নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দেখিয়া শুনিয়া খেপিয়া গিয়াছি

মানব দানব দেবতার ভয়

নদীর পাড়ের মানুষগুলোর কথা ভাবলে বড় অবাক লাগে । বাড়ী্-ঘর ভেঙ্গে যায়-আবার তারা ঘর বাধে । কখনো চড়ে কখনো পাড়ে । বার বার নিঃস্ব হয়-কিন্তু তারা থামতে জানেনা । আবার তারা পথ চলা শুরু করে নতুন আশায় ...নতুন স্বপ্নে... আমিও এক প্রচন্ড স্বপ্নবাজ মানুষ । বার বার স্বপ্ন থেকে বাস্তবে নামি.... চারপাশ শূণ্য হয়ে যায় - আবার স্বপ্ন দেখি । স্বপ্ন দেখি একটি সকালের, স্নিগ্ধ সকালের । যে সকালে ধানের শিষের উপর শিশির বিন্দু দেখে শিশুরা অবাক হবে... প্রজাপতি ছুঁয়ে যাবে আলতো করে... ফড়িং এর পিছু পিছু দৌঁড়াবে শিশুরা । বিস্তৃত সবুজ প্রকৃতি... বৃষ্টি ধোয়া দূর্বাঘাস... নিঃশ্বাসে সতেজ বাতাস...মনকাড়া গোধূলী । জ্যোৎস্না রাতে আলোছায়া খেলা করবে আঙিনায় । পরবর্তী প্রজন্ম হবে এই জ্যোৎস্নায় ধোয়া পূত-পবিত্র । ----------------------------------------------------------- নূর আলম তিতুমীর কলেজে পড়ছি । পড়তে ভাল লাগে শরতের সব বই/ নজরুল ও রবির কবিতা । জীবন সম্পর্কে উপলব্ধি, জীবন একটি স্বপ্ন যা কখনো পূর্ণ হয় না । অবসর সময়ে লেখালেখি করতে খুব পছন্দ করি । জন্মেছিলাম ৮ই জ্যৈষ্ঠের এক পড়ন্ত বিকালে(২১/০৫) শনিবারে, বগুড়া জেলায় । তাই আমার লেখায় বুঝি একটু শনির ছায়া থাকে সবসময় ।

মানব দানব দেবতার ভয় › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার চোখে তখন জল আসে

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

কেন জানিনা বাংলাদেশের সফলতার গল্প পড়লেই আমার দুচোখ ভিজে যায় । আমার দুচোখে মুক্তর মত দুটি দানা চিক চিক করে । আর সঙ্গে সঙ্গে মনে হয় এতজন দেশকে এতকিছু দিয়েছে আমি কী দিব ? আমার কি দেবার কিছুই নাই । আমি আনমনা হয়ে যাই । আমি নিজেকে হারিয়ে ফেলি দেশকে কী দিব এই চিন্তায় ।



প্রতিদিন পত্রিকায় অসংখ্য খুন, ধর্ষণ ও অন্যায়ের খবর পড়ি । কোন খবর পড়েই আমার চোখে জল আসে না । ভয় হয় - আমি অনুভূতিহীন হয়ে যাচ্ছে না তো ? অনেকেই বলে আমি আর পত্রিকার খবর পড়ি না । তারা এর মধ্যে দিয়ে বোঝাতে চায় দেশে ভালো কোন ঘটনা ঘটে না । যা ঘটে সব কিছু খারাপ । কিন্তু আমি তাদের মত করে বলতে পারি না । আমার কেমন মায়া লাগে , কেমন কান্না আসে ও ভাবে বলতে । যার আলো বাতাস ছাড়া আমি এক মুহূর্ত বাঁচতে পারি না , যার মাটিতে জন্মানো ফসল ছাড়া আমার জীবন অচল, যার বাহিরে এই বিশাল পৃথীবিতে কোথাও আমার এক চুল পরিমাণ জায়গা নাই তার সম্পর্কে আমি কিছুতেই ঐ ভাবে ভাবতে পারি না । আমার দম বন্ধ হয়ে আসে , আমি দুচোখে অন্ধকার দেখি, আমার কলিজা মোচড় দিয়ে উঠে ।



আমি সবসময় আমার দেশটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি । অনেক বড় বড় স্বপ্ন । যদিও আমি একজন খুব ক্ষুদ্র মানুষ । আমি হয়তো আমার দেশের জন্য কিছুই করতে পারবো না । শুধু নিরবে তার থেকে আমার যা প্রয়োজন তা চেয়ে নিব আর যারা তার সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বলবে তাদের আড্ডার এক কোনায় জড়সড় হয়ে বসে থেকে সেই কথা বলা শুনবো । আমি খুব দুর্বল চিত্তের মানুষ – অন্যায় আমি করি না কিন্তু তার প্রতিবাদ করার সাহস আমার নাই । পাছে নিজের ক্ষতি হয় সেই ভয়ে ঘুটিয়ে থাকি । আর পত্রিকায় বা অন্য কোথাও ভালো কোন মানুষের গল্প পড়লে আমার চোখ ভিজে যায় । আমি নিজেকে প্রশ্ন করি আমার কি দেশের জন্য কিছুই করার নাই ?



আমি তো অনেক কথা বললাম । নিশ্চয় আপনাদের জানতে ইচ্ছে করছে আমি কে ? আমি এদেশের ষোল বা চোদ্দ কোটি মানুষের একজন । বেকার নয় আবার নির্দিষ্ট কোন আকার নেই আমার । মানুষের সন্তানকে পড়িয়েই আমার দিন চলে যায় । এস আই হবার খুব ইচ্ছে আমার । ছোটবেলায় বাংলা ছবি দেখে দেখে এই ইচ্ছে হয়েছে আমার । না নীতিবান পুলিশের চরিত্র দেখে আমার এই ইচ্ছে হয় নি । বরং ঘুষখোর , জুলুমবাজ চরিত্রটাই আমার কী কারণে যেন বেশি পছন্দ হয় । আমাকে কেউ প্রশ্ন করলে আমি বলতাম আমি পুলিশ হব । যদি বলতো কেন ? অনেক টাকা ঘুষ খাওয়া যায়’ আমার উত্তর । আবার ভাববেন অত ছোট বয়সে আমি ঘুষ কীভাবে বুঝলাম । ছবি দেখে দেখে আমার এই শব্দটা মুখস্ত হয়ে গিয়েছিল । মানুষ আমার উত্তর শুনে হাসতো । আর আমার গরিব বাবা কেমন কেমন লজ্জা পাওয়া গলায় বলতো , ও কিছু বোঝে না ? কিন্তু আমি এখন বুঝি ... আরো বুঝি যে আমার কখনো এস আই হওয়া হবে না । আমার বাবার যা সম্বল আছে তা বিক্রি করে দিয়েও সাত আট লাখ টাকা হবে না । আমি শুন্য চোখে চেয়ে থাকি । পত্রিকায় কোন ভালো গল্প বা উপন্যাস পড়লে আমার চোখে জল আসে । আমি বোবা কান্না করি । আমার এই কান্না কেউ দেখে না ।



আমার বোবা কান্না আর কে দেখবে বলেন ? কত মানুষ তো চিৎকার করে কাঁদছে তাদের কান্না দেখার মানুষই তো নাই । যার এ কান্না দেখবার কথা সে সুন্দর করে সেঁজেগুজে টিভির সামনে এসে বলবে, এ কান্নার জন্য আমি দায়ী নই । তাই এর দায়ভার আমরা নিতে পারি না । আর অন্য কেউ যদি বলে বসে না এ কান্নার দায়ভার তাদের নিতেই হবে তাহলে সে সুন্দর করে উত্তর দেব, আপনারা তো এর চেয়ে বিশি কাঁদিয়েছেন । তাদের কে বোঝাবে তারা কাঁদিয়েছে বলেই চোখের জল মোছার দায়িত্ব মানুষ তাদেরকে দিয়েছে । কিন্তু তারা সুন্দর করে বলবে আমরা কেন তোমাদের চোখের জল মুছতে যাব ? এ সব দেখলে আমার হাসি পায়, আমার কষ্ট হয় না , আমার চোখে জল আসে না । আমার চোখে জল আসে যখন আমি দেখি যে, একজন আমার দেশীয় ভাই বিখ্যাত হয়ে গেছেন । সারা বিশ্ব তার বন্দনায় ব্যস্ত । আমার চোখে তখন জল আসে ।

আমার চোখে তখনো জল আসে না যখন দেখি মানুষ গড়ার কারিগরের মধ্যে শয়তান ঢুকেছে । যে শয়তান তার মেয়ের বয়সই ছাত্রীর সাথে শারিরিক সম্পর্ক করতে পিছপা হয় না । সেই ভিডিও আবার নেটেও আপলোড করা হয় । যারা জাতির বিবেক বলে বিবেচিত তাদের এই বিবেকহীনতায় আমার চোখে জল আসে না । আমার চোখে জল আসে তখন- যখন দেখি একজন মানুষ রাস্তার পাশে শিক্ষা দেয়ার কাজটি করে যাচ্ছে নিষ্ঠার সাথে । একজন শিক্ষক তার আদরের ছাত্রীটিকে বাঁচাতে গিয়ে তার নিজের জীবনটি খুয়ে বসে – আমার চোখে তখন জল আসে ।



দুইটাকা চাঁদা পাওয়ার জন্য ছাত্র নামধারী গুণ্ডারা হানাহানী করে আমার দেশের একজন সম্ভাবনাময় জীবনকে শেষ করে দেয় তখনও আমার চোখে জল আসে না । আমি তখন অবাক হয়ে ভাবতেও বসি না । আমার তখন কষ্টও হয় না ? সেই হারিয়ে যাওয়া জীবনটার জন্য আমার বুকটা ফাকা ফাকা লাগে না । আমি তখন অবাক হই যখন দেখি একজন রিক্সাচালক বা অটোচালক কোটি ডলারের ব্যাগ পেয়ে তার মালিক কে ফেরৎ দিয়ে আসে । তখন আমার কষ্ট হয় – আমার কান্না আসে । আমার বুক ভেঙ্গে যায় ।



আমি নিজেকে প্রশ্ন করি – এত ভালো মানুষগুলোর জন্য কি আমার কিছুই করার নাই ? আমি কি ওদের জন্য কিছুই করতে পারবো না ? আমার এই দেশটাকে বদলানোর জন্য আমি কি কিছুই করবো না ? আমি কি শুধুই একটি পতঙ্গের জীবন কাটিয়ে যাব ?



আমার কান্না পায় – আমার চোখে জল আসে-এই ভালো মানুষগুলোর জন্য ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.