![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জনগণের ব্যবহারের জন্য হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ফ্লাইভার তৈরি করা হচ্ছে চট্টগ্রামে। আর তা যদি জনগণ ব্যবহারই করতে না পারে তাহলে কার স্বার্থে এ সব ফ্লাইওভার? দেড়’শ কোটি টাকা ব্যয়ে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে কিন্তু দিনে এর ওপর দিয়ে দেড়’শটি গাড়িও চলে না। জন দুর্ভোগের কথা বিবেচনা না করে শুধুমাত্র সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য এ সব ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে।সোমবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ‘জনবান্ধব উন্নয়ন: জল ও যানজট মুক্ত চট্টগ্রাম’ শীর্ষক গোল টেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন বক্তারা। পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম ও সমাজ সমীক্ষা সংঘ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ইস্টডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ সিকান্দার খান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকৌশলী সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া ও প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার।সুভাষ চন্দ্র বড়ুয়া বলেন, যানজট নিরসনের জন্য ১৯৯৫ সালের মাস্টার প্ল্যানে প্রথম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কর্ণফুলী নদী থেকে বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত আউটার রিং রোড নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। অথচ এখনো পর্যন্ত এটি বাস্তবায়ন করা হয়নি। কিন্তু মাস্টার প্ল্যানে যা নেই তা হাজার কোটি টাকা নষ্ট করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। যা জনগণের কোন কল্যাণে আসছে না যানজট নিরসনে চট্টগ্রামে ফ্লাইওভার প্রয়োজন নেই বলে মত দেন এই নগর পরিকল্পনাবিদ।
তিনি বলেন, নগরীর কোনো জাংশনে ফ্লাইওভারের নির্মাণ করার মতো গাড়ি চলাচল করে না। তা আন্তর্জাতিক সংস্থার সমীক্ষায়ও দেখা গেছে। চট্টগ্রামে প্রয়োজন ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট। এটা খুব অল্প খরচে করা যাবে। কিন্তু সিডিএ সেদিকে না গিয়ে শত কোটি টাকা খরচ করে ফ্লাইওভার তৈরি করছে যা মানুষের কোনো কল্যাণে আসছে না। বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার নির্মাণের মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে।
প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনের করণীয় কি তা বিশ বছর আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন ছাড়া এর কোন বিকল্প নেই। কিন্তু কোন উন্নয়ন সংস্থা এটি বাস্তবায়নে সরকারের কাছে প্রকল্প পাঠায়নি।
তিনি বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও দখলের কারণে নগরীতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জলাবদ্ধতা সমাধানযোগ্য সমস্যা। প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, কোনো সম্ভাব্যতা যাচাই ছাড়া সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য উন্নয়নের নামে শতকোটি টাকা নষ্ট করা হচ্ছে। এটা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।সিডিএ’র নতুন মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়ে তিনি বলেন, সরকার এত টাকা খরচ করে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ এনে যে মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে তা এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। অথচ এখন বলা হচ্ছে নতুন মাস্টার প্ল্যান তৈরি করা হবে। নতুন কোন মাস্টার প্ল্যানের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল বলেন, বহদ্দারহাটে যে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে, সেখানে আমি নিজে অবস্থান করে দেখেছি। সেখানে কয়েকটি ট্রাক ও রাতের বেলা দুরপাল্লার বাস ছাড়া আর কোনো গাড়ি চলাচল করে না। ফ্লাইওভারে গাড়ির চেয়ে সিডিএ চেয়ারম্যানের ব্যানারই বেশি।
মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, পরিকল্পিত চট্টগ্রামের জন্য একটি কর্তৃপক্ষ দরকার। আগে সেটা তৈরি করতে হবে। একজন অনির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা সরকার চট্টগ্রামে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করছে। এসব কাজ জনসম্পৃক্ত হবে না এটাই স্বাভাবিক। ফ্লাইওভার নির্মাণে কাজ কম, অর্থ বেশি। তাই জনগণের কল্যাণের কথা চিন্তা না করে যেদিকে বেশি লাভ সেদিকে ঝুকছে তারা।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সিকান্দার খান বলেন, যখন এসব অসংগতি আমরা ধরিয়ে দেই তখন তারা আমাদের প্রতিপক্ষ মনে করেন। নাগরিকের কাছে যে তাদের জবাবদিহিতা আছে তা তারা ভুলে যান। আমার মনে হয় নাগরিকের দায়িত্ব বা ক্ষমতা সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই।
গোল টেবিল বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হায়দার, প্রকৌশলী বিধান বড়ুয়া, আইইবি’র সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মো. শাহজাহান, অধ্যাপক সুরাইয়া জামাল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবিএম আবু নোমান, সাঈদ আহসান খালিদ, হাজী মোহাম্মদ মহসিন কলেজের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ইদ্রিস আলী প্রমুখ। - See more at: Click This Link
©somewhere in net ltd.