নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.maipavel.blogspot.com

এম.এ.আই পাভেল

এম.এ.আই পাভেল › বিস্তারিত পোস্টঃ

মালায়শিয়ায় আমার চাকুরীর ইন্টারভিউ (মালয়শিয়ার দিনগুলি-১ )

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৩

[আমি একজন মালশিয়া প্রবাসী। আমি আমার ব্লগে মালশিয়ায় আমার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এই ঘটনাগুলো আমার ফেসবুক প্রোফাইলে আগেই লেখা হয়েছিল। আপনাদের সাথে ঘটনাগুলো নতুন করে শেয়ার করলাম।]


মালয়শিয়া আসছি প্রায় ৬ মাস হইতে চলল। গত ৬ মাসে আমি চাকরীর জন্য কম কইরা হইলেও শখানেক জায়গায় সিভি দিসি। তারমধ্যে ই-মেইল বা ফোনে রেসপন্স করছে গোটা বিশেক জায়গা থেকে। সেগুলার মধ্যে অধিকাংশ জায়গায় আমি স্টুডেন্ট এবং ফরেনার বইলা রিজেক্ট কইরা দিসে। ৮-১০ জায়গা থেকে ইন্টারভিউতে ডাকও পাইছি। এই সব ইন্টারভিউর কয়েকটাতে যাইতে পারি নাই আমার প্রবল ঘুমজনিত সমস্যার কারণে। আর এই প্রবল সমস্যা কাটাইয়া যেসব ইন্টারভিউতে কষ্ট কইরা যাইতে পারছি সেইসব ইন্টারভিউতে বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হইতে হইছে (এমনিতে মাশাল্লাহ আমার অভিজ্ঞতার ভান্ডার কম না)। যেমন মাস দুয়েক এক জায়গায় ইন্টারভিউতে গেছি, সেখানে ইন্টারভিউয়ার আমারে দেইখা চোখ কপালে তুইলা কয়, তুমি তো মনে হয় ফরেনার। আমি বিনীত ভঙ্গিতে উত্তর দিলাম, জী, এবং সেটা আমার সিভিতে লেখা ছিল। সে এরপর যা কইল তাতে এইবার আমার চোখ কপালে উঠলো। সে কইল সিভিতে তো লেখা আছে তুমি বাংলাদেশী। আমি এইবার কিছুটা রাগত স্বরে কইলাম, বাংলাদেশী মানে যে সে ফরেনার বা এইদেশী না সেটা বুঝার জন্য রকেট সায়েন্টিস্ট হওয়া লাগে না। সে আমার রাগী স্বরে কিছুটা বোধহয় ভড়কে গিয়ে বলল, না আমি ভাবছিলাম তুমি ইন্ডিয়ান। আমি কইলাম সেটা হইলেতো আমি সিভিতেই লিখা দিতাম। সে কয়, না আমি ভাবছিলাম বাংলাদেশী মানে ইন্ডিয়ান। আমি এইবার রাগত স্বরে টরে না, পুরা রাইগা গিয়া কইলাম, তোমার ভাবনায় সমস্যা আছে। এরপর থিকা কাউরে ইন্টারভিউতে ডাকার আগে ভাবা-ভাবি না কইরা একটু রিসার্চ কইরা নিও। তাইলে আর উল্টাপাল্টা ভাবতে হইবনা। এই কইয়া আমি অইখান থিকে চইলা আসলাম আর মনে মনে কইলাম কোন মহাগর্ধভ যে তোর মত একখান গর্ধভরে এই চেয়ারে বসাইছে তারে পাইলে তার পাছায় কইস্যা একখান লাত্থি মাইরা কইতাম সারা জীবন মনে রাখবি ইন্ডিয়া মানে ইন্ডিয়া, বাংলাদেশী মানে বাংলাদেশী।
অন্য আরেক জায়গায় ইন্টারভিউ দিতে গিয়া তো আরেক সমস্যায় পরতে হইছে। তার আবার ফরেনার হইলে সমস্যা নাই। শুধু বাংলাদেশী হইলেই সমস্যা। উগান্ডা, মাল্টা, রোয়ান্ডা যেই দেশের নাগরিক হউক না কেন সে কাজে নিব। কিন্তু বাংলাদেশী কাউরে নিব না। আমার কেন জানি একবার মনে হইল তারে জিগাই, কেন ভাই, বাংলাদেশীরা কি তোমার হো* মারছে। কিন্তু সেটা আর জিগাইতে পারি নাই, তার বদলে মুখখানা হাসি হাসি কইরা জিগাইছিলাম, কিছু মনে না করলে বলবা কি, কেন বাংলাদেশীদের তুমি কাজে নিবা না। সে তার চোয়াল শক্ত কইরা আমারে উত্তর দিসিলো, এইটা আমাদের কোম্পানীর পলিসি। আমি মনে মনে কইলাম উষ্টা মাই তোর পলিসির কপালে।
আরেক জায়গাতে যেই সমস্যায় পরছি তা আরও করুন। তাহার ফরেনার হইলও সমস্যা নাই এমনকি মনে হয় এলিয়ান হইলেও সমস্যা ছিলো না। যার কারনে খুব সহজেই আমি ইন্টারভিউতে টিকা গেলাম। কিন্তু পরে বুঝলাম ঘটনা অন্যখানে। আর সেইটা হইল তাদেরকে আমার জামানত স্বরূপ ৩০০০ রিঙ্গিত জমা দিতে হবে। যেটা আমার ১ বছরের কন্ট্রাক্ট শেষ হইয়া যাবার পর দিয়া দিব। আমি তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। সে বাখ্যা দিল যেহেতু আমি মাল্যশিয়ান না সেহেতু কোম্পানীর পলিসি অনুযায়ী এই জামানত ব্যবস্থা। আমার কেন জানি মনে হইল এইখানে কোন বাঙ্গালী এই ব্যাবস্থার সাথে জড়িত। আমি আন্দাজে ঢিল মারলাম। জিগাইলাম এইখানে কতজন ফরেনের কাজ করে। সে বলল প্রায় ১০-১৫ জন। তারা কোনদেশী। উত্তর সবাই বাংলাদেশী। আমি যা বুঝার বুইঝা ফালাইছি (আমার এই ক্ষুদ্র জীবনে ইন্টারভিউ মাশাল্লাহ কম দেই নাই)। আমি তারে কইলাম কিছু মনে না করলে একটা কথা জিগাই। সে বলল জী বল। তোমার কি মনে হয় আমি ফাজলামি করার জন্য এখানে আসছি। সে বলল মানে। আমি কইলাম, আমি যদি ৩০০০ রিঙ্গিত জামানত দিতে পারি, তাইলে আমি তোমার এই ২০০০ রিঙ্গিত বেতনের চাকরী করতে আসব কোন দুঃখে। তোমার যে বাংলাদেশী কলিগ এই পলিসি বানাইছে তারে কইও, সিভি ভালোমত না পইড়া ক্যান্ডিডেট ডাকলে, ধান্দাটা জমবে না। আমার সিভিতে খুব স্পষ্ট কইরা আমার ওয়ার্ক এক্সপেরিয়ান্স দেয়া আছে। যেসকল ক্যান্ডিডেটদের কোন ওয়ার্ক এক্সপেরিয়ান্স নাই তাদেরকে ডাক। ভালো ধান্ধা করতে পারবা। নাইলে চাট্টি-বাট্টি গোল কইরা এইখান থিকা পালাইতে হইব। ভালো থাক। হ্যাভ এ নাইস ডে। এই বইলা যখন আমি ওইখান থিকা চইলা আসতাছি তখন দেখলাম ব্যাটা আমার দিকে চোখ বড় বড় কইরা তাকায়া আছে। আমি খালি মনে মনে হাসলাম। অনেক কিছুই তখন মনে মনে ভাবতাছিলাম। সে কথা না হয় নাইবা বলি।


maipavel.blogspot.com

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৫

ইমরান আশফাক বলেছেন: বাহ্, বেশ তো! ভালোই লাগছে আপনার অভিজ্ঞতা। B:-)

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪২

এম.এ.আই পাভেল বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ২:২৯

তূর্য হাসান বলেছেন: অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। চলুক।

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৪

এম.এ.আই পাভেল বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.