নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এবং কিছু কথা...

মাহের মহাম্মাদ নাঈম

দেয়ার মতো নিজের পরিচয় এখনো তৈরি হয়নি। বাবার দেয়া নাম আর পরিচয় বহন করে চলছি...

মাহের মহাম্মাদ নাঈম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিসের টানে??? (পর্ব-১)

২০ শে অক্টোবর, ২০১৭ রাত ১২:০৪

১৮ই অক্টবর ২০১৭
কুষ্টিয়া থেকে রাজবাড়ী
ট্রেনের সঠিক সময় জানা ছিল না। তাই একটু তাড়াতাড়ি স্টেশনে উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। সকাল ৭টা ৩০ এ স্টেশনে পৌছায়। স্টেশনে বেশ ভির দেখে ভাবলাম ট্রেনের দেরি নায়। সবচেয়ে বেশি চোখে পরছিল সাদা পোশাকের ছেলে-মেয়ে, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। তারা সবাই লালন শাহের ভক্ত। সবাই ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছে। স্টেশনের চায়ের দোকান থেকে খবর নিই ট্রেনের ঘন্টা হয় নাই। সময় আছে দেখে পাশের রেস্টুরেন্টে সকালের নাস্তা করতে চলে যায়। আমার একটা বদ অভ্যাস আছে স্টেশন থেকে একটু সাইডে গেলেই মনে হয় এই বুঝি ট্রেন এলো আর আমি হয়তো ট্রেন মিস করবো। এই ভাবনা নিয়ে দ্রুত খাওয়া শেষ করে স্টেশনে গেলাম। ততখনে লালন ভক্তের একটি দল গানের আসর জমিয়ে ফেলেছে। বেশ ভালো গান গায়ছিল তারা। লালন সংগীত আমারও ভালো লাগতো। এজন্য কাছেই বসে গান শুনতে লাগলাম।তাদের গান ও বাদ্য শুনে মনে হলো জগতের যত প্রতিভা তাদের গলাই আর হাতে। গান শুনতে শুনতে বুঝতেই পারি নাই কখন স্টেশনের ভীর অনেক বেড়ে গেছে। ট্রেনের খোজ নাই। অপেক্ষা করা ছাড়া কিছু করার নায়। এখন বাস পাবো কি না জানি না। এই জন্য বসে থাকলাম। কিছুক্ষন পর ট্রেনের ঘন্টা হলো। ঘন্টার সাথে সাথে টিকিট কাউন্টারের সামনে বিশাল লাইন। মনে মনে ভাবলাম আজ আর টিকিট করা হবে না আমার। কিছু উৎসুক যাত্রিরা প্লাটফর্মের কোনাই দারিয়ে ট্রেনের আসার পথে চেয়ে আছে। মনে হচ্ছে তারা চোখ সরালেই ট্রেন ফাকি দিয়ে পালাবে। কিছু পাঙ্খা ঠাইপ ছেলেদের দেখলাম কারণ ছাড়াই মেয়েদের সামনে পেছনে ঘুর ঘুর করছে। কিছু মেয়ে যেন তাতে মজাও পাচ্ছে। কাজ না পেয়ে আমি মুড়ি মাখানো আলার সাথে গল্প করতে লাগলাম। সে আমাকে জানলো ট্রেন আসতে ৯টা বাজবে। হাটাহাটি না করে এক জায়গায় বসে থাকলে ভালো হবে। কিন্ত বসার জায়গা খালি নায়। তাই তার পাশে দারায়ে থাকলাম। তারই মাঝে কেও একজন বলে উঠলো ট্রেএএএএএএন......
আর ধরে কে। কোন দিকে না ভেবে, না দেখে অর্ধেক যাত্রী রেল লাইনের ঐপাশে বাকি অর্ধেক প্রাটফরমের কোনাই রেডি ট্রেনে ওঠার জন্য। মুড়িমাখানো আলা আমাকে বলল, “দেখেন দেখেন বাঙ্গালীর কাজ দেখেন। দেখা নায়, শুনা নায় অমনি ছুটটি লাগেছে। এখোনো গেট-ই পরে নাই আর ট্রেন চনে আইছে!!!” তার কথাই আমিও লেভেল ক্রসিং এর বেরিকেটের দিকে তাকালাম। সত্যি গেট বন্ধ করে নায়। তবে এই সুযোগে আমি টিকিট টা কেটে নিলাম এবং একটি ভালো জয়গা দেখে বসে পরলাম স্টেশনে।

৮টা ৪৫মিনিট। স্টশনে ভীর দেখার মতো। অনেকেই শুনছি ট্রেনে যাবে কিনা তা নিয়ে কথা বলছে তার সঙ্গিদের সাথে। ট্রেন আসলো কিছুক্ষনের মধ্যেই। কিছুটা স্বস্তি পেলেও পরক্ষনে ট্রেনের ভেতরের অবস্থা আর স্টেশনের অবস্থা দেখে ঘাবরে গেলাম। এতো ভীর। একবার ভাবলাম ইঞ্জিনে বসে যায় কিন্ত সেখানেও জায়গা হবে কিনা জানি না। অনেক যাত্রি নামলো তবে উঠলো তার থেকেও বেশি। কোন রকম ট্রেনে উঠে, ঠেলে ধাক্কা দিয়ে ৪র্থ ও ৫ম সারীর মাঝে দারানোর জায়গা পেয়েছি।। দারায়ে যে আছি নাড়ার উপায় নায়। আমার দুইপাশে মানুষ বসে আছে তার মাঝে তিন জন মহিলা। তাদের মাঝে আমি এবং আরো একজন দারানোতে তারা যে ভালো বোধ করছে না তা তাদের চুপশানো মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। এদিকে মাথার উপড় ফ্যান ঘুড়ছে তবে হাওয়া লাগে না। দরজার দিকে তাকায়ে দেখি এখনো অনেকে ঝুলে রয়েছে ওঠার জন্য। বগির ছাদে শব্দ শুনে বুঝলাম ছাদেও লোকের পরিমান কম না। বগিতে কর্মরত ব্যক্তিরা চেষ্টা করছে গেটের কাছ থেকে যাত্রীদের বগীর মাঝে সরিয়ে নিতে যেন যারা ঝুলে আছে তারা ভিতরে আসতে পারে। ঠিক সময় মতো হুইসেলের সাথে ট্রেন চলা শুরু করলো। শুরু হলো ‘কুষ্টিয়া থেকে রাজবাড়ী’ আমার যাত্রা।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.