নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"দিগন্তকে ছুয়ে ভেসে বেড়াতে চাই,\nসপ্ন দেখি,সাজাতে চাই মনের মত করে। \nমুক্ত বাতাসে নিঃশ্বাস নিতে চাই প্রাণ ভরে।\n\nযান্ত্রিক জীবন থেকে অনেক দুরে থাকতে চাই,\nবেঁচে থাকতে চাই হাসি খুশি আর ভালবাসার মাঝে।

Mahmud Hassan Ashrafi

Mahmud Hassan Ashrafi › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি কিভাবে তাদের মাফ করব?

১৫ ই জুলাই, ২০১৫ বিকাল ৪:৪১

বিলকিস ইয়াকবু রসূল বানুঃ

আমার পরিবারের চার পুরুষ সদস্যকেই নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। অনেক পুরুষ মিলে আমার পরিবারের নারী সদস্যদের নগ্ন করে ধর্ষণ করছিল। তারা আমাকেও ধরে ফেলল। আমি তিন বছরের মেয়ে সালেহাকে জড়িয়ে ধরেছিলাম। তারা সালেহাকে কেড়ে নিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে বাতাসে ছুঁড়ে মারল। তার ছোট মাথাটি পাথরের উপর পড়ে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেতে দেখে আমি ভেঙে পড়লাম। চার জন পাষণ্ড আমার হাত ও পা ধরে রাখল এবং তাদের আরো অনেকে একের পর এক আমাকে ধর্ষণ করল। যখন তাদের লালসা মিটল, তারা আমাকে লাথি দিতে লাগল আর আমার মাথায় লোহার রড দিয়ে পেটাতে থাকল। এক পর্যায়ে আমি মরে গেছি মনে করে তারা আমাকে জঙ্গলে ফেলে চলে যায়।

চার থেকে পাঁচ ঘন্টা পরে আমার জ্ঞান ফিরল। আমি শরীর ঢাকার জন্য কিছু ছেঁড়া কাপড় খুঁজলাম, কিন্তু পেলাম না। আমি একটি পাহাড়ের চূড়ায় দেড় দিন খাবার ও পানীয় ছাড়াই অবস্থান করলাম। এ সময় আমি মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিলাম। শেষ পর্যন্ত আমি একটি আদিবাসী পল্লী খুঁজে পেলাম। সেখানে গিয়ে আমি নিজেকে হিন্দু পরিচয় দিয়ে আশ্রয় চাইলাম।

নিপীড়কের যে জঘন্য ভাষা ব্যবহার করেছে, তা কখনোই আমার পক্ষে ফের উচ্চারণ করা সম্ভব নয়। আমার চোখের সামনে তারা আমার মা ও বোনকে ছাড়াও আরো ১২ জন আত্মীয়কে হত্যা করেছে। তারা যখন আমাদের ধর্ষণ ও হত্যা করছিল, তখন তারা চিৎকার করে যৌন উন্মত্ততা প্রকাশ করছিল। ধর্ষণের সময় আমি তাদের বলতে পারিনি যে আমি ৫ মাসের গর্ভবতী ছিলাম, কারণ তারা পা দিয়ে আমার মুখ ও গলা চেপে ধরেছিল।

আমার ধর্ষকদের দণ্ডিত হওয়া ও জেল খাটার অর্থ এই নয় যে তাদের প্রতি আমার ঘৃণা ফুরিয়ে গেল। তবে এর মানে এই যে কোথাও না কোথাও বিচার আছে। ধর্ষকদের মধ্যে একজনকে আমি বহু বছর ধরে চিনি। আমরা তাদের কাছে দুধ বেচতাম। তারা আমাদের ক্রেতা ছিল। যদি তাদের কোনো লজ্জা থাকত, তবে তারা আমাকে ধর্ষণ করতে পারত না। আমি কিভাবে তাদের ভুলে যাব?

বিলকিস ইয়াকবু রসূল বানু: ২০০২ সালের মার্চে ভারতে নরেন্দ্র মোদি শাসিত গুজরাটে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মৌলবাদী হিন্দুদের দাঙ্গার সময় ধর্ষণের শিকার। মধ্য গুজরাট নিবাসী বিলকিসের পরিবারের ১৭ সদস্য একটি ট্রাকে করে পালানোর চেষ্টা করলে ৩ মার্চ দাহুদ জেলার রাঁধিকপুর গ্রামের কাছে ৩৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী উগ্র হিন্দু আক্রমণের শিকার হন তারা। এতে বিলকিসের পরিবারের ১৪ জন সদস্য নিহত হন। আক্রান্ত হয়েও বেঁচে যাওয়া বিলকিস ইনসাফের জন্য ১০ বছর লড়াই করে ২০১২ সালে নিপীড়কদের ১৩ জনকে শাস্তির মুখোমুখি করতে সক্ষম হন তিনি। বর্তমানে তিনি স্বামী ও বাবাকে নিয়ে মধ্য গুজরাটেই বসবাস করছেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.