নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার নাম মঈনুল হক মাহি। আমি বর্তমানে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রকৌশল বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যয়নরত আছি।

আলোর পথিক মাহি

আলোর পথিক মাহি › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনের "এডাপ্টেশন"

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১৪

বার বার এক জিনিস লিখতে বা বলতে আসলে ভালো লাগে না। সেই ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি যে, বাংলাদেশের এডুকেশন সিস্টেম এই, বাংলাদেশের এডুকেশন সিস্টেম সেই! এই এক জিনিস নিয়ে আর কত মাথা ঘামাতে ভালো লাগে?

বাংলাদেশে কয়টা ছেলে বা কয়টা মেয়ে নিজের ইচ্ছামত বিষয়ে পড়তে পারছে? প্যাশনের জায়গাটা থেকে যাচ্ছে অপূর্ণ। খুব গুটিকয়েকটি ছেলে মেয়ে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী বিষয়ে পড়তে পারছে। আর এখন তো আছেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়! এখানে নিজের ইচ্ছামত বিষয় পড়া গেলেও টাকা কোথায়? মানে পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারনে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা চিন্তাই করতে পারে না।

কথা আসলে এইখানে না! গল্পটা আসলে আমার নিজের। আমার বাবা একজন ইঞ্জিনিয়ার। সমাজে একজন রেসপেক্টেড পারসন। তার মানে এই না যে, আমাদের আহামরী টাকা আছে। যা আছে তা ভালোমত চলে যাওয়ার মত।আমাদের পরিবারকে উচ্চমধ্যবিত্ত পরিবার বলা যেতে পারে। আমার বড় ভাই একটা খুব পরিচিত প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়ে। আর আমি একটা স্বনামধন্য পাবলিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভার্সিটিতে পড়ছি। পড়ে মনে হচ্ছে, খুব সুন্দরভাবেই আমার জীবন অতিবাহিত হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা একটু ভিন্ন। আমি আসলে যেই বিষয় নিয়ে পড়তে চেয়েছিলাম সেই বিষয় নিয়ে পড়ার সুযোগ পাই নি। কিন্তু যে সাবজেক্ট পড়ছি সেটা বাহিরে থেকে দেখে মনে হবে যে অনেক ভালো আছি। কিন্তু এখন বুঝতে পারছি যে, আমার জন্য এই ফিল্ডটা না!

এডমিশনের পরবর্তী সময় অনেকরকম চিন্তাই মাথায় ঘুরতে থাকে। তার মধ্যে বড় বিষয় হচ্ছে, পাবলিকে চান্স পেয়েছি। তাই এখন এখানেই পড়তে হবে। তার থেকে বড় ব্যাপার হচ্ছে যখন পাবলিক আর প্রাইভেট ভার্সিটি পাশাপাশি রাখলাম। তখন নিঃসন্দেহে পাবলিক বেছে নিবে সবাই। আমিও নিয়েছিলাম। কিন্তু ব্যাপার হচ্ছে প্যাশনের জায়গাটাকে প্রাধান্য দিতে পারি নি। এর কারন হচ্ছে পারিবারিক দায়বদ্ধতা। হ্যা, এখন আমি যদি ওই পারটিকুলার বিষয়ে প্রাইভেটে পড়তে চাইতাম তাহলে পারতাম। আমার ফ্যামিলিও না করতো না। আমাকে পড়াতে পারতো কিন্তু বাবার উপর প্রেশারটা একটু বেশিই পড়ে যেত।

কিন্তু এখন দ্বিতীয় বর্ষে এসে, আমার কিছু আচরণে চেঞ্জ এসেছে। ক্লাসে যেতে ভালো লাগে না, প্রত্যেক ক্লাসেই ঘুমিয়ে যাই, পড়া কিছুই বুঝি না আরো কত কি!! এগুলোর মাঝে এসে আমি রিয়েলাইজ করলাম যে, যেটা পড়ছি সেটা আমার জন্য না। আমার জন্য অন্য কিছু রেডি ছিল। কিন্তু তাও পারলাম না ছেড়ে যেতে। কারন ফ্যামিলির কাছে আমার একটা দায়বদ্ধতা রয়েছে। আর এর কারনেই আমি এখানে দাঁড়িয়ে আছি।

ফ্যামিলি আমাকে এতদূর টেনে এনেছে, অনেক ধরে বেঁধে পড়াশুনা করিয়েছে। কিন্তু যখন আমার ডিসিশন আমি নিজে নেয়ার ক্ষমতাটা পেয়েছি তখনই এসে এরকম দোটানায় পড়তে হচ্ছে। এটা আসলে লাইফ। এখান থেকে আর ফিরে আসা যায় না। নিজেকে এডাপ্টেশনের চরমতম পরিক্ষায় অবতীর্ণ করা ছাড়া কোন উপায় দেখছি না। লাইফে অনেক কিছু ঠিকমত আসে না। কিন্তু সেটা নিজের করে নেয়ার ক্ষমতাই বড় ক্ষমতা! আর এটা ছাড়া আমার কাছে কোন উপায় নেই!

"এডাপ্টেশন" ওয়ার্ডটা ছোট কিন্তু অর্থটা অনেক গভীর। জীবন প্রতিকূল থাকলে সেটাকে নিজের অনুকূলে নিয়ে আসাই বোধহয় দায়িত্ব।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.