নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার কোন সীমান্ত নেই,নেই কোন সীমারেখা......

মামুন হতভাগা

আমার সোনার বাংলা... আমি তোমায় ভালবাসি।

মামুন হতভাগা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হরতাল : প্রতিবাদের ভাষা থেকে ভয়ানক ক্যান্সার :| রুখে দাঁড়াতে হবে সবাইকে

২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:৪৯









হরতাল।শব্দটি জড়িয়ে আছে ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু করে বাঙ্গালী জাতির প্রত্যেকটি আন্দোলন-সংগ্রামের বীরত্বপূর্ণ উজ্জ্বল ইতিহাসের সাথে।ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দোকানপাট-যানবাহন বন্ধ করে এক অভিনব অসহযোগের কর্মসূচি নিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী।সেই কর্মসূচি রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে দ্রুতই জনপ্রিয় হতে থাকে।আস্তে আস্তে হরতাল নামক প্রতিবাদ আমাদের উপমহাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে এক বিশাল স্থান করে নেয়।



ব্রিটিশ শাসন শেষ হলে ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে প্রথম হরতাল আহ্বান করা হয়।১৯৫২ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ২৭ শে জানুয়ারি পল্টন সমাবেশে ঘোষণা করেন,পাকিস্থানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু।নাজিমুদ্দিনের বক্তৃতার প্রতিবাদে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ২৯ জানুয়ারি প্রতিবাদ সভা এবং ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় ছাত্র ধর্মঘট পালন করে।৩০ শে জানুয়ারি ছাত্রসহ নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সমবেত হয়ে ৪ ফেব্রুয়ারি ধর্মঘট ও প্রতিবাদ সভা এবং ২১ ফেব্রুয়ারি প্রদেশব্যাপী হরতাল পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।আর এটাই হয়ত পূর্ব পাকিস্থানে প্রথম হরতাল।





আমাদের স্বাধিকার আন্দোলনের শুরু থেকে স্বাধীনতার যুদ্ধ পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রামে বাঙালি জীবনে হরতাল ছিল প্রথম পছন্দ।পাকিস্থানি শাসকের অন্যায়-অত্যাচারের বিপক্ষে অসহযোগ আন্দোলনে হরতাল ছিল নিপীড়িত মানুষের প্রতিবাদের ভাষা হয়ে ওঠে এই হরতাল ।সারা দেশের মানুষ বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্বপ্ন বাস্তবায়নে হরতালের মাধ্যমে তাদের মনের আকুতি প্রকাশ করত।কিন্তু সেই সময় শাসক গোষ্ঠী তাদের পেটোয়া বাহিনী আর প্রশাসন যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের জনপ্রিয়তা দেখানোর জোর প্রচেষ্টা করত।কিন্তু কোন কিছুই বাঙালি জাতিকে দমিয়ে রাখতে পারেনি।বরং সরকারী চাকুরীজীবী সহ সর্বস্তরের মানুষ হরতালে নিজেদের সম্পৃক্ত করে পুরা দেশ অচল করে রাখত।এই আন্দোলনের সমাপ্তি হয় নয় মাসের যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহীদ আর দুই লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত হারানোর মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পর।

স্বাধীনতা পরবর্তীকালে হরতাল নামক কর্মসূচির তেমন কোন ইতিহাস না থাকলেও দেশে সামরিক জান্তা দেশ শাসনের ক্ষমতা নিলে আবার হরতাল পালনের যুগ সূচিত হয়।এইচ এম এরশাদ খাকি উর্দি সামনে রেখে যে স্বৈরশাসনের যুগ শুরু করে,জনগণও গণতন্ত্র পেতে তার পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে হরতাল-অবরোধ পালন করে।আশির শতকের প্রথম পাঁচ বছরে হরতাল পালন হয় একশ দিনের বেশী।তবে ১৯৮৭ সাল থেকে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়ের।জাতীয় পার্টি ছাড়া অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এক হয়ে শুরু করে গণতন্ত্র ফিরে পাবার সংগ্রাম।১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সালের ৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত হরতাল-অবরোধ চলে দুইশত দিনেরও বেশী।সেই তিন বছরে হরতাল কর্মসূচিতে জনগণের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়।বিশেষ করে প্রায় সকল ছাত্র সংগঠন ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন শুরু করে তা ছিল ছাত্র রাজনীতির এক উজ্জ্বল অধ্যায়।ঐ সময়ের তুখোড় অনেক ছাত্র নেতাই এখনকার সময়ে জাতীয় নেতা হিসাবে গণমানুষের সাথে রয়েছেন।তখনকার সময় ছাত্র-জনতার রক্তে কোথাও না কোথাও রঞ্জিত হত রাজপথ।হরতাল মানেই ছিল সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ আর সমর্থন ।জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে স্বৈরশাসককেও গদি ছেড়ে দিতে হয়। হরতাল কর্মসূচির কার্যকারিতা এভাবেই প্রমাণিত হয়েছে ইতিহাসে।

গণতন্ত্রের নতুন যুগ শুরু হয়েছিল ১৯৯১ সালে,সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশ এবার সত্যিকার ভাবে সোনার বাংলাদেশ হয়ে উঠবে।কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি।আমাদের রাজনৈতিক দলগুলি সাধারণ মানুষের ভাগ্যউন্নয়নের চেয়ে নিজদের ভাগ্যউন্নয়ন বা ক্ষমতার মসনদে থাকার অভিপ্রায়ে লিপ্ত হয়।সেই ক্ষমতাভিলাসী হিসাব নিম্নরূপ



১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সময়ে আওয়ামী লীগ সহ বিরোধী দলগুলি হরতাল পালন করে ১৭৩ দিন।

আ'লীগ সরকারের ৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত সময়ে বিএনপি হরতাল আহবান করেছিল ৫৯ দিন।

আওয়ামী লীগ আর অন্যান্য বিরোধী দল চারদলীয় শাসনামলে ২০০১-২০০৬ সাল সময়ে ১৩০ দিন হরতাল ডাকে।

তারমানে আওয়ামী লীগ হরতাল ডেকেছে বেশী।আওয়ামী লীগের এই হরতাল প্রীতি মনোভাব অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।আমার মনে হয় আওয়ামী লীগকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে হরতালের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে।

উপরে উল্লেখিত বছরগুলিতে হরতাল আস্তে আস্তে রূপ পরিবর্তন করতে থাকে।ঐ সময়ে হরতাল ডাকা হতো, ২/৪ টা বাস পোড়ানো, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়া হতো। ধরপাকড় এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হত।তবে সবথেকে বড় যে পরিবর্তন আসে ঐ সময়ে জনগণের মধ্যে তা হল

#হরতালে গণমানুষের অংশগ্রহণ এবং সম্পৃক্ততা কমতে থাকে।

#জোর করে জনগণকে হরতালে বাধ্য করার জন্য ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ,বোমাবাজি সহ মানুষ হত্যার ঘটনাও ঘটানো শুরু হয়।

আর রাজনৈতিক দলগুলার মাঝে সবচেয়ে যে বড় পরিবর্তন আসে তা হল

#সরকারে থাকলে হরতালের সমালোচনা এবং বিরোধীদলে গেলে হরতাল না করার ঘোষণা।কিন্তু সেই কথা না রাখা রাজনৈতিক দলগুলার অভ্যাসে পরিণত হওয়া

#হরতালের পর সরকারী দলের প্রেস ব্রিফিং এ হরতাল অসফল করার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ প্রদান এবং বিরোধী দলের প্রেস ব্রিফিং এ হরতাল সফল করার জন্য জনগণকে ধন্যবাদ প্রদান।

কি এক বিচিত্র বিষয় !!! রাজনৈতিক দলগুলা হরতাল ডেকেই যায় কিন্তু জনগণ সেই হরতাল সমর্থন করে কিনা তা না জেনেই।



দেখে আসি যে কোন হরতালে ক্ষতির কিছু বিবরণ



# দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) তাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্টদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানিয়েছে,হরতালে তৈরী পোশাক খাত, সরকারের রাজস্ব আদায়, পাইকারি বাজার, শপিং মল, শো-রুম, ক্ষুদ্র ও ছোট দোকান, শিক্ষা খাত, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি, পরিবহন ও যোগাযোগ, পর্যটন শিল্প, উৎপাদন খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে থেকে প্রাপ্ত তথ্য এবং ডিসিসিআই নিজস্ব পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, সব খাত মিলে একদিনের হরতালে দেশের অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ১৬০০ কোটি টাকা। একদিনের হরতালে তৈরী পোশাক খাতের অর্থনৈতিক ক্ষতি ৩৬০ কোটি টাকা, সরকারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এক দিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকা,পাইকারি বাজার, শপিং মল, শোরুম, ক্ষুদ্র ও ছোট দোকানের ক্ষেত্রে একদিনের হরতালে ক্ষতি হয় ৬০০ কোটি টাকা,শিক্ষা খাতে একদিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির পরিমাণ ৫০ কোটি টাকা। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ক্ষতির পরিমাণ দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় একদিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ ৬০ কোটি টাকা। পর্যটন শিল্পে এক দিনের হরতালে ক্ষতি হয় ৫০ কোটি টাকা।উৎপাদন খাতের মধ্যে আয়রন, স্টিল, সিরামিক, সিমেন্ট, রড, এডিবল অয়েল, কাগজসহ সকল উৎপাদনকারী কারখানার একদিনের হরতালে ক্ষতির পরিমাণ ১০০ কোটি টাকা,অন্যান্য খাতে ৬৫ কোটি টাকা।

#শিক্ষাঙ্গনে হরতাল এক আতংক নিয়ে হাজির হয়েছে।দিনের পর দিন হরতালে ক্লাস বন্ধ,পরীক্ষা পিছানো,সেশনজট প্রভৃতি এখন ডালভাত।

#হরতালে দিনমজুর,রোগী,বিচার প্রত্যাশী মানুষ সহ সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট বাড়িয়ে চলে প্রতি নিয়ত।



আগের দিন গুলায় হরতাল ঘোষণা হলে নির্দিষ্ট সময়ে শুরু হত এবং নির্ধারিত সময়েই শেষ হত।কিন্তু গত সরকারের শেষ সময় হতে শুরু হয় হরতাল নামক প্রতিবাদের মাঝে ভয়াবহ এক ক্যান্সারের সূত্রপাত।সেই ক্যান্সারের জন্য হরতাল মানেই হয়ে গেল ডজন ডজন বাস পোড়ানো, রেলের ব্রিজ পোড়ানো, ট্রেন পোড়ানো, পাখির মতো বেশুমার মানুষ হত্যা করে একদল অন্যদলকে দোষারোপ করা।



স্বাধীনতাপূর্ব থেকে চলে আসা গনমানুষের প্রতিবাদের অস্ত্র হরতাল এখন ক্যান্সার রূপে দেশ ধ্বংসের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।তবে হরতালের সবথেকে হিংস্র দানবীয় রূপ আমরা দেখছি গত ৫/৬ মাস থেকে।বিশেষ করে বিচারের জন্য আটককৃত যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবীতে বিএনপি-জামায়াত জোটের হরতাল এক বিভীষিকাময় রূপে হাজির হচ্ছে।বর্তমান সময়ে বিশেষ করে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে জামায়াতে ইসলামী নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পর থেকে কখনও বিএনপি, কখনও জামায়াত আবার কখনও ১৮ দলীয় জোট একত্রে যে হরতালগুলি করেছে সেই হরতালে সহিংসতায় অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে গেছে।

হরতালজনিত কারণে পোশাক খাত, পুঁজিবাজার, পরিবহন খাত, ব্যাংক-বীমা খাত, রেল খাত, স্বাস্থ্য খাত, আমদানি-রপ্তানি ব্যবসা, শিল্প খাত, বিদ্যুত্ খাত, জনশক্তি রপ্তানি, রপ্তানিশিল্প, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেঙে পড়েছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি।গত পাঁচ মাসে হরতালে ধ্বংসযজ্ঞের কিছু উদাহরণ

#গত পাঁচ মাসে হরতালে যুক্ত হয়েছে নাশকতার নতুন মাত্রা। হরতালের নামে সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা বাংলাদেশে বিরল, কিন্তু এবার তা ঘটেছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ হয়েছে। ঘরবাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে,আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা কেউ বাদ যায়নি শারীরিক নির্যাতনের হাত থেকে।

#এখনকার হরতালের সময় পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হামলা করা হচ্ছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নিয়োজিত বাহিনীর উপর।ইতিমধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর উপর অসংখ্য হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত সহ আহত হয়েছে দুই শতাধিক।

#হটাত করে বেড়ে গেছে বোমাবাজি।হরতালে বোমা হামলা হচ্ছে যানবাহন,প্রশাসনের মানুষদের উপর,দোকানপাট,বাসভবন এমন কি স্কুলে যাওয়া শিক্ষার্থীর উপর।

#অতীতে হরতালের সময় সংবাদকর্মী ও তাদের যানবাহনে হামলার খবর পাওয়া যেত কম।কিন্তু এখন সংবাদকর্মী ও তাদের বাহনে প্লান করে হামলা করা হচ্ছে।

#অন্যান্য বছরগুলিতে এস,এস,সি বা এইচএসসি পরীক্ষার সময় বা অনার্স-মাস্টার্স পরীক্ষার সময় কখনও হরতাল ডাকা হয়নি কিন্তু সাম্প্রতিককালে কোন পরীক্ষাই দেখা হচ্ছেনা।পরীক্ষার সময় একটানা হরতাল দেওয়া হচ্ছে।সবথেকে বিস্ময়কর হল হরতালে স্কুলে যাবার অপরাধে ক্লাসে ঢুঁকে কমলমতি শিশুদের পিটানো হচ্ছে।

#গত কিছু মাসে হরতালের সময় রেলওয়ের উপর যে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে তা স্বাধীন বাংলাদেশে কোনদিন ঘটেনি।শতাধিক নাশকতায় রেলের ক্ষতি প্রায় ২৫ কোটি টাকা।এর মধ্যে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ছিল ৬৬টি,ফিশপ্লেট খুলে ফেলা ৭টি, রেল লাইন উপড়ে ফেলা ৪টি, স্টেশন ভাঙচুর ৩টি, পাথর নিক্ষেপ ১৬টি, রেললাইন অবরোধের ঘটনা ছিল ১১টি। এসবের প্রভাবে রেলে কমতে শুরু করেছে যাত্রীসংখ্যা।

#হরতালকারীরা টিএনও অফিস,উপজেলা পরিষদ,ব্যাংক সহ হামলা করা হয়েছে বিভিন্ন সরকারী অফিসে।পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এসব অফিসের দলিল-দস্তাবেজ।

#স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত কিছু দিনের রাজনৈতিক সহিংসতায় সারা দেশে সড়ক-মহাসড়কের দুপাশে থাকা ২১ হাজার বৃক্ষ নিধন করেছে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা।

#হরতালের আগের দিন এবং হরতালের দিন মিলিয়ে বেসরকারি গাড়ী ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগে ধ্বংস হয়েছে ৫৩০ টি, বিআরটিসির ৮১টি বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যার মধ্যে ১৮ টি ডাবল-ডেকার।গত ৫ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতা, হরতাল ও অবরোধে পুলিশের দেড় শতাধিক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।



আগে হরতালে আমরা দেখেছি শহরকেন্দ্রিক পিকেটিং। এবার তা ছড়িয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।গ্রাম থেকে শহর সব জায়গাতেই চলছে হরতাল নামের দেশ ধ্বংসের ক্যান্সারের প্রচণ্ড দাপট।আর তাই হরতাল এখন কোন সর্বজনগ্রাহ্য কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়।বরং দেশকে পিছনে টেনে অন্ধকার যুগে ফিরে যাবার মারাত্নক অস্ত্র।একসময়ের প্রতিবাদের ভাষা এখন নাশকতার ভাষা হিসেবে ধ্বংসলীলার প্রলয় চালাচ্ছে।



আমরা যদি সত্যি দেশপ্রেমিক হয়ে থাকি,যদি আমরা আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ রেখে যাবার স্বপ্ন বুনে থাকি তবে আসুন আমরা যে দলই সমর্থন করিনা কেন,হরতাল নামক বর্তমান দেশ ধ্বংসের ক্যান্সারকে হত্যা করতে একসাথে ঐক্যবদ্ধভাবে হরতালকে আইন করে নিষিদ্ধ করার আন্দোলনে শরিক হতে হবে।প্রধান দুটি দলকে অবশ্যই বাধ্য করাতে হবে যাতে তারা একত্রে হরতাল কে বয়কট করে।আমাদের সাধারণ মানুষদের মনে রাখতে হবে,আমরা সমর্থন করি বলেই রাজনৈতিক দলগুলা এত লম্ফযম্ফ করে।যারাই হরতাল বন্ধের বিপক্ষে থাকবে আমরা আমজনতা অবশ্যই তার জবাব ব্যালটের মাধ্যমে দিয়ে দিব।



জয় হোক তারুণ্যের,জয় হোক মানবতার।



বি.দ্র. ছবি ও তথ্য নেট থেকে ধার করা

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:২৫

খাািলদ বলেছেন: অনেক তথ্যমূলক পোষ্ট । আপনার লেখাটা আমাদের সাইটে প্রকাশ করতে চাই। দয়া করে মতামত জানান। [email protected]

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:১১

মামুন হতভাগা বলেছেন: যেকোনো জায়গায় দিতে পারেন,ধন্যবাদ

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:০৬

তন্ময় ফেরদৌস বলেছেন: +++++

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৭

মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ তন্ময় ভাই,কি আওয়ামী লীগ আর কি বিএনপি সবাই হরতাল নামক জিনিসটা বেশ বছর কিছু যাবত মানুষের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে,এটা ঠিক না।হরতাল যেমন রাজনৈতিক দলের অধিকার তেমনি হরতাল পালন করবে কিনা সেটা জনগণের অধিকার।কিন্তু ভয়-ভীতি,অগ্নিসংযোগ বা বোমা মেরে হরতাল জোর করে পালন করাতে হবে এটা মোটেই ঠিক নয়।রাজনৈতিক দল হরতাল ডেকে বসে থাকুক,দেখুক জনগণ হরতাল চায় কিনা।

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:২৭

বোকামন বলেছেন:
সম্মানিত লেখক,
যথার্থ লিখেছেন।
ক্ষমতা কে আকড়ে ধরে রাখতে হবে অপরদিকে ক্ষমতায় যেতেই হবে; সমস্যার সমাধান কী করে আসবে বলেন ! হরতাল গনতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু ভয়তাল করে জনগনের গনতান্ত্রিক অধিকার হরন করা হলে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হল কোথায় !

প্রধান দুটি দলের কাছে জনগনের অনেক প্রত্যাশা, আশা করি তারা সঠিক মূল্যায়ন করবে ....

আপনাকে ধন্যবাদ

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ দুপুর ১:০২

মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ,মুল কথা এটাই
ক্ষমতা কে আকড়ে ধরে রাখতে হবে অপরদিকে ক্ষমতায় যেতেই হবে; সমস্যার সমাধান কী করে আসবে বলেন ! হরতাল গনতান্ত্রিক অধিকার, কিন্তু ভয়তাল করে জনগনের গনতান্ত্রিক অধিকার হরন করা হলে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হল কোথায় !

প্রধান দুটি দলের কাছে জনগনের অনেক প্রত্যাশা, আশা করি তারা সঠিক মূল্যায়ন করবে
....

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০০

বৃষ্টি ভেজা সকাল ১১ বলেছেন: ক্যান্সার সহজে সারেনা, বড়ই বিপদজনক

তারপরও পরিত্রান চাই

২৩ শে এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৭

মামুন হতভাগা বলেছেন: ধন্যবাদ,ঐ আশায় তো আছি।তারপরও পরিত্রাণ চাই

৫| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৩৭

সুপান্থ সুরাহী বলেছেন:
উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষমতাসীনরা অহিংস প্রতিবাদকে থুরাই কেয়ার করে।

তাই আমাদের দেশে হরতালের মত কর্মসূচী এখনো টিকে আছে।
এর থেকে বাঁচতে হলে আমাদের মানসিকতা আগে বদলাতে হবে। সাথে রাজনীতিবিদদের লজ্জাটাও বাড়াতে হবে...

ভাল থাকুন মামুন ভাই। কোন এক কালে দেখব আপনার হাত ধরে রাজনীতির পালে লাগছে সুবাতাস। সে দিনের অপেক্ষায়...

৬| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৫৯

এম হুসাইন বলেছেন: হায়রে হরতাল... লজ্জা লজ্জা...

ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.