![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক
মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী জামাতের প্রতিষ্ঠাতা ও 'আহমদিয়া মুসলিম জামাত' নামে একটি নতুন ধর্মের প্রবর্তক (উইকিপিডিয়া থেকে দেখুন)। নবুওত এবং রেসালতের দাবিকারী 'মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী'র স্ববিরোধী কথা এবং নিজের কথায় নিজেই মিথ্যুক এবং কাফির সাব্যস্ত হওয়া সম্পর্কে আজকের এ লেখাটি পড়ুন!
[উইকিপিডিয়া'র স্কিনশট]
ফার্সি ভাষায় একটি প্রবাদ আছে, 'দরূগে গো রা হাফেজাহ নাবাশদ'। অর্থাৎ মিথ্যাবাদির স্মরণ থাকেনা। বিজ্ঞ পাঠক, নিচের লেখাটি ভালভাবে পড়ার পর যদি নিরপেক্ষ ভাবে চিন্তা করে দেখেন তবে নিশ্চিত বলতে বাধ্য হবেন যে, মির্যার সীমাহীন স্ববিরোধী কথাবার্তার মূল কারণ-ই হচ্ছে তার স্মরণশক্তি লোপ পাওয়া। যেহেতু সে মিথ্যাবাদী সেহেতু তার স্মরণশক্তি লোপ পাওয়াই স্বাভাবিক।
আফসোস! মির্যার অনুসারী অনেককে দেখেছি, তারা মির্যাকে অকপটে "নবী এবং রাসূল" বলে স্বীকার করে নিয়েছে। অথচ মির্যা সাহেব এমনও বলে গেছেন যে, "নবুওত আর রেসালতের দাবিদারের প্রতি আমার অভিশাপ।"
মির্যা সাহেব সম্পর্কে তার অনুসারিদের আরো বলতে দেখি যে, মির্যা সাহেব নাকি "উম্মতি নবী" হবার দাবি করতেন। কিন্তু মির্যা সাহেব তার এ দাবির ক্ষেত্রেও মারাত্মক আবোলতাবোল কথাবার্তা বলে গেছেন এবং বহু স্ববিরোধী যুক্তিপ্রমাণ প্রদর্শন করেছেন। কুরআন হাদিস থেকেও বহু দলিল পেশ করতে চেষ্টা করেছেন। অনেকটা মির্যা হুসাইন আলী নূরী'র মত। বাহায়ী জামাতের প্রতিষ্ঠাতা এবং নবুওত ও রেসালতের দাবিদার এ ব্যক্তিটিও মির্যার মতই কুরান হাদিস থেকে নিজের দাবির পক্ষে দলিল পেশ করে গিয়েছিল। ১৮৪৪ সালে সে সর্বপ্রথম নিজেকে "নবী" বলে প্রচার করেন। নবুওতের দাবি করার পরে সে আরো প্রায় ৪৮ বছর বেচে ছিল। অবশেষে ফিলিস্তিনের "বাহজা" নামক শহরে "বাহায়ী জামাত"র নবী(?) মির্যা হুসাইন আলী নূরী ১৮৯২ সালে মারা যান। আমি এ লেখাটির শেষে মির্যা কাদিয়ানি সাহেবের কথিত "উম্মতি নবী" দাবি তার-ই অপরাপর বক্তব্য দ্বারা খন্ডন করে দেব, ইনশাআল্লাহ। এখানে মির্যা সাহেবের কিছু দ্ব্যর্থহীন বক্তব্য উল্লেখ করব।
মির্যা সাহেবের কিছু বক্তব্য নিচে দেয়া হল -
(১) অসত্য কথা বলা ও অপবাদ আরোপ করা সৎ মানুষের কাজ নয়, বরং নষ্ট ও খারাপ মানুষের কাজ। (তথ্যসূত্র : রূহানী খাযায়েন ১০/১৩)
(২) কেউ একটি কথায় মিথ্যুক প্রমাণিত হলে তার অন্য কথার আর গ্রহণযোগ্যতা থাকেনা। (রূহানী খাযায়েন ২৩/২৩১)।
(৩) আমি যা বলি সব আল্লাহ'র নির্দেশেই বলি। নিজ থেকে কিছুই বলিনা। (রূহানী খাযায়েন ১৯/২২১)।
(৪) মিথ্যাবাদীর কথাতে স্ববিরোধিতা থাকবেই। (রূহানী খাযায়েন ২১/২৭৫)।
(৫) আল্লাহতালা আমাকে এক মুহূর্তের জন্যও ভুলের উপর বহাল রাখেন না। আমাকে প্রত্যেকটি ভুল কথা থেকে রক্ষা করেন। (রূহানী খাযায়েন ৮/২৭২)।
এবার চলুন, মির্যা সাহেবকে তারই উপরিউক্ত বক্তব্যের দাঁড়িপাল্লায় তুলে নিই -
১- তিনি লিখেছেন : "(সূরা আহযাবের ৪০ নং আয়াতের অর্থ করতে গিয়ে) মুহাম্মদ তোমাদের পুরুষদের মধ্য থেকে কোনো পুরুষের (পুরুষ = প্রাপ্তবয়স্ক) পিতা নন। তবে তিনি একজন আল্লাহ'র রাসূল এবং নবীদের খতম করনে ওয়ালা।" (ইযালাতুল আওহাম ৩/৫১১)।
২- "আমার বিশ্বাস এ যে, ওহী রেসালত হযরত আদম (আ) থেকে শুরু হয়েছে এবং জনাবে রাসূলুল্লাহ মুহাম্মদ মুস্তফা (সা) এর উপর খতম (শেষ) হয়ে যায়।" (মাজমু ইশতিহারাত ১/২৩১)।
(৩) এবং সাইয়িদানা মাওলানা হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা) খতমুল মুরসালীনের পর অন্য কোনো নবুওত এবং রেসালত দাবিদারকে আমি 'মিথ্যাবাদী' এবং 'কাফির' মনে করি। (মাজমু ইশতিহারাত ১/২৩০; তাবলীগী রিসালাত ২/২০-২১)।
(৪) "এখন নবী আসবেনা, মুজাদ্দিদ আসবে।" (মির্যা সাহেব কর্তৃক রচিত 'নূরুল কুরআন' পৃষ্ঠা ৩৩৮; রূহানী খাযায়েন খন্ড নং ৯)
(৫) এটা সুস্পষ্ট যে, আমরাও নবুওত দাবিদারের উপর লানত (অভিশাপ) বর্ষণ করে থাকি। (মাজমু ইশতিহারাত ২/২৯৭-২৯৮)
এবার মির্যা সাহেবের স্ববিরোধী কথাগুলো জেনে নিন! তিনি পূর্বোক্ত বক্তব্যের বিপরীত করে লিখেছেন -
(১) "নবী নাম পাওয়ার জন্য আমাকেই নির্ধারণ করা হয়েছে।" (রূহানী খাযায়েন ২২/৪০৬)।
(২) আমার দাবি, আমি নবী এবং রাসূল। (মালফুজাত ১০/১২৭)
(৩) তুমিও একজন রাসূল যেমনি ভাবে ফেরাউনের নিকট একজন রাসুল (মূসা) প্রেরিত হয়েছিল। (মালফুজাত ৮/৪২৪)।
(৪) সত্য খোদা তো তিনি-ই যিনি কাদিয়ানে (পাঞ্জাবের একটি গ্রাম [ভারত]) আপনা রাসূল পাঠিয়েছেন। (দাফেউল বালা, রূহানী খাযায়েন ১৮/২৩১)।
(৫) "বারাহিনে আহমদিয়া এর ৪৯৮ নং পৃষ্ঠায় (১৮৮৪ সালে মির্যার প্রথম কোনো লেখিত পুস্তক) পরিষ্কার ভাবে এ অক্ষম (মির্যা)-কে রাসূল বলে ডাকা হয়েছে।" (এক গলতি কা এযালা ১৮/২০৪)।
স্ববিরোধী কথার ফলাফল : আমি সকল কাদিয়ানী তথা আহমদি ভাই ও বোনদের উদ্দেশ্যে বলব, এমন স্ববিরোধী ও দ্বিমুখী চরিত্রের ধুর্ত মানুষটি যেখানে নিজের ফতুয়াতে নিজেই কাফির, কাজ্জাব আর অভিশপ্ত সাব্যস্ত হয়ে গেল, সে মানুষটি কিভাবে আল্লাহ'র প্রেরিত পুরুষ হন? দয়াকরে আরেকবার ভেবে দেখবেন!
মির্যার "উম্মতি নবী" হবার দাবি :
মির্যা কাদিয়ানী নিজের ব্যাপারে অনেক কিছু-ই দাবি করত। তন্মধ্যে "উম্মতি নবী" একটি। অথচ তার এ দাবিও বাতিল। কারণ ইসলামে "উম্মতি নবী" বলতে কিছুই নেই। আল্লাহতালা যুগে যুগে যত বার্তাবাহক প্রেরণ করেছেন তাদের সম্পর্কে স্বতন্ত্রভাবে "নবী" বা "রাসূল" এ জাতীয় শব্দই ব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া যায়। "উম্মতি নবী" শব্দে কাউকে সম্বোধন করার একটি প্রমাণও নেই। কাজেই এটি মির্যার অন্যতম একটি প্রতারণা বৈ কিছুনা। প্রথমে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী থেকে কথিত উম্মতি নবী সম্পর্কে জেনে নিন! তিনি লিখেছেন :-
جو لوگ مولوی کہلاتے ہیں ہمارے سید و مولا خير الرسل وافضل الانبياء آنحضرت صلي الله عليه وسلم کی ہتک کرتے ہیں جبکہ کہتے ہیں کہ اس امت میں عيسى بن مريم كا مثيل کوئی نہیں آ سکتا اس لیے ختم نبوت کی مہر کو توڑ کر اسی اسرائيلى عيسى کو کسی وقت خدا تعالى دوبارہ دنیا میں لائے گا اور اس اعتقاد سے صرف ایک گناہ نہیں بلکہ دو گناہ کے مرتکب ہوتے ہیں (1) اول یہ کہ ان کو اعتقاد رکھنا پڑتا ہے کہ جیسا کہ ایک بندہ خدا عيسى نام جس کو عبرانی میں یسوع کہتے ہیں تیس برس تک موسى رسول الله کی شريعت کی پیروی کرکے خدا کا مقرب بنا اور مرتبہ نبوت پایا اس کے مقابل پر اگر کوئی شخص بجائے تیس برس کے پچاس برس بھی آنحضرت صلى الله عليه وسلم کی پیروی کرے تب بھی وہ مرتبہ نہیں پا سکتا گویا آنحضرت صلى الله عليه وسلم کی پیروی کوئی کمال نہیں بخشتی" (چشمہ مسیحی، رخ 20 صفحات 381 و 382)
অনুবাদ :- মির্যা লিখেছেন : "মৌলভিরা আমাদের সাইয়েদ, মওলা খায়রুর রাসূল ও আফদ্বালুল আম্বিয়া আঁ হযরত (সা.)'র অবমাননা করে থাকে যখন বলা হয় যে, এ উম্মতের মধ্যে ঈসা ইবনে মরিয়মের মাছীল (রূপক) কেউ আসবেনা। এ জন্য খতমে নবুওতের সীল ভেঙ্গে সেই ইসরাইলি ঈসাকে যে কোনো সময়ে খোদাতায়ালা দ্বিতীয়বার দুনিয়াতে নিয়ে আসবেন এবং এ বিশ্বাসের কারণে গুনাহ শুধু ১টি নয়, বরং ২টি গুনাহ হবে। (১) প্রথমত তাকে বিশ্বাস রাখতে হচ্ছে যে, যেমনি ভাবে খোদার একজন বান্দা ঈসা, হিব্রুভাষায় যাকে 'ইসোয়া' বলে তিনি ৩০ বছর পর্যন্ত আল্লাহ'র রাসূল হযরত মূসা (আ) এর শরীয়তের পায়রবি (আনুগত্য) করার মাধ্যমে খোদার নৈকট্যতা লাভ করেন এবং নবুওতের মর্যাদা পান। তার বিপরীতে যদি কোনো ব্যক্তি ৩০ বছরের স্থলে ৫০ বছরও আঁ হযরত মুহাম্মদ (সা) এর পায়রবি (আনুগত্য) করে তবুও সে (নবুওতি) মর্যাদা পাবেনা। যেমন নাকি আঁ হযরত (সা)-এর পায়রবি বা আনুগত্যে কোনো কামালিয়ত (পূর্ণতা)-ই নেই!" (সূত্র :মির্যা রচিত 'চশমায়ে মাসীহ, রূহানী খাযায়েন ২০/৩৮১-৮২)।
মির্যায়ী বক্তব্যের সারমর্ম : মির্যা সাহেব যেন বলতে চাচ্ছেন যে, বনী ইসরাইলি নবী ঈসা মাসীহ তিনি হযরত মূসা (আ) এর শরীয়তের আনুগত্য করার মাধ্যমে যদি খোদার নৈকট্যতা লাভ করেন এবং নবী হতে পারেন, তবে তো মুহাম্মদ (সা)-এর আনুগত্য দ্বারা তাঁর উম্মতের মধ্য থেকে নবী হওয়া আরো বেশি যুক্তিক!! এককথায় তিনি স্বীকারোক্তি দিলেন যে, হযরত মূসার আনুগত্য দ্বারা হযরত ঈসা (আ) 'নবী' হওয়ার মর্যাদা লাভ করেছেন। উপরের বক্তব্যটিকে মির্যার এ কথাটি আরো দৃঢ় করেছে। কেননা মির্যা সাহেব লিখেছেন : ’’حضرت موسیٰ علیہ السلام کے اتباع سے ان کی امت میں ہزاروں نبی آئے۔ অর্থ :- হযরত মূসা (আ)-এর অনুকরণ আর অনুসরণে তাঁর উম্মতের মধ্যে সহস্রাধিক নবীর আগমন হয়েছে।"
মির্যার ‘উম্মতি নবী’ দাবি এবং ঈসা (আ)-কে মূসা নবীর ইত্তিবায় নবুওতের মর্যাদা পাওয়ার দাবি, এ দুটো পয়েন্টে আমার কিছু বলার আছে। কাদিয়ানী বন্ধুরা! জবাবদানে বাধিত হবেন।
প্রথম কথা হল, মির্যার কথা অনুসারে ঈসা (আ) হযরত মূসার ইত্তিবায় একজন উম্মতি নবী। আবার মির্যা নাকি নিজেও মুহাম্মদ (সা)-এর ইত্তিবায় আরেক ‘উম্মতি নবী’! অথচ আমরা দেখতে পাই যে, হযরত ঈসা (আ) একজন নতুন শরীয়তপ্রাপ্ত। কেননা তিনি পৃথক একখানা আসমানি কিতাব ‘ইঞ্জিল‘ লাভ করেছেন। (সূরা মরিয়ম : ৩০ দ্র। তো মির্যা সাহেবের নতুন শরীয়ত কোথায়? পৃথক আসমানি কিতাব কোথায়? আমরা আরো দেখি, পবিত্র কুরান ঈসাকে একজন ‘রাসূল‘ সম্বোধন করেছে। (আলে ইমরান : ৪৯) এবং স্বতন্ত্র একজন নবীও সম্বোধন করেছেন। (সূরা মরিয়ম : ৩০)। কিন্তু মির্যা কিজন্য নিজেকে স্বতন্ত্র নবী বলতে ভয় পেত? কেন বলত যে, আমার বইয়ের যেখানে যেখানে “নবী” শব্দ পাবে তা তোমরা কেটে দাও? (দেখুন, মির্যাপুত্র রচিত ‘হাকিকাতুন নবুওত ‘১/৫৪১)। তিনি বলতেন, নবী শব্দ দ্বারা ‘মুহাদ্দাস‘ উদ্দেশ্য নেবে। কিন্তু ‘মুহাদ্দাস’ আর ‘নবী’ কি একই? মির্যার ক্ষেত্রে কেন এমন হল? অথচ মির্যার মতে ঈসাও একজন মূসার ইত্তিবায় ‘উম্মতি নবী’! যদিও ঈসা (আ) নিজেকে ‘উম্মতি নবী‘ প্রচার করার কোনো দলিল নেই। আমরা এও জানি যে, ঈসার কিতাব দ্বারা মূসার তাওরাত রহিত। অথচ মির্যা সাহেবের নাকি পৃথক কোনো আসমানি কিতাবই নেই। তাহলে তিনি কেমন নবী? কেমন রাসূল? নবী আর রাসূল কি একই? অবশ্যই না। দেখে নাও পবিত্র কুরানের সূরা হজ্জের আয়াত নং ৫২।
দ্বিতীয় কথা হল, তিনি বলেছেন – পরিষ্কার হওয়া দরকার যে, সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য ভবিষ্যতবাণীর চেয়ে আমাদের বড় কোনো মানদণ্ড নেই। (রূহানী খাযায়েন ৫/২৮৮)। এবার দেখুন, মির্যা সাহেব তার লেখালেখিতে ভবিষৎবাণী লিখেছেন, “আমি মক্কা বা মদীনায় মৃত্যুবরণ করব।” (দেখুন, তাযকেরাত ৫০৩, ৪র্থ এডিশন)। কিন্তু মির্যা সাহেবের মৃত্যু তো হয়েছিল পাকিস্তানের লাহোরে। তাহলে এখানে কী বলবেন? ভবিষৎবাণী দ্বারা মির্যা সাহেব কী সাব্যস্ত হলেন? এরকম অসংখ্য উদ্ভট ও অবাস্তব সব ভবিষৎবাণীতে তার বই পুস্তক পৃষ্ঠাকে পৃষ্ঠা ভরপুর হয়ে আছে । বিস্তারিত পড়ুন :- http://www.markajomar.com/?p=4091
এবার মির্যা সাহেবকে প্রশ্ন করে দেখুন তিনি পুরোপুরি আগের কথার বিপরীতে বলবেন। যেমন 'হাকিকাতুল ওহী' পুস্তকের ৯৭ নং পৃষ্ঠায় লিখেছেন :-
بنی اسرائیل میں اگرچہ بہت سے نبی آئے۔ مگر ان کی نبوت موسیٰ کی پیروی کا نتیجہ نہ تھا۔ حضرت موسیٰ علیہ السلام کی پیروی کا اس میں ذرہ بھی دخل نہ تھا۔‘‘ (حقیقت الوحی ص۹۷ حاشیہ، خزائن ج۲۲ ص۱۰۰)
অনুবাদ – বনী ইস্রাইল বংশে যদিও বহু নবীর আগমন হয়েছে তবে কিন্তু তাদের নবুওত মূসা নবী’র অনুকরণ আর অনুসরণের ভিত্তিতে ছিলনা। হযরত মূসা (আ)-এর অনুকরণের বিন্দুবিসর্গও তাতে দখল ছিলনা। (মির্যা রচিত ‘হাকিকাতুল ওহী’ ৯৭ টীকা; রূহানী খাযায়েন ২২/১০০)। আমি এবার তারই পুত্র মির্যা বশিরুদ্দিন মাহমুদ আহমেদ কর্তৃক রচিত "হাকিকাতুন নবুওত" বইয়ের পৃষ্ঠার স্কনকপি পেশ করে প্রমাণ করে দেব যে, মির্যা সাহেব "চশমায়ে মাসীহ" পুস্তকে যা লিখে গেছেন তা নিজ পুত্রের লেখনী দ্বারাও বাতিল হয়ে যায়। কারণ মির্যাপুত্র লিখেছেন :
.لیکن امتی نبی کا وہ درجہ ہے جو پہلے رسولوں کی اتباع سے نہیں مل سکتا تھا. کیونکہ وہ خاتم النبیین نہ تہے. اور جزوی نبی کے اوپر کا درجہ سوائے نبی کے اور کوئی نہیں ہوسکتا. کیونکہ جزو کے بعد کل ہی ہوتا ہے. انوار العلوم جلد دوم؛ حقیقت النبوة 1/542
অনুবাদ : "কিন্তু উম্মতি নবীর মর্যাদা সেটাই যেটি অন্যান্য রাসূলের ইত্তেবা বা আনুগত্য দ্বারা অর্জন হয়না। কেননা তাঁরা খাতামুন্নাবিয়্যীন ছিলেন না। অপূর্ণ (আরবি : جزوی ) নবীর উপরি স্তরে স্বতন্ত্র নবী ছাড়া আর কেউ হয় না। কারণ অপূর্ণ নবীর পরেই স্বতন্ত্র (পূর্ণাঙ্গ) নবী হয়ে থাকেন।" (দেখুন হাকিকাতুন নবুওত : ১/৫৪২; মির্যা বশিরুদ্দীন মাহমুদ)।
হে কাদিয়ানী বন্ধুরা! মির্যা সাহেবের স্ববিরোধী বক্তব্যের সমাধান কিভাবে দেবেন তা একটু ভেবে দেখুন! ভুলে গেলে চলবেনা যে, খোদ মির্যা সাহেব নিজেই লিখেছেন : "স্ববিরোধী বক্তব্যদাতার কথার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।" আশাকরি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারবেন।
কয়েকটি জিজ্ঞাসা :
মির্যার কথিত "উম্মতি নবী" এর অর্বাচীন দাবির খন্ডনে নিচের প্রশ্নগুলো। একজন সুশিক্ষিত ব্যক্তি চিন্তা করে দেখলেই পূরো ব্যাপারটি তার সামনে পরিষ্কার হয়ে ধরা দেবে ইনশাল্লাহ। তার কাদিয়ানী জামাতের পণ্ডিতদের প্রতি আমার প্রশ্ন :- উম্মতে মুহাম্মদিয়ার ভেতর যদি কথিত উম্মতি নবী হবার ধারা কেয়ামত পর্যন্ত চালু-ই থাকত, তাহলে নবীজি (সা) কিজন্য বলে গেলেন, "আমি খাতামুন্নাবিয়্যীন, আমার পর আর কোনো নবী নেই।" (সহীহ বুখারী ও মুসলিম)। তিনি তো এও বলে গেছেন, "আনা আখেরুল আম্বিয়া ওয়া আন্তুম আখেরুল উমাম।" তথা আমি সর্বশেষ নবী আর তোমরা সর্বশেষ উম্মত। (সহীহ মুসলিম)। তারপর হযরত (সা) তিনি কেন একথাও বলে গেলেন যে, "আমার পরে যদি নবী হত তাহলে উমরই নবী হত।" (তিরমিযি, মুসনাদে আহমদ)।
তারপর নবীজির ইন্তেকালের পর ইয়ামানের বনু হানিফ গোত্রের নেতা মুসাইলামাতুল কাজ্জাব যখন নবুওতের দাবি করল, তখন তার বিরুদ্ধে সৈন্য প্রেরণকালে হযরত আবুবকর (সা) সেনাপতি হযরত খালেদ বিন ওয়ালিদকে কেন বলে দেননি যে, উক্ত নবুওত দাবিদারকে প্রথমে জিজ্ঞেস করবে যে, সে কোন ধরণের নবী দাবি করল? স্বতন্ত্র নবী নাকি উম্মতি নবী? হাদিসের কোথাও এরকম কিছু কেন উল্লেখ পাওয়া যায়না?
আরো প্রশ্ন জাগে যে, অসংখ্য সাহাবী তাবেয়ী এবং তাবে-তাবেয়ীর মধ্য থেকে আল্লাহতালা নবী বানানোর মত কাউকে বুঝি উপযুক্ত পেলেন না! ১৪ শত বছরের মাথায় ব্রিটিশ সরকারের একান্ত তাবেদার চেরাগ বিবির ছেলে মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানিকেই বুঝি নবী বানানোর মত যোগ্য ব্যক্তি পেলেন? যার কথায় আর লেখায় অসংখ্য প্রতারণা স্ববিরোধী আর মিথ্যায় ভরপুর। তবে কি রাসূলের প্রকৃত অনুসারী সাহাবী তাবেয়ী বা তাবে-তাবেয়ীদের কেউ ছিলেন না? জবাব দেবেন!
আরেকটি প্রশ্ন হল, মুহাম্মদ (সা) পরিষ্কার ইরশাদ করেছেন, و أنه لا نبي بعدى و سيكون خلفاء. بخاری كتاب المناقب তথা "নিশ্চয় আমার পরে কোনো নবী নেই, তবে বহু খলিফা হবেন।" (সহীহ বুখারী, কিতাবুল মানাকিব)। এমতাবস্থায় নবীজির আনুগত্য দ্বারা নবী হওয়ার যদি সুযোগ থাকত তখন তিনি কেন বহু নবী হবেন একথা বললেন না? বরং বহু খলিফা হবে, এরকম বললেন কেন? তিনি তো হাদিসে একদম পরিষ্কার ভাষায় "খলিফা" এবং "নবী" দু'জনকে ভিন্ন ভিন্ন বুঝিয়ে গেছেন। এমতাবস্থায় মির্যা একই সাথে দুটো দাবি করে নিজেকে সব চেয়ে বড় ভন্ড প্রমাণ করল কিনা?
সুতরাং অবশেষে বুঝা গেল, মির্যা সহ সকল নবুওত দাবিদার মিথ্যুক এবং কাফির। উম্মতি নবী এ শব্দটি নিছক ভন্ডনবী কাদিয়ানির বানোয়াট একটি লফজ। তার মত এরকম ধূর্ত ও প্রতারক এবং স্ববিরোধী মিথ্যাবাদী দুনিয়াতে আর একটিও পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ। কাদিয়ানী বন্ধুদের ইসলামের চির দুশমন ইহুদ খ্রিষ্টান জাতির বেতনভুক্ত এ দাজ্জাল ও কাজ্জাবকে ত্যাগ করে উম্মতে মুহাম্মদির কাতারে ফিরে আসার তাওফিক হয় যেন এ প্রত্যাশা রাখছি। ওয়াসসালাম।
লেখক, মুহাম্মদ নূরুন্নবী।
ইমেইল : [email protected]
©somewhere in net ltd.