নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিজয় না হওয়া পযন্ত সংগ্রাম করো

মানুষ আজিজ১

মানুষ আজিজ১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মোহেনী

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩২

গত বিকেলে মোহেনী আমাকে ফোন দিয়ে বলতেছে ওর বাসা তেজগাঁ আসতে । কারন জানতে চাইলে বলে-আগে আসো পড়ে বলবো ।
বিকেলে খেয়ে দেয়ে রওনা দিচ্ছিলাম-এমন সময় রমা বাইরে থেকে এলো । আমার তারাহুরো দেখে বলতেছে :-স্বামী কোথা যাবা এত তারাহুরো করতেছ?
-মোহেনী ফোন দিয়ে বলছে ওর বাসায় যেতে । যাবে তুমি?
রমা: যাবে তুমি? এমন করে বললে তো যাওয়া হবে না ! তুমিই যাও ।
-আচ্ছা । আসার সময় কিছু নিয়ে আসবো ।
রমা: যদি পার আসার সময় এক-কেজি আউশ চাষ ও মিঠে কুমড়া নিয়ে এসো ।
-হঠাৎ ওগুলো কেন?
রমা: আউশ চাষের ভাতের একা ঘ্রার্ণ থাকে ।
-আচ্ছা নিয়ে আসবো এই বলে বের হয়ে গেলাম ।
মোহেনী বাসায়তো আর খালি হাতে যেতে পারি না, তাই আমার ছোট্ট মামার জন্য ,মানে মোহেনীর ছেলের জন্য এক-কেজি কাচাঁ চকলেট নিয়ে গেলাম।
আমি খুব আনন্দ ও উদ্দাম মনে ওর বাসায় গিয়ে হাজির । কাজের মেয়েটা দরজা খোলে দিয়ে বের হয়ে গেল । আমি গিয়ে ড্রয়িং রুমে বসলাম –টিভি ছেড়ে দিয়ে গানের চ্যানাল দেখছিলাম। কিছুক্ষনপর মোহেনী আসলো-আমি ওর দিগে না তাকিয়ে বললাম- কিরে হঠাৎ আমাকে জরুরী তলব ব্যাপার কি?। মোহেনী বললো:-টিভিটা অফ কর। কথাট কেন যে ঢ়ুর শুনালো –আমি সাথে সাথে অফ করে মোহেনীর দিকে তাকিয়ে বললাম: কি হয়েছে রে ?
মোহেনী কোন কথার উত্তর না দিয়ে বললো:-কফি খাবি ?। আমি বললাম- দে খাই ঐটাই আমার প্রিয় পানীয় । হাহাহাহাহ।
মোহেনী: এত হিহিহিহি করে হাসবি না ।বিরক্ত লাগে ।
-ওকে ,চুপ আর হাসঁবো না ।
মোহেনী: তুই আমাকে বিয়ে করতে পারবি ?আজকে!
-কি?!!
মোহেনী: বিয়ে ! যা করার পর সন্তানের মা হয়,বাচ্ছা হয় ।
-ফাজলামি করিস !
মোহেনী: সত্যিই বলছি আমি । আমি সিরিয়াস ।রিহানের বাবাকে ছেড়ে ডির্বোস দিব আমি ।
-নারে এটা হয় না । তুই আমার ভালো বন্ধু এখন আর রমাকে ছেড়ে আমি ভাবতে পারি না।
মোহেনী: আমি না তোর ভালো বন্ধু , বন্ধুর উপকার করবি না ?
-আমাকে কেন? অন্যকা্উক পছন্দ করে কর ।
মোহেনী: তোর মত ভালো মানুষ অন্য কারো ভেতর দেখি না ।
-কি হয়েছো তোর বলতো । কিছুতো হয়েছে বুঝতেছি !
মোহেনী হঠাৎ শব্দ করে কেদেঁ দিল ।
আমি হতবম্ব হয়ে গেলাম ! মোহেনী কাদিঁস কেন ? আমার বন্ধু না ভালো ?কি হয়েছে বল ।
মোহেনী কিছুক্ষন ফুপিয়ে কাদঁলো এরপর বলতে লাগলো: তোকে নিয়ে আমার স্বামী প্রচুর সন্দেহ করে!নানা-আজে বাজে কথা বলে! এত এত বাজে কথা ,কতবার যে তোকে আমাকে সে শুয়াইছে !আমি তো মানুষ বল!আমার তো একটা সহনশীলতার মাত্রা আছে!রক্ত মাংসের মানুষতো আমি!মাঝে মাঝে বিরক্ত বোধ হলে তোর সাথেই দেখা করি,ফোন কথা বলি ।সে তো বাইরে কাজ করে কত কত মানুষের সাথে ঘুরে কথা বলে ! কেন আমার দু’য়েকজন বন্ধু থাকতে পারে না ! আমার জীবন ও শরীর-কথা বলা, না বলা শুধু ওর জন্য !এখন মন খোলে কিছু বলতে পারি না-সব সময়ই আতংকে থাকি –কি না কি ভুল ধরে আমাকে আক্রমন করে বসে !ওর সাথে কোন কিছুতেই আর থাকতে পারছি না ! কি করবো বল !
-কেন তোর স্বামীকে বলিস নি আমরা ভালো বন্ধু মাত্র ?
মেহেনী: বলবো আর কি বল?ওনি এখনো রুমে এই যে আমি উর্চ্চস্বরে কথাগুলো বলছি শুনতে কি পায় না।পারে তো শুধু আমাকে কাদাঁতে ! এই বলে মোহেনী ওর-স্বামীকে ডাকলো—কই এখন আসো না ? তোমার যে সতিন আসছে! বললে- যে ও আবার আসলে পিটিয়ে ঘর থেকে বের করে দিবে !
-আমাকে পিটানোর কথা বলছে নাকি ।
মোহেনী: যে তোকে অসভ্য কথাও বলতে পারে সে তো ওটাও পারবে তাই না ।
-আমিও তাকে কয়েকবার ডাকলাম-ভাই আসেন । শুধু ভুল বুঝতেছেন কিন্তু সারা শব্দ পেলাম না । মোহেনীকে বললাম-কির সত্যিই ঘরে ?
মোহেনী: মরেছে হয়তো এখন । কেন যে আমিই মরতে পারি না !
-মরবি কেন? প্রেমর বিয়ে বলে কথা ।
মোহেনী: এর জন্যই মাটি কামড়েঁ টিকে আছি । জানি না ও কেন এমন করে ?
-কেন করে?
মোহেনী: হবে হয়তো কারো প্রেমে পড়েছে। আমাকে ভাগাতে পারলেই অন্যজনকে ঘর তুলতে পারবে ।
-এই অবস্থা ।

এরপর মোহেনী অনেক ফোপালো,কাদঁলো ,মনের ক্লেদ-যন্ত্রনা ,অভিমান,বিষন্নতা প্রকাশ করলো , কিন্তু তার স্বামী একবারও বের হয়ে আসলো না । অভাগ লাগলো ! মানুষের ভালোবাসা এত দ্রুত কমে যায় ! এত বছর এক সাথে এতদিন আছে কোন আন্তরিকতা নেই ? মোহেনীকে মানুষিক শান্তনা দিয়েই চলে আসলাম। এ-ছাড়া তো কিছুই করার নেই, মোহেনী ওখানে নি:সঙ্গ।ওটা স্বামীর বাড়ি –ও শুধু টিকে আছে । সত্যিই আমার মনে হলো মোহেনীকে যদি বলি:- আমার সাথে চল স্বামীর সংসার আর করতে হবে না, মোহেনী নিরবে চলে আসবে ।কিন্তু আমার রমা! । যাইহোক ভুলিনি রমার জন্য –আউশচাল আর মিঠে কুমড়ো নিয়ে যেতে হবে ।

(উৎসর্গ---সেই ‘নীলিমার জন্য)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.