![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সংবাদপত্র পড়ি ছোটবেলা থেকেই।অনেক শব্দ এবং তার অর্থ জেনেছি সংবাদপত্র থেকে।যখন কোন শব্দ পড়ে তার অর্থ বুঝতাম না তখন আব্বার জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া কোন পথ ছিলনা।রাতে আব্বা বাড়ী ফিরলে জেনে নিতাম না বোঝা শব্দের অর্থ।বিজিত,নিহত,আহত,হরতাল,কার্ফু,বুদ্ধিজীবী,স্বৈরাচার ইত্যাদি সহ অনেক শব্দ খবরের কাগজে দেখে আব্বার কাছ থেকে শব্দগুলার অর্থ জেনেছি।
অনেক শব্দের মাঝে একটি শব্দ মনে গেথে গিয়েছিল বাবরী মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাকে পুঁজি করে যখন সারা দেশে মন্দির ধ্বংসযজ্ঞের সময়।পত্রিকায় দেখতাম সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বা মন্দির ধ্বংসের খবর।মন্দির ভাংতেছে বুঝতাম কিন্তু সংখ্যালঘুদের উপর হামলা মানে বুঝতামনা।খুলনায় আমার বাড়ীর থেকে সামান্য দূরে খুলনার অন্যতম নামকরা মন্দির "টুটপাড়া গাছতলা মন্দির"সেখানে হিন্দু সম্প্রদায় পুজা করে।এলাকায় খ্রিস্টানদের একটা গির্জা আছে টুটপাড়া কালা চান স্কুলের পাশে।কিন্তু আমাদের এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কারা তা নিয়ে খুবই বিচলিত।ঠিক ঐসময় আব্বা ছিল ইন্ডিয়ায় এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যবসার প্রয়োজনে।আম্মা ঐ সময় খুব বিচলিত।টি এন টি ফোনের কাছে একজন না একজন কে আম্মা দাড় করিয়ে রাখত,যদি আব্বা ইন্ডিয়া থেকে ফোন করে আর তখন যেন ফোনটা কেউ না কেউ রিসিভ করে।যাই হোক বেশ কিছুদিন পর আব্বা বাড়ী ফিরল।আব্বা ইন্ডিয়া গেলে একগাদা আনন্দলোক আর সানন্দা নিয়ে আসত।সেবার ইন্ডিয়ান ম্যাগাজিনে হইচই নিউজ হল,সংখ্যালঘুদের উপর হামলা,খুন আর মসজিদ ধ্বংস।পুরাই তব্দা হয়ে গেলাম।আমাদের দেশে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হইছে সাথে মন্দির ধ্বংস হইছে আর ইন্ডিয়ায়ও সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হইছে সাথে মসজিদ ধ্বংস হইছে।খুব হয়রান হয়ে গেলাম এই সংখ্যালঘু মানুষদের নিয়ে।চিন্তা করলাম এই সখ্যালঘু মানুষরা তো খুবই খারাপ,তা না হইলে দুই দেশেই তাদের মারা হচ্ছে কেন।
রাতে খাবার সময় আব্বার কাছে জানতে চাইলাম আমাদের টূটপাড়ায় হিন্দুরের মন্দির কেউ ভাঙ্গেনি কারণ এখানে মনে হয় ঐ খারাপ সংখ্যালঘু মানুষরা কেউ থাকেনা।আব্বা শুনেই তো থ।পরে আমাকে বুঝিয়ে বলল আমাদের দেশে মুসলমান মানুষ বেশী আর হিন্দু,বৌদ্ধ আর খ্রিষ্টান মানুষ কম,তাই আমাদের দেশে মুসলমান ছাড়া অন্য সবাই সংখ্যালঘু।ইন্ডিয়ায় ঘটনা উল্টা।ঐখানে হিন্দু বেশী মুসলমান কম।তাই ইন্ডিয়ায় মুসলমানরা হইল সংখ্যালঘু।
কিছুই না বুঝে বললাম বুঝেছি।কিন্তু শব্দটা মনে গেথে গেল।সেদিন থেকে আজকের দিন পর্যন্ত যখনই এই শব্দটা পত্রিকায়,টেলিভিশন বা নেতাদের মুখে সংখ্যালঘু কথাটা শুনলেই মনটা বিষাদে ভরে যায়।চিন্তা হয় যদি কোনদিন এমন সুযোগ আসত যে অভিধান থেকে কোন শব্দ মুছে দেওয়া যাবে তবে এই সংখ্যালঘু শব্দটা মুছে দিতাম।
কারণ শব্দটা ছোট হলেও আমার কাছে তা চরম বিদ্রূপের মনে হয়।
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৫২
মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ
২| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৪
বোকামন বলেছেন: অভিধান থেকে কোন শব্দ মুছে দেওয়া যাবে তবে এই সংখ্যালঘু শব্দটা মুছে দিতাম
১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৪৮
মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:৫৭
লিন্কিন পার্ক বলেছেন:
বোকামনের সাথে একমত
১৭ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:০১
মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ লিন্কিন পার্ক
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১০:১০
ঠোঁটকাটা০০০৭ বলেছেন: একটি দেশে কাউকে সংখ্যালঘু বললে ছোট করা হয়। আমি আপনার সাথে একমত। এখন যেমন অনেক শব্দ লিঙ্গ বা জেন্ডার সেনসিটিভ বলে এড়িয়ে যাওয়া হয়, সংখ্যালঘু শব্দের ক্ষেত্রে তেমনি হওয়া উচিত।
নজরুল এর কবিতায়--
হিন্দু না ওরা মুসলিম ঐ জিজ্ঞাসে কোন জন
কান্ডারী বল মরিছে মানুষ সন্তান মোর মা'র।