নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া

২৬ শে জুন, ২০২৪ রাত ১:১৫

রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়া নিয়ে আতংক এখন ভাইরাল পর্যায়ে পৌঁছেছে। এমনিতেই বাঙালির সর্পভীতি কিংবদন্তিতুল্য, তার উপর রাসেলস ভাইপার এমনিতেই বিষধর, কাজেই দুইয়ে দুইয়ে চার মিলে এখন চলছে এটি নিধনের মহোৎসব।
প্রথম প্রশ্ন হচ্ছে সাপটি কি আসলেই দুনিয়ার সবচেয়ে বিষধর সাপ? যার কোন এন্টিভেনম নেই? না। ঘটনা মোটেই তা না। রাসেলস ভাইপার কামড়ালে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসা নিবেন, ইন শা আল্লাহ দ্রুত সুস্থও হবেন। এর এন্টিভেনম আছে, এবং এটি দংশালে সাথে সাথে মৃত্যু ঘটে না।
সাপটি শত শত বছর ধরেই আমাদের অঞ্চলে ছিল। মাঝে বিলুপ্তপ্রায় হয়ে গিয়েছিল, এখন আবার ফিরে এসেছে।
কেন?
কারন হচ্ছে আমরা বেজি, গুইসাপ, শিয়াল ইত্যাদি মেরে ফেলছি। এগুলো প্রাণী সাপ খেয়ে বেঁচে থাকে। যেহেতু ওরা বিদায় হয়েছে, তাই সাপ খোপের সংখ্যা বেড়ে গেছে।
চিন্তা করেন, একদিকে সেসব প্রাণীকে মেরে ফেলা হচ্ছে যারা সাপ খেয়ে পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে মাঠে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির ফলে প্রচুর পরিমান ইঁদুরের সাপ্লাই হচ্ছে, তাহলে সাপ বাড়বে না কেন?
এখন সাপের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ইঁদুরের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। এই ইঁদুর ফসলের ক্ষতি করে, সাপ সেই ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। আবার কৃষককে নিজ এলাকায় পেলে কৃষককেও কামড়েও ফেলে। কৃষকরা তাই ভুজঙ্গ হত্যায় মেতেছে। এখন সাপ কমে গেলে ইঁদুর সংখ্যা হুহু করে বাড়বে। তখন শুরু হবে আমাদের খাদ্য সঙ্কট।
তাই প্রাকৃতিক ভারসাম্যে হাত দিতে নেই।

তাহলে এখন উপায় কি?
উপায়টাও সহজ।
Rule of thumb হবে, প্রকৃতির ভারসাম্যে হস্তক্ষেপ করা যাবেনা। উল্টো যে ক্ষতি হয়েছে, সেটাও পোষাতে হবে। মানে গুইসাপ, বেজি ও অন্যান্য যেসব প্রাণী সাপ খেয়ে থাকে ইম্পোর্ট করে এনে হলেও সেসব এলাকায় ছাড়তে হবে, এবং আইন করতে হবে যে এগুলোকে মারা যাবেনা। যদি ওদের উৎপাত বেড়ে যায়, তখনই নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ ওদের ব্যবস্থা নিবে। সাধারণ মানুষ কিছু করতে পারবে না।

দ্বিতীয়ত, কৃষকদের জন্য সুলভ মূল্যে গামবুটের ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকরা গামবুট পরে ফসলি জমিতে যাচ্ছে কিনা, সেটা কৃষি অধিদপ্তর নিশ্চিত করবে। হঠাৎ অভিযান করবে, যে কৃষককে গামবুট ও ভারী কাপড়ের প্যান্ট এবং প্লাস্টিকের গ্লাভস ছাড়া পাওয়া যাবে, জরিমানা করা হবে। কয়েকজনকে সাইজ করলেই সবাই লাইনে চলে আসবে।
আমি বুঝিনা, বাঙালি নিজের জীবনের ঝুঁকি আছে জেনেও এসব পোশাক পরতে চায় না কেন? নিজের জীবনের চেয়ে বড় কি হতে পারে?

তৃতীয়ত, স্থানীয় জনসাধারণকে সাপের ব্যাপারে বেশি বেশি করে শিক্ষিত করতে হবে। কোন সাপ উপকারী, কোন সাপ অপকারী, কোনটা বিষধর, কোনটা বিষধর হলেও প্রয়োজনীয়, কোনটা নির্বিষ, নিরীহ কিন্তু ইঁদুর, পোকামাকড় ইত্যাদি খেয়ে আমাদের উপকার করে ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। এমন না যে দুনিয়ার সব সাপ সম্পর্কে জ্ঞান নিতে হবে। যে যেই অঞ্চলের, সে যেন সেই অঞ্চলের সাপ সম্পর্কে জ্ঞান রাখে, সেটাই যথেষ্ট। থাকেন মাদারীপুরে আর আফ্রিকার ব্ল্যাক মাম্বা বা টেক্সাসের র্যাটল স্নেকের জ্ঞান দেয়া হবে, তাইলে বিষয়টা বেহুদা বাকোয়াজ হয়ে যাবে।
গ্রামের মানুষের জীবনের অংশ সাপ, অথচ আমাদের সেখানে লোকজনকে সচেতন করতে এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপই নজরে আসে না। নাহলে কেন এই যুগেও লোকে সাপের কামড়ে প্রথমে ওঝা আর ঝাড়ফুঁক করায়? এতেইতো যা সর্বনাশ হওয়ার তা হয়ে যায়। এমন সময়ে হসপিটালে যায় যখন কিছুই করার থাকেনা। লোকজনকে সচেতন করতে হবে স্কুলের মাধ্যমে, মসজিদের ইমামের মাধ্যমে জুম্মার খুৎবায়। গ্রামেগঞ্জে ওয়াজ মাহফিল হয়, লোকে খুব আগ্রহের সঙ্গে শুনে, সেখানে উনারা বলবেন সাপের কামড়ে কি করতে হবে কি করা যাবেনা। গ্রাম্য পঞ্চায়েতের মিটিংয়ে এই নিয়ে সচেতন করতে হবে। সরকারি পর্যায়ে নানান উদ্যোগতো থাকলোই।
যে বাংলা সিনেমায় দেখাবে সাপের কামড়ে মুখ দিয়ে রক্ত চুষে বিষাক্ত রক্ত কুলি করে ফেলে রোগীকে বাঁচিয়ে তোলা হচ্ছে, এমন সিনেমা শুধু ব্যানই করা হবেনা, উল্টো পরিচালক ও লেখককে আইনত দণ্ড করা হবে। ফাইজলামির সীমা আছে। এইসব দেখেই বেকুব মূর্খ জনতা সাপের কামড়ে চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে ক্ষতস্থান চাটাচাটি করে নিজেরও ক্ষতি করে, রোগীকেও মেরে ফেলে।

চতুর্থত, সাপের বিষের প্রতিষেধক প্রতিটা গ্রামে থাকতেই হবে। সাপে কামড়ায় গ্রামে, অথচ এন্টিভেনম নিতে যেতে হয় দূর সদরের হাসপাতালে যেখানে যেতে যেতেই দিন ফুরিয়ে যায় - এ কেমন হাস্যকর, হতাশাজনক ব্যবস্থা? যেখানেই সাপ, সেখানেই এন্টিভেনম থাকতে হবে। ফ্রিজের প্রয়োজন হলে যার বাড়িতে ফ্রিজ আছে, ওকে এই দায়িত্ব দেয়া হবে। বিদ্যুৎ না থাকলে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। মনিটর করা হবে ওষুধের ডেট এক্সপায়ার করেছে কিনা।
আমাদের ট্যাক্সের টাকায় কিছু নরাধম রাজার হালে একাধিক বিবি অগণিত সন্তান নিয়ে সংসার করে বেড়ায়, আর আমার দেশের মানুষ ফালতু কারনে মারা যায়, এইসব হজম হয় না।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে জুন, ২০২৪ রাত ২:১৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:




খুবই জনগুরুত্বপুর্ণ পোস্ট ।
বিষয়গুলি সংস্লিস্টদের আমলে নিয়ে
প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন আশু
প্রয়োজন ।

২৬ শে জুন, ২০২৪ রাত ২:১৯

মঞ্জুর চৌধুরী বলেছেন: ধন্যবাদ!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.