![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কিছুদিন কোথাও যেতে না পারলে হাসফাস লাগে। মনে হয় শহরের বাতাসে অক্সিজেনের বড্ড অভাব হয়েছে। পেটের ভাতও ঠিকঠাক হজম হতে চায় না। তাই সুযোগ পেলেই বেরিয়ে পড়ি। হোমমিনিস্টার যতই গাঁইগুঁই করুকনা কেন, শেষ পর্যন্ত তা ধোপে টেকে না। এবারে আমাদের যাত্রা বিলাইছড়ির নকাটা ও মুপ্পোছড়া ঝর্না এবং উলুছড়ির ধুপপানি ঝর্না।
খুব কম সময়ের মধ্যে বন্ধুবান্ধবদের ফোন দিয়ে আমরা ছয়জন একত্র হই। ঢাকা থেকে কাপ্তাই যাওয়ার জন্য সেন্টমার্টিন পরিবহনের আপ ও ডাউন টিকেট কেটে নেই। এই রুটে এখন পর্যন্ত এটাই ভালো বাস সার্ভিস। নন-এসি বাস কিন্তু এসি বিজনেস-ক্লাস বাসের মতো প্রতি সারিতে তিনটি করে সিট। ভাড়া জনপ্রতি ৬০০/- আপ-ডাউন ১২০০/-। ভালো সিট পেতে হলে অন্তত কয়েকদিন আগে টিকেট কেটে ফেলতে হবে।
রাত ১১ঃ০০ টায় বাসে উঠেছি। ঢাকা - চট্টগ্রাম হাইওয়েতে দ্রুতগতিতে গাড়ি ছুটে চলছে। রাত যত গভীরই হোকনা কেন, এ রাস্তা কখনো ঘুমায় না। দুপাশের গাড়ির সারি দেখলে মনে হয় যেন, বিশাল লম্বা দুটো ট্রেন একটি আরেকটিকে ক্রস করছে। প্রতিটি গাড়ি যেন এক-একটি ট্রেনের বগি। আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ, আমাদের সাথেই ছুটে চলছে। গাড়ির হেডলাইটের তিব্র আলো চাঁদের মায়াবি আলোকে ম্লান করে দিচ্ছে। ভাবছি, পরদিন রাতে কাপ্তাই লেকে বসে বসে আরাম করে পূর্ণিমা দেখবো।
আধোঘুম আধো জাগরণের মাঝে শিহরণ জাগিয়ে ভোর সারে চারটায় আমরা কাপ্তাই পৌঁছে গেলাম। আমরা জেটিঘাটের কাছে মসজিদে ফ্রেস হয়ে নামাজ পড়ে নাস্তা খাওয়ার জন্য হোটেলে ডুকলাম। সবে মাত্র হোটেল খুলেছে। নাস্তা তৈরির আয়োজন চলছে। নাস্তা সেরে দুই দিনের জন্য ট্রলার ভাড়া করতে চলে গেলাম জেটি ঘাটে।
বিলাইছড়ি হয়ে উলুছড়ি এবং উলুছড়ি থেকে আবার কাপ্তাই ফিরে আসার জন্য আমরা ৫,৫০০/- টাকা দিয়ে ট্রলার ঠিক করে উঠে পড়লাম। এটা ছাড়া আমাদের আরো একটি বিকল্প ছিল। লোকাল ট্রলারে করে বিলাইছড়িতে গিয়ে সেখান থেকে ট্রলার ভাড়া করা। সে ক্ষেত্রে এক বা দেড় হাজার টাকা সাশ্রয় করা যেতো।
জেটিঘাট থেকে ট্রলার ছাড়তেই কাপ্তাই জলবিদ্যুতের ডেম ও সুইসচগেট চোখে পড়বে। যে বাঁধের কারণে এ লেকের সৃষ্টি, শুরুতে তা দেখেই আমাদের ট্রলারে করে যাত্রা শুরু হয়। একটু এগুলোই চোখে পড়বে লেকভিউ আইল্যান্ড। এটিও বেড়ানোর জন্য খুব ভালো জায়গা।
ট্রলারের ছাদে উঠে চারপাশের স্বচ্ছ জলরাশি আর পাহাড়ের গায়ে গায়ে বেড়ে ওঠা সবুজ গাছের অপরূপ সবুজে অবগাহন করতে করতে আমরা এগিয়ে চলছি। ভোরের শীতল বাতাস দেহ ও মনকে শীতল করে দিচ্ছে। নগর জীবনের সকল ক্লান্তি এই শীতল বাতাসের সাথে যেন ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে।
ঘন্টাদেড়েক পর আমরা পৌঁছালাম গাছকাটা আর্মি ক্যাম্পে। এখানে সকলের জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর জমা দিতে হবে। এখানে বলে রাখা ভালো প্রত্যেককে চারকপি করে এনআইডি আনতে হবে। তিন কপি তিনটি ক্যাম্পে ও এক কপি হোটেল/বোডিং এ জমা দিতে হবে। ক্যাম্পে দায়িত্বরত সেনাবাহিনীর সদস্য আমাদের ছবিও তুলে রাখলেন।
আমরা আবার যাত্রা শুরু করলাম। সূর্য এখন অনেকখানি উপরে উঠে গেছে। বিশাল নীল আকাশের মাঝে কিছু কিছু সাদা মেঘের ভেলা অলসভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। লেকের স্বচ্ছ জলে তার ছায়া পড়ছে। জল কেটে কেটে আমাদের ট্রলার এগিয়ে চলছে।
আধাঘন্টা পর আমরা আমাদের গন্তব্যে পৌঁছে যাই। আমাদের নামতে হবে হাসপাতাল ঘাটে। আগে থেকে নিরিবিলি বোডিং এ রুম বুক করে রেখেছি। ঘাটে ভিড়তেই বোডিং এর ম্যানেজার শশী মিষ্টি হাসি দিয়ে আমাদের স্বাগত জানালো। এমনভাবে আমাকে মামুনভাই বলে সম্বোধন করলো যেন, কতদিনের চেনা।
শশী ভাইয়ের দেখানো পথে আমরা বোডিং এ গিয়ে উঠলাম। ফ্রেস হয়ে আমরা আবার ট্রলারে ফিরে আসবো। এখান থেকে একজন গাইডও নিয়ে নিবো, যে আমাদের নকাটা ও মুপ্পোছড়া ঝর্নায় নিয়ে যাবে। শুরু হবে আমাদের ট্রেকিং।
(চলবে)
আবদুল্লাহ আল মামুন
রচনাকাল - ০১ নভেম্বর ২০২০ ( ভ্রমণকাল ২৯-৩১ অক্টোবর ২০২০)
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১০
আব্দুল্লহ আল মামুন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৭
ফয়সাল রকি বলেছেন: পরের পর্বে নিশ্চয় ঝর্ণার ছবি আসবে। অপেক্ষায় রইলাম।
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৪:১৩
আব্দুল্লহ আল মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ অশেষ।
৩| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ১:৫০
রাজীব নুর বলেছেন: ভ্রমন কাহিনীতে ছবি বেশি করে দিবেন। অনুরোধ।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫৪
আব্দুল্লহ আল মামুন বলেছেন: ধন্যবাদ অশেষ। সুন্দর পরামর্শ।
৪| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:০২
নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভালো
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫৪
আব্দুল্লহ আল মামুন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৫| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ১০:৪১
আমি সাজিদ বলেছেন: পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
১০ ই ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ৯:৫৬
আব্দুল্লহ আল মামুন বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ। সবগুলো পর্ব পোস্ট করা হয়েছে। @আমি সাজিদ
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা ডিসেম্বর, ২০২০ সকাল ১১:০১
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: সাবলীল সূচনা, ভালো হচ্ছে।