![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি স্বপ্ন দেখি, একদিন সব কোলাহল থেমে যাবে। থাকবে না রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব। আমরা স্বাধীন জাতি, গোলামির শৃঙ্খল ভেঙে আমরা হবো মুক্ত। আমাদের প্রতি যার দয়া, আমরা হবো কেবল তারই ভৃত্য...
মেশকাত ১ম খণ্ডের কিতাবুল বুয়ু'র "নিষিদ্ধ ব্যবসা" পরিচ্ছেদে تلقي الركبان বিষয়ে আজ আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আজ তোমাদেরকে একটি গল্প বলবো..
জাহেদ ইন্দোনেশিয়ান ব্যবসায়ী। সে ইন্দোনেশিয়া থেকে বাংলাদেশে জাহাজ নিয়ে আসছে গাড়ির টায়ার বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। ১ কোটি টাকার টায়ার (খরচসহ) ১ কোটি ৩০ লাখ টাকায় বিক্রি করবে। জাহাজ এখনো বন্দরে নোঙ্গর ফেলে নি। ৩০ নটিক্যাল মাইল দূরে থাকতেই বাংলাদেশী ওমর খবর পেলো যে, ইন্দোনেশিয়ান ব্যবসায়ী টায়ার নিয়ে আসছে। ওমর তার ম্যানেজার নিয়ে একটি বোটে চেপে জাহেদের জাহাজের উদ্দেশে রওনা হলো। ওমর জাহেদকে বুঝালো যে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন অস্থিতিশীল। রাজনৈতিক দাঙ্গা চলছে। নারায়ণগঞ্জ এবং দেশের বিভিন্নস্থানে গুম, খুন ইত্যাদি চলছে। শেয়ারমার্কেট নিম্নমুখী। দেশে ব্যবসার ভালো পরিস্থিতি নেই। আপনি এই টায়ারগুলো আমার কাছে বিক্রি করে দিন। দেশ ঠাণ্ডা হলে পরে আমি বিক্রি করে দেবো। আপনাকে আমি ১ কোটি ২০ লাখ টাকা দিচ্ছি।
জাহেদ সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে দেখলো, ওমর বাড়িয়ে বলছে না। আসলেই দেশের অবস্থা ভালো না। (কিন্তু বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, দেশে টায়ারের বাম্পার ব্যবসা চলছে। জাহেদ ১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতো। ওমর জাহেদের কাছে ঐ বিষয়গুলোই উপস্থাপন করেছে যা দেখলে জাহেদ ভড়কে যাবে এবং আগে বাড়ার সাহস হারিয়ে ফেলবে।) দর কষাকষি করে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকায় জাহেদ তার টায়ার ওমরের কাছে বিক্রি করে দিলো।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম এই কেনাবেচা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। এর দ্বারা দেশের সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়বে। দেশে টায়ারের দাম আকাশচুম্বী হবে। মধ্যস্বত্যভোগীর কারণে এর দাম কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। এই মাল বন্দরে আসার পর আরও কয়েক হাত ঘুরলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হারাবে।
একইভাবে তেল, পেয়াজ, ডাল ইত্যাদি পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। সরকারের এদিকে কোনো নজর নেই। থাকবেই বা কী করে? মন্ত্রীরা সকাল বিকাল ১০ বার বিক্রি হচ্ছে। এই ব্যবসায়ীরা শুধু মাল কিনে তাই নয়; এরা সরকারকেও কিনে ফেলে।
এমন অনেক ব্যবসা বন্দরে হচ্ছে যে, ক্রেতা এখনো হাতে মাল বুঝে পায় নি, অনেকে দেখেও নি! মোবাইলে আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দেয়। ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ টাকার মালিক হয়ে যায়। ইসলামে এই সমস্ত ধোঁকাবাজির কোনো স্থান নেই। ইসলাম ক্রেতা বিক্রেতার মাঝে ৩য় পক্ষকে অপছন্দ করে। গল্পের জাহেদ যদি বাংলাদেশে অবতরণ করে নিজে বিক্রি করতে পারতো তাহলে সাধারণ মানুষ একটি টায়ার ১ হাজার টাকায় কিনতে পারতো। কিন্তু এখন, ১০ হাত ঘুরে একই মাল ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দ্রব্যমূল্য এভাবেই বাড়ছে। সরকার আমাদের সাথে বসুক, আমরা কুরআন-হাদীস থেকে বুঝিয়ে দেবো দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার পন্থা কী। কিন্তু তারা আমাদের সাথে ত বসবে না। বসলে পেট যে চলবে না!
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ও সাল্লাম সবদিক বিবেচনা করে তবেই বলেছেন, বাহিরের ব্যবসায়ীদের সাথে মাঝপথে দেখা করে পণ্য কিনে নেয়া বৈধ নয়। রাসুলুল্লাহর মধ্যেই রয়েছে আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। তিনি কেবল মসজিদ, মেহরাবের নবী নন; ব্যবসায়ীদেরও নবী। তিনি কেবল আরবের নবী নন; পুরো বিশ্বের নবী। তিনি তৎকালীন নবী নন; কেয়ামত পর্যন্ত নবী। তাঁর নীতি অনুসরণ করলেই আমরা মুক্তি পাবো দুনিয়া ও আখিরাতে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আমল করার তাওফীক দান করুন।
ফেসবুকে আমি
http://www.facebook.com/mahbuburrashid.mahdi1
©somewhere in net ltd.