নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

‍‍‍"Al-Quran", The source of science - Dr. Mahfuz

নাড়ীর স্পন্দন গুনে রুগীর সেবা করি, মনের মাধুরী মিশিয়ে চেতনার কলম ধরি।('মনের মাধুরী' হলো পার্থিব জ্ঞান সমৃদ্ধ স্বচ্ছ মনন- আর 'চেতনার কলম' হলো আল-কোরআনের ঐশী আলোয় আলোকিত বিবেক সম্পন্ন লিখন)

মাহফুজশান্ত

আসুন, "ধর্মান্ধতা পরিহার করে ধর্মিষ্ঠ হই" "বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম" [আল-কোরআন-৯৬. সূরা আল-আলাক] ০১. পাঠ কর (এবং ঘোষনা / প্রচার কর) তোমার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন- ০২. সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে। ০৩. পাঠ কর, আর (ঘোষনা / প্রচার কর) তোমার প্রতিপালক মহামহিমান্বিত। ০৪. যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন- ০৫, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।] পবিত্র কোরআনের ৯৬ নম্বর সূরা 'আলাক'-এর প্রথম এই পাঁচটি আয়াত অত্যন্ত মূল্যবান এবং যা মহান আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে ফেরেশতা জিবরীল (আঃ)-এর মাধ্যমে সর্বশেষ নবী রাসূলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উপর নাযিলকৃত সর্বপ্রথম ওহি অর্থাৎ ঐশীবাণী। মহামহিমান্বিত প্রতিপালকের নামে শিক্ষা লাভের জন্য পাঠ করা ( Study ) অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় থেকে জ্ঞানার্জন করা এবং জ্ঞানের প্রচার ও প্রসারে কলমের ব্যবহার অর্থাৎ 'লিখন' যে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখে তা সর্বজনবিদিত। মহান স্রষ্টা আল্লাহতায়ালা তাঁর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টিকে খাঁটি মানুষ রূপে গড়ে তোলার জন্য যে সর্বপ্রথমে এই ধরণের চমৎকার ও কার্যকর ঐশীবাণী প্রদান করে অনুপ্রাণিত করবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই অনুপ্রেরণায় অনুপ্রাণিত হয়ে পার্থিব জীবনের শত ব্যস্ততার মাঝেও আল-কোরআন ও বিজ্ঞানের বিষয়ে জ্ঞান চর্চার তাগিদে সময় বের করে নিতে হয়েছে। যে জ্ঞানের কোন সীমা পরিসীমা নেই, যে জ্ঞানের কথা লিখতে বসলে মহাসাগরের এমনকি আকাশ ও পাতালের সকল জলরাশিকে কালি বানালেও তা ফুরিয়ে যাবে- তার জন্য এই সময়টুকু অতি নগন্য। তথাপি আমার এই ছোট্ট প্রয়াসের জন্য দয়াময় আল্লাহতায়ালা যে আমাকে সুযোগ ও তৌফিক দিয়েছেন সেজন্য আমি অবনত মস্তকে সর্বশক্তিমান স্রষ্টার কাছে প্রতি মূহুর্তে শুকরিয়া আদায় করছি। সত্যের স্বরূপ উদঘাটনে যতটুকু সফলতা অর্জন করতে পেরেছি তার সবটুকুই আল-কোরআনের ঐশীবাণীসমূহের মর্ম সঠিকভাবে অনুধাবনের ফলেই সম্ভব হয়েছে। আর ব্যর্থতার জন্য একজন অতি সাধারন মানুষ হিসেবে আমার অযোগ্যতা ও অজ্ঞতাই সম্পূর্ণরূপে দায়ী। হে বিশ্ববিধাতা করুণাময় মহান আল্লাহ , সর্বপ্রকার অনিচ্ছাকৃত ভুল-ভ্রান্তির জন্য সর্বদা অবনত মস্তকে ক্ষমাভিক্ষা চাই। আর সরল ও সত্যের পথ যতটুকু অর্জন করতে পেরেছি তার উছিলায় একজন হতভাগা পাপী বান্দা হিসেবে তোমার জ্যোতির্ময় আরশের ছায়াতলে চিরকালের জন্য একটুখানি ঠাঁই চাই। আশাকরি ছোটখাট ভুলত্রুটি ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। চিন্তাশীল সুধীজনদের সুচিন্তিত পরামর্শ ও সমালোচনা সাদরে গ্রহণ করা হবে।

মাহফুজশান্ত › বিস্তারিত পোস্টঃ

বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে মেরে প্রাণ সংহার এবং আল-কোরআন-

০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১০:৩৩



আল-কোরআনে অবৈধ যৌন সংগম/ব্যভিচারের কাছেও যেতে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ যে কোন ধরনের অশ্লীল পাপাচার অর্থাৎ অবৈধ যৌন সম্পর্ক ও আকাঙ্খা থেকে ইমানদার মানুষ মাত্রই দূরে থাকা উচিত।



১৭ নং সূরা বণী ইসরাঈল (মক্কায় অবতীর্ণ ক্রম-৫০)

৩২: অর্থ- আর তোমরা অবৈধ যৌন সংগম/ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয় এটা একটা অশ্লীল পাপাচার ও মন্দ পথ



একজন ইমানদার যেহেতু মহান স্রষ্টার বিধানকেই সর্বোত্তম হিসেবে বিশ্বাস করেন। তাই আল-কোরআনে ব্যভিচারী পুরুষ ও নারী সম্পর্কে ক্ষেত্র বিশেষে যতটুকু কাঠিন্য অবলম্বন করা বা ছাড় দেয়ার বিধান আছে, তা তো তাকে মানতেই হবে। একজন মুসলিম হিসেবে আমার মনোভাবও একই এবং আমি যে এর পক্ষে কোনরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন বা ছাড় দিতে রাজি নই তা আশ্বস্ত করছি। অন্য কোন মানবতাবাদী মতবাদ নয়, বরং আল-কোরআন যতটুকু মানবতা দেখানোর পারমিশন দিয়েছে, ততটুকুই ঠিকমত মেনে চলতে পারলেই মানবতার মহৎ কর্মটিও যথাযথ ভাবে পালিত হবে বলে আমি সম্পূর্ণ আস্থা রাখি।



আল-কোরআনে সংগত কারনেই প্রাপ্ত বয়ষ্ক এবং ব্যভিচারের বিধান সম্পর্কে অজ্ঞ নয় এমন ব্যভিচারী স্বাধীন পুরুষ ও নারীকে জনসম্মুখে (২৪:০২) একশত বেত্রাঘাত করার বিধান এবং বিশেষ ক্ষেত্রে নারীদের জন্য গৃহ বা কারাগারে (০৪:১৫) বন্দী করে রাখার বিকল্প ব্যবস্থাও দেয়া হযেছে। ডান হাতের অধিকারভুক্ত বিবাহিতা যুদ্ধবন্দী/দাস-দাসীদের ক্ষেত্রে শাস্তির পরিমান (০৪:২৫) অর্ধেক করা হয়েছে। এই বিধানের ব্যপারে একজন ইমানদারের কোনই দ্বিমত থাকতে পারেনা; আমারও নেই।



৪ নং সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-৯২)

১৫: অর্থ- আর তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যারা অশ্লীল পাপাচারে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জনকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় অথবা আল্লাহ তাদের জন্য পথ করে দেন।

১৬: অর্থ- তোমাদের মধ্য থেকে যে দুইজন সেই অশ্লীল পাপাচারে লিপ্ত হয়, তাদের উভয়কে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।

১৭: অর্থ- অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন যারা ভূল বশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সর্ববিষয়ে জ্ঞানী ও কুশলী।



২৪ নং সূরা আন-নূর (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-১০২)

০১: অর্থ- এটা একটা সূরা যা আমি নাযিল করেছি, এবং আমিই ফরজ (অবশ্য পালনীয়) করেছি। আমিই এতে সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ অবতীর্ণ করেছি, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ।



০২: অর্থ- ব্যভিচারিণী (পর-পুরুষের সাথে অবৈধ যৌন সঙ্গম-কারী) নারী এবং ব্যভিচারী (পরনারীর সাথে অবৈধ যৌন সঙ্গম-কারী) পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর। আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে গিয়ে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক। মুসলমানদের একটি দল যেন তাদের শাস্তি প্রত্যক্ষ করে।



(০৪:১৫) ও (০৪:১৬) নং আয়াতে (الْفَاحِشَةَ) "আল ফা-হিশাতান" এই শব্দটি দ্বারা সকল ধরণের অশ্লীল পাপাচারকে বোঝানো হয়েছে। সূক্ষ্মভাবে খেয়াল করলে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, অশ্লীল পাপাচার বলতে শুধু নারী ও পুরুষের মাঝে অবৈধ সম্পর্কই নয়, বরং যারা সমকামী অর্থাৎ যারা নারীর সাথে নারীর এবং পুরুষের সাথে পুরুষের যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে কিংবা যারা হিজরাদের সাথে এমনকি পশুর সাথেও (Bestiality) অশ্লীল যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে তারা সবাই অশ্লীল পাপাচারী হিসেবে গণ্য হবে এবং তাদেরকে শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিবাহিত নারী ও পুরুষের মাঝে যৌন সম্পর্ক স্থাপন মানব স্বভাবসুলভ ও বৈধ। কিন্তু শুধুমাত্র অবিবাহিত হওয়ার কারণে এই মানব স্বভাবসুলভ সম্পর্ক অবৈধ হিসেবে গণ্য হয়। এছাড়া অন্য সকল ধরণের অশ্লীল পাপাচার ও যৌন সম্পর্ক একই সাথে অবৈধ এবং মানব স্বভাববিরুদ্ধ। ব্যভিচারিণী এবং ব্যভিচারী; (২৪:০২) তাদের প্রত্যেককে স্পষ্টভাবে একশত বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অশ্লীল পাপাচারে লিপ্ত অন্যান্য অপরাধীদের জন্য শাস্তির নির্দেশ দেয়া হলেও তাদের কার শাস্তির মাত্রা ও ধরন কিরূপ হবে তা উহ্য রাখা হয়েছে। সুতরাং মানব স্বভাববিরুদ্ধ সকল অশ্লীল পাপাচারীকে বেত্রাঘাতের সাজা তো দেয়া যাবেই, অপরাধের মাত্রা হিসেবে প্রয়োজনে শাস্তির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করার ব্যাপারে কোন দ্বিমত থাকতে পারেনা। তাছাড়া যারা জোরপূর্বক অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক বালক কিংবা নারীকে যৌন হয়রানি করে, পিশাচ রূপী সেই ধর্ষকদেরকে আরও কঠিন সাজা দেয়ার এখতিয়ারও বিজ্ঞ বিচারকের জন্য খোলা রাখা হয়েছে।



এখানে প্রশ্ন আসতে পারে- অবৈধ যৌন সঙ্গম-কারী পুরুষের বেলায় শুধু বেত্রাঘাত, কিন্তু নারীর বেলায় বেত্রাঘাত এবং গৃহবন্দী রাখার বিধান দেয়া হলো কেন?



অনেকে না ভেবে, না বুঝেই চট করে এটিকে নারীর ক্ষেত্রে আল-কোরআনের দ্বৈত-নীতি হিসেবে সমালোচনার ঝড় তুলতে শুরু করে দেন। কিন্তু কার জন্য কোনটা ভাল ও সামঞ্জস্যপূর্ণ তা সর্বজ্ঞ মহান আল্লাহতায়ালা ভাল ভাবেই অবগত আছেন। একটু চিন্তা করলেই এর জবাব পাওয়া যায়। সূরা নিসার (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-৯২) অবতীর্ণ ক্রম লক্ষ্য করলে বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়ে যায় যে, প্রথমত (০৪:১৫) নং আয়াতে যে সব স্ত্রীরা পাপাচারে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে চারজন সাক্ষী পাওয়া গেলে তাদেরকে গৃহবন্দী করে রাখার অর্থাৎ কারাগারে আটকে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং পরবর্তীতে আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে কি ধরণের শাস্তির নির্দেশ দেয়া হবে তার জন্য অপেক্ষা করতে বলা হয়েছিল। আর এই নির্দেশ আসার পূর্বেই গৃহবন্দী অবস্থায় যদি কোন নারীর মৃত্যু ঘটে, তাহলে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু তাই বলে এই অপরাধের জন্য পাথর ছুড়ে কিংবা অন্য কোন উপায়ে সরাসরি হত্যা করার নির্দেশ আল-কোরআনে কখনই দেয়া হয় নাই। বরং বলা হয়েছিল যে, যদি পরবর্তীতে আল্লাহতায়ালা তাদের জন্য অন্য কোন পথ অর্থাৎ অন্য কোন ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা করেন তাহলে সেটাই তখন প্রযোজ্য হবে।



এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, স্ত্রীদেরকে কেন কারাগারে আটকে রাখার অপশনটি দেয়া হলো?



একটু চিন্তা করলেই এর কারনটা বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয়। একজন ব্যভিচারিণীর ক্ষেত্রে অন্তঃসত্বা হবার ঘটনা ঘটতে পারে। কিন্তু ব্যভিচারী সেরূপ দুর্ঘটনা থেকে মুক্ত থাকে। তাই ব্যভিচারী দোষী সাব্যস্ত হলে তখনই তার উপরে কঠিন শাস্তি প্রয়োগ করায় কোন বাঁধা নেই। কিন্তু একজন অন্তঃসত্বা ব্যভিচারিণীকে কঠিন সাজা দিলে পেটের বাচ্চাটির ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সন্তান প্রসব না করা পর্যন্ত অন্তঃসত্বা ব্যভিচারিনীকে সাময়িকভাবে শারীরিক কঠিন শাস্তি থেকে অব্যহতি দিয়ে গৃহবন্দী করে রাখার অপশন রাখা হয়েছে। এর মধ্যে যদি কোন কারনে তার মৃত্যু ঘটে যায় তাহলে শাস্তির প্রশ্ন আসে না। কিন্তু বাচ্চা প্রসবের পরও সেই মহিলা যদি বেঁচে থাকে, তাহলে তার জন্য কি শাস্তি প্রযোজ্য হবে তা পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। সূরা আন-নূর এর (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-১০২) অবতীর্ণ ক্রম লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, পূর্বে (০৪:১৫) নং আয়াতে আংশিক নির্দেশ নাজিলের পর পরবর্তীতে (২৪:০২) নং আয়াতে ব্যভিচারিণীদের জন্য যে শাস্তি প্রদানের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তা আমৃত্যু গৃহবন্দী করে রাখা নয়, বরং 'ব্যভিচারিণী' ও 'পরদারগামী/ব্যভিচারী' প্রত্যেকের জন্যই একশত বেত্রাঘাতের বিধান দেয়া হয়েছিল। আল্লাহর এই বিধান কার্যকর করতে গিয়ে আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসীদের অন্তরে যেন দয়ার উদ্রেক না হয় তা বিশেষভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে। তবে ব্যভিচারিণী অন্তঃসত্ত্বা হলে তার ক্ষেত্রে কিভাবে শাস্তি প্রয়োগ করা যেতে পারে তার উত্তর (০৪:১৫) ও (২৪:০২) নং আয়াতের বক্তব্য পর্যালোচনা করলে চিন্তাশীল মাত্রই বুঝতে পারার কথা। যারা বুঝতে চায় তাদের জন্যই আল্লাহতায়ালা তাঁর কিতাবে এভাবেই সংক্ষেপে অথচ বিস্তারিতভাবে ভাব প্রকাশের সবকিছু জানিয়ে দেন। সুতরাং অন্তঃসত্ত্বা ব্যভিচারিণীকে সেই মূহুর্তে কঠিন শাস্তি না দিয়ে সন্তান প্রসব না করা পর্যন্ত গৃহবন্দী করে রাখার বিকল্প বিধানটি কার্যকর করতে কোন বাঁধা নেই এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকেও সেটাই যুক্তিসঙ্গত।



৪ নং সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-৯২)

২৫: অর্থ- আর তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী সধবাদের বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, তারা যেন তোমাদের (মা-মালাকাত-আইমানুকুম) ডান হাতের অধিকারভুক্ত বিশ্বাসী যুবতী 'যুদ্ধবন্দিনীদেরকে/ ইসলামপূর্ব দাসিদেরকে' বিয়ে করে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত আছেন। তোমরা তো একে অন্য থেকে, অতএব তাদেরকে তাদের অভিভাবকের অনুমতি নিয়ে বিয়ে কর, আর নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর; বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য- অশ্লীল পাপাচারী হিসেবে নয় কিংবা রক্ষিতা রূপে গ্রহণ করার জন্যও নয়। অতঃপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি তারা অশ্লীল পাপাচারে লিপ্ত হয়, তবে তাদেরকে স্বাধীন সধবাদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা পাপের ভয় করে। আর যদি ধৈর্য ধারন কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম-করুণাময়।



একইভাবে ডান হাতের অধিকারভুক্ত বিশ্বাসী কোন যুদ্ধবন্দীনি/ ইসলাম পূর্ব দাসীর ক্ষেত্রে এই শাস্তির পরিমান হ্রাস করা হয়েছে। কারন ভিন্ন পরিবেশে ও সংস্কৃতিতে বসবাসে অভ্যস্ত থাকার কারনে তাদের মধ্যে ইসলামের বিধানের প্রতিফলন ঘটতে কিছুটা সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে তাদের জন্য অর্ধেক শাস্তির নির্দেশ এবং ধৈর্য ধারন কোরে তাদেরকে শুধরানোর সুযোগ দেয়ার পরামর্শটিও অত্যন্ত যৌক্তিক।



২৪ নং সূরা আন-নূর (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-১০২)

০৩: অর্থ- ব্যভিচারী পুরুষ কেবল ব্যভিচারিণী নারী অথবা মুশরিকা (অংশী-বাদি) নারী ছাড়া অন্য কোন ভাল নারীকে বিয়ে করবে না এবং ব্যভিচারিণী নারী কেবল ব্যভিচারী অথবা মুশরিক পুরুষ ছাড়া অন্য কোন ভাল পুরুষকে বিয়ে করবে না, এদেরকে মুমিনদের জন্যে হারাম করা হয়েছে।

২৬: অর্থ- দুশ্চরিত্রা নারীকুল দুশ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং দুশ্চরিত্র পুরুষকুল দুশ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। সচ্চরিত্রা নারীকুল সচ্চরিত্র পুরুষকুলের জন্যে এবং সচ্চরিত্র পুরুষকুল সচ্চরিত্রা নারীকুলের জন্যে। তাদের সম্পর্কে লোকে যা বলে, তার সাথে তারা সম্পর্কহীন। তাদের জন্যে আছে ক্ষমা ও সম্মানজনক জীবিকা।



(০৪:১৬) নং আয়াতে যেহেতু তওবা করার অপশন রাখা হয়েছে, সুতরাং অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক এবং এই বিধান সম্পর্কে অজ্ঞদের (০৪:২৫) ও (০৪:১৭) ক্ষেত্রে প্রথমবার শাস্তি হ্রাস করার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া শাস্তি ভোগের ও তওবা করার পর ব্যভিচারী/ ব্যভিচারিণীদেরও যে বিয়ে করে বেঁচে থাকার সুযোগ রয়েছে, (২৪:০৩) ও (২৪:২৬) নং আয়াত লক্ষ্য করলে তা স্পষ্ট হয়ে যায়। তবে যারা ব্যভিচারী/ ব্যভিচারিণী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে তাদেরকে বিয়ে করা বিশ্বাসী পুরুষ ও নারীর জন্য হারাম করা হয়েছে। কারণ ব্যভিচারী/ ব্যভিচারিণীদের চাওয়া পাওয়া ও আচরণের সাথে মুমিনরা কখনই খাপ খাওয়াতে পারবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারাও তওবা করে কথায় ও কাজে সত্যিকার মুমিন হতে পারছে।



আল্লাহতায়ালা আল-কোরআনের বিভিন্ন স্থানে একই বক্তব্য ও বিধান একাধিকবার রিপিট করেছেন। কিন্তু ব্যভিচারের জন্য পাথর ছুঁড়ে মৃত্যুদন্ড দেবার কথা কি একটিবারও বলা হয়েছে? এ ধরনের একটি সাংঘাতিক শাস্তির বিধান তো অন্তত একবার স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকার কথা- কেননা এ বিষয়ে তো বিস্তারিত বিবরণের কথাই বলা আছে।



অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এ ধরনের বিচার করার অধিকার কোন গ্রাম্য মোল্লা ও সালিশকারীর নেই। যদি কোন অবাঞ্চিত ব্যাক্তি বা ব্যক্তিবর্গ আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, তবে তাকেও শাস্তি পেতে হবে। আল-কোরআনের আইনে বিচার করার জন্য ইসলামি জ্ঞান সম্পন্ন বিজ্ঞ বিচারকই একমাত্র যোগ্য ব্যাক্তি। এক্ষেত্রে অবশ্যই কমপক্ষে চারজন সাক্ষী থাকতে হবে। সাক্ষী তিন জন হলেও হবেনা। এটাই ফাইনাল। আর সাক্ষী একজন/ দুইজন হলে বিচার চাওয়ার পূর্বে আরও সাক্ষী না পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এ অবস্থায় বিচার চাইলে যদি অগত্যা সাক্ষীরা মিথ্যা বলেছে বলে প্রমানিত হয়, তাহলে সাক্ষীদেরকেই জনসম্মুখে আশিটি বেত্রাঘাত করা হবে এবং ভবিষ্যতে তাদের সাক্ষী আর গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না। স্বামী/স্ত্রী পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলে এক্ষেত্রে উভয়কেই লিয়ান করতে বলা হয়। অর্থাৎ আল্লাহর নামে শপথ করে নিজেকে নির্দোষ হিসেবে কসম করতে হবে। এক্ষেত্রে যদি কেউ মিথ্যা বলে- তাহলে সে হয়ত একালের সাময়িক শাস্তি থেকে বেঁচে যাবে। কিন্তু তাকে অবশ্যই পরকালীন কঠিন আজাব ভোগের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।



'লিয়ান' কিরূপে করতে হয় সে সম্পর্কে আল-কোরআনের বিধান-



২৪ নং সূরা আন-নূর (মদীনায় অবতীর্ণ ক্রম-১০২)

০৬: অর্থ- এবং যারা তাদের স্ত্রীদের প্রতি ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করে এবং তারা নিজেরা ছাড়া তাদের কোন সাক্ষী নেই, তখন প্রমাণ স্বরূপ তাদের প্রত্যেকে আল্লাহর কসম খেয়ে চারবার সাক্ষ্য দেবে, যে সে (স্বামী নিজে) অবশ্যই সত্যবাদী।

০৭: অর্থ- এবং পঞ্চমবার (স্বামী নিজে) বলবে যে, যদি সে মিথ্যাবাদী হয় তবে তার উপর আল্লাহর লানত।

০৮: অর্থ- এবং স্ত্রীর শাস্তি রহিত হয়ে যাবে যদি সে আল্লাহর কসম খেয়ে চার বার সাক্ষ্য দেয় যে, সে (তার স্বামী) অবশ্যই মিথ্যাবাদী;

০৯: অর্থ- এবং পঞ্চমবার বলে যে, যদি সে (তার স্বামী) সত্যবাদী হয় তবে তার (স্ত্রীর) ওপর আল্লাহর গযব নেমে আসবে।

১০: অর্থ- তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকলে এবং আল্লাহ তওবা কবুল কারী, প্রজ্ঞাময় না হলে কত কিছুই যে হয়ে যেত।

১১: অর্থ- যারা মিথ্যা অপবাদ রটনা করেছে, তারা তোমাদেরই একটি দল। তোমরা একে নিজেদের জন্যে খারাপ মনে করো না; বরং এটা তোমাদের জন্যে মঙ্গলজনক। তাদের প্রত্যেকের জন্যে ততটুকু আছে যতটুকু সে গোনাহ করেছে এবং তাদের মধ্যে যে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে, তার জন্যে রয়েছে বিরাট শাস্তি।



'Divorce' of Sahih Bukhari.

185: Narrated Sahl bin Sad As-Sa'idi: Uwaimir Al-'Ajlani came to 'Asim bin Adi Al-Ansari and asked, "O 'Asim! Tell me, if a man sees his wife with another man, should he kill him, whereupon you would kill him in Qisas, or what should he do? O 'Asim! Please ask Allah's Apostle about that." 'Asim asked Allah's Apostle about that. Allah's Apostle disliked that question and considered it disgraceful. What 'Asim heard from Allah's Apostle was hard on him. When he returned to his family, 'Uwaimir came to him and said "O 'Asim! What did Allah's Apostle say to you?" 'Asim said, "You never bring me any good. Allah's Apostle disliked to hear the problem which I asked him about." 'Uwaimir said, "By Allah, I will not leave the matter till I ask him about it." So 'Uwaimir proceeded till he came to Allah's Apostle who was in the midst of the people and said, "O Allah's Apostle! If a man finds with his wife another man, should he kill him, whereupon you would kill him (in Qisas): or otherwise, what should he do?" Allah's Apostle said, "Allah has revealed something concerning the question of you and your wife. Go and bring her here." So they both carried out the judgment of Lian, while I was present among the people (as a witness). When both of them had finished, 'Uwaimir said, "O Allah's Apostle! If I should now keep my wife with me, then I have told a lie". Then he pronounced his decision to divorce her thrice before Allah's Apostle ordered him to do so. (Ibn Shihab said, "That was the tradition for all those who are involved in a case of Lian."



বেশ কিছু হাদিছের উদ্ধৃতি দিয়ে এখনও পাথর ছুঁড়ে মৃত্যু দন্ড কার্যকর করার দাবি তোলা হয়। এই হাদিছ গুলোকে সরাসরি অস্বীকার করার মত ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি বিশ্বাস করি যে, রাসূল (সাঃ) কোন সময় যদি এ বিধানটি কার্যকর করেও থাকেন, তাহলে তখনকার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রুক্ষ মরু-এলাকার বর্বর স্বভাবের মানুষ গুলোর জন্য নিশ্চয় তা সঠিক ছিল। একটি হাদিছে (4211) ইহুদিকে ব্যভিচারের শাস্তি দেবার জন্য ইহুদি সম্প্রদায়ের স্মরণাপন্ন হওয়ার এবং তাদের কিতাব অনুসারে শাস্তি কার্যকর করার বিবরন এসেছে।



Sahih Muslim-

(4211) Abdullah b. 'Umar reported that a Jew and a Jewess were brought to Allah's Messenger (may peace be upon him) who had committed adultery. Allah's Messenger (may peace be upon him) came to the Jews and said: What do you find in Torah for one who commits adultery? They said: We darken their faces and make them ride on the donkey with their faces turned to the opposite direction (and their backs touching each other), and then they are taken round (the city). He said: Bring Torah if you are truthful. They brought it and recited it until when they came to the verse pertaining to stoning, the person who was reading placed his hand on the verse pertaining to stoning, and read (only that which was) between his hands and what was subsequent to that. Abdullah b. Salim who was at that time with the Messenger of Allah (may peace be upon him) said: Command him (the reciter) to lift his hand. He lifted it and there was, underneath that, the verse pertaining to stoning. Allah's Messenger (may peace be upon him) pronounced judgment about both of them and they were stoned. Abdullah b. 'Umar said: I was one of those who stoned them, and I saw him (the Jew) protecting her (the Jewess) with his body.



এখানে দেখুন ইহুদিদের কাছে তাদের ধর্মগ্রন্থের সমাধান বের করতে বলা হয়েছে এবং অনেকের উপস্থিতিতে এবং সাক্ষী ছিল বলেই তো তাদের ধর্মগ্রন্থ মতে শাস্তি দেয়া হয়েছিল।



তাছাড়া অন্য হাদিছের (4206) বর্ণনা অনুসারে বোঝা যায় যে, তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আসামীকে বার বার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আসামিরা তাদের কৃতকর্মের জন্য এতটাই অনুতপ্ত ছিল যে তারা পরকালীন মুক্তি পাবার আশায় পার্থিব শাস্তি বরন করে নেবার জন্য নিজেরাই ব্যতিব্যস্ত ছিল। রসূল (সাঃ) এর ওফাতের (ইন্তেকাল) পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যেহেতু ওয়াহী আসার সম্ভাবনা ছিল। তাই পূর্ববর্তী কিতাবের এই বিধানটি সম্পর্কে তিনি হঠাৎ করে নেগেটিভ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নাই। এ কারনেই হয়ত নতুন কোন বিধান আসে কিনা সেই আশায় বার বার আসামীকে ফিরিয়ে দেবার পরও অগত্যা তাদের মনের বাসনা পূরণের জন্য পূর্বের কিতাবের বিধানটি কার্যকর করেছিলেন।



(4206) 'Abdullah b. Buraida reported on the authority of his father that Ma'iz b. Malik al-Aslami came to Allah's Messenger (may peace be upon him) and said: Allah's Messenger, I have wronged myself; I have committed adultery and I earnestly desire that you should purify me. He turned him away. On the following day, he (Ma'iz) again came to him and said: Allah's Messenger, I have committed adultery. Allah's Messenger (may peace be upon him) turned him away for the second time, and sent him to his people saying: Do you know if there is anything wrong with his mind. They denied of any such thing in him and said: We do not know him but as a wise good man among us, so far as we can judge. He (Ma'iz) came for the third time, and he (the Holy Prophet) sent him as he had done before. He asked about him and they informed him that there was nothing wrong with him or with his mind. When it was the fourth time, a ditch was dug for him and he (the Holy Prophet) pronounced judg- ment about him and he wis stoned. He (the narrator) said: There came to him (the Holy Prophet) a woman from Ghamid and said: Allah's Messenger, I have committed adultery, so purify me. He (the Holy Prophet) turned her away. On the following day she said: Allah's Messenger, Why do you turn me away? Perhaps, you turn me away as you turned away Ma'iz. By Allah, I have become pregnant. He said: Well, if you insist upon it, then go away until you give birth to (the child). When she was delivered she came with the child (wrapped) in a rag and said: Here is the child whom I have given birth to. He said: Go away and suckle him until you wean him. When she had weaned him, she came to him (the Holy Prophet) with the child who was holding a piece of bread in his hand. She said: Allah's Apostle, here is he as I have weaned him and he eats food. He (the Holy Prophet) entrusted the child to one of the Muslims and then pronounced punishment. And she was put in a ditch up to her chest and he commanded people and they stoned her. Khalid b Walid came forward with a stone which he flung at her head and there spurted blood on the face of Khalid and so he abused her. Allah's Apostle (may peace be upon him) heard his (Khalid's) curse that he had huried upon her. Thereupon he (the Holy Prophet) said: Khalid, be gentle. By Him in Whose Hand is my life, she has made such a repentance that even if a wrongful tax-collector were to repent, he would have been forgiven. Then giving command regarding her, he prayed over her and she was buried.



কিন্তু দেখা যায যে, রাসূলের (সাঃ) ওফাতের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত রজমের বিধানটি আল্লাহর কিতাবে ওয়াহী হিসেবে সংযোজিত হয়নি। যেহেতু আল-কোরআনের বিধান শুধু আরবের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছে। তাই সমগ্র মানবজাতির জন্য আল-কোরআনে বিদ্যমান বিধানই সর্বোত্তম হিসেবে গ্রহন ও কার্যকর করাই মুসলিমদের ইমানী দায়িত্ব এবং এর মধ্যেই মানবজাতির কল্যাণ রয়েছে।



সুতরাং বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে মেরে প্রাণ সংহার আর নয়। বরং এই বিধানটি যেহেতু আল-কোরআনে নেই, তাই ইমানদার হিসেবে এই বিশ্বাস তো অবশ্যই রাখতে হবে যে, রজমের বিধানটি আল্লাহতায়ালার ইচ্ছাতেই তুলে নেয়া হয়েছে। আর যা নেই তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে জালিম সেজে জুলুম করা কোন মুসলিমের কর্ম হতে পারে না। রসূল (সাঃ) এর উপর অতিরিক্ত ভক্তির অজুহাত দেখিয়ে কোনরূপ বাড়াবাড়ি করা সঠিক কিনা তা ভেবে দেখা উচিত।



(অজ্ঞতা হেতু ভুল-ভ্রান্তি হয়ে গেলে মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমায় ক্ষমা করেন)

'ধর্ষণ' একটি মারাত্মক অপরাধ, আল-কোরআনের বিধান মতে ধর্ষণের শাস্তি-

মন্তব্য ৫৮ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (৫৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১০:৩৭

স্যার ... বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ।

+++

০৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১২:৫৮

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-

২| ০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১০:৪৬

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: একমাত্র বিচারক ছাড়া অন্য কারো হাতে বিচার করা ভার তুলে দিলে মানুষকে অন্যায়ভাবে ফাসিয়ে দেয়ার সুযোগ থাকে। সাধারণত গ্রাম গঞ্জে ফতোয়া দিয়ে যা করা হয়, সেটা হল পূর্বশত্রুতাবশত কাউকে হেয় করা বা বিপদে ফেলা। যার তার হাতে বিচার করার বিধান থাকার ফলে এই সমস্যা হচ্ছে।
কোরআনের এই সব আইন অনুযায়ী বিচার করা ও তা কার্যকর করার কতৃপক্ষ কে ? গ্রাম্য মোল্লা ও সালিশকারীরা ?

দয়া করে বিস্তারিত বলেন। আমার মনে হয়, আপনার লেখার সাথে এই প্রশ্নের উত্তর থাকলে লেখাটি বর্তমান সময়ের সাথে প্রাসঙ্গিক ও পরিপূর্ণ হবে। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

০৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১:০৩

মাহফুজশান্ত বলেছেন: আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ-

৩| ০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১১:০৫

আশরাফ মাহমুদ মুন্না বলেছেন: পড়লাম ভাই। বেশ কিছু বানান ভুল আছে। এডিট করে শুদ্ধ করে দেবেন আশা রাখি।

সমস্যা হচ্ছে কোরআন নিয়মিত পড়া হয় না। আগের পড়া নিয়ে মন্তব্য করতেও ভয় লাগে। পাছে মন্তব্য করতে ভুল হয়, তাই।

যাই হোক, আমার প্রশ্ন - "রজমের" ব্যাপারটি কি কোরআনে নেই? আমার মনে হয় আছে। তবে, মানসুখ হিসেবে। আল কোরআনে " নাসেখ-মানসুখ " আয়াতের ব্যাপারে আপনি নিশ্চই অবগত।

সময়ের স্বল্পতার কারণে অনুসন্ধান করতে পারছি না। বিস্তারিত লিখতে পারছি না।

কষ্ট করে আর একটু অনুসন্ধান করে জানাবেন? প্লীজ।

ধন্যবাদ।

০৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১:০৪

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

৪| ০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১১:০৮

লুকার বলেছেন:

আমেরিকা-ইউরোপের প্রায় সবাই ব্যাভিচারী ও বাস্টার্ড (কার্যার্থে)। তাইলে ঐখানে ইসলাম কায়েম হইলে কত বেত লাগবে, কত জল্লাদ লাগবে চিন্তা করেন! একেবারে হুলস্থুল কারবার!

০৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১:৪৯

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ইসলাম কায়েম তো হঠাৎ করেই হয়ে যাবে না-
এটি একটি কন্টিনিউয়াস প্রসেস- ততদিনে তারা ইসলামের অনেক কিছুই শিখে যাবে, ইনশাল্লাহ-
তবে অজ্ঞদের বেলায় তো সময় দিতে হবে এবং কিছু শিথিলতা থাকবেই-
তাছাড়া জনসমক্ষে কয়েকটা শাস্তি কার্যকর হলে, আপনি যতগুলো বেতের আশংকা করছেন- ইনফ্যাক্ট ততগুলো বেতের আর প্রয়োজন হবে না-
হুলুস্থুল বা এত চিন্তার কিছু নেই-

৫| ০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১১:১০

রূপক চৌধুরী বলেছেন: অনেক চমৎকার একটি লেখা।

০৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ২:৩৪

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

৬| ০৭ ই মে, ২০১১ রাত ১১:৩১

নিশাচর নাইম বলেছেন: খুব কষ্ট করে লিখেছেন তাই অনেক অনেক ধন্যবাদ।খুবেই ভাল লাগল লেখাটা।ব্যাভিচারের কারণে গর্বভতী হলে সন্তান না হওয়া পর্যন্ত ওই মহিলার সেবা-শ্বশ্রূষা করার এবং সন্তান জন্মগ্রহনের পর শাস্তি প্রয়োগের আদেশ রাসুল (সাঃ) স্বয়ং এক পরিবার কে দিয়েছিলেন তার শাসনামলে।

০৮ ই মে, ২০১১ রাত ৮:১০

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

৭| ০৮ ই মে, ২০১১ রাত ৮:১৮

শায়েরী বলেছেন: Vison sundor kore bornononankoresen
+++++

০৮ ই মে, ২০১১ রাত ৮:৫৯

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

৮| ০৯ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:৪৪

লেখাজোকা শামীম বলেছেন: কোরআনের এই সব আইন অনুযায়ী বিচার করা ও তা কার্যকর করার কতৃপক্ষ কে ? গ্রাম্য মোল্লা ও সালিশকারীরা ?

০৯ ই মে, ২০১১ দুপুর ১২:৪৬

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ভাই, আমার লেখাটি আবারও ভাল কোরে দেখুন- জবাব পেযে যাবেন-
আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ-

৯| ১২ ই মে, ২০১১ রাত ১০:০৯

ইন্জিনিয়ার রুমান বলেছেন: সবাইকে এগুলো জানা উচিত জানানো উচিত

১৩ ই মে, ২০১১ রাত ১:০১

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

১০| ১৭ ই মে, ২০১১ রাত ১:০৫

রিফাত হোসেন বলেছেন: আমার মনেও সংশয় ছিল অনেক দিন ধরে । ........ যে ব্যাভিচারের শাস্তি প্রস্তর নিক্ষেপে করাটা যথেষ্ট বরবর ।

কিন্তু আজ পরিষ্কার হলাম ।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++

আল্লাহ আপনাকে মঙ্গল করুক ।

১৭ ই মে, ২০১১ রাত ১:১০

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

১১| ১৭ ই মে, ২০১১ রাত ২:০৩

Abdullah Arif Muslim বলেছেন: মাহফুজ ভাই আমার জানা মতে সূরা নুর এ বলা হইছে,

(২৪:০২) ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর।

এই বিধানটা অবিবাহিত নারী পুরুষদের উপর আরোপ করা হইছিল।

--------------------------------------------------------------------------

কিন্তু বিবাহিত পুরুষ বা বিবাহিত মহিলা যদি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তাহলে
প্রথমত কোরআন অনুযায়ী শাস্তি।

(০৪:১৫) আর তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা দুষ্কর্ম (ব্যভিচারের) নিয়ে আসবে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চার জনকে সাক্ষী হিসেবে তলব কর। অতঃপর যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে সংশ্লিষ্টদেরকে গৃহে আবদ্ধ রাখ, যে পর্যন্ত মৃত্যু তাদেরকে তুলে না নেয় "অথবা আল্লাহ তাদের জন্য পথ করে দেন। "

দ্বিতীয়ত "অথবা আল্লাহ তাদের জন্য পথ করে দেন" বলতে রজমকে ইঙ্গিত করা হইছে। এই অন্য পথটাই রজম যেটা সহীহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তবে কোরআন অন্য কোথাও "অন্য পথ" এর কথা বলা হয় নাই। তবে রজম এর অনেক শর্ত আছে যেটা কাফেররা না জেনেই প্রচার করে থাকে ইসলামকে অবমাননা করার জন্য।

আমার জানা জ্ঞান থেকে বললাম। আল্লাহ নো দ্যা বেস্ট।

১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১০:১৯

মাহফুজশান্ত বলেছেন: 'আল্লাহ তাদের জন্য পথ করে দেন।'
এখানে পথ করে দেয়া বলতে কেন "রজম" বুঝতে হবে?
আল্লাহ 'তাদের জন্য পথ করে দেন' বলতে তো বেত্রাঘাতের শাস্তি প্রদান ও সাথে সাথে তওবা করার মাধ্যমে মুক্তির পথও হতে পারে-
মহান আল্লাহতায়ালা এসব বিষয় খুব স্পষ্টভাবেই বলে দেন।
যদি 'রজমের' মত এই সাংঘাতিক শাস্তি প্রদান করাই উদ্দেশ্য হত, তাহলে কি মহান স্রষ্টা তা প্রকাশ করতে কাউকে ভয় পেতেন বা লজ্জা বোধ করতেন?
কখনই না, বরং তিনি অবশ্যই 'রজমের' কথা পরিষ্কার ভাবেই ব্যক্ত করতেন- যেমন ভাবে তিনি পূর্ববর্তী ধর্মগ্রন্থে সেই নির্দেশ দান করেছিলেন-
আমার লেখার শেষের বক্তব্যগুলো আরেকবার পড়ে দেখতে পারেন-
অবশ্যই সর্বজ্ঞ আল্লাহতায়ালা নো দ্যা বেস্ট।

১২| ১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ৭:১৯

ফয়সাল ভিভ্‌ বলেছেন: আমাদের সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা ইসলাম এর কোনও বেপার এ ভালভাবে কিছু না বুঝে ই আনুমান নিরভর মনগড়া মন্তব্য করে বসেন। উদাহরণ দেন কিছু ধর্ম ব্যবসায়ী আশিক্ষত মানুষের যারা ইসলামের নিজস্ব মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়। আর এদেরকে দেখেই এদেশের তথাকথিত নাস্তিক প্রগতিশিলতার ধ্বজাধারী গবেট গুলা ইসলাম কে নিকৃষ্ট পর্যায়ভুক্ত দেখাতে তাদের ধ্যান জ্ঞান এক করে দেয়। অথচ ইসলাম কে বুঝতে হলে সর্বপ্রথম কুরান কে বুঝতে হবে। আনুসারিদের দেখে ইসলাম কে বর্ণনা করলে সেটা মূর্খতার এ সামিল।

লেখক আপনাকে ধন্যবাদ ।

১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১০:২২

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

১৩| ১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:১৯

েপচাইললা বলেছেন: valo lekha, plus.

১৭ ই মে, ২০১১ দুপুর ১২:০৯

মাহফুজশান্ত বলেছেন: মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

১৪| ১৭ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:২০

Abdullah Arif Muslim বলেছেন: বরং এই বিধানটি যেহেতু আল-কোরআনে নেই, তাই ইমানদার হিসেবে এই বিশ্বাস তো অবশ্যই রাখতে হবে রজমের বিধানটি আল্লাহতায়ালার ইচ্ছাতেই তুলে নেয়া হয়েছে।

=> মাহফুজ ভাই ব্যাপারটা অনেকটা অনুমান নির্ভর হয়ে গেলো না। যদি সহীহ হাদিসে না থাকতো এবং যইফ ও জাল হাদিসে থাকতো তাহলে সেই বিশ্বাস রাখা যেত যেটা আপনি বলছেন। আর শিয়াদের দেশ ইরানেও কিন্তু রজম চালু আছে। ইরানী এক মহিলাকে পাথর মেরে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হইছিল কিছু দিন আগে। পরে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে সেটা প্রত্যাহার করা হইছিল। সেই মহিলা যেই উক্তিটি করেছিল যে, "ইরানে যেকোন অন্যায় থেকে ব্যভিচারকে খুবই গুরুত্বপূর্ণরূপে দেখা হয়"। আর ইসলাম অনুযায়ী ব্যভিচার অবশ্যই মারাত্মক অপরাধ। সহীহ হাদিসে যদি থাকে তাহলে মানতে অসুবিধা কোথায়। যদি কোনদিন বাংলাদেশে খিলাফাত প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলে অবশ্যই রজম চালু করা হবে যেহেতু আল্লাহর রাসুল চালু করেছিলেন। আর

(২৪:০২) আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে গিয়ে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক।

রজম যদিও আল্লাহর কোরআনের বিধান নয় কিন্তু রাসুল সাঃ এর আনুগত্য আমাদের জন্য ফরজ। তাই রজম কার্যকর করতেও যেন আমাদের দয়ার উদ্রেক না হয় কারণ আল্লাহর রাসুল সাঃ এর সাহাবাদের এ ব্যাপারে দয়ার উদ্রেক হয় নি। আমার বিরুদ্ধেও যদি রজম জারী করা হয় এবং যদি আমি অপরাধী হয়ে থাকি তাহলে অবশ্যই আমি সেটা মেনে নেব।

জাজাকাল্লাহ।

১৭ ই মে, ২০১১ রাত ১১:৪৩

মাহফুজশান্ত বলেছেন: (২৪:০২) আল্লাহর বিধান কার্যকর করতে গিয়ে তাদের প্রতি যেন তোমাদের মনে দয়ার উদ্রেক না হয়, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ও পরকালের প্রতি বিশ্বাসী হয়ে থাক।

ভাই, আমি তো স্পষ্ট্বই বলেছি-
একজন ইমানদার যেহেতু মহান স্রষ্টার বিধানকেই সর্বোত্তম হিসেবে বিশ্বাস করে। কাজেই আল-কোরআনে ব্যভিচারী পুরুষ ও নারী সম্পর্কে ক্ষেত্র বিশেষে যতটুকু কাঠিন্য অবলম্বন করা বা ছাড় দেয়ার বিধান আছে, তা তো তাকে মানতেই হবে। একজন মুসলিম হিসেবে আমার মনোভাবও একই এবং আমি যে এর পক্ষে কোনরূপ শৈথিল্য প্রদর্শন বা ছাড় দিতে রাজি নই তা আশ্বস্ত করছি। অন্য কোন মানবতাবাদী (আন্তর্জাতিক আইন) মতবাদ নয়, বরং আল-কোরআন যতটুকু মানবতা দেখানোর পারমিশন দিয়েছে, ততটুকুই ঠিকমত মেনে চলতে পারলেই মানবতার মহৎ কর্মটিও যথাযথ ভাবে পালিত হবে বলে আমি সম্পূর্ণ আস্থা রাখি।

মাহফুজ ভাই ব্যাপারটা অনেকটা অনুমান নির্ভর হয়ে গেলো না।

ভাই, অনুমান নির্ভর কোনটা? যা নেই তা নেযে বাড়াবাড়ি করাটা কি অনুমান নির্ভর হয়ে যায় না?

আল্লাহতায়ালা বেত্রাঘাতের যে নির্দেশ দিয়েছেন, সে ব্যপারে তো আমার কোনই আপত্তি নেই-
আর রাসূল (সাঃ) যা করেছেন তা তো আমি অস্বীকার করাছি না এবং আমি বিষয়টি যেভাবে দেখি-

বেশ কিছু হাদিছের উদ্ধৃতি দিয়ে এখনও পাথর ছুঁড়ে মৃত্যু দন্ড কার্যকর করার দাবি তোলা হয়। এই হাদিছ গুলোকে সরাসরি অস্বীকার করার মত ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি বিশ্বাস করি যে, রাসূল (সাঃ) কোন সময় যদি এ বিধানটি কার্যকর করে থাকেন, তাহলে তখনকার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রুক্ষ মরু-এলাকার বর্বর স্বভাবের মানুষ গুলোর জন্য নিশ্চয় তা সঠিক ছিল। একটি হাদিছে (4211) ইহুদিকে ব্যভিচারের শাস্তি দেবার জন্য ইহুদি সম্প্রদায়ের স্মরণাপন্ন হওয়ার এবং তাদের কিতাব অনুসারে শাস্তি কার্যকর করার বিবরন এসেছে। ইহুদিদের কাছে তাদের ধর্মগ্রন্থের সমাধান বের করতে বলা হয়েছে এবং অনেকের উপস্থিতিতে এবং সাক্ষী ছিল বলেই তো তাদের ধর্মগ্রন্থ মতে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

তাছাড়া অন্য হাদিছের (4206) বর্ণনা অনুসারে বোঝা যায় যে, তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আসামীকে বার বার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আসামিরা তাদের কৃতকর্মের জন্য এতটাই অনুতপ্ত ছিল যে তারা পরকালীন মুক্তি পাবার আশায় পার্থিব শাস্তি বরন করে নেবার জন্য নিজেরাই ব্যতিব্যস্ত ছিল। রসূল (সাঃ) এর ওফাতের (ইন্তেকাল) পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যেহেতু ওয়াহী আসার সম্ভাবনা ছিল। তাই পূর্ববর্তী কিতাবের এই বিধানটি সম্পর্কে তিনি হঠাৎ করে নেগেটিভ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নাই। এ কারনেই হয়ত নতুন কোন বিধান আসে কিনা সেই আশায় বার বার আসামীকে ফিরিয়ে দেবার পরও অগত্যা তাদের মনের বাসনা পূরণের জন্য পূর্বের কিতাবের বিধানটি কার্যকর করেছিলেন।

কিন্তু দেখা যায যে, রাসূলের (সাঃ) ওফাতের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত রজমের বিধানটি আল্লাহর কিতাবে ওয়াহী হিসেবে সংযোজিত হয়নি। যেহেতু আল-কোরআনের বিধান শুধু আরবের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছে। তাই সমগ্র মানবজাতির জন্য আল-কোরআনে বিদ্যমান বিধানই সর্বোত্তম হিসেবে গ্রহন ও কার্যকর করাই মুসলিমদের ইমানী দায়িত্ব এবং এর মধ্যেই মানবজাতির কল্যাণ রয়েছে।

কিছু দিন আগের যে ঘটনা আপনি উল্লেখ করেছেন-
এ সব কারনে ইরান একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র হওয়া সত্বেও ইরানী যে মহিলাকে পাথর মেরে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হইছিল, পরে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে সেটা প্রত্যাহার করা হয়।

এভাবে যে রজমের বিধান আল্লাহর কিতাবে বর্তমান নেই, সেই বিধানকে আল্লাহর আইন বানিয়ে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে তা আবার বাতির করাটা চরম অবমাননাকর নয় কি?

এখন আমাকে বলুন-
এখনও যদি 'রজম' বিধান থেকে থাকে তাহলে বিবাহিত যুদ্ধবন্দি/ বন্দীনরি শাস্তি কিভাবে অর্ধেক করবেন?
১০০ বেত্রাঘাতের শাস্তিকে অর্ধেক (৫০ বেত্রাঘাত) করা যায়, কিন্তু রজমের শাস্তিকে অর্ধেক করার কোন অর্থ আছে কি?
অথচ আল্লাহতায়ালা স্পষ্টভাবে বলেছেন-

সূরা আন নিসা ( মদীনায় অবতীর্ণ )
(৪:২৫) আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন বিশ্বাসী নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে যেন তোমাদের ( مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ) 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত' বিশ্বাসী যুবতীদেরকে বিয়ে করে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা তো একে অন্য থেকে, অতএব তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতি নিয়ে বিয়ে কর, আর নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর; বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য- ব্যভিচার করার জন্য নয় কিংবা রক্ষিতা রূপে গ্রহণ করার জন্যও নয়। তারপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল আচরন করে, তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা পাপের ভয় করে। আর যদি ধৈর্য ধারন কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম-করুণাময়।

শুধু তাই নয়- (০৪:১৫) নয় আয়াতে তো নারীর ক্ষেত্রে অন্য পথ দেখানোর বিষয়টি এসছে। তার অর্থ কি আল্লাহতায়ালা শুধু নারীকেই 'রজমের' শাস্তির প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন?
না, রাহমানুর রাহীম কখনই তা করেন নাই, বরং তিনি ব্যভিচারের শাস্তি ভোগের পর তওবার সুযোগও রেখেছেন। আর বাঁচার সুযোগ না থাকলে তওবা করার সুযোগ মিলবে কেমনে?
সূরা আন নিসা ( মদীনায় অবতীর্ণ )
(০৪:১৬) তোমাদের মধ্য থেকে যে দুইজন সেই কু-কর্মে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু।
(০৪:১৭) অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন যারা ভূল বশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সর্ববিষয়ে জ্ঞানী ও কুশলী।


আল্লাহর কিতাবে ব্যভিচারের জন্য যে শাস্তি বর্তমান আছে- তা সমগ্র মানবজাতির জন্য অবশ্যই কল্যাণকর এবং সর্বকালের জন্য উপযোগী। আর সেই শাস্তি দেবার ব্যপারে আমি এক বিন্দুও ছাড় দেবার পক্ষপাতি নই। আবার আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে তা বাতিল করাও পক্ষে নই।

সুতরাং ব্যভিচারের জন্য বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে মেরে প্রাণ সংহার আর নয়। বরং এই বিধানটি যেহেতু আল-কোরআনে নেই, তাই ইমানদার হিসেবে এই বিশ্বাস তো অবশ্যই রাখতে হবে 'রজমের' বিধানটি আল্লাহতায়ালার ইচ্ছাতেই তুলে নেয়া হয়েছে। আর যা নেই তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে জালিম সেজে জুলুম করা কোন মুসলিমের কর্ম হতে পারে না। রসূল (সাঃ) এর উপর অতিরিক্ত ভক্তির অজুহাত দেখিয়ে কোনরূপ বাড়াবাড়ি করা সঠিক কিনা তা ভেবে দেখা উচিত।

মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

১৫| ১৭ ই জুন, ২০১১ রাত ১২:৫৩

আমানত হোসেন বলেছেন: অনেক গবেষনাধমী লেখা।ধন্যবাদ।+++++++++++

১৭ ই জুন, ২০১১ বিকাল ৩:৪২

মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ার ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ-

মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-

১৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৪:১২

অগ্নি যোদ্ধা বলেছেন: হুম বুঝলাম।

ধন্যবাদ।

১২ ই অক্টোবর, ২০১১ বিকাল ৪:১৫

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ-

১৭| ১২ ই মে, ২০১২ রাত ১:২৬

আবু উযাইর বলেছেন: ভাই, চমৎকার লিখেছেন, মা-শা আল্লাহ।

তবে রজমের ব্যাপার কুরআনে নেই সত্য তবে অনেক বিশুদ্ধ হাদীস এর স্বপক্ষে আছে। আশা করি আপনি হাদীসগুলো জেনে নেবেন।

ইসলামী শরীয়াহর কিছু আইন আছে যা আপনি কুরআনে পাবেননা কিন্তু বিশুদ্ধ হাদীসে আছে। যেমন, কতটুকু চুরি করলে হাত কেটে দিতে হবে তা হাদীস থেকে পাওয়া যায় এবং যেটা উমার রাঃ তাঁর শাসনকালে বাস্তবায়ন করেছিলেন।

আহ্লুল কুরআন নামে একটি গোষ্ঠী আছে যারা হাদীসকে মানতে চায়না। আশা করি আল্লাহ আপনাকে আর আমাকে এদের ফিতনা থেকে মুক্ত রাখবেন।

১২ ই মে, ২০১২ দুপুর ১২:৫৪

মাহফুজশান্ত বলেছেন: অনুগ্রহ করে ১৪ নং মন্তব্যের জবাবটি আগে দেখে নিন।

ইসলামী শরীয়াহর কিছু আইন আছে যা আপনি কুরআনে পাবেননা কিন্তু বিশুদ্ধ হাদীসে আছে। যেমন, কতটুকু চুরি করলে হাত কেটে দিতে হবে তা হাদীস থেকে পাওয়া যায় এবং যেটা উমার রাঃ তাঁর শাসনকালে বাস্তবায়ন করেছিলেন।

জী ভাই, ঠিক বলেছেন। হাত কাটার বিধানটি কিন্তু আল- কোরআনে আছে। এ বিষয়টি আমি খুব ভাল করেই জানি। তাই আমিও কখনই এর বিপক্ষে নই। সুতরাং কখন কি পরিমাণ চুরি করলে চোরের কতটুকু হাত কাটতে হবে তা নির্ধারণের জন্য হাদিছ অনুসরণ করা যেতেই পারে এবং এটাই উত্তম। কিন্তু চোরের হাত কাটার বিধানটি যদি আল্লাহর কিতাবে না থাকত, তাহলে শুধু হাদিছের উপরে নির্ভর করে হাত কাটাকাটি না করার প্রশ্ন আসত। তাই রজমের সাথে হাত কাটার বিষয়টি টেনে আনা ঠিক নয়।

আহ্লুল কুরআন নামে একটি গোষ্ঠী আছে যারা হাদীসকে মানতে চায়না। আশা করি আল্লাহ আপনাকে আর আমাকে এদের ফিতনা থেকে মুক্ত রাখবেন।

এই পোষটি পড়ার আমন্ত্রণ রইল- আপনি কি 'আহলে-কুরআন' নামক ভ্রান্ত দলের অনুসারী?
ধন্যবাদ-

১৮| ১২ ই মে, ২০১২ রাত ১১:৪২

আবু উযাইর বলেছেন: ভাই, আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দিন।

রজমের ব্যাপারে বেশ কিছু শীহ হাদীস আছে। আপনি মদীনার একটি মহিলার সে বিখ্যাত হদ এর ব্যাপারে পড়েছেন কিনা জানিনা, যে মেয়েটি জিনা করার পর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে অনুতপ্ত হয়ে এসে হদ দেবার জন্য আবেদন জানিয়েছিলো। রাসুল সাঃ প্রথমে তাকে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়া পর্যন্তঁ অপেক্ষা করতে বলেলেন, তারপর সন্তান হলে তিনি তাকে বাচ্চার দুধ খাবার বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন। বাচ্চার ২ বছর হয়ে যাবার পর সে মহিলা আসলে এবার তিনি তাকে রজমের হুকুম দিয়েছিলেন।

একইভাবে আরো কয়েকটি রজমের উল্লেখ সহীহ গ্রন্থগুলোতে আছে।

হাদিসের প্রসঙ্গে বলি-

বুখারী আর মুসলিম এর ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই এবং ইসলামের ইতিহাসে সত্যপন্থী আলিমদেরও ছিলোনা। আমার জানামতে এই দুটি সহীয়াইনে কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু নেই। তবে অন্য হাদীস গ্রন্থগুলোরও তাহকীক করা হয়েছে। ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ তাহকীক না হলেও সেগুলো যথেষ্ট আমানতদারীর সাথেই করার চেষ্টা করা হয়েছে।

১৩ ই মে, ২০১২ সকাল ১০:১৬

মাহফুজশান্ত বলেছেন: বেশ কিছু হাদিছের উদ্ধৃতি দিয়ে এখনও পাথর ছুঁড়ে মৃত্যু দন্ড কার্যকর করার দাবি তোলা হয়। এই হাদিছ গুলোকে সরাসরি অস্বীকার করার মত ধৃষ্টতা আমার নেই। আমি বিশ্বাস করি যে, রাসূল (সাঃ) কোন সময় যদি এ বিধানটি কার্যকর করে থাকেন, তাহলে তখনকার অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রুক্ষ মরু-এলাকার বর্বর স্বভাবের মানুষ গুলোর জন্য নিশ্চয় তা সঠিক ছিল। একটি হাদিছে (4211) ইহুদিকে ব্যভিচারের শাস্তি দেবার জন্য ইহুদি সম্প্রদায়ের স্মরণাপন্ন হওয়ার এবং তাদের কিতাব অনুসারে শাস্তি কার্যকর করার বিবরন এসেছে। ইহুদিদের কাছে তাদের ধর্মগ্রন্থের সমাধান বের করতে বলা হয়েছে এবং অনেকের উপস্থিতিতে এবং সাক্ষী ছিল বলেই তো তাদের ধর্মগ্রন্থ মতে শাস্তি দেয়া হয়েছে।

তাছাড়া অন্য হাদিছের (4206) বর্ণনা অনুসারে বোঝা যায় যে, তিনি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আসামীকে বার বার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু আসামিরা তাদের কৃতকর্মের জন্য এতটাই অনুতপ্ত ছিল যে তারা পরকালীন মুক্তি পাবার আশায় পার্থিব শাস্তি বরন করে নেবার জন্য নিজেরাই ব্যতিব্যস্ত ছিল। রসূল (সাঃ) এর ওফাতের (ইন্তেকাল) পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত যেহেতু ওয়াহী আসার সম্ভাবনা ছিল। তাই পূর্ববর্তী কিতাবের এই বিধানটি সম্পর্কে তিনি হঠাৎ করে নেগেটিভ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন নাই। এ কারনেই হয়ত নতুন কোন বিধান আসে কিনা সেই আশায় বার বার আসামীকে ফিরিয়ে দেবার পরও অগত্যা তাদের মনের বাসনা পূরণের জন্য পূর্বের কিতাবের বিধানটি কার্যকর করেছিলেন।

কিন্তু দেখা যায যে, রাসূলের (সাঃ) ওফাতের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত রজমের বিধানটি আল্লাহর কিতাবে ওয়াহী হিসেবে সংযোজিত হয়নি। যেহেতু আল-কোরআনের বিধান শুধু আরবের জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির জন্য প্রেরিত হয়েছে। তাই সমগ্র মানবজাতির জন্য আল-কোরআনে বিদ্যমান বিধানই সর্বোত্তম হিসেবে গ্রহন ও কার্যকর করাই মুসলিমদের ইমানী দায়িত্ব এবং এর মধ্যেই মানবজাতির কল্যাণ রয়েছে।

কিছু দিন আগের যে ঘটনা আপনি উল্লেখ করেছেন-
এ সব কারনে ইরান একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র হওয়া সত্বেও ইরানী যে মহিলাকে পাথর মেরে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হইছিল, পরে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে সেটা প্রত্যাহার করা হয়।

এভাবে যে রজমের বিধান আল্লাহর কিতাবে বর্তমান নেই, সেই বিধানকে আল্লাহর আইন বানিয়ে নিয়ে আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে তা আবার বাতিল করাটা চরম অবমাননাকর নয় কি?

এখন আমাকে বলুন-
এখনও যদি 'রজম' বিধান থেকে থাকে তাহলে বিবাহিত যুদ্ধবন্দি/ বন্দীনরি শাস্তি কিভাবে অর্ধেক করবেন?
১০০ বেত্রাঘাতের শাস্তিকে অর্ধেক (৫০ বেত্রাঘাত) করা যায়, কিন্তু রজমের শাস্তিকে অর্ধেক করার কোন অর্থ আছে কি?
অথচ আল্লাহতায়ালা স্পষ্টভাবে বলেছেন-

সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(৪:২৫) আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাধীন বিশ্বাসী নারীকে বিয়ে করার সামর্থ্য রাখে না, সে যেন তোমাদের ( مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ) 'ডান হাতের অধিকারভুক্ত' বিশ্বাসী যুবতীদেরকে বিয়ে করে। আল্লাহ তোমাদের ঈমান সম্পর্কে ভালোভাবে জ্ঞাত রয়েছেন। তোমরা তো একে অন্য থেকে, অতএব তাদেরকে তাদের মালিকের অনুমতি নিয়ে বিয়ে কর, আর নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে মোহরানা প্রদান কর; বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য- ব্যভিচার করার জন্য নয় কিংবা রক্ষিতা রূপে গ্রহণ করার জন্যও নয়। তারপর যখন তারা বিবাহ বন্ধনে এসে যায়, তখন যদি কোন অশ্লীল আচরন করে, তবে তাদেরকে স্বাধীন নারীদের অর্ধেক শাস্তি ভোগ করতে হবে। এ ব্যবস্থা তাদের জন্যে, তোমাদের মধ্যে যারা পাপের ভয় করে। আর যদি ধৈর্য ধারন কর, তবে তা তোমাদের জন্যে উত্তম। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম-করুণাময়।

শুধু তাই নয়- (০৪:১৫) নয় আয়াতে তো নারীর ক্ষেত্রে অন্য পথ দেখানোর বিষয়টি এসছে। তার অর্থ কি আল্লাহতায়ালা শুধু নারীকেই 'রজমের' শাস্তির প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন?

না, রাহমানুর রাহীম কখনই তা করেন নাই, বরং তিনি ব্যভিচারের শাস্তি ভোগের পর তওবার সুযোগও রেখেছেন। আর বাঁচার সুযোগ না থাকলে তওবা করার সুযোগ মিলবে কেমনে?

সূরা আন নিসা (মদীনায় অবতীর্ণ)
(০৪:১৬) তোমাদের মধ্য থেকে যে দুইজন সেই কু-কর্মে লিপ্ত হয়, তাদেরকে শাস্তি প্রদান কর। অতঃপর যদি উভয়ে তওবা করে এবং নিজেদের সংশোধন করে, তবে তাদের থেকে হাত গুটিয়ে নাও। নিশ্চয় আল্লাহ তওবা কবুলকারী, দয়ালু। (০৪:১৭) অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন যারা ভূল বশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ তায়ালাই হচ্ছেন সর্ববিষয়ে জ্ঞানী ও কুশলী।

আল্লাহর কিতাবে ব্যভিচারের জন্য যে শাস্তি বর্তমান আছে- তা সমগ্র মানবজাতির জন্য অবশ্যই কল্যাণকর এবং সর্বকালের জন্য উপযোগী। আর সেই শাস্তি দেবার ব্যপারে আমি এক বিন্দুও ছাড় দেবার পক্ষপাতি নই। আবার আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে তা বাতিল করাও পক্ষে নই।

সুতরাং ব্যভিচারের জন্য বুক পর্যন্ত মাটিতে পুঁতে পাথর মেরে মেরে প্রাণ সংহার আর নয়। বরং এই বিধানটি যেহেতু আল-কোরআনে নেই, তাই ইমানদার হিসেবে এই বিশ্বাস তো অবশ্যই রাখতে হবে 'রজমের' বিধানটি আল্লাহতায়ালার ইচ্ছাতেই তুলে নেয়া হয়েছে। আর যা নেই তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে জালিম সেজে জুলুম করা কোন মুসলিমের কর্ম হতে পারে না। রসূল (সাঃ) এর উপর অতিরিক্ত ভক্তির অজুহাত দেখিয়ে কোনরূপ বাড়াবাড়ি করা সঠিক কিনা তা ভেবে দেখা উচিত।
...............................................
বুখারী আর মুসলিম এর ব্যাপারে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই এবং ইসলামের ইতিহাসে সত্যপন্থী আলিমদেরও ছিলোনা। আমার জানামতে এই দুটি সহীয়াইনে কুরআনের সাথে সাংঘর্ষিক কিছু নেই। তবে অন্য হাদীস গ্রন্থগুলোরও তাহকীক করা হয়েছে। ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ তাহকীক না হলেও সেগুলো যথেষ্ট আমানতদারীর সাথেই করার চেষ্টা করা হয়েছে।

আল-কোরআন ছাড়া মানব রচিত কোন পুস্তককে আমি ১০০ ভাগ বিশুদ্ধ মনে করি না। তবে আল-কোরআনের পরে অন্যান্য পুস্তকের মধ্যে 'সহীহায়ন' আমার কাছে অধিক প্রিয়। কিন্তু তাই বলে এর উপর ভর করে আল্লাতায়ালার বিধানকে উপেক্ষা করা আমার নীতি বিরুদ্ধ। পৃথিবী যত বড় আলেমই যত যুক্তি বা ফতোয়া দিক না কেন- আমি তা কখনই মানতে পারব না।

আমি বুখারী শরীফের একটি পরিচ্ছেদে (পরিচ্ছেদ: ১৩৮৬, বুখারী শরীফ, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা-৯১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন্স বাংলাদেশ) উল্লেখিত বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই-

হাদিছের সাথে সংযোজিত এ ধরনের বক্তব্য সম্পর্কে আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা আমি স্বীকার করছি। মুসলিম জ্ঞানী ব্যক্তিবর্গ ও আল্লাহর পরহেজগার বান্দাদের নামে চালানো এসব বক্তব্য আদৌ তাদের কিনা তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার বলে আমি মনে করি। আমি বিশ্বাস করি যুদ্ধবন্দী সম্পর্কে ইসলামের বিধান ক্ষেত্র বিশেষে কিয়ামত পর্যন্ত কার্যকর থাকতে পারে।

আবারও বলছি- হাদিছ সম্পর্কে আমার কোন খটকা নেই। হাদিছের উপরে- পরিচ্ছেদে উল্লেখিত বসরি (র) ও আতা (র) এর বক্তব্যটি পবিত্র কোরআনের কোন আয়াত বা হাদিসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং কিভাবে- তা নিয়ে আমার মনে খটকা ও প্রশ্ন আছে!? আদৌ কি সেগুলো তাঁদের বক্তব্য? কারন যতটুকু জ্ঞান রাখি তার আলোকে মনে হয় এগুলো আল-কোরআন ও রাসূল (সাঃ) এর আদর্শের সাথে খাপ খায় না। খন্ডিত ভাবে এসব বক্তব্যের কারনে অনেকেই দ্বন্দে ভোগেন এবং সাধারন পাঠকদের মনে ভুল ধারনার সৃষ্টি হতে পারে। শুধু তাই নয় অনেকে অজ্ঞতা বশত এ ধরনের বক্তব্যকে হাদিছের উপরে স্থান দিতেও কোমর বেধে নেমে পরে। তাই কোন ভিত্তি না থাকলে হাদিছ গ্রন্থে এ ধরনের মতামতকে সংযোজন না করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেয়া যায় কিনা তা ভেবে দেখবেন। বিস্তারিত এখানে দেখুন-

মহান আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদের সঠিক পথে চলার তৌফিক দান করেন-
ধন্যবাদ-

১৯| ১৪ ই মে, ২০১২ রাত ১২:৫৫

আবু উযাইর বলেছেন: বর্বর স্বভাবের আরবদের জন্য রাসুলুল্লাহ সাঃ রজমের ফায়সালা দিয়েছিলেন-এবক্তব্য কোনভাবেই ইসলামী আকিদার সাথে যায়না বরং তা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর ইনসাফ এবং আল্লাহর আইন মানার ব্যাপারে তাঁর কঠোরতার বিপরীতেই যায়। সত্যটা হলো যে, কুরআনের মতোই হাদীসও ওহীর অংশ এবং ইসলামী আকিদার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এই বিশ্বাস।

ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানের যে ব্যাপার আপনি উল্লেখ করেছেন সে প্রসঙ্গে প্রথমেই আমি বলতে চাই, ইসলামের সাথে ইরান বা রাফেজী বা শিয়াদের কোন সম্পর্ক নেই। শী'ইজম সম্পর্কে আপনি ভালোভাবে জানেন বলেই আমি ধরে নিচ্ছি।

কাফিরদের হুমকিতে ইসলামী বিধান থেকে সরে আসা এটা প্রমাণ করেনা যে বিধানটি ভুল, বরং এটা মুসলিমদের ঈমানী দুর্দশাকেই ফুটিয়ে তুলে। আজ যদি আপনি আমাদের দেশে চুরির জন্য হাত কাটার বিধান চালু করতে যান, তাহলে আমেরিকা বা ইজ্রাইলের প্রয়োজন নেই, খোদ আপনার স্বজাতিই আপনাকে চুড়ান্ত শাস্তি দেবে, কিন্তু তাই বলে আল্লাহর এ বিধানের কোন অন্যথ্যা হবেনা বরং তা চিরকাল শ্রেষ্ঠই থাকবে।

কুরআন ছাড়া অন্য বিধান শতভাগ বিশ্বস্ত নয়- এ বক্তব্যের সাথে আমিও একমত। তবে শুধু এ কথার ভিত্তিতেই আমরা হাদীসকে বাদ দিয়ে দেব তা হতে পারেনা।

বুখারীর বর্ণনার যে উল্লেখ আপনি করেছেন তার সম্পর্কে আমি জানিনা এবং আমার জ্ঞান অত্যন্ত কম। তবে ফিকহের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে আলিমদের নানা মত আছে এমনকি অনেক মত পুরো একটি আরেকটির বিপরীত। আব্দুল্লাহ বিন আব্বাসের মত সাহাবা মু'তা বিয়েকে জায়িজ বলে রায় দিয়েছেন যেটা তৎকালীন সকল সাহাবার মতের বিরুদ্ধে ছিলো। এগুলো মানবীয় ভুল এবং তা হতেই পারে।

১৪ ই মে, ২০১২ দুপুর ১২:৪২

মাহফুজশান্ত বলেছেন: কুরআনের মতোই হাদীসও ওহীর অংশ এবং ইসলামী আকিদার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো এই বিশ্বাস।

কুরআন ছাড়া অন্য বিধান শতভাগ বিশ্বস্ত নয়-

আপনার এই বক্তব্য দুটি পরস্পর বিরোধী। সত্যকে আমাদের আরো ভাল করে জানার প্রয়োজন রয়েছে।

জী ভাই, ঠিক বলেছেন। আল্লাহর কিতাব আল-কোরআনের বিধানই চুড়ান্ত। আর হাত কাটার বিধানটি যে আল- কোরআনে আছে এ বিষয়টি আমি খুব ভাল করেই জানি। তাই আমিও কখনই এর বিপক্ষে নই। সুতরাং কখন কি পরিমাণ চুরি করলে চোরের হাত কাটতে হবে তা নির্ধারণের জন্য হাদিছ অনুসরণ করা যেতেই পারে এবং এটাই উত্তম। কিন্তু চোরের হাত কাটার বিধানটি যদি আল্লাহর কিতাবে না থাকত, তাহলে শুধু হাদিছের উপরে নির্ভর করে হাত কাটাকাটি না করার প্রশ্ন আসত। তাই রজমের সাথে হাত কাটার বিষয়টি টেনে আনা ঠিক নয়। কাফিরদের হুমকি ধামকিকে ভয় পাওয়া আমার ধর্ম নয়। সেই আল-কোরআনের বিধানের অন্যথা করাকেই আমি ভয় পাই যা মহান স্রষ্টা স্বয়ং সংরক্ষণ করার অঙ্গিকার করেছেন।

ইসলামের সাথে ইরান বা রাফেজী বা শিয়াদের কোন সম্পর্ক নেই।

এতটা কট্টর হবার অধিকার কি আল-কোরআন আপনাকে দেয়?
দুঃখিত! আমি ইরানের ান্ধ সাপোর্টার না হলেও অন্তত আপনার এ মতের সাথে সম্পূর্ণ একমত হতে পারছি না।

কুরআন ছাড়া অন্য বিধান শতভাগ বিশ্বস্ত নয়- এ বক্তব্যের সাথে আমিও একমত। তবে শুধু এ কথার ভিত্তিতেই আমরা হাদীসকে বাদ দিয়ে দেব তা হতে পারেনা।

আমি হাদিছকে বাদ দিতে বলিনি। কারন আমিও হাদিছ মানি। কিন্তু তাই বলে যে হাদিছের বক্তব্য আল-কোরআনের নির্দেশকে ছাপিয়ে যায়- তা মেনে নেয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কারন আল-কোরআনই জাল হাদিছ চেনার উত্তম মাপকাঠি হতে পারে। এরপর অন্যান্য ক্রাইটেরিয়ার কথা ভাবা যেতে পারে।

বুখারীর বর্ণনার যে উল্লেখ আপনি করেছেন তার সম্পর্কে আমি জানিনা এবং আমার জ্ঞান অত্যন্ত কম। তবে ফিকহের বিভিন্ন সিদ্ধান্তে আলিমদের নানা মত আছে এমনকি অনেক মত পুরো একটি আরেকটির বিপরীত। আব্দুল্লাহ বিন আব্বাসের মত সাহাবা মু'তা বিয়েকে জায়িজ বলে রায় দিয়েছেন যেটা তৎকালীন সকল সাহাবার মতের বিরুদ্ধে ছিলো। এগুলো মানবীয় ভুল এবং তা হতেই পারে।

ঠিক বলেছেন। আলিমদের নানা মত আছে। কিন্তু ভাই আল-কোরআনের মত তো একটাই। আমারই একমাত্র ইসলামের অনুসারী হিসেবে নিজেদের দাবি করি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, দলাদলি ছেড়ে ইসলামের মূল মহান স্রষ্টা প্রেরিত কিতাব আল-কোরআনকে একমাত্র ফয়সালাকারী হিসেবে মেনে নিতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। হাদিছকেও আমি মানবীয় ভুল থেকে মুক্ত মনে করি না। তাই অন্তত মানবতার সাথে সম্পৃক্ত বিষয়ের ক্ষেত্রে আমি অবশ্যই আল-কোরআনের রায়কেই অগ্রধীকার দেই এবং সব সময় দেব। এরপর হাদিছের কথা ভাবা যেতে পারে। প্রকৃত ইসলামের অনুসারী হতে হলে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদেরকে আরো ভাল করে জানার প্রয়োজন রয়েছে।
ধন্যবাদ-

২০| ১৪ ই মে, ২০১২ রাত ১:২৯

বৈকুন্ঠ বলেছেন: আবু উযাইর বলেছেন: ভাই, আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দিন।

রজমের ব্যাপারে বেশ কিছু শীহ হাদীস আছে। আপনি মদীনার একটি মহিলার সে বিখ্যাত হদ এর ব্যাপারে পড়েছেন কিনা জানিনা, যে মেয়েটি জিনা করার পর রাসুলুল্লাহ সাঃ এর কাছে অনুতপ্ত হয়ে এসে হদ দেবার জন্য আবেদন জানিয়েছিলো। রাসুল সাঃ প্রথমে তাকে সন্তান ভুমিষ্ট হওয়া পর্যন্তঁ অপেক্ষা করতে বলেলেন, তারপর সন্তান হলে তিনি তাকে বাচ্চার দুধ খাবার বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বললেন। বাচ্চার ২ বছর হয়ে যাবার পর সে মহিলা আসলে এবার তিনি তাকে রজমের হুকুম দিয়েছিলেন।


এইটা একটা ঠান্ডা মথায় খুনের ঘটনা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যখন আরেকজন প্রাপ্তবয়স্কের সাথে যৌন সম্পর্কে যায় তখন এর থেইকা যা লাভ বা ক্ষতি হয় তা সাধারনত ঐ দুইজন মানুষের মইধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই কারনে হত্যা করার কি প্রয়োজন পরে সেইটাই বোঝা গেলনা।

মহামতি লেখক এক জায়গায় লেখসেন যে কারো বিরুদ্ধে ব্যাভিচারের মিথ্যা সাক্ষী দিলে ঐ মিথ্যাস্বাক্ষীদাতার শাস্তি হৈল আশিটা বেত্রাঘাত। এখন ভাবেন,,,, যেই মিথ্যা স্বাক্ষীর জন্য আমার জীবন যাইতে পারে তার শাস্তি শুধুমাত্র বেত্রাঘাত - এইটা কতটুক যৌক্তিক? মিথ্যাসাক্ষী দিয়া আমারে মৃত্যুর দিকে ঠেইলা দেওয়াটা এটেম্পট টু মার্ডার নয়কি? যেই ব্যাক্তি এইরকম বিধান দেয় সে কতটুক প্রাজ্ঞ? তবে এইটা কিন্তু অনৈসলামিক সমাজেও চালু আছে। মিথ্যাস্বাক্ষী দিয়া কেউরে মৃত্যুদন্ড কিংবা জেল জরিমানা ভোগের অপচেস্টা প্রমানিত হৈলে অপরাধীর কিন্তু সমপরিমান শাস্তি হয়না। যদি হৈত তাইলে মিথ্যাস্বাক্ষী, মিথ্যা মামলা ইত্যাদির প্রবনতা কিছুটা কমলেও কমতে পারতো

১৪ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৪১

মাহফুজশান্ত বলেছেন: @মহামতি বৈকুন্ঠ,
আশিটি বেত্রাঘাত ঠিকমত খাইলে আপানি মারা না গেলেও যে আধামরা হয়ে যাবেন- সে বিষয়ে সন্দেহ রাইখেন না। শুধু তাই নয়, এরপর থেকে আর কোন বিষয়ে আপনার কোন সাক্ষ্যি গ্রহণ করা হবে না। অর্থাৎ জীবিত থেকেও বাতিল হয়েই আপনাকে বাকি জীবনটা কাটাতে হবে- তা কি জানেন?

কিন্তু আপনার আইনে তো মিথ্যা সাক্ষির কোন সাজাই হয় না।

২১| ১৪ ই মে, ২০১২ রাত ১:৩৫

অনিক আহসান বলেছেন: মাহাফুজ শান্ত দেখি মুল্লা ওমরের চাইতে বড় আলেম :-*

১৪ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৪৭

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ছি-- ছিঃ- কি যে বলেন!!? :)
আমি তথাকথিত আলেমদের দলে নইকো- নাস্তিকদের দলেও নেই।

২২| ১৪ ই মে, ২০১২ রাত ১:৪৯

মোঃ শাকুর উল্যাহ ভূঞা বলেছেন: সুন্দর লেখা।

১৪ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৪৭

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

২৩| ১৫ ই মে, ২০১২ রাত ১১:৪৭

আবু উযাইর বলেছেন: @ মাহফুজ ভাই,

ভাই, আপনি আমার কথা হয়তো বুঝতে পারেননি বা ভুল বুঝেছেন। আমি বলেছি-

কুরআন ছাড়া অন্য বিধান শতভাগ বিশ্বস্ত নয়- এ বক্তব্যের সাথে আমিও একমত। তবে শুধু এ কথার ভিত্তিতেই আমরা হাদীসকে বাদ দিয়ে দেব তা হতে পারেনা।

কুরআন ছাড়া অন্য বিধান বলতে এক্ষেত্রে বিশুদ্ধ হাদীসকে আমি বুঝাইনি এবং আমি আগেই উল্লেখ করেছি বিশুদ্ধ হাদীসও ওহীর অংশ। ইসলামী রাষ্ট্রে যেসব বিধানের ক্ষেত্রে কুরআনে এবং সহীহ হাদীসে ফায়সালা আছে সেক্ষেত্রে আর কোন অপশন নেই এবং তা প্রয়োগ করতেই হবে। এছাড়া এমন আরো অসংখ্য বিষয় আমাদের সামনে আসবে যেসব ক্ষেত্রে কুরআন ও সুন্নাহর গাইডলাইন অনুযায়ী আইন নিজেদের করে নিতে হতে পারে। যেমন- ইসলামী রাষ্ট্রে মানুষের বিল্ডিং কোদ কেমন হবে রাস্তার পাশে হলেই পঞ্চাশ তলা বিল্ডিং তোলা যাবে কিনা-এ ধরণের আইনও মুসলিমদেরকেই তৈরী করতে হবে এবং এসব ক্ষেত্রেই মানবীয় ভুল থাকতে পারে। আমার বক্তব্য মূলতঃ এটাই ছিলো।

রজমের যে ব্যাপারটি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি তা শুধু বিবাহিত জিনাকারদের জন্য প্রযোজ্য এবং হাদীসে এটা এভাবেই এসেছে। কুরআনে বর্ণিত বেত্রাঘাতের বিষয়টা অবিবাহিত জিনাকারদের জন্য প্রযোজ্য এবং এই বিধান চিরকালই থাকবে।

আলিমদের মতবিরোধ সম্পর্কে আপনি যেভাবে বলেছেন তাতে করে মনে হয় আলিমগণ কুরআন এবং সহীহ হাদীস নিয়ে মতবিরোধ করেছেন। সত্যিটা কিন্তু তা নয়, বরং সায়িদ ইবন মুসায়্যিব, হাসান বসরী, আবু হানিফা, ইমাম বুখারী, ইবন তাইমিয়াহ, সায়্যিদ কুতুব এর মত আলিমগণ কুরআনকে প্রতিষ্ঠা করতেই বিলাসী জীবনের হাতছানি উপেক্ষা করে নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন, নিজের মতকে প্রতিষ্ঠা করতে নয়।

১৬ ই মে, ২০১২ সকাল ১১:৩৯

মাহফুজশান্ত বলেছেন: আবু উযাইর ভাই,

তার মানে হাদিছের আইন আল-কোরআনের বিধানকেও অতিক্রম করতে পারে- এই মতের সাথে আপনি একমত। কিন্তু আমি সব সময়ের জন্যই এর বিপক্ষেই আছি এবং থাকব। মুখে মুখে শুনে যে হাদিছ সংগ্রহ করা হয়েছে তা যত জন যত নির্ভুল ভাবেই বলার চেষ্টা করুক না কেন- আল-কোরআনের সাথে এর বিস্তর ফারাক মনে করি বলেই আজও আমি মুসলিম হিসেবে গর্ববোধ করি। আর সে কারনেই যে হাদিছের বক্তব্যের সাথে আল-কোরআনের মৌলিক তফাত রয়েছে তার তার ভিত্তি যতই মজবুদ প্রমাণিত হোক না কেন সেই হাদিছে বর্ণিত কোন আইন সর্বকালে জন্য হতে পারেনা বলেই আমি বিশ্বাস করি।

বিল্ডিং বানাবার কোন বিধান যদি আল-কোরআনে থাকত তাহলে ইসলামের অনুসারী হিসেবে আমাদেরকে অবশ্যই সেই গাইডলাইনই ফলো করার প্রশ্ন আসত। আমি নিজেকে সবজান্তা ভাবি না। কিন্তু ভাই! ব্যভিচারের আইন আর বিল্ডিং বানাবার আইনকে এক পাল্লায় মাপার মত বেকুফ আমাকে ভাববেন না প্লিজ। মহান আল্লাহ সর্বজ্ঞ। তাই ইসলামী রাষ্ট্রে মানুষের বিল্ডিং কোদ কেমন হবে, রাস্তার পাশে হলেই পঞ্চাশ তলা বিল্ডিং তোলা যাবে কিনা- এসব পার্থিব বিষয়ের ফায়সালার দায়িত্ব তিনি তাঁরই প্রতিনিধি মানুষের হাতেই ছেড়ে দিয়েছেন। আর ব্যভিচারের ফায়সালা তিনি তাঁর মত করেই স্পষ্টরূপে ব্যক্ত করেছেন। সুতরাং শুধু হাদিছের মাধ্যমে ব্যভিচারের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ড দেবার কথা একজন প্রকৃত বিশ্বাসী ভাবতেই পারেন না। যদি এমনটি কেউ ভেবে থাকেন, তাহলে তিনি/তারা আল্লাহর প্রেরিত বিধানকে স্বজ্ঞানে কিংবা অজ্হানে কমজোর এবং অসম্পূর্ণ ভাবছেন। কিন্তু আমার পক্ষে এমনটি ভাবা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহতায়ালার বিধানকে আমি সবার উপরে ধারন করার জন্য বদ্ধপরিকর।

রজমের যে ব্যাপারটি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি তা শুধু বিবাহিত জিনাকারদের জন্য প্রযোজ্য এবং হাদীসে এটা এভাবেই এসেছে। কুরআনে বর্ণিত বেত্রাঘাতের বিষয়টা অবিবাহিত জিনাকারদের জন্য প্রযোজ্য এবং এই বিধান চিরকালই থাকবে।

আল-কোরআনে আল্লাহতায়ালা অনেক ছোটাখাট বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন। কিন্তু মানুষের জীবন-মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত রজমের মত এমন একটি সেন্সেটিভ বিষয়কে প্রকাশ করতে আমার মহান স্রষ্টা কি তাহলে লজ্জা বা ভয় পেয়েছেন!!??- নাউযুবিল্লাহ। যারা এমনটি ভেবে হাদিছের দিকে হাত বাড়ান তাদের সাথে আমি নেই। কারন আমার পক্ষে এই মত মেনে নেয়া কখনই সম্ভব নয়।

ইসলামের প্রকৃত অনুসারী জ্ঞানতাপস ও চিন্তাশীল ব্যক্তিবর্গের অবদানকে আমি কখনই খাট করে দেখি না। আবার তারা বিলাসী জীবনের হাতছানি উপেক্ষা করেছেন বলেই সেই বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির কারনে তাদেরকে এতটাও বড় ভাবি না যে, তাদের কোন মতামত বা দৃষ্টিভঙ্গি আল-কোরআনকে অতিক্রম করলে তা আমায় মেনে নিতে হবে। তারা আমার চেয়ে অনেক উন্নত চরিত্রের অধিকারী হলেও তারা তো ভুলের ঊর্ধে বা নিষ্পাপ নন। আর সে কারনেই ইসলামের নামে নানা মতবাদের উদ্ভব হয়েছে।

ধরুন কোন একটি সংসারে স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, পিতা-মাতা ও ছোট ভাই-বোনের গুরু দায়িত্ব যে স্বামীর উপার্জনের উপরে ন্যাস্ত। তিনি হাঠাৎ ভুল বশত ব্যভিচার করে বসলেন। কিন্তু তাকে ভুল/ অন্যায় স্বীকারের কোন সুযোগ না দিয়েই যে রজমের শাস্তি আল-কোরআন সমর্থিত নয়, যদি তা দেয়া হয়। তাহলে সেই পরিবারটির করুণ দশা কি একবারও ভেবে দেখেছেন। মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে কি তা খুব ভাল মনে হয়। তিনি ভুল স্বীকার করে নেবার পরও আল-কোরআনের বিধান মতে ইসলামি প্রশাসন তাকে অবশ্যই জনসম্মুখে ১০০ টি বেত্রাঘাত করার অধিকার রাখে। সঠিকভাবে ১০০ টি বেত্রাঘাত হজম করাকে এত সহজ ভাবে নেয়া উচিত নয়। যারা বোঝার তারা এতেই বুঝে যাবে এবং চিরদিনের জন্য এ পথে পা আর বাড়াবে না। যদি এরপরও আবার কেউ এ পথে পা বাড়ায়- তার জন্য আবারও ১০০টি বেত্রাঘাত অপক্ষো করছে। ২য় বার একই অন্যায় করার কারনে ইসলামি আদালাত যদি বেত্রাঘাতের আঘাতকে পূর্বের তুলনায় আরও কড়াভাবে দিতে চান- সেই এখতিয়ার তাদের আছে। এভাবে বার বার বেত্রাঘাত হজম করে ব্যভিচারের মত কুকর্ম করার মত কোমরের জোর একজন মানুষের থাকবে কিনা তা বলাই বাহুল্য।

যতদিন পর্যন্ত মুসলিমরা আল-কোরআনের বিধানকে চুড়ান্ত ফয়সালার উৎস হিসেবে মেনে নিতে পারবে না- ততদিন মহান আল্লাহতায়ালা বিজয়ের পতাকা তাদের হাতে অর্পণ করবনে না।

মহান আল্লাহতায়ালা যেন আমদেরকে তাঁর প্রদর্শিত সরল ও সত্য পথে চলার তৌফিক দান করেন।

ধন্যবাদ-

২৪| ১৬ ই মে, ২০১২ রাত ১২:১৬

আবু উযাইর বলেছেন: @ বৈকুন্ঠঃ

একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যখন আরেকজন প্রাপ্তবয়স্কের সাথে যৌন সম্পর্কে যায় তখন এর থেইকা যা লাভ বা ক্ষতি হয় তা সাধারনত ঐ দুইজন মানুষের মইধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এই কারনে হত্যা করার কি প্রয়োজন পরে সেইটাই বোঝা গেলনা।

ভাই, ধরে নেন আপনার মুখে আমি এসিড মারলাম, তাহলে কিন্তু বিষয়টা আপনার আর আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকল, কারো কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি হলোনা। কিন্তু আজকের মানব রচিত আইনে কেন তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড রেখেছে? মজার ব্যাপার হলো, শুধু রেখেই সারা, দেশের ইতিহাসে এপর্যন্ত কোন লোকের এসিড মারা দায়ে মৃত্যুদন্ড হয়নি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমি নিজে এমন লোককে দেখেছি, যাকে গামলা ভর্তি এসিড ছুঁড়ে মারা হয়েছে, যার চোখ-নাক-ঠোঁট গলে গিয়ে চেহারা দলাপাকানো হাড্ডি-মাংশের অবয়ব নিয়েছে, কিন্তু কোর্টের দ্বারে দ্বারে ঘুরে সে ও তার পরিবারের সদস্যরা বিচার পায়নি।

অথচ এসিড নিক্ষেপের ইসলামী বিধান মৃত্যুদন্ড নয়, খুবই সহজ। যতটুকু এসিড যার উপর মারা হয়েছে, ততটুকু এসিড প্রকাশ্য জনসম্মুক্ষে নিক্ষেপকারীর মুখে ছুঁড়ে মারা হবে। আর বাস্তব হলো এ ধরণের রায় একটি বাস্তবায়িত হলে আর একটিও এসিড মারার ঘটনা ঘটবে কিনা সন্দেহ আছে।

বিবাহ বহির্ভুত যৌনাচার হলো এমনই একটি ভয়াবহ ব্যাধি যে তা একটি সমাজকে এবং পরিবারের পারস্পরিক বিশ্বাসকে ধ্বংস করে দেয়। একটি স্বামী যদি অবৈধ সম্পর্কে জড়ায় তাহলে সে শুধু নয়, তার স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা ভয়াবহভাবে এফেক্টেড হয় এবং "এরকম যৌনাচার তাদের দুজনের নিজেদের ব্যাপার" বলে সমাধান দিয়ে ফেললে পুরো সমাজ প্রশ্রয় পেয়ে মনুষত্ব হারিয়ে ধ্বংসের শেষ সীমায় পৌঁছায়। আর তাই অবৈধ যৌনাচারের বিরুদ্ধে ইসলামী আইন এমনই কঠোর যে, যে শাস্তি পায় তার উপরও পরিবারের কোন ক্ষোভ থাকেনা এবং এ শাস্তি দেখে পুরো সমাজ এর থেকে দূরে থাকে।

প্রকৃত সত্য হলো, ইসলামের গোটা ইতিহাসে রজমের সংখ্যা অত্যন্ত কম। আর পারিবারিক বন্ধন এবং বিশ্বস্তার দিক থেকে ইসলাম দেখিয়েছে পৃথিবীর ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ সমাজ এবং সংসার ব্যবস্থা।

২৫| ১৬ ই মে, ২০১২ রাত ১২:২৯

যে শহর চোরাবালি বলেছেন: @ বৈকুন্ঠঃ

ভাই ধরেন আপনি আর আপনার বউ , ২ জন ২ জনরে খুব মহব্বত করেন ।আমি আপনার বন্ধু হঠাৎ কৈরা আপনার বউরে আমার ভাল লাগা শুরু করল কয়দিন পর আমি আবিষ্কার করলাম আপনর বউও আমারে ভাল পায়, কয়দিন মেলামেশা করলাম; তারপর ডিসিশন লৈলাম আমরা ১লগে থাকমু।

কিন্তু আপনি এখনো আপনার বউরে খুব ভালোবাসেন , আপনার কষ্টের জন্য কে দায়ী?

২৬| ২৯ শে মে, ২০১২ সকাল ১১:৫২

িরয়াজ উিদ্দন বলেছেন: khub besi informative post. Thanks.

২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৩:৩৯

মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ার জন্য ধন্যবাদ-

২৭| ২৯ শে মে, ২০১২ বিকাল ৪:০৩

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ইরানের আল-কোরআন ভিত্তিক পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই-

ইরানে পাথর নিক্ষেপে হত্যার বিধান বিলোপ

মহান আল্লাহ! তুমি সত্যপন্থিদের সাহস ও শক্তি দাও।

২৮| ৩০ শে মে, ২০১২ দুপুর ১২:৩১

কাঙ্গাল মুরশিদ বলেছেন: হ্যা, এই বিষয়ে আমিও একমত। আমি বিষয়টি চিন্তা করি এভাবে -

একজন অপরাধীকে দৃস্টান্তমুলক সাস্তি কেন দেয়া হয়? এর মাধ্যমে নিশ্চয়ই অপরাধের ঘটনাটা মুছে যায় না বা যারা সেই অপরাধ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন (যেমন নিহত ব্যাক্তি বা ধর্ষিতা নারী) তাদের ক্ষতিপুরোনও হয় না।

এর উত্তর হচ্ছে সাস্তি এ'জন্যই দেয়া হয় যাতে পরবর্তিতে অন্যকেউ সেই অপরাধ করতে নিরুৎসাহিত হয়। একজন খুনিকে মৃত্যুদন্ড দিয়ে হত্যা করার মাধ্যমে যদি আর একজন নিরপরাধকে নিহত হওয়া থেকে রক্ষা করা যায় শুধুমাত্র তখনই এই মৃত্যু দন্ডকে স্বার্থক বলা যায়।

আরবে রাসুল(স.) যখন ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন তখনকার মানুষ চোখের সামনে মানুষ হত্যা দেখতে অভ্যস্ত ছিল। গোত্রিয় সংঘাতে তো বটেই এমনকি কথা কাটাকাটি বা ঝগড়া বিবাদের সময়ও একে অন্যকে চ্যালেঞ্জ করত এবং তলোয়ারের দ্বন্দ যুদ্ধে প্রতিপক্ষকে হত্যা করত। এটা তখন খুবই স্বাভাবিক ও বীরত্বের ব্যাপার ছিল। সেই সমাজের চোখের সামনে মৃত্যু দেখতে অভ্যস্ত মানুষদের স্বাস্তির দ্বারা ভীত করার জন্য বেত্রাঘাত বা ফাঁসি মোটেই কার্যকর ছিল না। এ'জন্যই পাথর মেরে হত্যা বা প্রকাশ্যে শিরচ্ছেদের ব্যাবস্থা করা হত যাতে মানুষ ভীত হয়ে ঐ অপরাধ থেকে বিরত থাকে।

আর এই বিষয়টা যে সর্বকালে সর্বযুগে প্রযোজ্য থাকবে না তার ইঙ্গিতও হচ্ছে এই যে কোরআনে এটাকে উল্লখ করা হয়নি। কোরআনে মৃত্যু দন্ডের কথা আছে কিন্তু তা কিভাবে কার্যকর করা হবে তার উল্লেখ নেই। এটা বরং প্রত্যেক যুগের উপযুক্ত ব্যাক্তিদের সিদ্ধান্তের উপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

বর্তমান সমাজের ৯৯.৯৯ ভাগ মানুষ সারা জীবনেও চোখের সামনে অন্যকোন মানুষের মৃত্যু বা হত্যাকান্ড দেখে না। এ'দের জন্য প্রকাশ্যে বেত্রাঘাত এবং গোপনে শিরোচ্ছেদই অনেক যন্ত্রনাদায়ক ও আতংকের বিষয়। তাই উপযুক্ত কর্তপক্ষ সময় ও সমাজের অবস্থা বিবেচনায় সাস্তি কার্যকরের এই পদ্ধতিগুলি বদলাতে পারেন।

ইতিমধ্যেই ইরানের শরিয়া কাউন্সিল একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতে অন্যান্য আলেম ওলামাগনও এই দৃস্টান্ত অনুসরণ করবেন।

৩০ শে মে, ২০১২ দুপুর ১:৩২

মাহফুজশান্ত বলেছেন: যাক, অনেক দেরিতে হলেও সহমত প্রকাশের জন্য ধন্যবাদ-

আমার পোষ্টে চোখ না খুললেও, ইরানের আল-কোরআন ভিত্তিক সিদ্ধান্তের বদৌলতে আল্লাহতায়ালা তাদের চোখ খোলার ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ মহান। তিনি কার দ্বারা কি করাবেন, তা তিনিই ভাল জানেন।

ইরানের সিদ্ধান্তকে আবারও স্বাগতম।

২৯| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৫২

মেহেদী পরাগ বলেছেন: মাহফুজ ভাই, প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ আপনার সুন্দর পোস্টের আর সদ ইচ্ছার জন্য। তবে এই পোস্টে আবদুল্লাহ আরীফ মুসলিম এবং আবু উযাইর এর করা প্রশ্নের জবাবটা আপনি শুধু এক কথায় বলে দিলেই তাদের চুপ করে যাওয়া উচিত।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেছেনঃ

সূরা নাহল ১৬:৮৯ > ....আমি আপনার প্রতি গ্রন্থ নাযিল করেছি যেটি এমন যে তা সবকিছুর সুস্পষ্ট বর্ণনা, হেদায়েত, রহমত এবং মুসলমানদের জন্যে সুসংবাদ।

এর মানে আমাদের জন্য যা প্রয়োজন তা কোরআনে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবেই বর্ণনা/ব্যাখ্যা করেছেন। বাকি সব বিষয় যা কোরআনে নাই সেক্ষেত্রে আমরা হাদীস এর সহায়তা নিতে পারি। কিন্তু কোরআনে যা সুস্পষ্টভাবে বলা আছে সেটা বাদ দিয়ে হাদীস কেন মানব? এইবার নিচের আয়াতটি,

সূরা আন-নূর ২৪:০২ > ব্যভিচারিণী নারী ব্যভিচারী পুরুষ; তাদের প্রত্যেককে একশ’ করে বেত্রাঘাত কর।.....

এইখানে সুস্পষ্টভাবে ব্যভিচারিণী/ব্যভিচারি সম্পর্কে বলা আছে, বিবাহিত/অবিবাহিত এইসব ধানাই পানাই নাই। এইসব হাদীস বিশ্বাস করলে তো বলতে হবে যে কোরআনে সবকিছু সুস্পষ্টভাবে বলা নাই, অর্থাৎ আল্লাহর বানী মিথ্যা (নাউযুবিল্লাহ)।


এইবার আরও কিছু প্রাসঙ্গিক আলোচনা করিঃ

মাহফুজ ভাই, আপনি কোরআনের দোহাই দিয়ে এত সুন্দর কথা বলে পোস্ট দিলেও উপরোক্ত ব্লগারগণ তা মানবেনা, এর কারণ হাদীসে এই বিষয়টি খুব সুস্পষ্টভাবে এসেছে। আর এইসব ব্লগারগণ বলেন হাদীস নাকী আল্লাহর অহি, হাদীসে বিশ্বাস না করলে নাকি সে কাফের। ইতিমধ্যে ব্লগেই আমাকে কাফের বলে ঘোষণা করেছে তারা। অথচ আমি বলেছি যে আমি হাদীসে বিশ্বাস করি তবে সবগুলো নয়, কোরআনের বিপরীতে গেলে তো অবশ্যই নয়।

আপনি বলেছেনঃ //কিন্তু দেখা যায যে, রাসূলের (সাঃ) ওফাতের আগ মূহুর্ত পর্যন্ত রজমের বিধানটি আল্লাহর কিতাবে ওয়াহী হিসেবে সংযোজিত হয়নি।//


হাদীসের বরাতে পাথর নিক্ষেপে হত্যার বিষয়টিকে কিন্তু কোরআনের রদ করা আয়াত কিন্তু এখনো পালনীয় বলেও প্রচার করা হয়।

এই আয়াতটি নাকি ছাগলে খেয়ে ফেলেছিল সিহাহ সিত্তার সহিহ একটি হাদীস গ্রন্থে এটি পাওয়া যায়।

Sunan Ibn Majah, Book of Nikah, Hadith # 1934)

Narrated Aisha 'The verse of stoning and of suckling an adult ten times were revealed, and they were (written) on a paper and kept
under my bed. When the Messenger of Allah (SAWW.) expired and we were preoccupied with his death, a goat entered and ate away the paper."

এর সপক্ষে আবার বুখারী শরীফেও হাদীস আছেঃ হযরত উমর নাকি আফসোস করে বলেছেন এই আয়াত কোরআনে এখন নাই তাই লোকে আল্লাহর আদেশ বাদ দিয়ে ভুল পথে পরিচালিত হবে।

সহিহ বুখারী বই-৮২, হাদীস-৮১৭ Click This Link

....Allah sent Muhammad with the Truth and revealed the Holy Book to him, and among what Allah revealed, was the Verse of the Rajam (the stoning of married person (male & female) who commits illegal sexual intercourse, and we did recite this Verse and understood and memorized it. Allah's Apostle did carry out the punishment of stoning and so did we after him. I am afraid that after a long time has passed, somebody will say, 'By Allah, we do not find the Verse of the Rajam in Allah's Book,' and thus they will go astray by leaving an obligation which Allah has revealed......

অথচ পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেনঃ

সূরা আল-বাক্বারা-২:১০৬ > আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত আনয়ন করি। তুমি কি জান না যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর শক্তিমান?



এর বাইরে সহিহ বুখারী/মুসলিমে অন্তত ২০ টি হাদীস আছে যাতে দেখা যায় রাসূল (সঃ) অত্যন্ত কঠোর ভাবে জিনার শাস্তি হিসেবে পাথর নিক্ষেপে হত্যার প্রয়োগ করেছেন। তাই আপনি ২/৪ টি হাদীস দেখিয়ে যদি এদের বলেন যে রাসূল (সঃ) এই শাস্তি প্রয়োগ করার বেলায় বারবার আসামীকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তাহলে এরা ২০ টি হাদীস দেখিয়ে বলবে যে না রাসূল (সঃ) আসামীকে ফিরিয়ে দেননি, কঠোর শাস্তি দিয়েছেন। বুখারী/মুসলিমের এই হাদীসগুলো এই লিঙ্কে পাবেন। Click This Link

৩০| ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ ভোর ৪:১৩

মেহেদী পরাগ বলেছেন: মাহফুজ ভাই, আপনি একটি মন্তব্যে লিখেছেনঃ

//হাত কাটার বিধানটি কিন্তু আল- কোরআনে আছে। এ বিষয়টি আমি খুব ভাল করেই জানি। তাই আমিও কখনই এর বিপক্ষে নই। সুতরাং কখন কি পরিমাণ চুরি করলে চোরের কতটুকু হাত কাটতে হবে তা নির্ধারণের জন্য হাদিছ অনুসরণ করা যেতেই পারে এবং এটাই উত্তম।//

মাহফুজ ভাই, আপনি কি দয়া করে আরেকবার ভাল করে কোরআন এর প্রাসঙ্গিক আয়াতটি পড়ে দেখবেন? অনেক ভুল ধারণা ভেঙ্গে যেতে পারে তাতে।

সূরা আল-মায়েদা ৫:৩৮ > যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে তাদের হাতগুলো (তিন বা ততোধিক হাত) কেটে দাও তাদের কৃতকর্মের দৃষ্টান্ত হিসেবে। আল্লাহর পক্ষ থেকে হুশিয়ারী। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়।

সূরা আল-মায়েদা ৫:৩৯ > কিন্তু যে তওবা করে স্বীয় মন্দ কাজের পর এবং সংশোধিত হয়, নিশ্চয় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেন। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়ালু।


দ্বিতীয় আয়াতটি কি শরীয়া আইনে কোথাও পালন করা হয়? চোর ক্ষমা চাইলে কি সৌদী আরবে তাকে ক্ষমা করা হয়? আল্লাহ যেখানে ক্ষমা করে দেন সেখানে মানুষ কিকরে ক্ষমা না করার ধৃষ্ঠতা দেখায়?

সূরা ইউসূফ ১২:৩১ > যখন সে তাদের চক্রান্ত শুনল, তখন তাদেরকে ডেকে পাঠাল এবং তাদের জন্যে একটি ভোজ সভার আয়োজন করল। সে তাদের প্রত্যেককে একটি ছুরি দিয়ে বললঃ ইউসুফ এদের সামনে চলে এস। যখন তারা তাকে দেখল, হতভম্ব হয়ে গেল এবং আপন হাত কেটে ফেলল। তারা বললঃ কখনই নয় এ ব্যক্তি মানব নয়। এ তো কোন মহান ফেরেশতা।

মহিলাগুলো কি তাদের হাত কেটে মাটিতে ফেলে দিয়েছিল? কেউ কি তা করতে পারে? আমাদের কি চিন্তা করা উচিৎ নয়?

মানুষ খুন করা নিশ্চয় চুরি করার থেকেও জঘন্য অপরাধ। কুরআনে খুনীর জন্য দুই ধরনের শাস্তির কথা বলা হয়েছে।

সূরা নিসা ৪:৯২ > মুসলমানের কাজ নয় যে, মুসলমানকে হত্যা করে; কিন্তু ভুলক্রমে। যে ব্যক্তি মুসলমানকে ভূলক্রমে হত্যা করে, সে একজন মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে এবং রক্ত বিনিময় সমর্পন করবে তার স্বজনদেরকে; কিন্তু যদি তারা ক্ষমা করে দেয়। অতঃপর যদি নিহত ব্যক্তি তোমাদের শত্রু সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়, তবে মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে এবং যদি সে তোমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ কোন সম্প্রদায়ের অন্তর্গত হয়, তবে রক্ত বিনিময় সমর্পণ করবে তার স্বজনদেরকে এবং একজন মুসলমান ক্রীতদাস মুক্ত করবে। অতঃপর যে ব্যক্তি না পায়, সে আল্লাহর কাছ থেকে গোনাহ মাফ করানোর জন্যে উপর্যুপুরি দুই মাস রোযা রাখবে। আল্লাহ, মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়


সূরা বাক্বারা ২:১৭৮ > হে ঈমানদারগন! তোমাদের প্রতি নিহতদের ব্যাপারে কেসাস গ্রহণ করা বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। স্বাধীন ব্যক্তি স্বাধীন ব্যক্তির বদলায়, দাস দাসের বদলায় এবং নারী নারীর বদলায়। অতঃপর তার ভাইয়ের তরফ থেকে যদি কাউকে কিছুটা মাফ করে দেয়া হয়, তবে প্রচলিত নিয়মের অনুসরণ করবে এবং ভালভাবে তাকে তা প্রদান করতে হবে। এটা তোমাদের পালনকর্তার তরফ থেকে সহজ এবং বিশেষ অনুগ্রহ। এরপরও যে ব্যাক্তি বাড়াবাড়ি করে, তার জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক আযাব।



দুটো আয়াতেই দেখুন ক্ষতিপুরন দেয়া ও ক্ষতিপুরন দিয়ে মৃত্যুদন্ড রহিতের ব্যাবস্থা রাখা হয়েছে। এটা হয়তোবা খুন হওয়া ব্যাক্তির পরিবারের ভরনপোষনের স্বার্থে করা হয়েছে। চোরের শাস্তির আয়াতের পরেও এই রকম ক্ষমার কথা বলা আছে অথচ সেটা উপেক্ষা করা হয়! খুনীর এই যে শাস্তি , এটা নিশ্চয় চোরের হাত কেটে ফেলার শাস্তির চেয়ে বেশী নয়। চুরির শাস্তি তো আর খুনের শাস্তির চেয়ে বেশি হতে পারেনা?



সূরা আল-মায়েদা ৫:৬৪ > আর ইহুদীরা বলেঃ আল্লাহর হাত বন্ধ হয়ে গেছে। তাদেরই হাত বন্ধ হোক। একথা বলার জন্যে তাদের প্রতি অভিসম্পাত। বরং তাঁর উভয় হস্ত উম্মুক্ত। তিনি যেরূপ ইচ্ছা ব্যয় করেন।......

সূরা ছোয়াদ ৩৮:৪৫ > স্মরণ করুন, ক্ষমতা (হাত) ও দূরদৃষ্টির (চোখের) অধিকারী আমার বান্দা ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের কথা।



উপরের আয়াতদুটিতে হাত মানে কি আক্ষরিক অর্থেই হাত বুঝানো হয়েছে? হাত অর্থে ক্ষমতা কোরআনের আরও অনেক জায়গায় বুঝানো হয়েছে। যদি বলা হয় আমার হাত ব্যাথা করছে। এখানে ‘হাত’ শব্দটি আক্ষরিক অর্থেই হাতকে বোঝায়। কিন্তু যদি বলি , আমার খুব হাত টানাটানি যাচ্ছে। এখানে নিশ্চয় কেউ আমার হাত ধরে টানাটানি করছে না। এখানে হাতের আলঙ্করিক অর্থ বোঝানো হয়েছে , অর্থাৎ আমার টাকা বা সম্পদের অভাব ঘটেছে।

একটি চোরের তিনটি হাত কি কাটা সম্ভব? না। তাবে চোরের চুরি করার ক্ষমতা কর্তন করা সম্ভব, সেটা তিন বা ততোধিক হতেই পারে। কিভাবে তা করতে হবে? পুনর্বাসন করে। এর উত্তর পবিত্র কোরআনেই দেয়া আছে। নিচের আয়াতগুলো দেখুনঃ

সূরা ইউসূফ ১২:৭০-৭৯ > অতঃপর যখন ইউসুফ তাদের রসদপত্র প্রস্তুত করে দিল, তখন পানপাত্র আপন ভাইয়ের রসদের মধ্যে রেখে দিল। অতঃপর একজন ঘোষক ডেকে বললঃ হে কাফেলার লোকজন, তোমরা অবশ্যই চোর। তারা ওদের দিকে মুখ করে বললঃ তোমাদের কি হারিয়েছে? তারা বললঃ আমরা বাদশাহর পানপাত্র হারিয়েছি এবং যে কেউ এটা এনে দেবে সে এক উটের বোঝা পরিমাণ মাল পাবে এবং আমি এর যামিন। তারা বললঃ আল্লাহর কসম, তোমরা তো জান, আমরা অনর্থ ঘটাতে এদেশে আসিনি এবং আমরা কখনও চোর ছিলাম না। তারা বললঃ যদি তোমরা মিথ্যাবাদী হও, তবে যে, চুরি করেছে তার কি শাস্তি? তারা বললঃ এর শাস্তি এই যে, যার রসদপত্র থেকে তা পাওয়া যাবে, এর প্রতিদানে সে দাসত্বে যাবে। আমরা যালেমদেরকে এভাবেই শাস্তি দেই। অতঃপর ইউসুফ আপন ভাইদের থলের পূর্বে তাদের থলে তল্লাশী শুরু করলেন। অবশেষে সেই পাত্র আপন ভাইয়ের থলের মধ্য থেকে বের করলেন। এমনিভাবে আমি ইউসুফকে কৌশল শিক্ষা দিয়েছিলাম। সে বাদশাহর আইনে আপন ভাইকে কখনও দাসত্বে দিতে পারত না, যদি না আল্লাহ ইচ্ছা করেন। আমি যাকে ইচ্ছা, মর্যাদায় উন্নীত করি এবং প্রত্যেক জ্ঞানীর উপরে আছে অধিকতর এক জ্ঞানীজন। তারা বলতে লাগলঃ যদি সে চুরি করে থাকে, তবে তার এক ভাইও ইতিপূর্বে চুরি করেছিল। তখন ইউসুফ প্রকৃত ব্যাপার নিজের মনে রাখলেন এবং তাদেরকে জানালেন না। মনে মনে বললেনঃ তোমরা লোক হিসাবে নিতান্ত মন্দ এবং আল্লাহ খুব জ্ঞাত রয়েছেন, যা তোমরা বর্ণনা করছ; তারা বলতে লাগলঃ হে আযীয, তার পিতা আছেন, যিনি খুবই বৃদ্ধ বয়স্ক। সুতরাং আপনি আমাদের একজনকে তার বদলে রেখে দিন। আমরা আপনাকে অনুগ্রহশীল ব্যক্তিদের একজন দেখতে পাচ্ছি। তিনি বললেনঃ যার কাছে আমরা আমাদের মাল পেয়েছি, তাকে ছাড়া আর কাউকে গ্রেফতার করা থেকে আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন। তা হলে তো আমরা নিশ্চিতই অন্যায়কারী হয়ে যাব।”

উপরের আয়াতগুলোতে আল্লাহর আইনে চুরির শাস্তির প্রয়োগ কিভাবে হবে তা দেখানো হয়েছে।

সূরা ইউসূফ ১২:৭ > অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।

সূরা ইউসূফ ১২:৩৮ > আমি আপন পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের ধর্ম অনুসরণ করছি। আমাদের জন্য শোভা পায় না যে, কোন বস্তুকে আল্লাহর অংশীদার করি। এটা আমাদের প্রতি এবং অন্য সব লোকের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ। কিন্ত অধিকাংশ লোক অনুগ্রহ স্বীকার করে না।”



উপরের আয়াতগুলো থেকে এটা পরিস্কার তারা রাজার আইন (১২:৭৬) অনুসরন করেনি , বরং চোরকে শাস্তি দিয়েছে আল্লাহর আইনে(১২:৭৫)। লক্ষ করুন ওরা ১২:৩৮ “আমি আপন পিতৃপুরুষ ইব্রাহীম, ইসহাক ও ইয়াকুবের ধর্ম অনুসরণ করছি।”


দেখা যাচ্ছে আল্লাহর আইনে চোরের শাস্তি নিম্নরুপ :


১) সন্দেহভাজন চোরকে প্রথমেই চুরি স্বীকার করার সুযোগ দেয়া হয়েছে এবং স্বীকার করে চুরির মাল ফেরৎ দিলে পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।১২:৭২

২)৫:৩৮ চুরি প্রমান হলে তার সহায়তাকারী ও পৃষ্ঠপোষকদের থেকে কেটে ফেলা হবে অর্থাৎ সে দাসত্বে যাবে।১২:৭৫ এর অর্থ দাড়ায় চোরাই মালের টাকা বা জরিমানার সমপরিমান অর্থ চোর শ্রম মজুরি দিয়ে শোধ দিবে।

এখন দেখুন এরপরে যদি চোর ক্ষমা চায় ও অনুতপ্ত হয় , তাহলে তাকে ক্ষমা করা সম্ভব।


আয়াতগুলো থেকে আমরা আরো জানতে পারি যে কাউকে চুরির দায়ে ফাসানো সম্ভব। হাত কেটে ফেল্লে যার চুরির মিথ্যা অভিযোগে হাত কাটা গেছে , তার হাত কিভাবে ফেরৎ দেয়া যাবে। আর চুরির শাস্তি যদি হাত কেটেই ফেলা হবে , তাহলে নিশ্চয় ইউসুফ নিজের আদরের ভাইকে চুরির দায়ে ফাসাতো না।

আজকের মুসলমান ভাইয়েরা বলতে পারেন , এই আইন সেই ইউসুফের জমানার জন্য প্রযোজ্য ছিল , আমাদের জন্য প্রযোজ্য নয়। এর উত্তরে বলব , আল্লাহ আমাদের এই কাহিনী শুনিয়েছেন কিছু শেখানোর জন্য , আনন্দ উপভোগের জন্য নয়।

সূরা ইউসূফ ১২:৭ > অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।

সূরা ইউসূফ ১২:১১১ > তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন এবং প্রত্যেক বস্তুর বিবরণ রহমত ও হেদায়েত।


আমরা কি এই কাহিনী থেকে শিক্ষনীয় বিষয় নিচ্ছি? নাকি এসব বাদ দিয়ে হাদীস থেকে বর্বর জালিমদের আইনকে ইসলাম এর আইন বলে চালিয়ে দিচ্ছি?

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১২ দুপুর ২:৫৪

মাহফুজশান্ত বলেছেন: ভাই দুঃখিত! এ ব্যাপারে আপনার সাথে একমত হতে পারলাম না। কারন আল-কোরআনে স্পষ্ট ভাবেই চোরের হাত কাটার কথা বলা হয়েছে। সুতরাং যে যত ধরনের যুক্তি দেখানোর চেষ্টা করুক না কেন। চুরি প্রমাণিত হলে হাত কাটা ছাড়া অন্য কোন অপশন নেই।

সূরা: আল-মায়েদাহ, আয়াত ৩৮ - "যে পুরুষ চুরি করেও যে নারী চুরি করে তার হাত কেটে দাও। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হুঁশিয়ারী। আল্লাহ পরাক্রান্ত, জ্ঞানময়।"
fa-iq'ṭaʿū- (then) cut off
aydiyahumā- their hands

উপরের নির্দেশটি কিভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে তার বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর প্রয়োগ পদ্ধতির মাধ্যমে। সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েই আমাদেরকে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।

নিচের লিংকটিতে চুরি সম্পর্কিত হাদিছ পাবেন-
'The Book Pertaining to Punishments Prescribed by Islam (Kitab Al-Hudud)' of Sahih Muslim.
কি পরিমাণ চুরি করলে হাত কাটা হবে এই হাদিছগুলোতে সে সম্পর্কে তথ্য পাবেন। দেশের ও জনগণের সামগ্রীক অবস্থা ভেদে যে এই চুরির মালের মূল্যের তারতম্য হতে পারে তা বুঝতে পারবেন। নবীজির আমলেই কোন সময় এক চতুর্থাংশ, কোন সময় দু'টি, তিনটি বা তারও অধিক দিরহাম, আবার কোন সময় একটি বর্মের সমমূল্য পরিমান সম্পদ চুরির জন্য হাত কাটা হত। তাই সামগ্রীক অবস্থা অনুসারে কোন যুগে কি পরিমান সম্পদ চুরি করলে চোরের হাত কাটা যেতে পারে বা তার চেয়ে লঘু শাস্তি দিয়ে ক্ষমা করে দয়া যেতে পারে তা যেন বিজ্ঞ বিচারকই নির্ধারন করতে পারেন সেই অপশন রাখা হয়েছে। আর সে কারনেই স্বয়ং নবী মুহাম্মদ (সাঃ) তার বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে সেই নজির রেখেছেন ও শিক্ষাও দিয়ে গেছেন।

পরবর্তীতে চার খলিফাদের শাসনকাল থেকেও শিক্ষা নিয়ে এগুতে হয়। কেননা তাঁদের কর্মপদ্ধতিও এই শিক্ষার মধ্যে পড়ে।
ধন্যবাদ-

৩১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৩:০১

সংবাদ বলেছেন: আপনার লিখা গুলো অনকে স্পস্ট বুঝার সমস্যা হয়না যারা গ্রাম গঞ্জে ফতোয়া দিয়া থাকে তাদরে ব্যাপার এইযে তারা কুরা আন ভালভাবে পডেনা হাদীস দিয়া মুন্সি গন ধর্ম চালাতে চায়, কোরআনকে আজ পযর্ন্ত তারা শুধু তেলওয়াতের উপর রেখেছে বাস্ পড়লে প্রতি হরফে ১০, আর আমার কাছে মনে হয় এ ব্যপারে শাস্তির বিধান ইসলামি রাষ্ট্র কর্তৃক নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্ঘের হাতে থাকে, সবার হাতে এ বিধান এর রায় কার্যকর করার এখতিয়ারে নেই, তাই মোল্লারা যা করে যাচ্ছে তা অন্যায় অবিচার আর আপনার থেকে এই রকম ইসলামি অনুসাশস নামে ভ্রান্ত মতবাদের প্রচল সর্ম্পকে আরো পোষ্ট কামনা করি যেন সত্য জানতে পারি ধন্যবাদ

২৭ শে নভেম্বর, ২০১২ সকাল ১০:৪১

মাহফুজশান্ত বলেছেন: পড়ার ও মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.