নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

েদশী

ফিরিংগিদের কামলা

িটউব লাইট

অলস, িপসলা

িটউব লাইট › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রচণ্ড কষ্ট এবং ক্ষোভ থেকে লিখছি।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯

প্রচণ্ড কষ্ট এবং ক্ষোভ থেকে লিখছি।



গত পরশু চট্রগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরছিলাম আমি ,জুয়েল, মিন্টু এবং প্রীতি বউদি। বউদি বসেছিলেন জানালার পাশে। মিন্টু উনার পাশে।দেখা হওয়া মাত্রই শুভেছা বিনিময় করেছিলেন আমার সাথে। জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমার বাচ্চা কেমন আছে, পরিবার কেমন আছে?



আমরা আনুমানিক ১১;১৫ ১১;২০ মিনিটের দিকে ভাটিয়ারী ভাঙ্গা ব্রিজের কাছে পৌঁছাই। আমি, জুয়েল গল্প করছিলাম। মিন্টু তার আগে আমাদের থেকে বিদায় নেয় ঘুমাবে এবং airport ষ্টেশন এ দেখা হবে বলে। মিন্টু বউদি কে ঢাকা নিয়ে যাচ্ছিল সাপ্তাহ দুএক রাখবে বলে। আর ভালো না লাগলে ১৪ তারিখ ঢাকা থেকে ফেরার কথা ছিল।



হঠাৎ "ঠাস" করে একটা শব্দ শুনি। সাথে সাথে একটা পাথর ছিটকে পড়ে কোচের সামনা সামনি আসন গুলোর মাঝে। বউদি শুধু একটা আর্তনাদ করে। মিন্টু কি হয়েছে, কি হয়েছে বলে ভাবিকে ধরে। বুঝতে পারি পাথরটা ভাবীর মাথার বাম পাশে আঘাত করেছে।মিন্টু মাথায় পানি ঢালে। সম্ভব সব রকমের চেষ্টা করা হয় ভাবীর জ্ঞান ফেরানর জন্য। ভাবীর বাম গালে একটু লাল দাগ লক্ষ্য করি। কিন্তু, আমাদের এতো চেষ্টার পরেও ভাবী কোন কথা বলছিলেন না। চোখ দুটো বন্ধ ছিল। চোখের কোন দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল অশ্রু। ২/৩ মিনিট পর পর হেচকি তুলছিলেন। নিঃশ্বাস নেওয়ার নেওয়ার আপ্রান চেষ্টা করছিলেন।



এতোটা খারাপ কিছু আমি তখনো ভাবিনি। ভেবেছিলাম একটু পরেই ঠিক হয়ে যাবে। আমি চলে যাই ট্রেনের শেষ মাথায় কোন ডাক্তার থাকলে আসতে বলার জন্য। ফিরে আসতে আসতে ঘোষণা শুনি। এসে দেখি ভাবী নেতিয়ে পড়েছেন। মিন্টু বলছে আমি pulse পাচ্ছি না। আমিও চেক করি। পাইনি। মনে করেছিলাম অতিরিক্ত উত্তেজনার কারনে pulse পাচ্ছি না। আছে নিশ্চয় হয়তো মৃদু ভাবে। আমি ধরতে পারছি না।



সিদ্দান্ত নেয়া হয় সীতাকুণ্ড নেমে যাওয়ার। কোনোমতে মিন্টু, আমি মিলে ভাবী কে ধরা ধরি করে নামাই।জুয়েল সব ব্যাগ নামায়।ভাবিকে বেঞ্চে শুইয়ে আমি দৌড়াই একটা taxi ঠিক করার জন্য। পথে একটা রিক্সা পাই যাত্রী সহ। উনাদেরকে অনুরোধ করলে উনারা রিক্সাটা ছেড়ে দেন। আমি মিন্টু ভাবিকে নিয়ে মূল রাস্তায় পৌঁছে taxi নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স , সীতাকুণ্ড -তে পৌঁছাই।



আল্লার কাছে শুধু কায়মনোবাক্যে একটা প্রাথনা করছিলাম। ইয়া আল্লাহ, আমি যদি একটা ভালো কাজ করে থাকি, আমার যদি একটা এবাদত তুমি কবুল করে থাকো , যদি একটাও ন্যায় বিচার করে থাকি, আল্লাহ, তুমি ভাবী কে নিয়ো না। ফিরিয়ে দাও। এটা ওর যাওয়ার সময় নয়। হয়তো প্রাথনা করতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। হয়তো বা আমি এতটাই পাষণ্ড, পাপী যে আল্লাহ শুনেন নি। মিন্টু তখন শুধু ভাবীর হাত ধরে বসেছিল। আর বলছিল, প্রীতি, ও প্রীতি... কথা বল। কথা বল। ভাবী তখন নিশ্ছুপ,নির্বাক । দৃষ্টি যেন কোথায়!!!!!!!!



ডাক্তার যখন পরীক্ষা করছিলেন, oxyzen mask লাগাচ্ছিলেন মিন্টু তখনো ভাবীর হাত ধরেছিল। আর বলছিল 'আমি শক্ত আছি। ডাক্তার সাহেব আপনি বলেন'।ডাক্তারের চোখে তখন রাজ্যের অসহায়ত্ত। ডাক্তার শুধু আমাদের দিকে তাকাচ্ছিলেন আর অপ্রয়োজনীয় ভাবেই সময় নিচ্ছিলেন।



ডাক্তার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে আমাদেরকে হৃদয় বিদারক সংবাদ টি দেন।



ভাবী আর নেই!!!!!!!!



মিন্টু হাউ মাউ করে কেঁদে উঠে। বলে, আমি ওর বাবা মাকে কি জবাব দেবো!!!!! এই মেয়েটা শুধু আমার সাথে থাকার জন্য কি না করেছে। একটা বাবু, শুধু একটা বাবুর জন্য তার সে কি আকুতি!!!!!!!! হায়রে ঢাকা!!!! হায়রে চাকুরী!!!!! আমি কি জবাব দেবো!!!!!!



......................................................................................................।



.............................................................................................।।

...............................................................................................................................................................



না ।আমরা কেউ ওকে সান্তনা দেইনি। সান্তনা দেওয়ার কোন ভাষা কারো তখন কারো জানা ছিল না। আমরা তখনো আশাবাদী ছিলাম। ডাক্তার কে বলে ভাবিকে নিয়ে আমরা চট্রগ্রাম মেডিকেল হসপিটালের দিকে যাই। পুরো জাত্রা পথে আমার বন্ধু ভাবীর হাত ধরে নির্বাক বসেছিল।চট্রগ্রাম মেডিকেল হসপিটালের ডাক্তার ও একই কথা বললে সবার মাঝে নেমে আসে কবরের নিস্তব্দতা। হাউ মাউ করে কেঁদে উঠেন ভাবীর মা, বাবা, ভাই,মিন্টুর বাবা, মা সহ উপস্তিত সকলে। আমরা সবাই নিশ্ছুপ। হতবাক। তবে বুক ভেঙে কান্না আসছিলো। ১৫ মিনিটে একটা মানুষের জীবন কি ভাবে শেষ হয়ে যেতে পারে।!!!!!!



আমরা মামলা রুজু করেছি GRP থানায়। আজ সকালে ৩০৪/৩৪ ধারায় আর একটা মামলা হয়েছে। police সরবচ্ছ চেষ্টা করছে আসামিদেরকে ধরার। আমরা আশাবাদী। আসামি ধরা পড়বে।বিচার হবে। কিন্তু, মিন্টু কি ফিরে পাবে তার প্রিয়তমা জীবন সঙ্গিনীকে ??? ভাবীর ভাইয়েরা কি ফিরে পাবে তাদের একমাত্র বোনকে ? মা বাবা কি ফিরে পাবে তাদের আদরের কন্যা কে?? মিন্টুর বাবা মা কি ফিরে পাবে তাদের প্রিয় কন্যাসম পুত্র বধু কে?? এই সব গুলো প্রস্নের উত্তর হল 'না'।



এটা নিছক কোন দুর্ঘটনা নয়। মানুষের জীবন কোন ছেলে খেলা নয়। কারো নিছক খেয়ালের কারনে অন্য কারো জীবন প্রদীপ থেমে যেতে পারেনা। ইতিমধ্যেই police সন্দেহভাজন ১ জনকে আটক করেছে।



আমরা চাই আর কারো মায়ের বুক যেন এভাবে খালি না হয়, কোন ভাই যেন তার বোনকে,স্বামী যেন তার স্ত্রীকে , বাবা-মা যেন তার মেয়েকে, শ্বশুর শাশুড়ি যেন তাদের আদরের বউমাকে না হারায়।



জীবন শুরু করার বা মেহেদির দাগ মুছে যাওয়ার আগেই যেন কারো জীবনে নেমে না আসে নির্বাক দুঃসহ নির্মম নির্জনতা। আমার বন্ধুর মতো কারো জীবন যেন শ্মশানের চিতার আগুনে দাউ দাউ করে না জ্বলে।



আমরা পারি সচেতন হতে। পারি অপরাধীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে। সেই উদ্দেশ্য কে সামনে রেখেই আমরা তৈরি করেছি এই গ্রুপ। বন্ধুরা আপনারা সবাই আপনাদের বন্ধুদের এই গ্রুপের সদস্য করে আমাদের পাশে দাঁড়ান।



আগামী শনিবার সকাল ১০;০০ ঘটিকায় চট্রগ্রাম PRESS CLUB এ আমরা সবাই সমবেত হবো এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে । সেখানে এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতিবাদে মানব বন্ধন, কালো ব্যাজ ধারন, সংবাদ সম্মেলন ও স্মারক লিপি প্রদান করা হবে।



বন্ধুরা, এই সামাজিক আন্দোলনে আমরা আপনাদের সহযোগিতা এবং সবান্দব অংশগ্রহন চাই।

এই পোষ্ট টি সকল বন্ধুকে শেয়ার করার অনুরোধ করছি।



- Abdullah Al Mamun



Click This Link

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫৫

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: ট্রেন লাইনে পাশে বস্তির পর বস্তি রাখলে এই রকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে। আগে বন্ধ করা দরকার অবৈধ বস্তি । কিন্তু বাস্তবে সেটা কি হবে ? হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসা রে ভাই।

২| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩

এম আর ইকবাল বলেছেন: সমব্যাথী, সাথে আছি ।

৩| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২০

েবনিটগ বলেছেন: সমব্যাথী

৪| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৪

ঢাকাবাসী বলেছেন: এটা বহুদিন থেকেই হচ্ছে। সিম্পলি ঐ জায়গায় ট্রেন গেলে একশ রাউন্ড গুলি করেন প্রতিদিন প্রতি ট্রেন থেকে, আকাশে করেন মাটিতে করেন, দেখবেন ৭ দিনে সব ঠান্ডা। কিন্তু আমাদের অপদার্থ অযোগ্য অশিক্ষিত নীতিহীন আদর্শহীন অসৎ কর্তাদের সেসব ভাবার সময় নেই!

৫| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৮

আদরসারািদন বলেছেন: সমবেদনা |-)

৬| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৪৯

আহমেদ রিজভী বলেছেন: চট্টগ্রাম ভাটিয়ারী এবং চট্টগ্রাম চবির রেল পথটা খুবি ঝুকিপুর্ণ । কেননা এর দুই পাশের বস্তিগুলো থেকে ট্রেন লক্ষ্য করে নিয়মিত ডিল ছুড়া হয় । বস্তি থেকে ছুটে আসা এসব ডিলে চট্টগ্রাম-ঢাকা, চট্টগ্রাম-সিলেট ও চট্টগ্রাম-চদপুরের বহু যাত্রী সহ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র ছাত্রী আহত হয়েছে এখন একজন প্রকৌশলীর মৃত্যু হল। ট্রেন লক্ষ্য করে ডিল গুলো যে বস্তি থেকে আসে প্রশাসন এইটা খুব ভাল করেই জানে কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয় না

৭| ১৩ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৪৫

তিক্তভাষী বলেছেন: এরা কি মানুষ? আমি জানি না। একবার গ্রীনলাইনের বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসার পথে আমাদের বাসে ঢিল ছোড়া হয়েছিল। যে সীটটার কাঁচ ভেঙ্গে ভেতরে টুকরাগুলো ছড়িয়ে যায় ভাগ্যক্রমে সেটা ছিলো খালি। তার ঠিক সামনের সীটে আমি ও আমার ছেলে ভ্রমন করছিলাম। অল্পের জন্য বিপদ ঘটেনি।

৮| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১১

অর্থনীতিবিদ বলেছেন: রেলওয়েকে ঘিরে যারা এরকম সন্ত্রাসী করে তাদেরকে দেখা মাত্র গুলি করে হত্যা করার বিধান জারি করতে হবে, বস্তি উচ্ছেদ করতে হবে, রেললাইনের কাছাকাছি বসতিগুলোতে ট্রেনে ঢিল না ছোড়ার জন্য প্রচারণা চালাতে হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে এগুলো করার জন্য চেষ্টা করি।

৯| ১৪ ই আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৯

স্বপনচারিণী বলেছেন: কাছাকাছি থাকলে অবশ্যই পাশে দাঁড়াতাম। দূর থেকেই আমার এই বোনটির আত্মার শান্তির জন্য আল্লাহ্‌র কাছে মোনাজাত করি। সেই সাথে অপরাধীর শাস্তি দাবী করছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.