নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মঞ্জুর চৌধুরী

আমি ঝন্ঝা, আমি ঘূর্ণি, আমি পথ-সমূখে যাহা পাই যাই চূর্ণি’। আমি নৃত্য-পাগল ছন্দ, আমি আপনার তালে নেচে যাই, আমি মুক্ত জীবনানন্দ। আমি হাম্বার, আমি ছায়ানট, আমি হিন্দোল, আমি চল-চঞ্চল, ঠমকি’ ছমকি’ পথে যেতে যেতে চকিতে চমকি’ ফিং দিয়া দিই তিন দোল; আমি চপলা-চপল হিন্দোল। আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পান্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝন্ঝা! আমি মহামারী আমি ভীতি এ ধরিত্রীর; আমি শাসন-ত্রাসন, সংহার আমি উষ্ন চির-অধীর! বল বীর - আমি চির উন্নত শির!

মঞ্জুর চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ত্রাণ কী নষ্ট হচ্ছে?

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৮

গুলিবিদ্ধ হওয়ার চল্লিশদিন পর এই সেদিন এক যুবক মারা গেছে। কেউ কেউ এই আন্দোলনে শহীদ সংখ্যা নিয়ে হাসি তামাশা করে। সঠিক সংখ্যা এখনও চূড়ান্ত হয়নি, কারন এখনও মানুষ মরছে। আহত সংখ্যা হাজারের উপরে। অনেকের হাত কেটেছে, পা কেটেছে। চোখ হারিয়েছেন অনেকেই। যারা গুম গায়েব আছেন, তাঁদেরকে জীবিত নাকি মৃত ধরে নেয়া হবে?
এ থেকে আমরা বুঝি যে একটা দুর্যোগ শেষ হওয়ার সাথে সাথেই সবকিছু আপনাতেই ঠিক হয়ে যায় না। বহুদিন পর্যন্ত রেশ থেকে যায়। নাহলে ৫ অগাস্টের পরে আন্দোলনে আহত হওয়া কেউ মারা যেত না।

এই যে গেল কিছুদিন আগে বন্যা হলো, আমি জানি পানি নামার পরপরই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবেনা। মানুষের ফসল নষ্ট হয়েছে, ঘর নষ্ট হয়েছে। রোগ জীবাণু এখনও ভোগাচ্ছে। খাদ্য, চিকিৎসা ইত্যাদি সবকিছুরই প্রয়োজন এখনও আছে।

এরই রেশ ধরে একটি খবর ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছে যে ঢাবি ক্যাম্পাসে রেকর্ড পরিমান ত্রাণ তোলার পর এখন দেখা যাচ্ছে বিপুল পরিমান খাদ্য ও পানীয় গুদামে ফেলে রাখা হয়েছে। এগুলি পঁচে যাচ্ছে। শতশত কোটি টাকার কোন হিসাব দেয়া হয়নি।

এই সরকার যেহেতু জনগনের সরকার, জনগনের কাছেই ওদের জবাবদিহি করতে হবে। তাই এই যে মানুষগুলো প্রশ্ন তুলছেন, সেটা তাঁদের অধিকার। এটাই "বাক স্বাধীনতা!"
সরকারের উচিত এই বিষয়ে স্বচ্ছতা প্রদান। কেমন ত্রাণ উঠেছে, কোথায় কেমন খরচ হয়েছে, কেন এত বিপুল পরিমান ত্রাণ বাকি রয়ে গেছে ইত্যাদির হিসাব দেয়া তেমন কঠিন কোন বিষয় না।

আমার ধারণা, এত বিপুল পরিমান ত্রাণ উঠবে সেটা কর্তৃপক্ষ কল্পনাও করেনি। ওদের ধারণার বাইরে ঘটনা ঘটেছে। আমাদের দেশে এর আগে কবে কখন মানুষ ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ বিতরণ করেছিল? আমার মনে পড়েনা। আমার এক জীবনে এমন দৃশ্য আমি দেখিনাই।
কেন এমন ঘটলো? আগের কোন সরকারতো লোকজনকে এগিয়ে আসতে নিষেধ করতো না। তাহলে এইবার কেন এমন হলো?

আসলে এই সরকারের উপর মানুষের ভরসা আছে। জানে যে কষ্টার্জিত টাকা মন্ত্রী এমপিদের পকেটে যাবেনা। আমার টাকায় কোন সরকারি কর্মকর্তার পুত্র দামি ব্র্যান্ডের গাড়ি চেপে গার্লফ্রেন্ডকে পাশে নিয়ে সেল্ফি তুলে ইনস্টাগ্রাম গরম করবে না। কোন ঘুষখোরের মেয়ে নির্লজ্জের মতন বাপের অসৎ আয়ে কেনা হীরের জুয়েলারি দেখিয়ে শো অফ করবে না। আমার আপনার টাকা মেরে দিয়ে সালমান এফ রহমানের পুত্রের মতন কোন বাটপার সস্তা আম্বানি সাজার ধৃষ্টতা দেখাবে না।
এই বিশ্বাস অর্জন করতে কাউকে রক্ত ঝরাতে হয়েছে, কাউকে নোবেল জিততে হয়েছে। নিন্দুকেরা এখনও "সুদী সুদী" বলে যাচ্ছে, কিন্তু এসব "সুদির ভাইদের" সাধারণ পাবলিক এখনও পাত্তা দিচ্ছে না।

যখন প্রত্যাশার চাইতে বেশি ত্রাণ উঠে যায়, তারউপর যদি অভিজ্ঞতা না থাকে, তাহলে খানিকটা মিসম্যানেজমেন্ট হবেই। দুনিয়ার সব দেশে, সব ইন্ডাস্ট্রিতেই এমন ঘটে।
এইটাতো দিবালোকের মতোই সত্য যে বিগত সরকারগুলো থাকলে এতদিনে একটা খালি প্লাস্টিকের পানির বোতলও থাকতো না, সব ওদের পকেটে চলে যেত। এখন ফেসবুকের পোস্ট দেখে মনে হচ্ছে স্টুডেন্টরা না নিজেরা নিয়েছে, না ঠিকমতন বিতরণ করতে পেরেছে। অনেক জায়গা থেকেই শুনছি লোকজন ত্রাণ পায়নি। তবে প্রচারকারি বেশিরভাগই আফসোসলীগ বলে গণায় ধরছি না। এক্ষেত্রে মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার এগিয়ে আসা উচিত। সরকার যেহেতু মিডিয়াকে এই স্বাধীনতা দিয়েছে, কাজেই সাংবাদিকদের উচিত স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ একটি রিপোর্ট করা যা সত্য তুলে ধরবে এবং আমাদের বিশ্বাস অর্জন করবে।

বন্যার্তদের নিয়ে মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করেছেন তাঁরা সবাই জানেন বন্যার বহুদিন পরেও লোকের ত্রাণের প্রয়োজন হয়। কারন প্রাথমিক পর্যায়ে যাদেরকে দেয়া হয়েছিল, সেগুলো দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। এখন ওদের সেকেন্ড/থার্ড রাউন্ড ত্রাণ দেয়ার প্রয়োজন।
যারা পানি দেখে ভলান্টারি করতে এসেছিলেন, এবং পানি নেমে যাওয়ার পরে বাড়ি ফিরে গেছেন, ওদেরকে এখনও এগিয়ে আসতে হবে।
আর যারা সেসময়ে এগিয়ে আসেননি, এখন সেরা সময় নিজের শ্রম নিয়ে এগিয়ে আসার।
গুদামে ফেলে রাখলে খাবারগুলো পঁচে যাবে।
যদি বিশ্বস্ত ভলান্টিয়ার না পাওয়া যায়, তবে পরিচিত, বিশ্বস্ত কোন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এগুলো বন্যার্তদের কাছে পৌঁছে দেয়া জরুরি। আমার নিজেরই পরিচিত ও বিশ্বস্ত একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে যারা মানুষের জন্য কাজ করে। আমি নিশ্চিত, দেশে এমন প্রতিষ্ঠান সংখ্যা প্রচুর। ওদের উচিত এইসব ছাত্রদের সাথে যোগাযোগ করে একসাথে কাজ করা।
যদি প্রাইভেট কাউকে বিশ্বাস না হয়, তাহলে আমাদের সেনাবাহিনীতো আছেই। দুর্যোগে যারা সবসময়েই সামনে এগিয়ে আসে, ওদের হাতে তুলে দিলেই সাধারণের কাছে ত্রাণ পৌঁছে যাবে।
আশা করি ওরা দ্রুত এর ব্যবস্থা নিবে।

বহু লোকজন হা করে আছে ওদেরকে নষ্ট প্রমান করার জন্য। যেমন "শহীদ স্মৃতি অনুষ্ঠানের বাজেট ৫ কোটি টাকা" এ নিয়ে যে হল্লা হয়েছে, অতটা "ছয় হাজার টাকার বালিশ" কেলেঙ্কারি নিয়েও হয়নি।
আবার বহু পোড়খাওয়া মানুষও আছেন। তাঁরা কিছুতেই আগের সরকারগুলোর মতন আরেকটি দুর্নীতিবাজ সরকার দেখতে আগ্রহী নয়। তাই কিছু হলেই উনাদের মনে কু ডাক উঠে, "এরাও তেমন নয়তো?"
যেমনটা ড ইউনুস বলেন, "ফেল করার কোন সুযোগই নেই।" এই সরকারকে পাশ করতেই হবে। শুধু পাশই না, ভাল গ্রেড সহ পাশ।
তা ৫ কোটির ব্যপারে উপদেষ্টাদের ব্যাখ্যা শুনলাম যে অনুষ্ঠানের জন্য ৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেয়া হয়েছে, খরচ পাঁচ কোটি হবে, তা বলা হয়নি। পাঁচ কোটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে কারন প্রতিটা শহীদ পরিবারের লোকজনকে ঢাকার বাইরে থেকে এনে ঢাকা শহরে এক রাত থাকা খাওয়ার খরচ এই প্রকল্প নিচ্ছে। অন্যান্য সরকার হলে এই কারন দেখিয়ে চারশো পাঁচশো কোটি খরচ করতো, এবং এখন যারা হঠাৎ দেশের অর্থ অপচয় নিয়ে বিপ্লবী হয়ে গেছেন, তাঁরাই গদগদ হয়ে উন্নয়নের প্রশংসা করতেন। উদাহরণ চাইলে করোনা মহামারীর সময়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েকশো কোটি টাকার আতশবাজি পুড়ানোর ঘটনার সমালোচনা করেছিলাম বলে আমাকে আজকের সচেতন জনতার অনেকেই বলেছিলেন "বড়লোকের পোলার জন্মদিন ফকিরের চোখে বিলাসিতা লাগবেই।"
যাই হোক, আমি নিশ্চিত বন্যার ত্রাণ প্রসঙ্গেও কোন ব্যাখ্যা নিয়ে নিশ্চই কর্তৃপক্ষ হাজির হবে।
ব্যাখ্যা যাই হোক, দ্রুত এগুলোর সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে হবে। একবার মানুষের বিশ্বাস নষ্ট হয়ে গেলে, আজীবন চেষ্টা করলেও ফেরানো যাবে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.