নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আধার রাত্রি ভোরের অনেক বাকী স্বপ্ন দেখার সুযোগ এখন তাই

চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা

মাহিরাহি

বাড়ী আখাউড়া। আখাউড়া রেলওয়ে হাইস্কুল থেকে পাস করে সোজা ঢাকায় চলে আসি। কিছুদিন সিটি কলেজে ছিলাম। ছিলাম জগন্নাথেও। তারপর টোকিওতে কাটিয়েছি সাড়ে ছয়টি বছর। দেশে ফিরে এসে চাকুরি আর সংসার নিয়ে আছি। দুটো ছেলে, মাহি আর রাহি। একজনের সাড়ে ছয় আর আরেকজনে সদ্য চার পেরিয়েছে। ওদের নামদুটো জুড়ে দিয়েই আমার নিকের জন্ম। বেশিরভাগ সময়কাটে সন্তানের সান্নিধ্য। ঘরকুনো মানুষ আমি। লেখালেখিতে হাতেখড়ি এই সা ইন বল্গে এসেই। কেউ বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিল ফিরিয়ে দেয়ার মত উদ্ধত্য আমার নেই। সবারই বন্ধু হতে চাই।

মাহিরাহি › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতিগতভাবে আমরা মেথরে পরিনত হতে পারিনা।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১১:৩৯

সাভারের দূর্ঘটনা আমাদেরই পাপের ফসল, এর দায়ভার সমগ্র জাতির।

দূনীতিবাজ রাজনীতিবিদ (ভবনের মালিক), মুনাফাখোর ব্যবসায়ী (দালানের মালিক), সরকারী কর্মচারীদের দায়ীত্বহীনতা (পুকুরের উপর বহুতল ভবন) সবই আছে এর পিছনে।

যদি জাতি হিসাবে আমরা সচেতনই হতাম, একই দূর্ঘটনা, অন্য ভাষায় হত্যাকান্ড বার বার ঘটে কি ভাবে।

মুনাফাখোরদের মুনাফালাভের একটি সমীকরন হল এই যে, প্রতিবছর কয়েকশ লাশের খরচে (লাশ প্রতি ২০ হাজার), লক্ষ লক্ষ শ্রমিকদের (যার বড় অংশ নারী) সারা বছর অনিরাপদ এবং ঝুকিপূর্ন পরিবেশে খাটিয়ে নিলে ক্ষতি কি? দাসপ্রথার আধুনিক (মানবিক!) নমুনা এটি।



মজার ব্যপার নারীদের ক্ষমতায়নে এইসব রাজনীতিবিদ আর ব্যবসায়ীরাই (যাদের নিয়ন্ত্রনে অধিকাংশ মিডিয়া) সোচ্চার বেশি। ওদের চোখের পানিতে টিভির পর্দা প্রায়শ:ই ভিজে উঠে।



এক সিএনজিওয়ালার সাথে আলাপচারিতায় (যে কিনা আগে এক গার্মেন্ট মালিকের গাড়ি চালিয়েছে কিছুদিন) জানতে পারলাম কিভাবে ঐ গার্মেন্টসের মালিককে তার বড় অফিসাররা শলা পরামর্শ দিচ্ছে ঐ বছরের বোনাস কর্মচারীদের না দিয়ে নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়া যায়। পুলিশী ঝামেলা হলে তাও যেন টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়। ক্ষতির যা হবে তা হল আন্দোলনকারীদের ইটের আঘাতে গার্মেন্টেসের কয়েকটা কাচ ভাংগবে। পেটের দায়ে কয়দিন আবার কাজে নামবে এই অশহায় মানুষগুলো।



বেশকয়দিন আগে বিবিসিতে একটা ইংরেজিতে প্রচারিত প্রোগ্রাম শুনছিলাম। চীনের গ্রামগুলো থেকে আসা মজুরেরা বলছিল, সারা দিনের খাটাখাটুনির পর আমাদের পাবে নাচ গানের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু জীবন যাপন করতে অত্যন্ত করুন অবস্থায়, তাই নাচ গান আর সুরার প্রয়োজন নেই, আমাদের প্রয়োজন সঠিক মজুরীর।



আমাদের দেশেও এখন নাচ, গান, আর আনন্দ উল্লাশের ছড়াছড়ি, কোন একটা উপলক্ষ পেলেই পুরো জাতি মগ্ন হই আনন্দ উচ্ছাসে। এমনকি গার্মেন্টসের মেয়েদের জন্য চ্যানেলগুলা আয়োজন করে সেরা গায়িকার পুরস্কার। দেখলে মনে হবে এদেশের মানুষের কোন সমস্যা নেই, নেই কোন দু:খকষ্ট। মাঝখানদিয়ে যা কিছু লুটপাটের, তা লুটপাট করে নেয় লুটেরারা।



ছোটবেলায় মেথরদের দেখতাম মনুষ্যবর্জ পরিষ্কার করতে। অত্যন্ত ঘৃন্য এবং অমানবিক কাজ। তারা তাদের কষ্ট ভুলে থাকতে রাতে বাংলা মদে ডুবে থাকত, মাঝে মাঝে আয়োজন করত গান বাজনার। হিন্দি উচ্চারনের গানগুলোতে আর সুরায় বুদ হয়ে তারা পালানোর চেষ্টা চালাতো কষ্টের এক ঘরে জীবন যাপনের কাছ থেকে।



এখন আমরা পুরো জাতই আমাদের দু:খ কষ্ট আর সমস্যার কাছ থেকে পরিত্রান পাওয়ার জন্য, বেশি বেশি করে গান বাজনা আর মাদকে জড়িয়ে পড়ছি। পুরো জাতিকেই এখন মেথর (দু:খিত এখানে মেথর শব্দটি রূপক অর্থে) বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আর যা ফায়দা তা লুটে নিচ্ছে সমাজের উপরের তলার মানুষেরা।



নেশার পারদ যত উপরে চড়তে থাকবে, জাতি ক্রমশ:ই হয়ে পড়বে বিকারহীন। একসময় সবকিছুই গা সওয়া হবে যাবে। শোকপালন, হাহুতাশ, সচেতন নাগরিকদের প্রতিবাদ সবকিছুই হয়ে পড়বে গতানুগতিক।



গরীব মানুষেরা, অসহায় মরতেই থাকবে, যথারীতি শোকপালনও হবে, কিন্তু ধীরে ধীরে নেশার ছোবলে মরতে থাকা জাতি শিখবে সবকিছু মেনে নিতে হয় সহজভাবে। কিন্তু ভয়ংকর দু:সংবাদটি হল এই যে, একসময় আমি কিংবা আপনিও শরীক হবেন, অসহায় মৃতমানুষদের মিছিলে।





মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট ভাল লাগলো ।

১১ ই মে, ২০১৩ ভোর ৬:০৪

মাহিরাহি বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ১৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭

বোকামন বলেছেন: যথার্থই লিখেছেন ....

এ থেকে পরিত্রাণের উপায় কী হতে পারে ?

১৯ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৩

মাহিরাহি বলেছেন: তা আমাদেরকেই বের করতে হবে।

৩| ১৯ শে মে, ২০১৩ বিকাল ৪:৩০

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:
আমরা ব্রিটিশ তারপর পাকিস্তান তাড়িয়েছি অতএব আমরা এখনও কারো কাছে মাথা নত করব না।

৪| ১৯ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:২৪

মাহিরাহি বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.