নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গড়ব মৌলবাদ , জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মুক্ত দেশ

এম এম রহমান টিয়া

সকল ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল । সবার উপর মানুষ

এম এম রহমান টিয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এর ভবিষ্যৎ

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০৪

একবার এক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের একটি ক্লাসে একজন ম্যাডাম ধান এবং ধানখেতের উপর লেকচার দিয়ে ছাত্রদের ধানখেতের উপর একটি প্যারাগ্রাফ লিখতে বললেন। একজন ছাত্র দাড়িয়ে ম্যাডামকে বলল," ম্যাডাম, ভালো করে বুঝি নাই। কাল যদি একটি ধানখেত ক্লাসে নিয়ে এসে দেখাতেন তাহলে আমরা খুব ভালো করে লিখতে পারবো।"

এখানে এই ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ঘটনাটি হতে পারে প্রতিকী। কিন্তু এটা একেবারে সত্যি কথা যে ঢাকা শহরে অনেক বাচ্চারাই বড় হচ্ছে অনেকটা 'তথ্য প্রতিবন্ধী' হয়ে। তারা বাস্তবে দেখেনি গ্রাম কি ধানক্ষেত তো অনেক দূরের ব্যাপার। অথচ কোন একটা দেশ ও সংস্কৃতির মূলে হল গ্রাম। কোন দেশ সম্পর্কে ভালো ভাবে জানতে গেলে প্রথমেই এর গ্রাম সম্পর্কে জানতে হবে। অথচ আমাদের এই শহুরে বাচ্চাগুলোর অনেকেই আছে যারা কখনোই গ্রামে যায়নি। তাহলে তারা কিভাবে বুঝবে গ্রামের চিরসবুজ প্রান্তরের অনিন্দ্য সৌন্দর্যকে। কিভাবে তারা বুঝবে কাঁচা সবুজ ধানক্ষেত, আর পাকা সোনালী ধানক্ষেতের সৌন্দর্যকে। কিভাবে তারা দেখবে সেই মোহনীয় রূপ যখন ধানক্ষেতের উপর দিয়ে বাতাস ঢেউ খেলে যায়। কিভাবে তারা পাবে নবান্নের আনন্দ।

আসলে আমাদের কোটিপতিদের সন্তানেরা বড় হচ্ছে একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে। স্কুল, গাড়ি, পার্টি এবং বাসা; ব্যাস, এটুকুই। উচ্চবিত্তের অনেক বাবা-মা ই ইগো সমস্যার কারণে তাদের গ্রামে নিতে চান না। অথবা তারা এত বেশী ব্যস্ত থাকেন যে বাচ্চাদের গ্রামে নিয়ে যাওয়ার মত সময়ই পান না। ফলে বাচ্চারা ভার্চুয়াল জগতের দিকে ঝুঁকে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে তারা জড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডেও। একটা পর্যায়ে তারা হয়ে যায় কিছুটা মানসিক প্রতিবন্ধীও।

প্রত্যেকটা বাবা-মায়েরই উচিত তাদের বাচ্চাদের বছরের বিভিন্ন সময়ে গ্রামে নিয়ে গিয়ে গ্রামের বিভিন্ন ঋতুর বৈচিত্র্যপূর্ণ সৌন্দর্য্যের সাথে পরিচিত করা। যেমন গ্রীষ্মকালে কাঁচাপাকা বিভিন্ন ফল, বর্ষাকালে টিনের চালের ঝমঝম বৃষ্টি, বর্ষার নানান রকম তাজা দেশী মাছ, শীতকালে, শিশিরভেজা সকাল, ঘাসের ডগায় শিশিরের মুক্তোদানা, নানান রকম পিঠা, পায়েশ আর রশ, শরতের কাশফুল, হেমন্তের নবান্ন আর বসন্তের নানান ফুল, গাছ গাছালী , আর বিভিন্ন রকম পাখি আর পাখির ডাক। আর কৃষান-কৃষানীর দৈনন্দিন ব্যস্ততা, গ্রামীণ সহজ সরল জীবন, আরো কত কী !...রবীন্দ্রনাথের ভাষায়...
"অবারিত মাঠ, গগন ললাট, চুমে তব পদধূলি,
ছায়া সুনিবিড়, শান্তির নীড়, ছোট ছোট গ্রামগুলি ।"

যে যাই হই না কেন আমাদের সবার নাড়ি কিন্তু গ্রামেই। এটা নিয়ে কুণ্ঠাবোধ করার কিছু নেই। যেমনটি কবি আল মাহমুদ 'খড়ের গম্বুজ' কবিতায় বলেছেন ......."লজ্জার কি আছে বাপু, তুমি তো গাঁয়ের ই ছেলে বটে....."
গ্রামীন জীবন কাছ থেকে দেখলে নিজের ভেতর একটা জীবনবোধ তৈরী হয়। বাস্তব জীবনটাকে কাছ থেকে উপলব্ধি করা যায়। অসহায় মানুষের কাছে আসা যায়।

বস্তুত, আমাদের প্রায় সবারই শেষ ঠিকানা কিন্তু গ্রামই। মৃত্যুর পর বেশীরভাগ মমানুষেরই চূড়ান্ত আশ্রয় হয় গ্রামই। সুতরাং যে মাটিতে আমার শেষ আশ্রয় সে মাটির সাথে আগে থেকে পরিচিত হওয়াটাই মনেহয় বেশি ভাল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.