দায় মুক্তি।

২৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ৮:১২

প্রতি শনিবার ঠিক তিনটায় ভ্রাম্যমান লাইব্রেরির গাড়ী আমাদের এলাকায় আসে। ভাল লেখকের বই খুঁজতে একটু সময় লাগে, তাই তিনটা বাজতেই বাসা থেকে বেরিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি গাড়ী এখনো আসে নাই। সাড়ে ৩টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, গাড়ী আসার লক্ষন না দেখে (হয়তো জলাবদ্ধতার কারনে কোখায় আটকে গেছে) হাটতে হাটতে রেললাইনের দিকে গেলাম।



দুপুরের খাবার ভালই ছিল তাই সফট ড্রিংস পান করতে মন চাইলো। পাশের একটা দোকানে গিয়ে একটা কোকাকোলার কেন দিতে বললাম। দোকানের ছেলেটা ফ্রিজ থেকে কেন বের করে দিল।



- ভাই দাম কত?

— ৩৫ টাকা।



টাকা দেওয়ার জন্য পকেটে হাত দিতেই দেখি মানি ব্যাগ আনি নাই।



- সরি ভাই, মানি ব্যাগ তো ভুলে বাসায় রেখে আসছি।

— (কিছুক্ষন চুপ থেকে) আপনার বাসা কোথায়?

- এইতো ঐ দিকে... (বাসার দিকে ইশারায় দেখালাম) প্রতিদিন বিকালে এইদিকে হাটতে আসি।

— আচ্ছা নিয়ে যান টাকা পরে দিয়েন।



বাকীতে নিব, নাকি নিবনা অস্বস্তি লাগছিল।



কিছুক্ষন ভেবে কেন টা খুলে পান করতে করতে রেল লাইন ধরে হাটতে লাগলাম। কিন্তু অস্বস্তি থেকেই গেল। নিজেকে কেমন যেন ঋনী ঋনী মনে হতে লাগল। আসলে দোকাদার আমাকে চিনত না, দোকান টা বাসা থেকে বেশ দুরেই ছিল। তাই ঐ দোকানের সামনে দিয়ে যেতে লজ্জ্বা লাগছিল। পরিচিত দোকান হলে কোন ব্যাপার ছিল না। খালি কেন টা ফেলে দিয়ে, একটু এদিক সেদিক ঘুরে অন্য পথ দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। মানিব্যাগটা নিয়ে বাসা থেকে আবার বের হয়ে গেলাম। উদ্দেশ্য দায় মুক্তি হওয়া।



পরিশিষ্ট: গত দুইদিনের বৃষ্টিতে প্রায় রাস্তায় হাঁটুপানি। অনেক্ষন এলাকার ডুবে যাওয়া অলিগলিতে খামাখা হাটাহাটি করলাম। যাদের বাসা অনেক ভিতরে তাদের দুর্দশা অনুভব করলাম। এরপর আবার রেল লাইনের দিকে হাটা শুরু করলাম।



দোকানে পৌছে একটা কাস্টার্ড কেক নিলাম। এরপর কেক ও কেন এর দাম পরিশোধ করে রেল লাইনের পাশের টং দোকানে গিয়ে বসলাম। ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছিল। দোকানদারকে একটা চা দিতে বললাম। চা শেষ করে ফুরফুরে মেজাজে বাসার দিকে রওনা হলাম। :-D



ফেসবুক নোট লিংক:

Click This Link

৪ টি +০/-০