![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৫
জানালার পাশেই বসে আছি।
.
ধাতব শার্শি গুলোয় জং ধরে
গেছে, তাই এগুলোতে হাত না
ধরাই সমীচীন বোধ করছি।
একদৃষ্টিতে মুখ ঘোমরা করা
আকাশটার দিকে তাকিয়ে
থাকতে থাকতে হঠাৎ ই যেন
একটা সময়ের কথা মনে পড়ে
গেলো।
এ সেই সময়, যখন আমি আকাশে
সদাসর্বদা রংধনু দেখতাম। যখন,
মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির কর্তা,
সূর্য ছিলো আমার বন্ধু, পরম বন্ধু।
যখন, পুরো পৃথিবী ছিলো আমার
আনন্দ ও সৌখিনতার মহল।
আজও মনেপড়ে সেইদিনগুলোর
কথা,
ঘরের সামনের আম গাছটার
নিচে ভাঙা নীল মোড়াটায়
বসে দিব্যি নরম মাটি দিয়ে
খেলতাম।
পুতুল বানাতে বেশ চেষ্টায়
থাকতাম। কিন্তু, এর অবয়বটা
ফোটানোই আমার পক্ষে বড়
কঠিন ছিলো। বরাবরই বিফল
হতাম। কেউ যখন আমার কাছ
দিয়ে যেতো, তখনই এসব লুকিয়ে
ফেলতাম, পাছে ওদের
উপহাসের বস্তু হয়ে দাঁড়াই।
আজও মনে পড়ে সেই সকালটার
কথা, যখন মায়ের হাতে দুটো
দুধমাখা ভাত খেয়েই বেরিয়ে
পড়তাম।
ঘর থেকে বের হতেই
নাচড়াবান্দা সূর্যটাও যেন
আমার চোখে মুখে একটু বেশীই
আলো ঢেলে দিতো। সেই আলো
সয়ে যেতে বেশ অনেক্ষণ লেগে
যেতো। তার
পরপরই আসতো আমার ভাইটি।
এসেই ওর কাঁধে তুলে নিতো
আমাকে। তুলে আধো আধো করে
কি যেন বলতো। আমি ঠিক
বুঝতাম না ওর কথা।
কি করে বুঝব?
ওই ভাইটি যে আমার বোবা।
আমাকে ঢের বেশি আদর
করতো। কাঁধে করে আমায় পুরো
পাড়াগাঁ ঘুরে বেড়াতো।
পুরো দুপুর ঘুরে, রীতিমতো
আমগাছের নিচে মাটির কাজে
লেগে পরতাম।
আবারো চলতো সেই পুতুলের
ব্যর্থ চেষ্টা। কর্দমাক্ত হাতেই
মাথা চুলকাতাম।
প্রায়শই বিকেলে সূর্যটাকে
অসহায় ও ক্লান্ত দেখতাম। কে
যেন ওটাকে টেনে নিয়ে
পশ্চিমের দিগন্তে ডুবিয়ে
ফেলতো। এটা বোধকরি ওর কড়া
মায়ের কাজ ছিলো। আমাকেও
মা টেনে নিয়ে বকে বকে হাত
পা ধুইয়ে দিতেন। আমরা দুই বন্ধুই
এক অবস্থায় কিনা?
আজও সেই সূর্যকে দেখি।
আকাশটাকেও দেখি, যে
আকাশ কখনো থাকে সাদা,
কখনো সেই ভাঙা নীল
মোড়াটার মতো নীল আবার
কখনো বা সেই পুতুলের মাটির
মতো কালো।
©somewhere in net ltd.