নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাধবী

মাধবী

মাধবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুকুমার রায় ছড়াবলী - 02

১৭ ই মে, ২০০৬ ভোর ৬:০৪

সাবধান - সুকুমার রায়



আরে আরে, ওকি কর প্যালারাম বিশ্বাস?

ফোঁস্ ফোঁস্ অত জোরে ফেলোনাকো নিশ্বাস।

জানোনা কি সে বছর ওপাড়ার ভূতোনাথ,

নিশ্বাস নিতে গিয়ে হয়েছিল কুপোকাৎ?

হাঁপ ছাড় হঁ্যাস্ফ্যাঁস্ ও রকম হাঁ করে_

মুখে যদি ঢুকে বসে পোকা মাছি মাকড়ে?

বিপিনের খুড়ো হয় বুড়ো সেই হল' রায়,

মাছি খেয়ে পাঁচ মাস ভুগেছিল কলেরায়।

তাই বলি_সাবধান! ক'রোনাকো ধুপ্ধাপ্,

টিপি টিপি পায় পায় চলে যাও চুপ্ চাপ্।

চেয়োনাকো আগে পিছে, যেয়োনাকো ডাইনে

সাবধানে বাঁচে লোকে , _এই লেখে আইনে।

পড়েছ ত কথা মালা ? কে যেন সে কি করে

পথে যেতে পড়ে গেল পাতকো'র ভিতরে ?

ভালো কথা _ আর যেন সকালে কি দুপুরে ,

নেয়োনাকো কোনো দিন ঘোষেদের পুকুরে,

এরকম মোটা দেহে কি যে হবে কোন্ দিন,

কথাটাকে ভেবে দেখ কি রকম সঙ্গিন!

চটো কেন? হয় নয় কে বা জানে পষ্ট,

যদি কিছু হ'য়ে পড়ে পাবে শেষে কষ্ট।

মিছিমিছি ঘ্যান্ ঘ্যান্ কেন কর তক্ক?

শিখেছ জ্যাঠামো খালি, ইঁচরেতে পক্ক ,

মানবে না কোন কথা চলা ফেরা আহারে ,

একদিন টের পাবে ঠেলা কয় কাহারে ।

রমেশের মেঝ মামা সেও ছিল সেয়না,

যত বলি ভালো কথা কানে কিছু নেয়না

শেষকালে একদিন চানি্নর বাজারে

প'ড়ে গেল গাড়ি চাপা রাস্তার মাঝারে!

মন্তব্য ৩৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩৭) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: নাচন -সুকুমার রায়

নাচ্ছি মোরা মনের সাধে গাচ্ছি তেড়ে গান
হুলো মেনি যে যার গলায় কালোয়াতীর তান।
নাচ্চি দেখে চাঁদা মামা হাসছে ভরে গাল
চোখটি ঠেরে ঠাট্টা করে, দেখনা বুড়ার চাল।

২| ১৭ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: সাহস -সুকুমার রায়

পুলিশ দেখে ডরাইনে আর, পালাইনে আর ভয়ে,
আরশুলা কি ফড়িং এলে থাকতে পারি সয়ে।
আধাঁর ঘরে ঢুকতে পারি এই সাহসের গুণে,
আর করে না বুক দুর্ দুর্ জুজুর নামটি শুনে।
রাত্তিরেতে একলা শুয়ে তাও ত থাকি কত,
মেঘ ডাকলে চেঁচাইনেকো আহাম্মুকের মত।
মামার বাড়ির কুকুর দুটোর বাঘের মত চোখ,
তাদের আমি খাবার খাওয়াই এমনি আমার রোখ্!
এম্নি আরো নানান দিকে সাহস আমার খেলে
সবাই বলে "খুব বাহাদুর" কিংবা "সাবাস ছেলে"।
কিন্তু তবু শীতকালেতে সকালবেলায় হেন
ঠান্ডা জলে নাইতে হ'লে কান্না আসে কেন?
সাহস টাহস সব যে তখন কোনখানে যায় উড়ে_
ষাড়ের মতন কন্ঠ ছেড়ে চেঁচাই বিকট সুরে!

৩| ১৭ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: ছুটি -সুকুমার রায়

ছুটি! ছুটি! ছুটি!
মনের খুশি রয়না মনে হেসেই লুটোপুটি।
ঘুচল এবার পড়ার তাড়া অঙ্ক কাটাকুটি
দেখ্ব না আর পন্ডিতের ঐ রক্ত অাঁখি দুটি।
আর যাব না স্কুলের পানে নিত্য গুটি গুটি
এখন থেকে কেবল খেলা কেবল ছুটোছুটি।
পাড়ার লোকের ঘুম ছুটিয়ে আয়রে সবাই জুটি
গ্রীষ্মকালের দুপুর রোদে গাছের ডালে উঠি
আয়রে সবাই হল্লা ক'রে হরেক মজা লুটি
একদিন নয় দুই দিন নয় দুই দুই মাস ছুটি।

৪| ১৭ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: ভারি মজা -সুকুমার রায়

এই নেয়েছ, ভাত খেয়েছ, ঘন্টাখানেক হবে_
আবার কেন হঠাৎ হেন নামলে এখন টবে?
একলা ঘরে ফুর্তি ভরে লুকিয়ে দুপুরবেলা,
স্নানের ছলে ঠান্ডা জলে জল ছপ্ছপ্ খেলা ।
জল ছিটিয়ে, টব পিটিয়ে, ভাবছ, আমোদ ভারি_
কেউ কাছে নাই, যা খুশি তাই করতে এখন পারি"।
চুপ্ চুপ্ চুপ্_ ঐ দুপ্ দুপ্! ঐ জেগেছে মাসি,
আসছে ধেয়ে, শুনতে পেয়ে দুষ্ট মেয়ের হাসি।

৫| ১৭ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: বড়াই -সুকুমার রায়

গাছের গোড়ায় গর্ত করে ব্যাং বেঁধেছেন বাসা,
মনের সুখে গাল ফুলিয়ে গান ধরেছেন খাসা।
রাজার হাতি হাওদা -পিঠে হেলে দুলে আসে_
বাপরে ব'লে ব্যাং বাবাজি গর্তে ঢোকেন ত্রাসে!
রাজার হাতি মেজাজ ভারি হাজার রকম চাল ;
হঠাৎ রেগে মটাং করে ভাঙল গাছের ডাল।
গাছের মাথায় চড়াই পাখি অবাক হ'য়ে কয়_
বাসরে বাস! হাতির গায়ে এমন জোরও হয়!
মুখ বাড়িয়ে ব্যাং বলে, ভাই তাইত তোরে বলি_
"আমরা, অথর্াৎ চার-পেয়েরা, এম্নি ভাবেই চলি"

৬| ১৭ ই মে, ২০০৬ দুপুর ১২:০৫

মাধবী বলেছেন: লক্ষ্মী -সুকুমার রায়

হাত -পা- ভাঙ্গা নোংরা পুতুল মুখটি ধুলোয় মাখা,
গাল দুটি তার খাবলা মতন চোখ দুটি তার ফাঁকা_
কোথায় বা তার চুল বিনুনি, কোথায় বা তার মাথা,
আধখানি তার ছিন্ন জামা,গায় দিয়েছে কাঁথা।
পুতুলের মা ব্যস্ত কেবল তার সেবাতেই রত,
খাওয়ান শোয়ান আদর করেন ঘুম ডেকে দেন কত।
বলতে গেলাম "বিশ্রী পুতুল" অমনি বলেন রেগে _
"লক্ষ্মী পুতুল জ্বর হয়েছে তাইত এখন জেগে।"
দ্বিগুন জোরে চাপড়ে দিল "আয় আয় আয়" ব'লে_
নোংরা পুতুল লক্ষ্মী হ'য়ে পড়ল ঘুমে ঢুলে!

৭| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: সাবধান -সুকুমার রায়

আরে আরে, ওকি কর প্যালারাম বিশ্বাস?
ফোঁস্ ফোঁস্ অত জোরে ফেলোনাকো নিশ্বাস।
জানোনা কি সে বছর ওপাড়ার ভূতোনাথ,
নিশ্বাস নিতে গিয়ে হয়েছিল কুপোকাৎ?
হাঁপ ছাড় হঁ্যাস্ফ্যাঁস্ ও রকম হাঁ করে_
মুখে যদি ঢুকে বসে পোকা মাছি মাকড়ে?
বিপিনের খুড়ো হয় বুড়ো সেই হল' রায়,
মাছি খেয়ে পাঁচ মাস ভুগেছিল কলেরায়।
তাই বলি_সাবধান! ক'রোনাকো ধুপ্ধাপ্,
টিপি টিপি পায় পায় চলে যাও চুপ্ চাপ্।
চেয়োনাকো আগে পিছে, যেয়োনাকো ডাইনে
সাবধানে বাঁচে লোকে , _এই লেখে আইনে।
পড়েছ ত কথা মালা ? কে যেন সে কি করে
পথে যেতে পড়ে গেল পাতকো'র ভিতরে ?
ভালো কথা _ আর যেন সকালে কি দুপুরে ,
নেয়োনাকো কোনো দিন ঘোষেদের পুকুরে,
এরকম মোটা দেহে কি যে হবে কোন্ দিন,
কথাটাকে ভেবে দেখ কি রকম সঙ্গিন!
চটো কেন? হয় নয় কে বা জানে পষ্ট,
যদি কিছু হ'য়ে পড়ে পাবে শেষে কষ্ট।
মিছিমিছি ঘ্যান্ ঘ্যান্ কেন কর তক্ক?
শিখেছ জ্যাঠামো খালি, ইঁচরেতে পক্ক ,
মানবে না কোন কথা চলা ফেরা আহারে ,
একদিন টের পাবে ঠেলা কয় কাহারে ।
রমেশের মেঝ মামা সেও ছিল সেয়না,
যত বলি ভালো কথা কানে কিছু নেয়না
শেষকালে একদিন চানি্নর বাজারে
প'ড়ে গেল গাড়ি চাপা রাস্তার মাঝারে!

৮| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: বোম্বাগড়ের রাজা -সুকুমার রায়

কেউ কি জান সদাই কেন বোম্বাগড়ের রাজা_
ছবির ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখে আমসত্ত্ব ভাজা?
রানীর মাথায় অষ্টপ্রহর কেন বালিশ বাঁধা?
পাঁউরুটিতে পেরেক ঠোকে কেন রানীর দাদা?
কেন সেথায় সর্দি হলে ডিগবাজি খায় লোকে?
জোছ্না রাতে সবাই কেন আলতা মাথায় চোখে?
ওস্তাদেরা লেপ মুড়ি দেয় কেন মাথায় ঘাড়ে?
টাকের পরে পন্ডিতেরা ডাকের টিকিট মারে।
রাত্রে কেন ট্যাঁক্ঘড়িটা ডুবিয়ে রাখে ঘিয়ে।
কেন রাজার বিছ্না পাতে শিরীষ কাগজ দিয়ে?
সভায় কেন চেঁচায় রাজা "হুক্কা হুয়া" বলে?
মন্ত্রী কেন কলসী বাজায় বসে রাজার কোলে?
সিংহাসনে ঝোলায় কেন ভাঙা বোতল শিশি?
কুমড়ো নিয়ে ক্রিকেট খেলে কেন রাজার পিসী?
রাজার খুড়ো নাচেন কেন হুঁকোর মালা পরে?
এমন কেন ঘটছে তা কেউ বলতে পার মোরে?

৯| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: বুঝিয়ে বলা -সুকুমার রায়

ও শ্যামাদাস ! আয় ত দেখি ব'স্ তো দেখি এখেনে,
সেই কথাটা বুঝিয়ে দেব পাঁচ মিনিটে দেখে নে।
জ্বর হয়েছে? মিথ্যে কথা! ওসব তোদের চালাকি_
এই যে বাবা চেঁচাচ্ছিলে, শুনতে পাইনি? কালা কি?
মামার ব্যামো? বদ্যি ডাকবি? ডাকিস না হয় বিকেলে;
না হয় আমি বাৎলে দেব বাঁচ্বে মামা কি খেলে।
আজকে তোকে সেই কথাটা বোঝাবই বোঝাব_
না বুঝবি ত মগজে তোর গজাল মেরে গোঁজাব।
কোন্ কথাটা? তাও ভুলেছিস্? ছেড়ে দিছিস্ হাওয়াতে?
কি বলছিলেম পরশু রাতে বিষ্টু বোসের দাওয়াতে?
ভুলিস্নি ত বেশ করেছিস, আবার শুনলে িেত কি?
বড় যে তুই পালিয়ে বেড়াস্, মাড়াসনে যে এদিক্ই!
বলছি দাঁড়া, ব্যস্ত কেন? বোস্ তাহলে নিচুতেই_
আজকালের এই ছোক্রা গুলোর তর্ সয় না কিছুতেই।
আবার দেখ! বসলি কেন? বই গুলো আন্ নামিয়ে_
তুই থাক্তে মুটের বোঝা বইতে যাব আমি এ?
সাবধানে আন ,ধরছি দাড়া _ সেই আমাকেই ঘামালি _
এই খেয়েছে! কোন্ আক্কেলে শব্দকোষটা নামালি?
ঢের হয়েছে! আয় দেখি তুই বোস্ ত দেখি এদিকে_
ওরে গোপাল ,গোটা কয়েক পান দিতে বল্ খেঁদিকে।
বলছিলাম কি, বস্তুপিন্ড সূক্ষ্ম হতে স্থূলেতে,
অথর্াৎ কিনা লাগছে ঠেলা পঞ্চভূতের মূলেতে_
গোড়ায় তবে দেখ্তে হবে কোত্থেকে আর কি ক'রে,
রস জমে এই প্রপঞ্চময় বিশ্বতরুর শিকড়ে।
অথর্াৎ কিনা, এই মনে কর্ রোদ পড়েছে ঘাসেতে,
এই মনে কর্, চাঁদের আলো পড়লো তারি পাশেতে_
আবার দেখ! এরই মধ্যে হাই তোলবার মানে কি?
আকাশ পানে তাকাস্ খালি, যাচ্ছে কথা কানে কি?
কি বলি্ল তুই? এ সব শুধু আবোল তাবোল বকুনি?
বুঝতে হলে মগজ লাগে, ব'লেছিলাম তখুনি।
মগজভরা গোবর তোদের হচ্ছে ঘুঁটে শুকিয়ে,
যায় কি দেওয়া কোন কথা তার ভিতরে ঢুকিয়ে?
ও শ্যামাদাস ! উঠলি কেন? কেবল যে চাস্ পালাতে!
না শুনবি ত মিথ্যে সবাই আসিস্ কেন জ্বালাতে?
তত্ত্বকথা যায় না কানে যতই মরি চেঁচিয়ে _
ইচ্ছে করে ডান্পিটেদের কান মলে দি পেঁচিয়ে।

১০| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: নোট বই -সুকুমার রায়

এই দেখ পেনসিল্ নোটবুক এ হাতে,
এই দেখ ভরা সব কিল্বিল লেখাতে।
ভালো কথা শুনি যেই চট্ পট্ লিখি তায়_
ফড়িঙেরে ক'টা ঠ্যাং, আরশুলা কি কি খায়।
আঙুলেতে আঠা দিলে কেন লাগে চট্চট্,
কাতুকুতু দিলে গরু কেন করে ছট্ফট্ ।
দেখে শিখে প'ড়ে শুনে ব'সে মাথা ঘামিয়ে
নিজে নিজে আগাগোড়া লিখে গেছি আমি এ।
কান করে কট্ কট্ ফোড়া করে টন্ টন্ _
ওরে রামা ছুটে আয়, নিয়ে আয় লন্ঠন।
কাল থেকে মনে মোর লেগে আছে খট্কা
ঝোলাগুড় কিসে দেয়? সাবান না পট্কা?
এই বেলা প্রশ্নটা লিখে রাখি গুছিয়ে
জবাবটা জেনে নেব মেজদাকে খুচিয়ে।
পেট কেন কাম্ড়ায় বল দেখি পার কে?
বল দেখি ঝাঁজ কেন? জোয়ানের আরকে?
তেজপাতে তেজ কেন? ঝাল কেন লঙ্কায়?
নাক কেন ডাকে আর পিলে কেন চমকায়?
কার নাম দুন্দুভি? কাকে বলে অরনি?
বলবে কি, তোমারা ও নোটবই পড়নি।

১১| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: হুলোর গান -সুকুমার রায়

বিদ্ঘুটে রাত্তিরে ঘুটেঘুটে ফাঁকা,
গাছপালা মিশ্ মিশে মখমলে ঢাকা।
জটবাঁধা ঝুল্ কালো বটগাছতলে,
ধক ধক জোনাকির চকমকি জ্বলে
চুপ্চাপ্ চারিদিকে ঝোপঝাড় গুলো।
আয় ভাই গান গাই আয় ভাই হুলো।

গীত গাই কানে কানে চীৎকার ক'রে,
কোন গানে মন ভেজে শোন্ বলি তোরে_
পুবদিকে মাঝ রাতে ছোপ্ দিয়ে রাঙা।
রাতকানা চাঁদ ওঠে আধখানা ভাঙা।
চট ক'রে মনে পড়ে মটকার কাছে
মালপোয়া আধখানা কাল থেকে আছে;

দুড়্ দুড়্ ছুটে যাই দূর থেকে দেখি
প্রাণপণে ঠোঁট চাটে কানকাটা নেকী!
গালফোলা মুখে তার মালপোয়া ঠাসা
ধুক ক'রে নিভে গেলে বুকভরা আশা;
মন বলে আর কেন সংসারে থাকি
বিলকুল্ সব দেখি ভেল্কির ফাঁকি।

সব যেন বিচ্ছিরি সব যেন খালি,
গিন্নীর মুখ যেন চিম্নির কালি।
মন ভাঙা দুখ্ মোর কন্ঠেতে পুরে
গান গাই আয় ভাই প্রাণফাটা সুরে।

১২| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: গন্ধ বিচার -সুকুমার রায়

সিংহাসনে বস্ল রাজা বাজল কাঁসর ঘন্টা,
ছট্ফটিয়ে উঠল কেঁপে মন্ত্রীবুড়োর মনটা।
বললে রাজা, "মন্ত্রী, তোমার জামায় কেন গন্ধ?"
মন্ত্রী বলে, এসেন্স দিছি_ গন্ধ ত নয় মন্দ।
রাজা বলেন মন্দ ভালো দেখুক শুঁকে বদ্যি,"
বদ্যি বলে, আমার নাকে বেজায় হল সর্দি।
রাজা হাঁকেন , "বোলাও তবে -রাম নারায়ণ পাত্র।
পাত্র বলে, নস্যি নিলাম এনি এইমাত্র_
নস্যি দিয়ে বন্ধ যে নাক, গন্ধ কোথায় ঢুকবে?
রাজা বলেন, "কোটাল তবে এগিয়ে এস শুক্বে।
কোটাল বলে, পান খেয়েছি মশলা তাহে কপর্ূর,
গন্ধে তারি মুন্ড আমার এক্কেবারে ভরপুর।
রাজা বলেন,আসুক তবে শের পালোয়ান ভীমসিং,
ভমি বলে "আজ কচ্ছে আমার সমস্ত গা ঝিম্ ঝিম্
রাত্রে আমার বোখার হল, বলছি হুজুর ঠিক বাৎ"_
ব'লেই শুল রাজসভাতে চু বুজে চিৎপাত।
রাজার শালা চন্দ্রেকেতু তারেই ধ'রে শেষটা
বল্ল রাজা, তুমিই না হয় কর না ভাই চেষ্টা।
চন্দ্র বলেন, "মারতে চাও ত ডাকাও নাকো জল্লাদ,
গন্ধ শুকে মর্তে হবে এ আবার কি আহাদ?
ছিল হাজির বৃদ্ধ নাজির বয়সটি তার নব্বই,
ভাব্ল মনে, ভয় কেন আর একদিন তো মরবই_"
সাহস করে বল্লে বুড়ো মিথ্যে সবাই বকছিস,
শুকতে পারি হুকুম পেলে এবং পেলে বক্শিস,
রাজা বলেন, হাজার টাকা ইনাম পাবে সদ্য,
তাই না শুনে উৎসাহতে উঠ্ল বুড়ো মদ্দ।
জামার পরে নাক ঠেকিয়ে _ শুক্ল কত গন্ধ,
রইল অটল, দেখ্ল লোকে বিস্ময়ে বাক্ বন্ধ।
রাজ্য হল জয় জয়কার বাজ্ল কাঁসর ঢক্কা,
বাপ্রে কি তেজ বুড়োর হাড়ে, পায় না সে যে অক্কা!

১৩| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: কহ ভাই কহ রে -সুকুমার রায়

কহ ভাই কহ রে, অ্যাঁকা চোরা শহরে,
বদ্যিরা কেন কেউ আলুভাতে খায় না?
লেখা আছে কাগজে আলু খেলে মগজে
ঘিলু যায় ভেস্তিয়ে বুদ্ধি গজায় না।

১৪| ১৮ ই মে, ২০০৬ সকাল ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: ট্যাঁশ গরু -সুকুমার রায়

ট্যাঁশ্ গরু নয়, আসলেতে পাখি সে;
যার খুশি দেখে এস হারুদের আফিসে।
চোখ দুটি ঢুলু ঢুলু, মুখখান মস্ত,
ফিট্ফাট্ কালোচুলে টেরিকাটা চোস্ত।
তিন_বাঁকা শিং তার ল্যাজখানি প্যাঁচান_
একটুকু ছোঁও যদি, বাপরে কি চ্যাঁচান!
লট্খটে হাড়গোড় খট্খট্ ন'ড়ে যায়,
ধম্কালে ল্যাগ্ব্যাগ্ চমকিয়ে প'ড়ে যায়।
বর্ণিতে রূপ গুণ সাধ্য কি কবিতার,
চেহারার কি বাহার _ ঐ দেখ ছবি তার।
ট্যাঁশ্ গরু খাবি খায় ঠ্যাস্ দিয়ে দেয়ালে,
মাঝে মাঝে কেঁদে ফেলে না জানি কি খেয়ালে ;
মাঝে মাঝে তেড়ে ওঠে, মাঝে মাঝে রেগে যায়,
মাঝে মাঝে কুপোকাৎ দাঁতে দাঁত লেগে যায়।

খায় না সে দানাপানি _ ঘাস পাতা বিচালি
খায় না সে ছোলা ছাতু ময়দা কি পিঠালি;
রুচি নাই আমিষেতে, রুচি নাই পায়েসে
সাবানের সুপ আর মোমবাতি খায় সে।
আর কিছু খেলে তার কাশি ওঠে খক্খক্,
সারা গায়ে ঘিন্ ঘিন্ ঠ্যাং কাঁপে ঠক্ ঠক
একদিন খেয়েছিল ন্যাকড়ার ফালি সে_
তিন মাস আধমরা শুয়েছিল বালিশে।
কারো যদি শখ্ থাকে টঁ্যাশ গরু কিন্তে,
সস্তায় দিতে পারি,দেখ ভেবে চিন্তে।

১৫| ১৮ ই মে, ২০০৬ বিকাল ৫:০৫

মাধবী বলেছেন: কাতুকুতু বুড়ো -সুকুমার রায়

আর যেখানে যাও না রে ভাই সপ্তসাগর পার,
কাতুকুতু বুড়োর কাছে যেও না খবরদার!
সর্বনেশে বৃদ্ধ সে ভাই যেও না তার বাড়ি_
কাতুকুতুর কুল্পি খেয়ে ছিঁড়বে পেটের নাড়ি।
কোথায় বাড়ি কেউ জানে না, কোন সড়কের মোড়ে,
একলা পেলে জোর করে ভাই গল্প শোনায় পড়ে।
বিদ্ঘুটে তার গল্পগুলো না জানি কোন্ দেশী,
শুনলে পরে হাসির চেয়ে কান্না আসে বেশী।
না আছে তার মুন্ডু মাথা, না আছে তার মানে,
তবুও তোমায় হাসতে হবে তাকিয়ে বুড়োর পানে।
কেবল যদি গল্প বলে তাও থাকা যায় সয়ে,
গায়ের উপর সুড়সুড়ি দেয় লম্বা পালক লয়ে।
কেবল বলে, " হোঃ হোঃ হোঃ, কেষ্টদাসের পিসি_
বেচ্ত খালি কুমড়ো কচু হাঁসের ডিম আর তিসি।
ডিমগুলো সব লম্বা মতন, কুমড়োগুলো বাঁকা,
কচুর গায়ে রঙ-বেরঙের আলপনা সব আঁকা।
অষ্ট প্রহর গাইত পিসি আওয়াজ ক'রে মিহি,
ম্যাও ম্যাও ম্যাও বাকুম বাকুম ভৌ ভৌ ভৌ চীহি।"
এই না বলে কুটুৎ করে চিমটি কাটে ঘাড়ে,
খ্যাংরা মতন আঙুল দিয়ে খোঁচায় পাঁজর হাড়ে।
তোমায় দিয়ে সুড়সুড়ি সে আপনি লুটোপুটি,
যতণ না হাসবে তোমার কিচ্ছুতে নাই ছুটি।

১৬| ১৮ ই মে, ২০০৬ বিকাল ৫:০৫

মাধবী বলেছেন: বিজ্ঞান শিক্ষা - সুকুমার রায়

আয় তোর মুন্ডুটা দেখি, আয় দেখি 'ফুটোস্কোপ' দিয়ে,
দেখি কত ভেজালের মেকি আছে তোর মগজের ঘিয়ে।
কোন্ দিকে বুদ্ধিটা খোলে, কোন্ দিকে থেকে যায় চাপা;
কতখানি ভস্ ভস্ ঘিলু, কত খানি ঠক্ ঠকে কাপাঁ।
মন তোর কোন্ দেশে থাকে, কেন তুই ভুলে যাস ্ কথা_
আয় দেখি কোন্ ফাঁক দিয়ে, মগজেতে ফুটো তোর কোথা।
টোল_ খাওয়া ছাতাপড়া মাথা, ফাটামত মনে হয় যেন,
আয় দেখি বিশ্লেষ ক'রে_ চোপ রও ভয় পাস কেন ?
কাৎ হয়ে কান ধ'রে দাঁড়া, জিভখানা উল্টিয়ে দেখা,
ভালো ক'রে বুঝে শুনে দেখি_ বিজ্ঞানে যে রকম লেখা।
মুন্ডুতে ম্যাগনেট ফেলে, বাশঁ দিয়ে 'রিফেকট' করে ,
ইট দিয়ে ভেলসিটি ক'ষে, দেখি মাথা ঘোরে কি না ঘোরে।

১৭| ১৮ ই মে, ২০০৬ বিকাল ৫:০৫

মাধবী বলেছেন: মাসি গো মাসি -সুকুমার রায়

মাসি গো মাসি পাচ্ছে হাসি
নিম গাছেতে হচ্ছে শিম্_
হাতীর মাথায় ব্যাঙের ছাতা
কাগের বাসায় বগের ডিম্

১৮| ১৮ ই মে, ২০০৬ বিকাল ৫:০৫

মাধবী বলেছেন: বলব কি ভাই -সুকুমার রায়

ব্ল্ব কি ভাই হুগ্লি গেলুম
বলছি তোমায় চুপি চুপি_
দেখ্তে পেলাম তিনটে শুয়োর
মাথায় তাদের নেইকো টুপি্

১৯| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্

ছুট্ছে মোটর ঘটর্ ঘটর্ ছুট্ছে গাড়ী জুড়ি;
ছুট্ছে লোকে নানান্ ঝোকে করছে হুড়োহুড়ি ;
ছুট্ছে কত ক্ষ্যাপার মত পড়্ছে কত চাপা_
সাহেব মেম থম্কে থেমে বলছে "মামা! পাপা!"
আমরা তবু তবলা ঠুকে গাচ্ছি কেমন তেড়ে।
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
বষর্াকালের বৃষ্টিবাদল রাস্তা জুড়ে কাদা,
ঠান্ডা রাতে সর্দিবাতে মরবি কেন দাদা?
হোক্ না সকাল হোক্ না বিকেল হোক্ না দুপুর বেলা,
থাক না তোমার আফিস যাওয়া থাক্ না কাজের ঠেলা-
এই দেখ না চাদঁ্নি রাতের গান এনেছি কেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্ ! দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
মুখ্যু যারা হচেছ সারা পড়্ছে ব'সে একা ,
কেউ বা দেখ কাঁচুর মাচুর কেউ বা ভ্যাবাচ্যাকা;
কেউ বা ভেবে হদ্দ হল ,মুখটি যেন কালি ;
কেউ বা বসে বোকার মত মুন্ডু নাড়ে খালি।
তার চেয়ে ভাই, ভাবনা ভুলে গাও না গলা ছেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্ !দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"
বেজার হয়ে যে যার মত কর্ছ সময় নষ্ট_
হাট্ছ কত খাট্ছ কত পাচছ কত কষ্ট!
আসল কথা বুঝছ না যে, করছ না যে চিন্তা,
শুনছ না যে গানের মাঝে তব্লা বাজে ধিনতা?
পাল্লা ধরে গায়ের জোরে গিট্কিরি দাও ঝেড়ে,
"দাঁড়ে দাঁড়ে দ্রুম্ !দেড়ে দেড়ে দেড়ে!"

২০| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: গল্প বলা -সুকুমার রায়

"এক যে রাজা" _"থাম না দাদা,
রাজা নয় সে, রাজ পেয়াদা।"
"তার যে মাতুল"- "মাতুল কি সে?
সবাই জানে সে তার পিসে"
"তার ছিল এক ছাগল ছানা"-
"ছাগলের কি গজায় ডানা?"
"একদিন তার ছাতের পরে"।
"ছাত কোথা হে টিনের ঘরে?"
"বাগানের এক উড়ে মালী"
"মালি নয় ত? মেহের আলী"_
"মনের সাধে গাইছে বেহাগ"_
"বেহাগ তো নয় ? বসন্ত রাগ।"
"থোও না বাপু ঘ্যাচা ঘেচি"_
"আচছা বল চুপ করেছি।
"এমন সময় বিছানা ছেড়ে
হঠাৎ মামা আসল তেড়ে,
ধরল সে তার ঝুটির গোড়া"_
"কোথায় ঝুটি ? টাক যে ভরা।"
ুহোক না টেকো, তোর তাতে কি?
লক্ষ্মীছাড়া মুখু্য ঢেঁকি।
ধরব ঠেসে টুটির পরে,
পিট্ব তোমার মুন্ডু ধরে_
কথার উপর কেবল কথা,
এখন বাপু পালাও কোথা?"

২১| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: ডানপিটে - সুকুমার রায়

বাপ্রে কি ডানপিটে ছেলে!-
কোন দিন ফাঁসি যাবে নয় যাবে জেলে।
একটা সে ভুত সেজে আঠা মেখে মুখে,
ঠাঁই ঠাই শিশি ভাঙে শ্লেট দিয়ে ঠুকে।
অন্যটা হামা দিয়ে আলমারি চড়ে,
খাট থেকে রাগে ক'রে দুম্দাম্ পড়ে।

বাপরে কি ডানপিটে ছেলে!_
শিলনোড়া খেতে চায় দুধভাত ফেলে!
একটার দাঁত নেই, জিভ দিয়ে ঘষে,
একমনে মোমবাতি দেশলাই চোষে!
আরজন ঘরময় নীল কালি গুলে,
কপ্ কপ্ মাছি ধরে মুখে দেয় তুলে!

বাপরে কি ডানপিটে ছেলে!
খুন হ'ত টম্ চাচা ওই রুটি খেলে!
সন্দেহে শুঁকে বুড়ো মুখে নাহি তোলে,
রেগে তাই দুই ভাই ফোঁস্ ফোসঁ্ ফোলে!
নেড়াচুল খাড়া হয়ে রাঙা হয় রাগে,
বাপ্ বাপ্ ব'লে চাচা লাফ দিয়ে ভাগে।

২২| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: নারদ! নারদ! -সুকুমার রায়

"হ্যাঁরে হ্যাঁরে তুই নাকি কাল, সাদাকে বলছিলি লাল?

(আর) সেদিন নাকি রাত্রি জুড়ে, নাক ডেকেছিস্ বিশ্রী সুরে?
(আর) তোদের পোষা বেড়ালগুলো, শুন্ছি নাকি বেজায় হুলো?
(আর) এই যে শুনি তোদের বাড়ি, কেউ নাকি রাখে না দাড়ি?
ক্যান্ রে ব্যাটা ইসটুপিড? ঠেঙিয়ে তোরে করব ঢিট্!"
"চোপরাও তুম্ স্পিকটি নট্, মার্ব রেগে পটাপট্_
ফের যদি ট্যারাবি চোখ, কিম্বা আবার কর্বি রোখ,
কিম্বা যদি অম্নি ক'রে, মিথ্যেমিথ্যি চ্যাঁচাস জোরে_
আই ডোন্ট কেয়ার্ কানাকড়ি_, জানিস্ আমি স্যান্ডো করি?"
"ফের লাফাচ্ছিস্! অল্রাইট্, কামেন্ ফাই্ট ! কামেন্ ফাইট!"
"ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখনি, টেরটা পাবে আজ এখনি!
আজকে যদি থাক্ত মামা, পিটিয়ে তোমায় করত ধামা।"
"আরে! আরে! মার্বি নাকি? দাঁড়া একটা পুলিশ ডাকি!"
"হাঁহাঁহাঁহাঁ! রাগ করো না, করতে চাও কি তাই বল না!"
"হাঁ হাঁ তাতো সত্যি বটেই, আমি তো চটিনি মোটেই!
মিথ্যে কেন লড়তে যাবি? ভেরি- ভেরি সরি মশলা খাবি?"
"শেক্হ্যান্ড আর দাদা বল, সব শোধ বোধ ঘরে চল।"
"ডোন্ট পরোয়া অল্ রাইট্, হাউ ডু য়ু ডু গুড্ নাইট।"

২৩| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: ফস্কে গেল -সুকুমার রায়

দেখ বাবাজি দেখবি নাকি দেখ্রে খেলা দেখ চালাকি,
ভোজের বাজি ভেল্কি ফাঁকি পড়্ পড়্ পড়্ পড়বি পাখি - ধপ!
লাফ দিয়ে তাই তালটি ঠুকে তাক করে যাই তীর ধনুকে,
ছাড়ব সটান উধর্্বমুখে হুশ করে তোর লাগবে বুকে - খপ!
গুড় গুড় গুড় গুড়িয়ে হামা খাপ্ পেতেছেন গোষ্ঠ মামা
এগিয়ে আছেন বাগিয়ে ধামা এইবার বাণ চিড়িয়া নামা_চট্!
ঐ যা! গেল ফস্কে ফেঁসে _ হেই মামা তুই পেলি শেষে?
ঘ্যাচঁ করে তোর পাঁজর ঘেঁষে লাগ্ল কি বাণ ছটকে এসে _ফট?

২৪| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: ভয় পেয়ো না -সুকুমার রায়

ভয় পেয়ো না, ভয় পেয়ো না, তোমায় আমি মারব না-
সত্যি বলছি কুস্তি করে তোমার সঙ্গে পারব না।
মন্টা আমার বড্ড নরম, হাড়ে আমার রাগ্টি নেই,
তোমায় আমি চিবিয়ে খাব এমন আমার সাধ্যি নেই!
মাথায় আমার শিং দেখে ভাই ভয় পেয়েছ কতই না-
জানো না মোর মাথার ব্যারাম, কাউকে আমি গুঁতোই না?
এস এস গর্তে এস, বাস করে যাও চারটি দিন,
আদর ক'রে শিকেয়ে তুলে রাখব তোমায় রাত্রি দিন।
হাতে আমার মুগুর আছে তাই কি হেথায় থাক্বে না?
মুগুর আমার হাল্কা এমন মারলে তোমায় লাগবে না।
অভয় দিচ্ছি শুন্ছে না যে? ধরব নাকি ঠ্যাং দুটা?
বসলে তোমার মুন্ডু চেপে বুঝবে তখন কান্ডটা!
আমি আছি গিনি্ন আছেন, আছে আমার নয় ছেলে_
সবাই মিলে কাম্ড়ে দেব মিথ্যে অমন ভয় পেলে।

২৫| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

এই আমি মীরা বলেছেন: আপনি দেখি সুকুমার রায়ের ফ্যান বনে গেলেন!

২৬| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: আহ্লাদী -সুকুমার রায়

হাসছি মোরা হাসছি দেখ,হাসছি মোরা আহ্লাদী,
তিন জনেতে জট্লা ক'রে ফোক্লা হাসির পাল্লা দি।
হাসতে হাসতে আসছে দাদা ,আসছি আমি,আসছে ভাই,
হাসছি কেন কেউ জানে না, পাচ্ছে হাসি হাসছি তাই।
ভাবছি মনে, হাসছি কেন? থাকব হাসি ত্যাগ করে ,
ভাবতে গিয়ে ফিকফিকিয়ে ফেলছি হেসে ফ্যাক ক'রে ।
পাচ্ছে হাসি চাপতে গিয়ে ,পাচেছ হাসি চোখ বুজে,
পাচ্ছে হাসি চিমটি কেটে নাকের ভিতর নোখ গুজে।
হাসছি দেখে চাঁদের কলা জোলার মাকু জেলের দাঁড়
নৌকা ফানুস পিপড়ে মানুষ রেলের গাড়ী তেলের ভাঁড়।
পড়তে গিয়ে ফেলছি হেসে 'ক খ গ' আর শ্লেট দেখে-
উঠছে হাসি ভস্ভসিয়ে সোডার মতন পেট থেকে।

২৭| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ৯:০৫

মাধবী বলেছেন: কত বড় -সুকুমার রায়

ছোট্ট সে এশর্যতি ইঁদুরের ছানা,
ফোটে নাই চোখ তার, একেবারে কানা।
ভাঙা এক দেরাজের ঝুলমাখা কোণে
মার বুকে শুয়ে শুয়ে মার কথা শোনে।
যেই তার চোখ ফোটে সেই দেখে চেয়ে_
দেরাজের ভারি কাঠ চারিদিক ছেয়ে।
চেয়ে বলে মেলি তার গোল গোল অাঁখি_
"ওরে বাবা! পৃথিবীটা এত বড় নাকি?

২৮| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: হাত গণনা -সুকুমার রায়

ও পাড়ার নন্দ গোঁসাই, আমাদের নন্দ খুড়ো,
স্বভাবেতে সরল সোজা অমায়িক শান্ত বুড়ো।
ছিল না তার অসুখ বিসুক, ছিল সে যে মনের সুখে,
দেখা যেত সদাই তারে হুঁকোহাতে হাস্যমুখে।
হঠাৎ কি তার খেয়াল হ'ল চল্ল সে তার হাত দেখাতে_
ফিরে এল শুকনো সরু, ঠকাঠক্ কাঁপছে দাঁতে
শুধালে সে কয় না কথা, আকাশেতে রয় সে চেয়ে,
মাঝে মাঝে শিউরে ওঠে, পড়ে জল চক্ষু বেয়ে।
শুনে লোকে দৌড়ে এল, ছুটে এলেন বদ্যিমশাই,
সবাই বলে, "কাঁদছ কেন? কি হয়েছে নন্দ গোঁসাই?"
খুড়ো বলে, "বলব কি আর হাতে আমার স্পষ্ট লেখা
আমার ঘাড়ে আছেন শনি, ফাঁড়ায় ভরা আয়ুর রেখা।
এতদিন যায়নি জানা ফির্ছি কত গ্রহের ফেরে_
হঠাৎ আমার প্রাণটা গেলে তখন আমায় রাখ্বে কে রে?
ষাটটা বছর পার হয়েছি বাপদাদাদের পুণ্যফলে_
ওরে তোদের নন্দ খুড়ো এবার বুঝি পটোল তোলে।
কবে যে কি ঘট্বে বিপদ কিছু হায় যায় না বলা"_
এই ব'লে সে উঠলো কেঁদে ছেড়ে ভীষণ উচ্চ গলা।
দেখে এলাম আজ সকালে গিয়ে ওদের পাড়ার মুখো,
বুড়ো আছে নেই, কো হাসি, হাতে তার নেই কো হুঁকো।

২৯| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

এই আমি মীরা বলেছেন: এইযে মাধবী,
এত্য বড় হয়েও কেন
বুঝলেনা সবই?
রাগটা আমার নেই
তুমি দেখি ব্যাকডেটেড
পাস্টে আছ সেই!

৩০| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: শোন শোন গল্প শোন -সুকুমার রায়

শোন শোন গল্প শোন, 'এক যে ছিল গুরু'
এই আমার গল্প হল শুরু।
'যদু আর বংশীধর যমজ ভাই তারা'_
এই আমার গল্প হল সারা।

৩১| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

এই আমি মীরা বলেছেন: এইযে মাধবী,
এত্য বড় হয়েও কেন
বুঝলেনা সবই?
রাগটা আমার নেই
তুমি দেখি ব্যাকডেটেড
পাস্টে আছ সেই!
কম্প যদি না পেতাম,
তোমার ব্লগে কাব্য পড়ে
কমেন্ট রেখে যেতাম?

৩২| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: ভুতুড়ে খেলা - সুকুমার রায়

পরশু রাতে পষ্ট চোখে দেখনু বিনা চশমাতে,
পান্তভুতের জ্যান্ত ছানা করছে খেলা জোছ্নাতে।
কচ্ছে খেলা মায়ের কোলে হাত পা নেড়ে উল্লাসে,
অহ্লাদেতে ধুপ্ধুপিয়ে কচ্ছে কেমন হল্লা সে।
শুন্তে পেলাম ভুতের মায়ের মুচ্কি হাসি কট্কটে_
দেখছে নেড়ে ঝুণ্টি ধ'রে বাচ্চা কেমন চট্পটে।
উঠছে তাদের হাসির হানা কাষ্ঠ সুরে ডাক্ ছেড়ে,
খ্যাঁশ খ্যাঁশানি শব্দে যেমন করাৎ দিয়ে কাঠ চেরে!
যেমন খুশি মার্ছে ঘুঁষি দিচ্ছে কষে কানমলা,
আদর ক'রে আছাড় মেরে শুন্যে ঝোলে চ্যাং দোলা।
বল্ছে আবার, "আয়রে আমার নোংরামুখো সুঁট্কো রে,
দেখ্ না ফিরে প্যাখ্না ধরে হুতোম-হাসি মুখ ক'রে !
ওরে আমার বাঁদর নাচন আদর গেলা কোঁৎকা রে!
অন্ধবনের গন্ধ-গোকুল, ওরে আমার হোঁৎকা রে!
ওরে আমার বাদলা রোদে জষ্ঠি মাসের বিষ্টিরে।
ওরে আমার হামান ছেচা যষ্টিমধুর মিষ্টিরে।
ওরে আমার রান্না হাঁড়ির কান্না হাসির ফোড়নদার,
ওরে আমার জোছনা হাওয়ার স্বপ্নঘোড়ার চড়নদার।
ওরে আমার গোব্রাগণেশ ময়দাঠাসা নাদুসরে,
ছিঁচকাঁদুনে ফোক্লা মানিক ফের যদি তুই কাঁদিস্রে" _
এই না ব'লে যেই মেরেছে কাদার চাপটি ফট্ করে,
কোথায় বা কি ভূতের ফাঁকি - মিলিয়ে গেল চট্ ক'রে!

৩৩| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: কাঁদুনে -সুকুমার রায়

ছিঁচ্ কাঁদুনে মিচকে যারা শস্তা কেঁদে নাম কেনে,
ঘ্যাঙায় শুধু ঘ্যানর্ ঘ্যানর্ ঘ্যান্ঘ্যানে আর প্যান্প্যানে_
কুঁকিয়ে কাঁদে খিদের সময়, ফুঁপিয়ে কাঁদে ধম্কালে,
কিম্বা হঠাৎ লাগলে ব্যথা, কিম্বা ভয়ে চমকালে;
অল্পে হাসে অল্পে কাঁদে কান্না থামায় অল্পেতেই ,
মায়ের আদর দুধের বোতল কিম্বা দিদির গল্পেতেই_
তারেই বলি মিথ্যে কাঁদন; আসল কান্না শুন্বে কে?
অবাক হবে থম্কে রবে সেই কাঁদনের গুণ দেখে!
নন্দঘোষের পাশের বাড়ী বুথ্ সাহেবের বাচ্চাটার
কান্না খানা শুনলে বলি কান্না বটে সাচ্চা তার ।
কাঁদ্বে না সে যখন তখন, রাখ্বে কেবল রাগ পুষে,
কাঁদ্বে যখন খেয়াল হবে খুন-কাঁদুনে রাুসে!
নাইক কারণ নাইক বিচার মাঝরাতে কি ভোরবেলা,
হঠাৎ শুনি অর্থবিহিন আকাশ-ফাটন জোর গলা।
হাঁক্ড়ে ছোটে কান্না, যেমন জোয়ার বেগে নদীর বান,
বাপ মা বসেন হতাশ হয়ে, শব্দ শুনে বধির কান।
বাস্রে সে কি লোহার গলা? এক মিনিটও শান্তি নেই?
কাঁদন ঝরে শ্রাবণ ধারে, ান্ত দেবার নামটি নেই!
ঝুম্ ঝুমি দাও, পুতুল নাচাও, মিষ্টি খাওয়াও একশোবার,
বাতাস কর, চাপড়ে ধর , ফুটবে নাকো হাস্য তার।
কান্নাভরে উল্টে পড়ে কান্না ঝরে নাক দিয়ে,
গিল্তে চাহে দালানবাড়ী হাঁ খানি তার হাঁক্ দিয়ে।
ভুত- ভাগান শব্দে লোকে ত্রাহি ত্রাহি ডাক ছাড়ে_
কান্নাশুনে ধন্যি বলি বুথ্ সাহেবের বাচ্চারে।

৩৪| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: আকাশের গায়ে -সুকুমার রায়

আকাশের গায়ে কিবা রামধনু খেলে,
দেখে চেয়ে কত লোক সব কাজ ফেলে;
তাই দেখে খুঁৎ-ধরা বুড়ো কয় চটে,
দেখছ কি, এই রং পাকা নয় মোটে

৩৫| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: ঢপ ঢপ ঢাক ঢোল -সুকুমার রায়

ঢপ্ ঢপ্ ঢাক ঢোল ভপ্ ভপ্ বাঁশি
ঝন্ ঝন্ করতাল্ ঠন্ ঠন্ কাঁসি।
ধুমধাম বাপ্ বাপ্ ভয়ে ভ্যাবাচ্যাকা
বাবুদের ছেলেটার দাঁত গেছে দেখা

৩৬| ২৪ শে মে, ২০০৬ রাত ১০:০৫

মাধবী বলেছেন: পাকাপাকি -সুকুমার রায়

আম পাকে বৈশাখে, কুল পাকে ফাগুনে,
কাঁচা ইট পাকা হয় পোড়ালে তা আগুনে।
রোদে জলে টিকে রঙ পাকা কই তাহারে।
ফলারটি পাকা হয় লুচি দই আহারে।
হাত পাকে লিখে লিখে, চুল পাকে বয়সে,
জ্যাঠামিতে পাকা ছেলে বেশি কথা কয় সে।
লোকে কয় কাঁঠাল সে পাকে নাকি কিলিয়ে?
বুদ্ধি পাকিয়ে তোলে লেখাপড়া গিলিয়ে!
কান পাকে ফোড়া পাকে, পেকে করে টন্টন্_
কথা যার পাকা নয়, কাজে তার ঠ্ন ঠন্
রাঁধুনী বসিয়া পাকে পাক দেয় হাঁড়িতে,
সজোরে পাকালে চোখ ছেলে কাঁদে বাড়িতে।
পাকায়ে পাকায়ে দড়ি টান হয়ে থাকে সে।
দুহাতে পাকালে গোফঁ তবু নাহি পাকে সে।

৩৭| ০৬ ই জুন, ২০০৬ দুপুর ১২:০৬

অতিথি বলেছেন: দারুণ কালেকশন। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.