নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পৃথিবীটাতে কিছু করতে চাই আমি। কিছু করার জন্যই আমার জন্ম। পৃথিবীটাকে একটা উপহার দিতে চাই আমি।

মাহাথির আহমেদ তুষার

১৫

মাহাথির আহমেদ তুষার › বিস্তারিত পোস্টঃ

লালদিঘীর রহস্য। আমার জীবনের প্রথম ব্লগে লেখা গল্প।

১৩ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:১৭

এক ডিসেম্বরের শেষের
দিক। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই
যোগ ব্যায়াম করার অভ্যাস ফয়েজ
আর তনয়ের। একজন শুধুই দাঁড়িয়ে
থাকে। আরেকজন শুয়ে শুয়ে শবাসন
করতে থাকে। যদি ও ফয়েজের সন্দেহ
আরাম প্রিয় তনয় শবাসন করতে
গিয়ে প্রায় সময় ঘুমিয়ে পড়ে। তবে
এখনো সেটা বুঝতে দেয়নি
ফয়েজকে। এই নিয়ে দুইজনের খুনসুটির
শেষ নেই।
এই
কয়দিনে দুইজনের বেশ নাম ডাক
হয়েছে। যদিও গোয়েন্দা হিসেবে
নাকি ভ্রমণকারী হিসেবে সেটা
এখনো নিজেরাই টের পাচ্ছেনা।
শুধু টের পাচ্ছে টেলিভিশন আর
পত্রিকার পাতায় পাতায় শুধুই
তাদের অভিজানের বর্ণনা। এটা
নিয়ে পড়াশোনাতে সামান্যতম
চাপ টের পায়নি ওরা। শুধু রাস্তায়
বের হলেই লোকজন ওদের দিকে
তাকিয়ে থাকে। কেউ কেউ বলে-
তোমাদের কোথায় যেন দেখেছি…
কিন্তু ঠাহর করতে পারছিনা…
ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্যায়াম করতে
করতে ফয়েজ হাঁটা শুরু করেছে ঘর
জুড়ে। আর তনয়ের সামান্য একটু চোখ
লেগে এসেছিল এমন সময় দরজায়
কলিং বেলটা পাখির আওয়াজ তুলে
চিৎকার করে জানান দিল বাইরে
কেউ একজন এসেছে। তনয়ের মা
চিৎকার করে বলল- “তনয় দেখতো
বাবা কে এসেছে?” তনয় আসলেই
ঘুমিয়ে গেছিল। হঠাৎ করে শব্দটা
শুনেই ঝটকা খেয়ে উঠে দৌড় দিল
দরজার দিকে। কিন্তু ওদিকে ফয়েজ
অন্য ঘর থেকে শব্দ শুনে দৌড়
দিয়েছিল টের পায়নি তনয়। দরজার
কাছে এসেই দুইজনে ধাক্কা ধাক্কি
করে কে কার আগে খুলবে সেটা
নিয়েই কিছুক্ষণ মিছেমিছি ঝগড়া
করে শেষে আরেকবার কলিং
বেলের শব্দ হতেই দুইজনেই একসাথে
ঝট করে খুলে দেখল বাইরে মধ্য
বয়সের এক লোক দাঁড়িয়ে আছে
গেটের সামনে। সুন্দর নিপাট চুল আর
লম্বা একটা গোঁফ। চোখে রিমলেস
চশমা। হাতে একটা স্যুটকেস। পায়ে
বেশ দামী জুতা। ওদের দুইজনের
হাসি হাসি মুখ ভোঁতা করে দিয়ে
লোকটা বললো-“এখানে কি ফয়েজ
তনয় থাকে?” লোকটার সাথে
পরিচিতি পর্ব শেষ করে উনাকে
একটা বেতের চেয়ারে বসতে দিল
তনয়। ফয়েজের দুষ্টামি ছুটে গেছে
বেশ আগেই। এখন মুখ গম্ভীর করে
লোকটার সামনে এসে বসেছে। তনয়ও
খানিক পড়েই উনার সামনে এসে
ফয়েজের পাশে বসল। ফয়েজ বেশ
আগ্রহ সহকারে বলল- “বলুন- কি করতে
পারি আমরা?” গলা খাকড়ি দিয়ে
তিনি নড়ে চড়ে বসলেন। তারপর কি
মনে করে একটা জরদার কৌটা বের
করে খানিকটা জরদা মুখে চালান
করে দিয়ে তিনি শুরু করলেন- “আমি
রহমান সিকদার মারুফ- থাকি উত্তর
বাড্ডা। সেখানে আমার নিজের
বাড়ি আছে। বাপ দাদার নিজের
সম্পত্তি। তাই পেশা সেই সব
সম্পত্তি দেখা শোনা করা। আমি
এসেছি আমার একটা সমস্যা নিয়ে।
আমি আসলে টেলিভিশনে
তোমাদের দেখে জেনে শুনে তবেই
এসেছি। দুঃখিত তুমি করে বলার
জন্য”। “না না কোন সমস্যা নাই-
আপনি বলেন” মুখের কথা কেড়ে
নিয়ে বলল তনয়। ফয়েজ বলল- “আমরা
আপনার সমস্যার সমাধান করতে
পারব কি , না জানিনা- তবে
চেষ্টা করব”। “জি আসলে সমস্যার
মুলে একটা কাঁচের বোতল। অনেক
পুরোনো একটা বোতল। এককালে
আমার পরদাদা সমুদ্রে মাছের
ব্যবসা করতেন। সেই সময় সাগরে মাছ
ধরতে গিয়ে দাদার এক জেলে তার
জালে এই বোতল খুঁজে পায়। উনার
কাছে নিয়ে আসে সে এটা। দাদা
এটাকে কোন গুরুত্বই দেননি। কালে
কালে এটা আমার দাদা- বাবা –
আমি সবাই খেলনা হিসেবে
ব্যবহার করেছি। আমরা দুই ভাই
ছিলাম। বড় ভাই সাদাত বছর কয়েক
আগে হার্ট এটাকে মৃত্যু বরণ করেছেন।
বোতলটা পুরু কাঁচের ছিল। মুখ ছিল
কাঁচ গলিয়ে সিল করা। আমরা আসলে
কেউই খুব একটা আগ্রহ বোধ করিনি
বোতলটা নিয়ে। কত ছোড়াছুড়ি
করেছি। এদিক সেদিক ফেলেছি। কত
বার পানিতে ডুবিয়েছি। কিন্তু
ভেতরে কি ছিল সেটা নিয়ে কোন
আগ্রহই আমার ছিল না। এমন কি
আমাদের বংশের কারোই ছিলনা।
শুধু একমাত্র আমার বড় ভাইয়ের
ছেলে রাতুল ছাড়া। সে অনেক
পরিশ্রম করে বোতলটার মুখ খুলে
ফেলে। আমরা কেউ খেয়াল না
করলেও ঘোলা কাঁচের ভেতর সে
একটা ছোট কাগজ আবিষ্কার করে।
এবং সে এই কাগজটা বের করে নেয়।
কাগজটা ছিল একটা নকশা। কিছু
একটা আঁকা ছিল সেখানে। আমি
আসলে বুঝতে পারিনি। রাতুল
আমাকে দেখায়। এবং দেখানোর
পরদিনই সে গায়েব হয়ে যায়। আমি
ধারণা করছি সে কোন একটা গুপ্তধন
কিংবা এই জাতীয় কিছু একটার
খোঁজে চলে গেছে। আসলে আমি খুব
একটা ঠাহর করতে পারিনি
নকশাটা। তবে আমার সেক্রেটারি
বুদ্ধি করে নকশাটার একটা জেরক্স
কপি করিয়ে রেখেছিল। এই নিন
সেটা”- বলেই পকেট থেকে বের
করলেন একটা ফটোকপি করা কাগজ-
আর তাতে হিজিবিজি কি সব আঁকা
আছে। খানিক পড়েই আরেক পকেট
থেকে বোতলটা বের করে বাড়িয়ে
দিলেন ফয়েজের দিকে। তনয় বেশ
চিন্তিত ভঙ্গিতে বলল- “আপনি
পুলিশে খবর দেন নি? কিংবা রাতুল
আপনাকে কোন খবর দেয়নি?
মোবাইলে কোন কল- কিংবা ফোন-
চিঠি এই সব?” সাথে সাথে মাথা
নেড়ে মারুফ সাহেব বললেন- “আসলে
আমি চাইনি রাতুলের অন্তর্ধানের
ঘটনা জানাজানি হোক- কারণ
আমাদের পরিবার বেশ সম্ভ্রান্ত
পরিবার। কোন দিন আমাদের
বাড়ির ত্রি সীমানায় পুলিশের
টিকি দেখা যায় নি। তাই আমি
এইবার একেবারেই চেপে গেছি। আর
আপনাদের কাছে এসেছি। আর
যেদিন হারিয়ে যায় সে তারপর
দিন আমাদের বাড়ির অনেক দিনের
পুরোনো কাজের লোককে জানায়
যে সে চট্টগ্রাম আছে। তারপর আর
কোন যোগাযোগ করেনি সে। এই
পর্যন্ত চার দিন পেরিয়ে গেছে
কোন খোঁজ খবর নেই। এখন আমার এই
সমস্যাটার সমাধান আপনারা
করতেন…” “আসলে আমরা কতটুকু কি
করব বুঝতে পারছিনা” বলল তনয়-
“তবে চেষ্টা করবো”। মনে মনে তনয়
বেশ প্রফুল্ল হয়ে উঠেছে। সবে মাত্র
কলেজের ক্লাস টেস্ট শেষ হয়েছে।
সামনে দুই সপ্তাহ লম্বা বন্ধ। এর
মাঝে একটা কেস হঠাৎ করে পেয়ে
গিয়ে বেশ মজাই হল বলতে গেলে।
একেবারে সোনায় সোহাগা। তনয়
খেয়াল করলে দেখতে পেতো ফয়েজ
তনয়ের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি
হাসছে। ওর মনেও একই চিন্তা খেলা
করছে যে…। দুই সেদিন সন্ধ্যা
বেলা ফয়েজ আর তনয় বসে আছে
মারুফ সাহেবদের বাড়ির ড্রয়িং
রুমে। বিশাল এক ডুপ্লেক্স সেটা।
আভিজাত্যের ছোঁয়া লেগে আছে
পুরো বাড়ি জুড়ে। ঢুকতেই একটা
বাঁকানো সিড়ি চলে গেছে ছাদের
দিকে। সেখান থেকে দেখা যায়
কে এসেছে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে ফয়েজ
আর তনয় বসে আছে সেখানে। অবশ্য
অন্য কোথাও হলে তনয়ের হাপ ধরে
যেত। কিন্তু পুরো বাড়ির ড্রয়িং
রুমটাই যেন একটা চলমান সিনেমা।
এখানে সেখানে ঝুলছে দামী
দামী সব স্পট লাইট। বিশাল দুটো
বাঘের মাথা সহকারে ছাল
ঝোলানো দুই দেয়ালে। তার দুই
পাশে দুটো বিশাল বিশাল
পেইন্টিং। তাতে সিলিং ফ্লাস
লাইট। যেন পুরো বাড়িটা
সিনেমার সেট। বেশ কিছুক্ষণ পর
মারুফ সাহেব আসলেন। তিনি
সরাসরি নিয়ে গেলেন রাতুলের
ঘরে। দোতলায় রাতুলের ঘরটাতে
ঢুকেই ওরা দেখল রাতুল ছেলেটা
একেবারেই ওদের মতই। ফয়েজের মত
পপস্টারদের ছবি দিয়ে পুরো ঘর
সাটানো। ঘরের এখানে সেখানে
পড়ে আছে এয়ারকুল পোয়ারো আর
ফেলুদা’র সব বই। বই আর বিভিন্ন
ক্যাসেট এ ভর্তি একটা দেয়াল।
সেখানে কোন অসামঞ্জস্যতা নেই।
পুরো ঘরটা বার দুইয়েক খুঁজে শেষে
ক্ষ্যান্ত দিল ওরা। সেদিনের মত
খোঁজা খুঁজি শেষ করে বাসায় চলে
এল ওরা। বাসায় আসার পথে ফয়েজ
খানিকটা চিন্তিত হয়ে গেল। তনয়
বেশ খোশ মেজাজে ছিল। মারুফ
সাহেবের বাসায় দেয়া চিকেন
কাটলেট খেয়ে বার বার তৃপ্তির
ঢেকুর তুলছে সে। ফয়েজকে চিন্তিত
দেখে কি হয়েছে জিজ্ঞেস করতেই
ফয়েজ একটা শব্দই উচ্চারণ করল- “আ
জার্নি টু চিটাগাং”। সাথে সাথে
চোখ দুটো চকচক করে উঠল তনয়ের।
এটাই যেন সে শুনতে চাইছিল প্রাণ
প্রিয় বন্ধুর কাছে। তিন সেদিন
রাতেই তুরনা নিশিথায় চেপে
দুইজনেই রওনা হল চট্টগ্রামের পথে।
পথে তেমন কিছুই ঘটেনি। চিন্তিত
ফয়েজ রবীন্দ্র সমগ্র পড়ে
কাটিয়েছে। আর তনয় প্রতিবারের
মত ঘুমিয়েই পথ পাড় করল। এর মাঝে
সাধারণ কথা বার্তা ছাড়া ওদের
মাঝে তেমন কোন কথাই হয়নি।
সকাল হতেই স্টেশনের কাছেই একটা
হোটেল এ উঠল ওরা। চট্টগ্রাম শহরটা
অনেক সুন্দর। পথের দুই ধারে সারি
সারি গাছ। আর ফুটপাথ একেবারেই
পরিষ্কার। কোন ময়লা আবর্জনা
নেই। যেন লন্ডন কিংবা প্যারিসের
বুলেভারড। সকাল বেলা জার্নির
ধকল পেরিয়ে দুইজনেই রেডি হয়ে
রওনা দিল –গন্তব্য লালদীঘির পাড়।
লাল দীঘির পাড়ে রিক্সা থেকে
নেমে দুইজনেই লোহার গেট
পেরিয়ে ঢুকে পড়ল। ভেতরে নাম না
জানা সব বিশাল বিশাল গাছ।
দীঘির এক পাড়ে সুবিশাল লাল
দীঘি জামে মসজিদ। যদিও শুক্রবার
ছাড়া এখানে খুব কম মানুষই
জমায়েত হয়। তবুও কিছু মানুষ আছে
স্থানীয় যারা নিয়মিত নামাজ
পড়ার জন্য আসে এখানে। সেখানে
গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ দীঘির পুরো
এলাকাটা ঘুরে ঘুরে দেখল ফয়েজ
তনয়। এরপর মসজিদের ইমাম
সাহেবকে জিজ্ঞেস করল রাতুল
নামের কোন ছেলেকে এখানে
দেখেছে কি ,না। উনি না বোধক
উত্তর দেবার পর দুইজনে আবার
দিঘীর পুরো এলাকাটা ঘুরে ঘুরে
দেখতে শুরু করল। দীঘির উত্তর পাশে
এক বিশাল সাইনবোর্ড দেখল
দুইজনেই। সেখানে লেখা আছে এই
দীঘির প্রাক্তন মালিক রায়
বাহাদুর এর কথা। আর সেখানেই
হঠাৎ করে কিছু একটাতে হোচট খেল
তনয়। কিসে হোচট খেয়েছে পরখ করে
দেখতে গিয়েই দেখল একটা উচু মত
জিনিস উঠে আছে সেখানে।
সামান্য চাড় দিতেই বের হয়ে এল
একটা কাঁচের বোতল। দেখতে হুবহু
মারুফ সাহেবের সেই শিশির মত।
শুধু এটাতে সিল করা মুখ আছে। আর
ভেতরে কিছুই দেখা যাচ্ছেনা
ঘোলা কাঁচের জন্য। এটা পাবার
পরেই দুইজনে চলে এল হোটেলে।
ফয়েজের মতে ওদের কাজ
মোটামুটি শেষ। চার বোতলটা
বেশ কিছুক্ষণ নেড়েছেড়ে দেখে
কোন কুল কিনারা পেল না তনয়।
ভেতরে কি থাকতে পারে? ফয়েজ
বসেছে মারুফ সাহেবের দেয়া সেই
ম্যাপ নিয়ে। ম্যাপে কিছুই তেমন
বোঝা যাচ্ছে না। মনে হচ্ছে কিছু
একটা নেই এই ম্যাপে। এদিকে তনয়
একটা এন্টিকাটার বের করে কাটতে
শুরু করে দিয়েছে বোতলটা। ফয়েজ
খেয়াল করেনি ব্যপারটা। হঠাৎ
তনয়ের মুখের শব্দ শুনে তাকিয়ে
দেখে তনয়ের হাতে আরেকটা
কাগজ। বেশ পুরনো। কাগজটা দেখেই
আগের ফটোকপি কাগজটা বের করে
এটার সাথে জুড়ে দেবার ভঙ্গি করল
ফয়েজ। আর সাথে সাথে বের হয়ে
আসল জিনিস। এটা সেই আগের
ম্যাপের পরের অংশ। এটা ছিলনা
বলেই আগের ম্যাপটাকে অসমাপ্ত
বলে মনে হচ্ছিল। ম্যাপটা বেশ
কাঁচা হাতেই আঁকা। বিভিন্ন
স্থানে বেশ ছোট ছোট অক্ষরে কিসব
যেন লেখা। একটা বিশাল পুকুর আঁকা।
এরপরে আরো অনেক কিছু আঁকা। আর
আঁকা বেশ কিছু গোলাপ ফুল।
লেখাগুলোর দিকে তনয় তাকিয়ে
আছে। এমন সময় হঠাৎ কি মনে করে
নিজের চশমাটা চোখ থেকে খুলে
চোখের সামনে ধরল তনয়। আর প্লাস
পয়েন্টের চশমার কাঁচ দিয়ে
ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস এর মত করে
পরিষ্কার বড় করে দেখতে পেল
সবকিছু। নতুন পাওয়া ম্যাপের
নিচের দিকে গোলাপ ফুল গুলোর উপর
কাঁচ ধরতেই দেখল সেখানে খুব ছোট
ছোট করে কিছু একটা লেখা। তনয়
খাতা নিয়ে সেই লেখা দেখে
দেখে লিখতে শুরু করল। লেখাটা
শেষ হবার পর পড়তে শুরু করল তনয়।
লেখাটা এমন- “অলি গলি ঘুরিয়া
আইলাম শহর পাহাড়তলি সেইখান
হইতে গেলাম আমি গোলাপ ফুলের
কলি রেল ডাকিছে ঝিকির ঝিকির
–ঘুম যে গেল ছুটে সদর বাড়ি গেলেই
সবাই কেন মাথা কুটে???” কবিতার
লাইন গুলো পড়ে তনয় বেশ বোকার
মত হয়ে গেল। লাইন গুলোর মাঝে
কোন মিল নেই। ফুলের কলিতে
কিভাবে মানুষ যেতে পারে
সেটাই ভাবছে তনয়। “পাহাড়
তলিতে কেউ একজন গেছে ফুলের কলি
আনতে”- বলল ফয়েজ। চিন্তিত তনয়
মাথা নেড়ে বলল-“কিন্তু এখানে
শব্দটা আছে তো- “সেইখান হইতে
গেলাম আমি গোলাপ ফুলের কলি”।
“আমি শুনেছি পাহাড়তলি শহরটা
শহর হিসেবে পরিচিত হয়েছে বছর
বিশেক আগে। এর আগে এখানে জঙ্গল
ছিল। বাঘ যাতায়াত করতো এখানে।
এখানের একটা এলাকার নাম আছে
টাইগার পাস। এখান দিয়েই মাত্র
ত্রিশ বছর আগেও বাঘের দেখা
পাওয়া যেত। এখন সেখানে
রাস্তাঘাট হয়েছে। তবে সেখানে
কিভাবে গোলাপ ফুলের কলি
আনতে গেল কেউ একজন বুঝলাম না”
নাখোশ বদনে বলল ফয়েজ। তনয়
আবার কাগজটা নিয়ে বলল “আচ্ছা
তারপরের ছন্দটা হল- রেল ডাকিছে
ঝিকির ঝিকির –ঘুম যে গেল ছুটে
সদর বাড়ি গেলেই সবাই কেন মাথা
কুটে??? –শেষ করে আবার তিনটা
প্রশ্ন বোধক দেয়া হয়েছে। এটা কি
তিন গোয়েন্দা নাকি?” বলেই
হেসে ফেলল তনয়। “এখানে গোলাপ
ফুলে কলি বলতে কি বুঝিয়েছেন
লেখক? পাহাড়তলিতে কি কোন
বিশাল গোলাপ বাগান আছে?
নাকি কোন গোলাপ ফুলের
স্কাল্পচার আছে ঢাকার শাপলা
চত্তরের মত? নাকি এটা কোন
বাড়ির নাম?” ফয়েজ মোবাইলটা
বের করে ডায়াল করল কোন এক
নাম্বারে। কিছুক্ষণ রিং হবার পর
ওপাশ থেকে কেউ একজন রিসিভ করল।
তনয় ওপাশের কথা গুলো শুনতে
পাচ্ছেনা। শুধু ফয়েজের কন্ঠ শুনছে-
“হ্যালো- গুলজার চাচা-আসসালাম
ওয়ালাইকুম- কেমন আছেন?” ওপাশ
থেকে নিশ্চয় সালামের প্রতিউত্তর
পেল ফয়েজ। তারপর সে বলল- “চাচা
আমরা আজকে আসতে চাইছি একটু”
“………” “ঠিক আছে চাচা- আমরা
আসছি” বলেই ফোন কেটে দিল
ফয়েজ। তারপর খুশিতে চোখ দুটো চক
চক করে উঠল ফয়েজের। এদিকে তনয় ও
অনেকক্ষণ পর কুল কিনারা খুঁজে পেল।
এবার একটা গতি হবেই- চিন্তা
করতে করতে দুইজনেই বেরিয়ে গেল
কাপড় চোপড় পড়ে। চলবে…

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.