নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!
যেকোন হুজুরের কাছে মানুষের সবচেয়ে কমন প্রশ্ন হচ্ছে "হুজুর, অমুক পরিস্থিতিতে সবচেয়ে কার্যকর দোয়া কি?"
ধরা যাক আপনি ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ে আয় উন্নতি নাই, আপনি চাইছেন আল্লাহর কাছে এজন্য দোয়া করতে, এবং অবশ্যই সেটা আরবিতে হতে হবে। হুজুরের কাছে সেই আরবি দোয়াই জানতে চাইছেন। ছাত্রছাত্রীরা পড়ালেখায় বা জ্ঞানে উন্নতির জন্য যতটা না দোয়া চায়, তারচেয়ে বেশি চায় পরীক্ষা পাশের জন্য। যার বিয়ে হচ্ছেনা, সে চায় বিয়ের জন্য দোয়া। তেমনই আছে সন্তান চেয়ে দোয়া, রোগে আরোগ্য লাভের দোয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। এবং অবশ্যই সেগুলো হতে হবে আরবিতে। আপনি যদি বলেন, "হে আল্লাহ আমার জ্ঞান বৃদ্ধি করে দাও।" তাহলে পাবলিক সেটা খাবে না। পাবলিক চায় "রাব্বি জিদনি ইলমা।"
এবং এরই জের ধরে অনেক সাধারণ মুসলিমদের বিশ্বাস, কবরের ভাষা, বেহেস্তের ভাষা ইত্যাদি নিশ্চই আরবি। কারন আমাদের কুরআন নাজেল হয়েছে আরবি ভাষায়, আমরা নামাজ পড়ি আরবিতে, সুরাহ পড়ি আরবিতে, নবীর হাদিস বর্ণিত হয়েছে আরবিতে। কাজেই দোয়াও চাওয়া উচিৎ আরবিতে। ঠিক এই কারনে লোকজন নিজের জন্য চাওয়া দোয়াও মাওলানার মাধ্যমে চায়। কারন, আমি আরবি পারিনা, হুজুর নিশ্চই জানেন।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কোন আরবি নিয়ে কথা হচ্ছে? সৌদি আরবের আরবি? নাকি ইরাকের আরবি? লেবানিজ আরবি? নাকি মিশরের আরবি? প্রতিটা আরবি কিন্তু অঞ্চলভেদে ভিন্নরকম। অনেক মিশরীয়ই লেবানিজ আরবি কথা বুঝেনা। সৌদি আরবেই একেক অঞ্চলের আরবি একেকরকম। নবীর সময়েও মক্কার কুরাঈশীদের আরবি ছিল একরকম, মদিনার আরবি অন্যরকম। আমাদের কুরআন শরীফ কুরাইশী আরবিতে রচিত। এবং সেই কুরাইশী উচ্চারনে এখনকার মক্কা মদিনার আরবরাও কথা বলেনা। ভাষা এইভাবেই বয়ে চলে এবং বিবর্তিত হয়।
তা মূল প্রসঙ্গে ফেরা যাক।
সেদিন এক লেখায় খ্রিষ্টান ও ঈসা (আঃ) নবীর প্রসঙ্গ বর্ণনা করতে গিয়ে লিখেছিলাম "যীশু (আঃ)" - এতে এক মহিলা ভুল ধরে ফেললেন। তিনি শোধালেন, ঈসার (আঃ) নাম কখনই "যীশু" বলা যাবেনা। তা উনার কাছে যখন জিজ্ঞেস করলাম, এমন কোন নির্দেশ কি আল্লাহ বা উনার পয়গম্বর দিয়েছেন, তিনি কোন প্রমান দিতে পারলেন না। উনার মনে হয়েছে, তাই উনি বলেছেন। অথবা কারোর কাছ থেকে শুনেছেন।
আরবি বর্ণমালায় "প" নেই। ওরা "প" কে "ব" উচ্চারণ করে। কারোর নাম "পাপন" হলে আরবিরা উচ্চারণ করবে "বাবন।" "প্রব্লেম" হয়ে যায় "ব্রবলেম।"
"ট" নেই, উচ্চারণ হয় "ত।" তেমনই আরবি ভাষার কিছু বর্ণ আমাদের বর্ণমালায় নেই, ("আইন" "গাইন" "হা" "খা" ইত্যাদি) এইসব উচ্চারণ তাই আমাদের সাধারণ বাঙালিদের ভিন্ন হয়। সব দেশেরই সব ভাষার বর্ণমালা এমন। এতে সমস্যা নাই। তা আমাদের ঈসা (আঃ) নবীর জন্ম হয়েছিল ফিলিস্তিনে, তাঁর যুগে তাঁর অঞ্চলে আমাদের "কুরাইশী" আরবি ছিল না। তাঁর ভাষা খুব সম্ভববত ছিল এরামিক। এবং তাঁর আসল নাম "ঈসুয়া।"
"ঈসা" সেই নামের কুরাইশী "উচ্চারণ।" ইংলিশে জিসাস, স্প্যানিশে হেসুস, বাংলায় যীশু। সব একই ব্যক্তি। যেমন আরবি "মুহাম্মাদ" ("হা"য়ের মাঝেও জোর আছে) আমাদের দেশে উচ্চারিত হয়ে "মোহাম্মদ" (এখানে "হা" আমাদের দেশি "হ" তে উচ্চারিত হয়) হিসেবে। ইংলিশে তিনিই মোহাম্মেদ, এবং টার্কিশে মেহমেদ। বুঝাতে পারছি?
তাই আমাদের নবী (সঃ) ছাড়া দুনিয়ায় আগত আর লক্ষ লক্ষ নবীর মাতৃভাষা আরবি হওয়ার সম্ভাবনা তাই শূন্য। মুসা (আঃ), ঈসা (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ), দাউদ (আঃ), সুলাইমান(আঃ) কেউই মক্কার অধিবাসী ছিলেন না। তাঁদের প্রতি নাজেল হওয়া আসমানী গ্রন্থগুলো একটাও আরবিতে নাজেল হয়নি। যেমন দোয়া ইউনুস, "লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ..." আমাদের দেশে বহুল পঠিত একটি দোয়া। বাসের সামনে লিখে রাখে কেউ কেউ। মানে কি জানতে চান, কেউ বলতে পারবে না। কিছু মানুষ বলবেন, "ইউনুস (আঃ) নবী মাছের পেটে বন্দি হয়ে মহাবিপদে এই দোয়া পড়েছিলেন, তাই এই দোয়া পড়লে বিপদ কাটে।"
খুবই ভাল। তবু মানেটা কি জানতে চান, আভিধানিক মানে বুঝিয়ে দিবেন। কিন্তু দোয়াতো কেবল মৌখিক উচ্চারণ হলে হয়না। অন্তরের সাথে কানেকশন থাকতে হবে। দোয়া ইউনূসের মানে বুঝার আগে মূল ঘটনাটা আগে বুঝতে হবে। এবং তা হচ্ছে, ইউনুস নবী (আঃ) তাঁর নিজের সম্প্রদায়ের বিরোধিতায় হতাশ/রাগ হয়ে সেই অঞ্চল ছেড়ে বিদায় নিয়েছিলেন। তাঁকে আল্লাহ একটি নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছেন, চাকরির মতন। নির্দিষ্ট এসাইনমেন্ট/মিশন দেয়া হয়েছে, তিনি সেটা অসম্পূর্ণ রেখে অফিস থেকে বিদায় নিলেন। এবং তাঁর "বড় কর্তার" অনুমতির অপেক্ষা করলেন না।
তা তিনি জাহাজে ছিলেন, ঝড় উঠলো। লোকে ভাবলো কোন না কোন যাত্রীর কারনে এই ঝড় উঠেছে, ওকে বলি দিলেই বাকিরা বাঁচবে। লটারি করা হলো, তাঁর নাম উঠলো, এবং লোকজন তাঁকে সমুদ্রে ফেলেও দিল। এই সময়েই এক মাছ (খুব সম্ভব নীল তিমি) তাঁকে গিলে ফেলে। এবং মাছের পেটের গহীন অন্ধকারে গিয়ে তাঁর উপলব্ধি হয়, তিনি কাজটা ঠিক করেননি। আল্লাহ তাঁকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেটা এইভাবে ফেলে আসা উচিৎ হয়নি। তখনই তিনি বললেন, "তুমি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই; তুমি নির্দোষ (সঠিক শব্দটা হবে "পারফেক্ট/নিখুঁত") আমি গুনাহগার।"
লক্ষ্য করুন, ইউনুস (আঃ) বলতেই পারতেন, "আমি তোমার একজন মনোনীত নবী, আমাকে তুমি কেন মাছের পেটে বন্দি করলে?"
যেমনটা ইবলিস করেছিল। যখন আল্লাহ বললেন বেহেস্ত থেকে বহিষ্কার হতে, সে নিজের দোষ স্বীকার না করে, ক্ষমা না চেয়ে উল্টা আল্লাহকে দোষী বলল। এবং একই সিচ্যুয়েশনে যখন আদম (আঃ) পড়লেন, নিষিদ্ধ বৃক্ষ আস্বাদনের অপরাধে তাঁকেও বেহেস্ত থেকে বহিষ্কার করা হলো, তিনি বলে উঠলেন, "রাব্বানা জালাম না....." "হে আমাদের পালনকর্তা আমরা নিজেদের প্রতি জুলম করেছি। যদি আপনি আমাদেরকে ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।"
মানে হচ্ছে, নিজের দোষেই তাঁরা এই সিচ্যুয়েশনে পড়েছেন, এখন আল্লাহও যদি তাঁদের ক্ষমা না করেন, তাহলে তাঁরা অবশ্যই ধ্বংস হবেন।
ইউনুস নবী (আঃ) যদি সেই সম্প্রদায়কে ত্যাগ না করে অঞ্চল থেকে বিদায় না নিতেন, তাহলে এই বিপদে পড়তেন না। এখন তিনি ভুল বুঝতে পেরেছেন, এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছেন।
এই দোয়ার আসল মানে হচ্ছে, ধরেন আপনি কোন বিপদে পড়লেন। আপনাকে উপলব্ধি করতে হবে যে বিপদটা আপনার নিজের কারণেই ঘটেছে। আল্লাহ নিষেধ করেছেন ব্যাভিচার করতে। আপনি সেটা উপেক্ষা করে বর/বৌয়ের সাথে চিটিং করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন। কিংবা পড়ালেখা করেননি বলে ফেল করেছেন। কিংবা কাজে ফাঁকিবাজির কারনে চাকরি চলে গেছে। আপনি আল্লাহর কাছে স্বীকার করছেন যে দোষটা আপনার, অঙ্গীকার করছেন যে এমন অপরাধ আর হবেনা, এবং আল্লাহ যেন উদ্ধার করেন।
এটাই "বিপদ থেকে উদ্ধার হওয়ার দোয়ার" মূল ভিত্তি।
এই পর্যন্ত বুঝতে পারছেন নিশ্চই? এখন এই দোয়াটা যদি আপনি বাংলায় করেন, তাহলে ফিলিংস বেশি আসবে, নাকি কিছুই না বুঝে মুখস্ত আরবিতে করলে? আল্লাহর কাছে কোনটার মূল্য বেশি? মুখস্ত বিদ্যার, নাকি ফিলিংসের? নেগেটিভ কমেন্ট করার আগে ভাল করে পড়ুন, আমি "দোয়ার" কথা বলছি, নামাজে বা এমনিতে কুরআনের সূরা পাঠকে বাংলায় বলার কথা বলছি না। এমন কোন হাদিস বা কুরআনিক নির্দেশ নাই যে আরবিতে দোয়া না করলে দোয়া কবুল হবেনা। যদি থাকে, তাহলে দেখাতে পারেন।
আরেকটা কথা, কুরআন শুধু আরবীতেই পাঠ করলেন, সেটার অর্থ না বুঝলে সেই পাঠের মানে কি আমাকে একটু বুঝাতে পারবেন? আল্লাহর যাবতীয় নির্দেশের একটাও আপনি বুঝলেন না, জানলেন না, মাওলানা বা মুরুব্বি যা বুঝালো, ঐটাই মেনে নিলেন। এইটাও বুঝার চেষ্টা করলেন না যে "মুরুব্বি" ভুল জেনে বা বুঝে থাকতে পারেন। এই যে আমার লেখায় এত এত মুসলমান আমাকে গালাগালি করেন, এদের কেউই কুরআন বুঝে পড়েনাই। কারন আমিতো কুরআন ও নবীর জীবনী (১০০% অথেন্টিক হাদিস) ছাড়া কিছু লিখি না। অমুক শেখ অমুক কিতাবে কি লিখেছেন তা নিয়ে লোকে ওরা তর্ক করে, অথচ আল্লাহ কুরআনে যা বলেছেন বা বলেন নাই, সেই খবর নাই। ঠিক যেমন আজকের লেখাটা, এই বিষয় নিয়েই।
তো যা বলছিলাম, ইউনুস (আঃ) নবীর উক্তিতে আল্লাহ এই দোয়া কুরআনে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ইউনুস নবী (আঃ) কি কুরাইশী আরবিতে দোয়াটা করেছিলেন, নাকি নিজের মাতৃভাষায়? তেমনই মুসা (আঃ) নবীর দোয়া, ইব্রাহিম (আঃ) নবীর দোয়া বা উপরে যে উল্লেখ করলাম আদম (আঃ) নবীর দোয়া, সবার দোয়াই যার যার মাতৃভাষায় তাঁরা করেছিলেন। হজরত আদমের (আঃ) ভাষাতো আরবি ছিল না। তিনি প্রথম মানব, কারোর সন্তান নন, তিনি যে ভাষাতেই কথা বলুন, সেটা আরবি ছিল না এইটা নিশ্চিত করেই বলাই যায়। কারন আরবির জন্ম অনেক পরে হয়েছে, এমন ঘটেনি যে আরবিতে আদি মানব কথা বলতেন, তারপরে সেই ভাষা হারিয়ে গিয়ে আবার বিবর্তিত হয়ে আরবিতে ফেরত এসেছে। ভাষা নিয়ে একটু গবেষণাধর্মী আর্টিকেল পড়লেই ভাষা বিজ্ঞান সম্পর্কে এই সাধারণ জ্ঞান অর্জন করবেন। প্রতিটা ভাষার উৎপত্তি এক ভাষা থেকে, এবং সেই ভাষা আরবি/সংস্কৃত ইত্যাদি কোনটাই না। সেই ভাষার অস্তিত্বই এখন নেই।
এখন এই কথার সূত্র ধরেই বেশ কয়েক বছর আগে আমি লিখেছিলাম বাংলাদেশে খুৎবা যদি আরবির বদলে বাংলায় দেয়া হতো, তাহলে অনেক উপকার হতো। বিশ্বের অনেক দেশেই সেটা করা হচ্ছে।
সমস্যা হয়েছিল সেদিন যে কিছু পন্ডিত, যারা এইসব ব্যাপারে বিন্দুমাত্র পড়াশোনা না করে যাচাই বাছাই না করে কুতর্ক করতে আসে, ওরা আমাকে গালাগালি করেছিল। এদের সমস্যা এইটাই, নিজে জানেনা সমস্যা নাই তাতে। কিন্তু জানার চেষ্টাতো করবে। কিছু জানার চেষ্টা না করেই একজনকে আক্রমন করে বসে। ওদের যুক্তি তর্ক ইত্যাদি হচ্ছে, অমুক আলেম বলেছেন খুৎবা আরবিতে হতে হবে, তাই আরবীতেই হবে।
ইদানিং দেখতে পারছি দেশের কিছু বিশিষ্ট আলেমরা বলতে শুরু করেছেন "নবীর সময়ে নবীজি আরবিতে খুৎবা দিতেন কারন তাঁর শ্রোতার সবাই ছিলেন আরবি। তিনি কি চাইনিজ ভাষায় দিবেন নাকি তাহলে?" ঠিক যে যুক্তি কুরআনেও আল্লাহ দিয়েছেন। আল্লাহ কুরআন এই কারণেই আরবিতে নাজেল করেছেন কারন নবীর (সঃ), তাঁর সাহাবীর (রাঃ), তাঁর শত্রু - সবারই ভাষা ছিল আরবি। যদি তা বাংলা বা হিন্দিতে নাজেল হতো, তাহলে কতটুকু যৌক্তিক হতো? ব্রেনটা থাকে কোথায়?
খুৎবা মানে বক্তব্য, এবং এর মাধ্যমে খতিবরা সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে থাকেন। শুধুমাত্র জুম্মার খুৎবা নিয়মিত শুনেই মানুষের জীবন পাল্টে গেছে, এমন বহু উদাহরণ বিদেশের মাটিতে আছে। আমাদের মসজিদের কৃষ্ণাঙ্গ সিকিউরিটি গার্ড মুসলিম হয়ে গেছেন নিয়মিত খুৎবা শুনে। কলিমা পাঠের দিন তাঁর যে কী আবেগঘন কান্না!
আর আমাদের দেশের সমস্যা হচ্ছে, খুৎবার সময়ে খতিব একটি বই পাঠ করেন, যার একটা বর্ণও কেউ বুঝে না। আর খুৎবার আগে ঘন্টাব্যাপী যে "বয়ান" চলে তা আবার রাসূলেরই (সঃ) নির্দেশের পরিপন্থী। তিনি জুম্মার খুৎবার আগে যেকোন ধরনের ধর্মীয় মাহফিল করতে নিষেধ করতেন। কারন, এতে সাধারনের কাছে খুৎবার গুরুত্ব কমে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
এনিওয়েজ, আবারও ব্যাক টু দ্য টপিক।
আপনি বিপদে পড়লে আপনি দোয়া করবেন। আপনি নিজের জন্য বা অন্য কারোর জন্য মঙ্গল চাইলে দোয়া করবেন। সেটা আরবীতেই হতে হবে, এমন কোন শর্ত নেই। কিন্তু যাই করবেন, মন থেকে যেন হয়, এইটাই শর্ত। কাজেই আরবি না জানলে বা হুজুরকে দিয়ে দোয়া না করালে দোয়া কবুল হবেনা, এমন ধারণা ভুল।
শেষ করি একটা বাস্তব ঘটনার উল্লেখ করে। নিজের জীবনে এত বেশি ঘটেছে যে বলার না। আমার কোন কিছুই নিজের না, সবই দোয়ায়। বরং অন্যের জীবনের একটা ঘটনা শেয়ার করছি।
এক কিশোর একরাতে দেখে তাঁর বাবা মা জায়নামাজে বসে কাঁদছেন। ঘটনা কি বুঝতে তাঁর সমস্যা হলো না। কিছুদিন আগে তাঁর মধ্যবিত্ত বাবা অন্য একজনের বুদ্ধিতে জীবনের সঞ্চিত সমস্ত টাকা পয়সা শেয়ার মার্কেটে খাটিয়ে দিয়েছিলেন। ব্যাপক দর পতনের ফলে এখন এই পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। এতগুলো ছেলেমেয়েকে খাওয়ানো, পরানো, মাথার উপরে ছাদের ব্যবস্থা কিভাবে হবে - এর জবাব কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছেন না তিনি। তাই মধ্যরাতে তিনি তাঁর মালিকের দরবারে মাথা নত করে দিলেন। তাঁর জীবন সঙ্গিনীও তাঁর সাথে যোগ দিলেন। তাঁরা বুঝতে পারেননি যে তাঁদের কিশোর ছেলেটি পর্দার আড়াল থেকে এ দৃশ্য দেখছে। কিশোরটিও তাঁর বাবা মাকে লজ্জা দিতে চায়নি। সে নীরব থাকলো।
বাবা মা চলে যেতে সেও জায়নামাজের কাছে যায়। আঙ্গুল স্পর্শে দেখে সেটি ভেজা। বুকে আরেকটা ধাক্কা খায় সে। আমরা ছোটদের কাঁদতে দেখে অভ্যস্ত। বড়দের কাঁদতে দেখা মানে গুরুতর কিছু ঘটেছে। কিশোর নিজেও তখন তাঁর রবের কাছে মাথা নত করে ফেলে, "আমি জানিনা আমার সামর্থ্যে কি আছে, কিন্তু হে আল্লাহ, তুমি আমাকে সাহায্য করো! আমি যেন এই বিপদ থেকে আম্মি আব্বুকে উদ্ধার করতে পারি।"
কিশোরটা আসলেই কিছু করতে পারতো না। শুধু ক্রিকেট একটু ভাল খেলতো। এর কিছুদিন পরেই তাঁর জাতীয় দলে অভিষেক ঘটে এবং নিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেই সাঁইত্রিশ বলে সেঞ্চুরি করে বিশ্ব ক্রিকেটে হৈচৈ ফেলে দেয়। এরপরে সুদীর্ঘ একটা ক্যারিয়ার সে শেষ করে। পরিসংখ্যানের খাতায় আহামরি কিছু করেনি। ম্যাচের তুলনায় উইকেট সংখ্যা কম, ব্যাটিং গড় যা ছিল অনেক দেশের টেলেন্ডারদেরও তা থাকে। ডাক মারার দিক দিয়েও প্রায় বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী। কিন্তু একই সাথে নিজের দেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ম্যাচ জয়ের নায়কও সে। সে কখন কবে কোন পরিস্থিতিতে হারা ম্যাচ জিতিয়ে দিবে, সেটাই কেউ অনুমান করতে পারতো না। আমাদের বিপক্ষেই সে এই কাজটা করেছে একাধিকবার।
আল্লাহ সেদিন যুবকটির অন্তরের দোয়া শুনেছিলেন। সে আরবিতে বলেছিল, নাকি উর্দুতে, সেটা মুখ্য ছিল না।
আল্লাহ আপনারও দোয়া কবুল করবেন। সেই সাথে আপনাকে এইটাও মাথায় রাখতে হবে, শুধু দোয়া করে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলেই চলবে না। আপনাকেও অ্যাকশনে নামতে হবে।
যদি বলেন, "ঐ যদি কাজ করতেই হয়, তবে দোয়ার প্রয়োজনটা কি?"
তা এই কথা সবাই স্বীকার করতে বাধ্য যে পরিশ্রমের পাশাপাশি অবশ্যই ভাগ্যের হাত থাকে। এবং দোয়াই সেই ভাগ্য নিয়ন্ত্রণ করে।
২| ১০ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:৪৭
প্রতিদিন বাংলা বলেছেন: ভালো তথ্য আছে লেখায় তবে মারাত্ত্বক অপরাধ করেছেন -
বার বার নবী/রসূল (সাঃ বা সা.বা সাল্লেল্লাহু আলাইহুমাচ্ছাল্লাম বা দরূদ পড়েননি )
৩| ১০ ই মার্চ, ২০২২ সকাল ৯:১৮
সোবুজ বলেছেন: কোরান নাজীল হয় মক্কার সাথ আনচলিক উপ ভাষায়।
৪| ১০ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:০১
শাহ আজিজ বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ
দিলেন আরেকখান ভ্যাজাল পাকাইয়া ।
৫| ১০ ই মার্চ, ২০২২ দুপুর ২:৩২
রাজীব নুর বলেছেন: দোয়া আরবীতে, না বাংলায় না ইংরেজিতে সেই হিসাব পরে।
দোয়ায় কি আসলেই কাজ হয়? কোনোদিন কারো হয়েছে?
বাবা মা সন্তানের জন্য কত দোয়া করে। সেই দোয়া তো ফলে যায় না। ছেলে নেশা করে। করতে থাকে। বাবা মা কত দোয়া করে। ফলাফল শূণ্য।
১০ ই মার্চ, ২০২২ রাত ৯:৩৪
মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: আল্লাহ বলেননি দোয়া করে চুপচাপ বসে থাকতে। আপনি আপনার সন্তানদের জন্য দোয়া চাইবেন, একই সাথে চেষ্টা করবেন তারা যেন কুপথে না যায়। এরপরেও অনেকে যায়, সেটা সত্য। নবী রাসূলদের পুত্রদেরও কেউ কেউ এমন কুকাম করেছে। আদমের (আঃ) এক ছেলে আরেকজনকে খুন করেছে, নূহের (আঃ) পুত্র কাফির ছিল, ইয়াকুব (আঃ) নবীর পুত্ররা ইউসুফকে হত্যার উদ্দেশ্যে কূপে ফেলে আসে ইত্যাদি।
আল্টিমেট সিদ্ধান্ত আল্লাহর, তিনি কবুল করবেন কিনা। তবে, আপনি আপনার দিক থেকে ক্লিয়ার থাকলেন, আপনি ইবলিস হলেন নাকি আদম (আঃ) সেটাই বড় কথা।
৬| ১১ ই মার্চ, ২০২২ বিকাল ৫:২৫
সাাজ্জাাদ বলেছেন: আমিও এটা বিশ্বাস করি। দোয়া আসলে মানুষের ইমোশনের বহিঃপ্রকাশ। আমার কথা চিন্তা করে কারো যদি দুঃখের দীর্ঘশ্বাস বের হয় সেটা হচ্ছে বদদোয়া আর আমার কথা চিন্তা করে কারো যদি একটা সুখের অনুভুতি হয় সেটা হচ্ছে দোয়া।
সুন্দর উপস্থাপন।
৭| ১৩ ই মার্চ, ২০২২ রাত ১১:৪৬
ইমরান আশফাক বলেছেন: সুচিন্তিত এবং ভাল পোষ্ট নি:সন্দেহে।
©somewhere in net ltd.
১| ১০ ই মার্চ, ২০২২ ভোর ৬:২৭
সোনাগাজী বলেছেন:
আল্লাহ কি বলেননি, উনি কোন ভাষা ভালোভাবে বুঝেন?