নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

স্বপ্ন দেখি আর তার পিছনেই ছুটি

নিজেকে এখোনো চিনতে পারিনি । যেদিন চিনতে পারবো আপনাদের অবশ্যই জানাবো

খেপাটে

খেপাটের ক্ষেপে গেলেই বিপদ

খেপাটে › বিস্তারিত পোস্টঃ

বেঁচে থাকা

১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ১:০৯

নূহ্য ছোটবেলা থেকে একাই বড় হয়েছে। স্কুলের কাপড়

তাকে কোনো দিন পড়িয়ে দিতে হয়নি। নিজে থেকেই

পড়তে পারতো সে। স্কুলের সবচেয়ে চঞ্চল ছেলে ছিল।

পরীক্ষার রেজাল্টে মন্তব্যের ঘরে একটা কথাই পেয়েছে তার

শৈশবে সেটা হলো চঞ্চলতা কমাও। তারপর শুরু হাইস্কুল,

এই জীবনটা তার পরিপূর্ণ হওয়ার জীবন। ক্লাস

এইটে প্রথম ভাল লাগা থেকে ভালবেসে ফেলে মৌ নামের

এক মেয়েকে কিন্তু ফোনের যুগ না থাকায় ধীরে ধীরে দূরত্ব

বাড়ে তাদের। খুব কম বয়সেই সেই মেয়ের বিয়ে হয়ে যায় আর

নূহ্য তারই বিয়েতে আমন্ত্রিত হয়। কারণ সেই

মেয়ে ছিলো তারই ফুফাতো বোন। এই প্রথম সে খুব কষ্ট

পায়। কিন্তু এসব থেকে দূরে সরে থাকে সে। কিন্তু হঠাৎই

স্কুলের এক মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় সে। ক্লাস সেভেনের

জ্যোতি নামের সেই মেয়ের সাথে তার প্রথম পরিচয় হয়

পরীক্ষায়। আর এই পরিচয়টাই ধীরে ধীরে ভালবাসার পরিণয়

হয়। নতুনভাবে নতুন সব ভাবনা স্কুল জীবন কাটে তার।

এসএসসিতে ভাল রেজাল্ট হওয়ার

সুবাদে সরকারি কলেজে পড়তে শুরু করে সে। আর প্রেম

চলতে থাকে জ্যোতির সাথে। কিন্তু মেয়ে মানুষ যে সত্যিই

যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ধারণ

করে সেটা সে বুঝতে পারে নি। আর এ সুবাদে পাশের বাড়ির

এক ছেলের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে জ্যোতি।

এদিকে নূহ্যর সাথেও সে প্রেম করে। হঠাৎ একবার নূহ্য আর

জ্যোতির বিষয়টা জেনে যায় জ্যোতির বাসায়। খু্ব মার খায়

জ্যোতি তার বাবার কাছে। নুহ্যর বাসায়ও তার

বাবা হুমকি দিয়ে আসে। অথচ নুহ্য অনুভব

করে কতটা ভালবাসে তাকে। এদিকে জ্যোতিরও

এসএসসি পরীক্ষা এগিয়ে আসতে থাকে সাথে নুহ্যরও। নুহ্য

নিজের পড়াশোনা বাদ দিয়ে লেগে পড়ে জ্যোতির ভাল

রেজাল্ট করানোর পিছনে। তার নিজের করা নোট খাতা,

লাইব্রেরি থেকে নতুন সাজেশন কিনে তাকে সাহায্য

করতে থাকে আর এগিয়ে আসে জ্যোতির পরীক্ষা। সে যেদিন

প্রথম এসএসসি পরীক্ষা দিতে যায় জ্যোতির

অনুরোধে চুপি চুপি জ্যোতির বাবাকে পাশ কাটিয়ে তার

সাথে দেখা করে আসে নুহ্য। এভাবে তার রেজাল্ট ভাল

হতে সাহায্য করে সে। কিন্তু জ্যোতির রেজাল্ট হওয়ার

কিছুদিন আগে তাকে দেওয়া মোবাইল চেক করে পায়। তার

আর তার পাশের বাড়ির ছেলেটার কিছু এসএমএস। খুব কষ্ট

পায় নুহ্য। জ্যোতিকে ফোন করে সে, অথচ

জ্যোতি তাকে বলে সে শুধু তার বড় ভাই হয়। কিন্তু

কথাটা বিশ্বাস হয় না নুহ্যর। জ্যোতি নুহ্যর সেকেন্ড

ইয়ারে ওঠার পর থেকেই নুহ্যকে এড়িয়ে চলত। নুহ্য ফোন

করলেই ওয়েটিং পেত। অথচ নুহ্যকে জ্যোতি সবসময়

মিথ্যা বলত কিন্তু নুহ্য তাকে খুব ভালবাসতো বলেই তার

কথা গুলোই বিশ্বাস করতো সে। অথচ নুহ্য যে এসবের

কারণে পড়তে পারতো না সেটা বারবার জ্যোতির

কাছে প্রকাশ করার পরও তার পরিবর্তন হতো না।

এভাবে চলে আসলো জ্যোতির রেজাল্ট আর

এগিয়ে আসতে থাকলো নুহ্যর পরীক্ষার সময় অথচ নুহ্য

স্পষ্ট দেখতে পায় তার কোনো কিছুই কম্প্লিট হয় নি তার।

তবুও সে শেষবারের মতো চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু

মন যখন অন্যের ওপর নির্ভরশীল তখন সেই মন কি আর

সহজে পড়াতে বসাতে পারে। কিছুই পড়া হতো না তার।

জ্যোতি পাশ করলো খুব ভাল না করলেও আর্টস থেকে ভাল

রেজাল্ট করলো সে। এই রেজাল্টে খুব খুশি নুহ্য। নুহ্য

জ্যোতির রেজাল্টের দিন ভেবেছিল আজ হয়তো রেজাল্টের

প্রথম মিষ্টিটা হয়তো নুহ্যই পাবে কিন্তু তখন যে নুহ্য

নামের কারো কথাই মনে ছিল না জ্যোতির। নুহ্য খুব কষ্ট

পায় জ্যোতির এই আচরনে। তবুও মনকে স্বান্ত্বনা দেয়।

জ্যোতি তো তাকে ভালবাসে। নুহ্যর পরীক্ষা শুরু হওয়ার

কিছুদিন আগে নুহ্য জ্যোতিকে নুহ্যর পরীক্ষার সময় যেন

তাকে একটু সাপোর্ট করে আর ওয়েটিং এ যেন

না থাকে এটুকু বলে সে কারণ নুহ্য এটুকু বুঝতে পারে তার

সাপোর্ট পেলে নুহ্য ভাল করবে। কিন্তু প্রথম পরীক্ষার

রাতেই নুহ্য ওয়েটিং পায় জ্যোতিকে। খুব কষ্ট পায় নুহ্য

সারা রাত কিছুই পড়তে পারে না। নুহ্য বুঝতে পারে তার

পরীক্ষা আর ভাল হবে না। নুহ্য সে সময়টায় এতটাই

জ্যোতির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে যে তার পরিবারের

কথাই ভুলে যায়। কোন রকম

পরীক্ষা দিয়ে কোচিং করতে ঢাকায় আসে সে। কিন্তু

জ্যোতির ওয়েটিং আর নুহ্যর ফোন না ধরা বেড়ে যায়।

সারাদিনে এক মিনিট কথা বলার জন্য দিনে একশ বারেরও

বেশি ফোন দেয়। এর বেশি ভাগ সময়ই ওয়েটিং নাহলে কল

ধরে না এমন পর্যায়ে থাকে সে। খুব কান্না করতো নুহ্য।

মাঝেমধ্যেই ভাবতো নুহ্য আর

জ্যোতিকে ভালবাসবে না কিন্তু তার এতদিনের

ভালবাসাকে সে ছাড়তে পারে নি। কিন্তু একদিন নুহ্যর এক

বন্ধুর দ্বারা জ্যোতির অন্য ছেলের সাথে সম্পর্কের

বিষয়ে জানতে পারে সে। খুব ভেঙ্গে পড়ে নুহ্য। ইদের

দিনটাই তার নির্বিষ্য মনে হয়। শেষে জ্যোতি সব স্বীকার

করতে বাধ্য হয়। যে তার এক বছর অন্য

কারো সাথে সম্পর্ক ছিল। খুব হতাশ হয়ে পড়ে নুহ্য।

নিজের সবশেষ হতে থাকে তার। ব্যর্থতা সঙ্গি হয় নুহ্যর।

তার মেরিনার হওয়ার ইচ্ছা পুরো ভেঙ্গে যায়। যেখানেই

পরীক্ষা দেয় সব খানেই ব্যর্থ হতে থাকে সে। শুধু ভাগ্যের

সহায়তায় একখানে ওয়েটিং এ টিকে যায় সে। ভাইভাও

দিয়ে আসে। এরই মধ্যে নুহ্যর

ফুফা নুহ্যকে জার্মানীতে পাঠানোর ব্যবস্হা করে। নুহ্য

মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন

করে। পরে সে জানতে পারে জার্মানীতে পড়তে তার ১ম দশ

মাসে দশ লাখ টাকা লাগবে। তার বাবা জানায় এটা অসম্ভব।

প্রতি মাসে একলাখ করে টাকা দেওয়া অসম্ভব। তবুও হাল

ছাড়ে না নুহ্য। চীন থেকে তার এক চাচাতো ভাইয়ের

কাছে সেখানকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আবেদন

করে নুহ্য। ভাগ্যক্রমে সেখান থেকে ভর্তি হওয়ার অফার

লেটার পায় সে। তার বাবাও রাজি হয়ে যায়। এদিকে নুহ্যও

শিওর হয়ে যায় তার যাওয়টা এবার হচ্ছে। তাই তার

বন্ধুদেরও জানিয়ে দেয় সে চীনে চলে যাচ্ছে।

এদিকে চলতে থাকে জ্যোতির সেই ব্যবহার। নিজেকে এবার

বুঝতে পারে নুহ্য। তাই সে সিন্ধান্ত নেয় জ্যোতিকে ছাড়ার।

জ্যোতিও তাকে বলতে থাকে তাকে যেন মুক্ত করে দেয়

নুহ্য। নুহ্য তাই নিজেকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে ফেলে সবকিছু

থেকে এদিকে নুহ্যর ওয়েটিং লিস্ট থেকে ভর্তি শুরু হয়।

সে যখন শিওর হয়ে যায় সে চীনেই পড়তে যাচ্ছে তাই সে আর

দেশে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন মনে করে না আর

সে ভার্সিটির সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগও করে না।

কিন্তু উপরয়ালা মনে হয় তখনও কিছুটা নারাজ হয়ে ছিল

নুহ্যর ওপর আর সেকারনেই যেদিন নুহ্য

অ্যাম্বাসিতে দাঁড়াবে তার আগের দিন সে জানতে পারে তার

চীনেও পড়তে যাওয়া হচ্ছে না। কারণ, আবার সেই টাকা।

কারণ, তার বাবার পক্ষে এত টাকা ম্যানেজ করা সম্ভব

হচ্ছিল না। নুহ্য হতাশ, অসহায় আর অন্ধকারে ডুবে যায়।

একদিকে সবাই জানে সে চীনে পড়তে যাচ্ছে কিন্তু জার্মানীর

মত তারও এখানেও যাওয়া হচ্ছে না তাই সে খুব

ভেঙ্গে পড়ে। এদিকে জ্যোতির সাথেও তার সম্পর্ক

একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে আসে।

কি করবে বুঝে উঠতে পারে না নুহ্য। কাকে কি বলে বোঝাবে,

বন্ধুরা ভাববে নুহ্য সব বেশি করে বাড়িয়ে বলেছে। কিন্তু তার

সাথে যারা থাকতো একমাত্র তারাই জানতো নুহ্য সত্যিই

চীনে যাচ্ছিল। হতাশা আর গ্লানিতে ভেঙ্গে পড়ে নুহ্য।

কি করবে ভেবে পায় না। সে কোনোদিন প্রাইভেটে পড়ার

স্বপ্নও দেখে না। শেষে যখন আর কোন পথই খোলা রইল

না তখন সে প্রাইভেট ভার্সিটিগুলো কেমন তা দেখতে বের

হলো। দু একটা দেখে ফেরার পথে সে নিজের একটা সঠিক

সিন্ধান্ত নিতে পারলো। সে আরেকবার ভার্সিটিতে চান্স

নিবে। আর এতে তাকে সাহায্য করলো তার আঙ্কেল আর

আফরোজা নামের এক মেয়ে। অবশেষে নুহ্য চুড়ান্তভাবেই

জ্যোতির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলো। যেই জ্যোতিকে তার

মনের চেয়েও বেশি ভালবাসতো। অথচ

জ্যোতি নুহ্যকে এড়িয়ে চলতো আর নুহ্য

পরীক্ষা দিয়ে চান্স না পেলে বলতো এসব ছেলেদের

দ্বারা কিছুই হয় না বেকার খালি সময় নষ্ট করছে। কিন্তু

নুহ্যকে সাপোর্ট করতো না। অবশেষে নুহ্য আবার নিজের

জীবনকে সাজাতে শুরু করলো আর তার পাশে সারাজীবন

থাকার পুরো দায়িত্বটা তুলে নিল আফরোজা। অথচ এই

আফরোজার প্রতি নুহ্য কখোনোই ভালবাসার টান অনুভব

করে নি। আর সেই আফরোজাই তাকে নতুন ভাবে জীবন

গড়তে সাহায্য করতে লাগলো নুহ্য ভুলে গেল তার অতীত।

বর্তমান নিয়ে অনেক সুখি সে। শুধু এখন ভালো জায়গায়

ভর্তি হওয়া বাকি। আজ সে জানে কোথাও না কোথাও তার

চান্স হবেই। আজ নুহ্য পরিবারের জন্য ভাবে।

জীবনকে উপভোগ করতে পারে। বন্ধুদের জন্য তার অফুরন্ত

সময়। আফরোজা সত্যিই তার জীবনে সৌভাগ্য হিসেবেই

এসেছে। যেই জ্যোতি কোনোদিন

নুহ্যকে জন্মদিনে সেলিব্রেট করতো না, তাকে ইদেও

একটা কল বা এসএমএস করতো না,

কখোনো বলতো না তুমি বড় হও আমি তোমার

পাশে থাকবো। আজ নুহ্যর সব আছে। তার

প্রতিটা কাজে একজন প্রশংসা করে। তাকে বড়

হতে সাপোর্ট করে। সবসময় তার খেয়াল রাখে। তার

হাতে হাত রেখে ঘুরতে পারে বাংলাদেশের যে কোন জায়গায়।

আর পারে তাকে সবসময় আগলে রাখতে। তাকে বড় হওয়ার

জন্য প্রয়োজনীয় কাজ গুলো করার উপদেশ দিতে। এমনটাই

চাইতো নুহ্য। নুহ্য সত্যিই আফরোজাকে অনেক ভালবাসে।

অবশেষে সত্যিই নুহ্য তার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিনত

হতে দেখে, অদম্য ইচ্ছা জাগে বড় হওয়ার,,,নুহ্যরা playboy

হয় না, নুহ্যরা এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে, চলতে দিনের পর

দিন......

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুন, ২০১৪ রাত ২:২১

পংবাড়ী বলেছেন:

" কিন্তু মেয়ে মানুষ যে সত্যিই
যে পাত্রে রাখা হয় সে পাত্রের আকার ধারণ
করে সেটা সে বুঝতে পারে নি। "

-হাউকাউ লেখক

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.