী তাই ভাবে পীরই একমাত্র ভরসা। জীবনে এতো পাপ করেছি যে পীর সাহেব সুপারিশ না করলে পার পাব না। সুতরাং এই পাপীরা (যাদের নামাজ কালাম নাই, সুদ, ঘুষই তাদের সম্বল) মাজারে গিয়ে বড় অংকের ডোনেশন দেয় এবং পাপ মার্জনার উদ্দেশ্যে পীরের পায়ের ধুলা চেটে পরিষ্কার করে ফেলে।
ভাই আপনিও ওনাদের জন্য দোয়া করবেন।
৪| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৩৯
উমর বলেছেন: কি কঠিন অবস্থা আমাদের, দেখলে দুঃখ হয়।
আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য একটাই আর তাহলো আল্লাহর ইবাদত করে তার সন্তুষ্টি অর্জন করা আর এজন্য শিরক সম্পর্কে পরিস্কার ধারণা থাকতে হবে। যারা মাধ্যম গ্রহণ করে তারা শিরক করে তাতে কোন সন্দেহই নেই।
মূর্তি পূজারীদের একটা থিওরী আছে: আমরা তো মূর্তি পূজা করি না, আমরা আমাদের গডকে মূর্তির মধ্যে নিয়ে আসি, মূর্তির মাধ্যমে আমরা গডকে পাওয়ার চেষ্টা করি।
“দেবতারা যাতে আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়, কেবল সে উদ্দেশ্যেই আমরা তাদের উপাসনা করি”।
(সূরা যুমার:৩)
যারা মাধ্যম গ্রহণ করে তাদের থিওরী এই মূর্তি পূজকদের সাথে মিলে যায়, তারা বলে আমরা তো তাদেরকে গড বা তাদের প্রার্থনা করি না কিন্তু তাদের মাধ্যমে আল্লাহকে পাওয়ার চেষ্টা করি।
“মানুষের মধ্যে এমন একদল লোক আছে যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যদেরকে শরীক বানিয়েছে এবং তাদেরকে এমনভাবে ভালবাসে যেমন আল্লাহকে ভালোবাসা উচিত, আর যারা ঈমান এনেছে তারা আল্লাহকেই সর্বাধিক ভালবাসে”।
(সূরা আল বাকারা: ১৬৫)
“তুমি আল্লাহ ছাড়া কারোর কাছে দোয়া করবে না, যারা না তোমার কোন উপকার করতে পারে আর না পারে ক্ষতি করতে। যদি তুমি তা কর তাহলে তুমি যালেমদের মধ্যে গণ হবে”। (সূরা ইউনুস: ১০৬)
মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের হিফাজত করুন। আমীন।
২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৯
mamun বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। এসব আয়াত ওনারা পড়েও বুঝবে না। আল্লাহ ওনাদের অন্তরে মোহর মেরে দিয়েছেন।
৫| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:০২
নিভৃত পথচারী বলেছেন: @ উমর প্রকুত সত্য উপলদ্ধির জন্য ধন্যবাদ। সত্যিই আপনাদের অবস্থা দুঃখজনক রকম কঠিন। সত্যকে অস্বীকার করার প্রবণতা পরিত্যাগ করুন, দেখবেন জীবন কত সুন্দর আর দীন ইসলাম কত সহজ সাবলীল আর আকর্ষনীয়।
" হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যে ব্যক্তি কুরআন শরীফের মনগড়া তাফসীর করে, সে যেন তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।”
অন্য রেওয়াতে বর্ণিত আছে, “যে ব্যক্তি বিনা ইল্মে বা না জেনে কুরআন শরীফের ব্যাখ্যা করে, সেও যেন তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।” (তিরমিযী, মিশকাত, মিরকাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, উরফুশ্শজী, তালীক)
সুতরাং এরূপ মনগড়া তাফসীর বা ব্যাখ্যা করা সম্পূর্ণ হারাম। কারণ মনগড়া তাফসীর বা ব্যাখ্যার কারণে যেমন নিজে গোমরাহ্ হয়, তেমন অপরকেও গোমরাহ্ করে। যার ফলে সমাজে ফিৎনা বা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়, আর হওয়াটাই স্বাভাবিক। অথচ ফিৎনা সৃষ্টি করা কবীরা গুণাহ্র অন্তর্ভূক্ত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা জমিনে ফিৎনা সৃষ্টি করোনা।” (সূরা বাক্বারা ১২)
অন্য আয়াত শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “ফিৎনা হত্যার চেয়ে অধিক শক্ত গুণাহ্।” (সূরা বাক্বারা ১৯১)
অন্য আয়াত শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “ফিৎনা হত্যার চেয়ে অধিক বড় গুণাহ্।” (সূরা বাক্বারা ২১৭)
কাজেই সমাজে ফিৎনা সৃষ্টি হয়, এ ধরণের শরীয়ত বিরোধী কথা বলা প্রত্যেক মুসলমানের বিরত থাকা সমীচীন।"
রেফারেন্সঃ ব্লগার তুষারপাত।
আমার বক্তব্যে আমি যা বলেছি তা বিশুদ্ধ তাফসীরের (তাফসীরে মাযহারী) কথা আমার নিজস্ব কোন বক্তব্য নয়। কেন না পবিত্র কোরান শরীফের নিজস্ব মনগড়া অর্থ করার দুঃসাহস আমি কোনমতেই পোষণ করি না। তাইমিয়া পথভ্রষ্ট এ কথা সর্বজন স্বীকৃত আর তার তাফসীরও বেয়াদবী ও ধৃষ্টতাপূর্ণ।
আল্লাহ আপনাদের সহিহ্ বুঝ দিন ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জমিয়তের আকিদা মোতাবেক নিজ নিজ আকিদা দুরস্ত করার তৌফিক দান করুন।
২২ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:০৩
mamun বলেছেন: ভাই ব্যাখ্যাকে দলীল বানাবেন না। কারন কোরআনের ব্যাখা একমাত্র আল্লাহই দিবেন। আগে অর্থ বুঝেন তার পর ব্যাখ্যায় যাবেন। আর ব্যাখ্যা আমাদের মত মানুষ বিভিন্ন ভাবে দিয়ে থাকেন। তাই ব্যাখা সঠিক না ও হতে পারে। আর এই ব্যখ্যাই আমাদের ১২টা বাজিয়ে দিয়েছে। ইসলাম আজ খন্ড খন্ড হয়ে গেছে।
৬| ২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:০৭
উমর বলেছেন: @নিভৃতঃ আপনার সাথে যুক্তি তর্ক করার কোনই ইচ্ছা আমার নাই। বিভিন্ন বিশেষ জনের অনুসারী হয়ে যারা মুসলামানদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করেছে তাদের জন্য আল্লাহই যথেষ্ট।
৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৮:০৪
উমর বলেছেন: আসসালামু আলাইকুম ভাই মামুন,
কেমন আছেন?
২নং মন্তব্যে প্রেক্ষিতে আপনি যে জবাব দিয়েছেন, মাশাল্লাহ। মমতাজ, খুবই ভাল লেগেছে।
আল্লাহ আমাদের হিফাজত করুন। আমীন।
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৩০
mamun বলেছেন: এতো লেখার সময় পাই না। যদি পেতাম তাহলে এর জবাবে একটা বই রচনা করতাম। মাধ্যমের পক্ষে এবং বিপক্ষে অনেক বই ইনশাআল্লাহ আমার কালেকশনে আছে। পক্ষের বইগুলো অত্যন্ত দুর্বল এবং কোরআনের মাত্র একটা আয়াতই ওনাদের পুজি। বিপক্ষে রয়েছে অনেক হাদীস এবং কোরআনের প্রায় ২০ টা আয়াত। ওনারা যেটাকে পুজি করেছেন তা অপব্যখ্যা ছাড়া আর কিছু না।
ভাই বুঝেনইতো কোটি টাকার খেলা কেউ হাতছাড়া করতে চায় না।
অন্ধরা তাহা বোঝে না।
৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ৮:১২
নাজিম উদদীন বলেছেন: যাদের মাধ্যম দরকার তারা নিবে, যারা আপনার আমার মত বুজুর্গ লোক তাদের মাধ্যম দরকার নাই।
২৩ শে নভেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:৪৫
mamun বলেছেন: জি ভাই ঠিকই বলেছেন। পীর সাহেবদের চেয়ে রাসূল (সঃ) অনেক বড় মাধ্যম ছিল তবে তাহা ওনার জীবদ্দশায়। সাহাবীরা রাসূল (সঃ) এর দোয়াকে মাধ্যম করে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করত। তবে বিদায়ের পর রাসূলের চাচাকে মাধ্যম করে দোয়া করত। মৃত ব্যক্তির কোন মাধ্যম হয় না। সত্যি কথা বলতে কি পীর সাহেবরা কার মাধ্যম ধরবে এবং তাদের কি হবে তা আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। একটা সত্য ঘটনা বলিঃ
আমার স্যার (উনি একজন ব্লগার 'জুলভার্ন' নামে লিখেন) ক্যান্সারের রোগী। প্রথম যখন রোগটা ধরা পড়ল ওনার এক বন্ধু দেওয়ানবাগী পীর সাহেবের মুরীদ স্যারকে অনুরোধ করে পীর সাহেবের কাছে নিয়ে গেল। চল দোস্ত তোমার জন্য পীর বাবা আল্লাহর কাছে বলে দিলেই তুমি মুক্তি পাবে, বিশ্বাস না হয় একবার আমার সাথে চল। স্যার অতি ভক্তি করে ওনার সাথে গেলেন।
পীর সাহেবের সাথে ভাল সম্পর্ক থাকায় স্যারের বন্ধু একেবারে অন্দরমহলে ঢুকে গেলেন।
পীর সাহেব খালি গায়ে তেল মালিশ করছে।
সালাম দিয়ে সমস্যার কথা বুঝিযে বললেন স্যারের বন্ধু
পীর সাহেবঃ আচ্ছা ঠিক আছে এবার যখন আল্লাহর সাথে কথা হবে তোর কথা বলে দিব। ঐ যে দুরে আমার মেয়েকে দেখছিস? ও পাঁচবার আল্লাহর সাথে কথা বলেছে ! (মেয়েটা ছোট্ট ১০/১২ বছর বয়স হবে হয়তো)
আবার পীর সাহেবঃ তবে আল্লাহর কাছে বলব ঠিকই নজরানা লাগবে
স্যারঃ পকেটে হাত দিয়ে পঞ্চাশ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দিলেন
পীর সাহেবঃ একটু আশ্চার্য হয়ে; তোর সমস্যা অনেক বড় তাই নজরানাও লাগবে বড় মাপের, যা এই টাকা দিয়ে আমার একখানা বই কিনে নিয়ে যা, পড়লে বুঝতে পারবি।
স্যার বিষয়টা অনুধাবন করতে পেরে মনে মনে গালি দিয়ে বের হয়ে গেলেন।
ঘটনাটা একেবারেই সত্য। মুরীদ গণ বিশ্বাস করে যে দেওয়ানবাগী আল্লাহর সাথে কথা বলে! নাউযুবিল্লাহ !!!!
যারা অন্ধ তারাতো ওনাকে মাধ্যম বানাবেই, এতে অবাক হবার কি আছে! বরং ওদের কাছে আমরা বলতে পারি আল্লাহ নিজ মুখে আল কোরআনে বলেছেন অনেকবার- "মাধ্যম হিসাবে আমিই যথেষ্ট" ।
৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:৫৮
নিভৃত পথচারী বলেছেন: হাহাহাহাহাহহাহাহ.....যেমন শিক্ষক তেমনই তার ছাত্র...
পীরের কাছে ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য যাওয়া অতীব হাস্যকর চিন্তা ও নির্বোধ আচরণ। হক্কানী পীর মুর্শিদগণ আল্লাহর ওয়াস্তে এলমে মারেফৎ শিক্ষা দেন, আর মুরিদগণও কেবল আল্লাহর ওয়াস্তেই ইলমে মারেফৎ শিক্ষার জন্য তার কাছে যাবেন, এটাই বিধান।
আর যার যেমন উদ্দেশ্য আল্লাহ তাকে সেই গন্তব্যেই পৌছে দেন।
যে ব্যক্তি তাসাওফ (মারেফত) শিক্ষা করিয়া আমল করে, পক্ষান্তরে ফিকাহ্ (শরিয়ত) ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি জিন্দিক (কাফের) এবং যে ব্যক্তি ফিকাহ্ (শরিয়ত) আমল করে, পক্ষান্তরে তাসাওফ (মারেফত) ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি ফাসেক। কিন্তু যিনি উভয়ই শিক্ষা করিয়া আমল করেন তিনি-ই মুহাক্বিক্ব দ্বীন হাসিল করিয়াছে।
--ইমাম মালেক (রঃ)
বিবিধ জাগতিক বিদ্যা যথা প্রকৌশলবিদ্যা বা চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষা করার ক্ষেত্রে শিক্ষকের উসিলা ও মাধ্যম গ্রহণ করা ব্যতীত জ্ঞান অর্জনের কথা চিন্তাও করা যায় না। অথচ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দীন ইসলাম শিক্ষা করার জন্য উপযুক্ত পীর-মুর্শিদের মাধ্যম গ্রহণে শয়তানের গাত্রে অতীব প্রদাহের উদ্রেক হয়। এটি আল্লাহর ই বিধান।
প্রত্যেক স্মরনীয় সর্বজনগ্রাহ্য ইসলামিক ব্যক্তিত্বই উপযুক্ত পীর-মুর্শিদের নিকট বায়াত গ্রহণ করেছেন তরীকত শিক্ষা করার জন্য। স্বয়ং সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) গণ হুজুর পাক (সঃ) এর নিকট বায়াত গ্রহণ করেছেন এবং জবানী ও ক্বলবী উভয় প্রকার এলেম শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
হয়ত এ লেখা আপনার জন্য হেদায়েতের উসিলা হতে পারে, এ আশায় আলোচ্য প্রসংগের অবতারণা।
আল্লাহর নিকট মার্জনা কামনা করি জানিত অজানিত সকল গুনাহ হতে।
সরল মানুষকে বিভ্রান্ত কারীরা ধ্বংশ হোক।
সকল সত্য পথ অনুসারী ও অন্বেষীর প্রতি সালাম।
১০| ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ সকাল ৭:৩৮
সৈয়দ বলেছেন: মাধ্যম ও উসিলার ব্যপারে যা লিখেছেন আমার ক্ষুদ্রতম জ্ঞানে তার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি। লিংটি দেখেন।
Click This Link
১১| ০৪ ঠা জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:২২
সিটিজি৪বিডি বলেছেন: চলতে থাকুক....................... সারা বিশ্বে ইসলামের বানী ছড়িয়ে পড়ুক।
১২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৩:২৯
মোঃ হাসিবুল হাসান বলেছেন: আল্লাহ কে পাবার জন্য কি শেষ জামানায় অসিলা দরকার? যদি তাই হত তবে আল্লাহ নবুওাত কেনো বন্ধ করে দিলেন ভাই?
১৩| ২৮ শে মার্চ, ২০১১ বিকাল ৪:৪৭
আেনায়ার এইচ ভূইয়া বলেছেন: লেখক উদ্ধৃত করেছেন-- আমাদের মন্দ কৃতকর্ম, এবং আত্মার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আল্লাহর দরবারে আশ্রয় নিচ্ছি, আল্লাহ তা'আলা যাকে হিদায়াত করেন তাকে গোমরাহ করার কেউ নেই। আর যাকে গোমরাহ করেন তাকে হেদায়াত করার কেউ নেই।
---- তো তাহলে নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো ছাড়া করার আছেই বা কি?
১৪| ১৯ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১:৫৭
রাফাত নুর বলেছেন: তাইলে একটা বিষয় বুঝলাম না !!!!!! এই যে আমাদের দেশে বিভিন্ন কামেল ব্যক্তিরা এসেছেন (নাম উল্লেখ করলাম না বেয়াদবি হবে ভেবে) সিলেটে , চিটাগংয়ে এনাদের অনেক ঐশ্বরিক ক্ষমতার কথা সুনেছি তা কি সব মিথ্যা ?তারাও তো পীর ছিলেন এবং তাদের মুরিদ তো তাদের জীবিত অবস্থাই ছিলো !!! তারা কেনো মুরিদ বানাইছে ? আমার মনে অলি আউলিয়া দের নিয়া এমন মন্তব্য ঠিক নয় । কোন এতজন ভন্ড এর জন্য সকলকে দোষ দেয়া ঠিক নয়!!!!!!!!!
১৫| ১৯ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:০৫
মদন বলেছেন: নীচের দুটি আযাতই যথেষ্ট পীর থেকে দুরে থাকার জন্য-
আর যেদিন আমি তাদের সবাইকে সমবেত করব; আর যারা শেরক করত তাদেরকে বলবঃ তোমরা এবং তোমাদের শরীকরা নিজ নিজ জায়গায় দাঁড়িয়ে যাও-অতঃপর তাদেরকে পারস্পরিক বিচ্ছিন্ন করে দেব, তখন তাদের শরীকরা বলবে, তোমরা তো আমাদের উপাসনা-বন্দেগী করনি।
বস্তুতঃ আল্লাহ আমাদের ও তোমাদের মাঝে সাক্ষী হিসাবে যথেষ্ট। আমরা তোমাদের বন্দেগী সম্পর্কে জানতাম না।
সুরা ইউনুস ২৮-২৯
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে নভেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৪:১৬
ফুয়াদ০দিনহীন বলেছেন: একটী লেখা জেনারেল তো তাই কেঊ দেখবে নাক, তাই এখানে দিলাম ভবিষ্যতের পথে