![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক
মির্যা কাদিয়ানী সাহেব নবুওত দাবী করার আগে রাসূল (সা)-কে বে-গয়রিল ইছতিছনা (কোনোরকম পৃথকীকরণ ছাড়াই) খাতামুন নাবিয়্যীন বা সর্বশেষ নবী বিশ্বাস করতেন কিনা?
মির্যা সাহেবের এই লিখনি (স্কিনশট নিচে দেয়া হল) হতে যা যা সুস্পষ্ট হয়ে গেছে
১- আল্লাহতালা রাসূল (সা)-এর নাম রেখেছেন 'খাতামুল আম্বিয়া'।
২- এই নাম বে-গয়রিল ইছতিছনা তথা কোনো রকম পৃথকীকরণ ছাড়াই রাখা হয়েছে।
৩- এর ব্যাখ্যা রাসূল (সা) নিজেই করেছেন 'লা নাবিয়্যা বা'দী' দ্বারা।
৪- রাসূল (সা)-এর পর হতে নবুওত ও ওহীর দরজা বন্ধ।
৫- রাসূল (সা) এর ইন্তিকালের পরে ওহী বন্ধ হয়ে গেছে।
৬- আল্লাহ তায়ালা রাসূলের মাধ্যমে নবীগণের আগমনীধারা সমাপ্ত করে দেন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : মির্যা সাহেব এই কথাগুলো ১৮৯৩-৯৪ সালের মধ্যে লিখেছিলেন। অর্থাৎ নিজেকে চতুর্দশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ দাবী করার প্রায় ১৪ বছরের মাথায় তিনি এসব লিখেন। আর মুজাদ্দিদের বৈশিষ্ট্য কী তার বর্ণনা মির্যা সাহেব নিজেই দিয়েছেন এভাবে যে, "মুজাদ্দিদ যারা তাদের অবশ্যই খোদাপ্রদত্ত জ্ঞান আর আসমানি (ঐশী) আয়াতের জ্ঞানসহ আগমনকরা জুরুরি।" (রেফারেন্স - রূহানী খাযায়েন ৩/১৭৯)। এবার বাকিটা নিজেই বুঝে নিন!
_____
ফলাফল -
উপরের সবগুলো পয়েন্ট বিচার করলে ফলাফল দাঁড়াবে যে, রাসূল (সা) যেখানে "খাতামুল আম্বিয়া" এর ব্যাখ্যায় নিজেই বলেছেন যে, "আমার পরে আর কোনো নবী নেই" এর দ্বারা সুস্পষ্ট হয়ে গেল যে, নতুন কোনো নবীর আগমন তো হবেই না, তদুপরি উম্মতি/বুরুজি/যিল্লি এ জাতীয় নবুওত দাবিদারও হতে পারবেনা। কারণ মির্যা সাহেব আপনা লিখনীতে "বে-গয়রিল ইছতিছনা" শব্দ উল্লেখ করেছেন। অন্যথা এইরকম শব্দচয়নের আর কোনো উদ্দেশ্য থাকেনা!
তারপর মির্যা সাহেব নিজেই স্বীকারোক্তি দিলেন এই বলে যে, ক্বদ ইনক্বতা'ইল ওয়াহয়ু বা'দা ওফাতিহি অর্থাৎ তাঁর (রাসূলের) ইন্তেকালের পর ওহী বন্ধ হয়ে গেছে। এতে পরিষ্কার হয়ে গেল, যেই ওহী ইতিপূর্বে রাসূলের ইন্তেকালের পর হতে বন্ধ রয়েছে সেটিকে খোলার চেষ্টা নাজায়েজ। এখানে একটি সূক্ষ্ম ব্যাপার এটাও রয়েছে, আখেরি যুগে বনী ইস্রাইলী সেই পুরাতন নবী ঈসা মাসীহ (আ)-এর পুনঃ আগমন দ্বারা নবুওতের দরজা খোলবে না। কারণ, তিনি নতুনভাবে নবুওত দাবী করবেন না। যেহেতু রাসূল (সা)-এর ইন্তেকালের বহু পূর্ব হতেই তিনি নবুওতপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। আবার রাসূল (সা)-এর অগণিত হাদীস দ্বারা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইমাম মাহদী (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) তিনি উম্মতে মুহাম্মদিয়ার মধ্যভাগে থাকবেন আর শেষভাগে আসবেন হযরত ঈসা (আ)। তবে ঈসা (আ) নবুওতের দায়িত্বভার নিয়ে আসবেন না, বরং একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক ও উম্মতে মুহাম্মদি হিসেবেই আসবেন।
কাদিয়ানী মতাবলম্বীদের প্রতি আমার প্রশ্ন, যদি হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ)-এর পুনঃ আগমন দ্বারা নবুওতের দরজা খোলে যেত তাহলে রাসূল (সা) হাদীসে 'লা নাবিয়্যা বা'দী' ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও তিনি তাঁর (ঈসার) আগমনী ভবিষৎবাণী কেন দিয়ে গেলেন? যেজন্য তাঁর পুনঃ আগমনকে কেন্দ্র করে নবুওতের খাতামিয়তের উপর আক্রমণ করা কিংবা মির্যা কাদিয়ানির নবুওত দাবিকে সত্য মেনে নেয়া এসব নেহাত জুলুম আর মূর্খতা ও কুফুরি নয় কি? জবাব দেয়ার চেষ্টা করবেন!
অবশেষে আমরা মির্যার লেখিত "হামামাতুল বুশরা" (রূহানী খাযায়েন ৭/২০০) কিতাব থেকেই এসবের প্রমাণ পেলাম। কিন্তু পরবর্তীতে মির্যা সাহেব নবুওত দাবীর শখে মজে গেলেন! ফলে নিজেই নিজের পূর্ব বিশ্বাসের সাথে বেঈমানি করে বয়ান বদলে পেলেন!! "খাতামান নাবিয়্যীন" এর পূর্বের অর্থ 'নবীদের আংটি' অর্থে পাল্টে দিলেন!!! তজ্জন্য আমাদের আফসোস করা ছাড়া আর কিবা করার আছে!
ফলশ্রুতিতে মির্যা সাহেব যখন নবী দাবী করে নিজেই নিজের ফতুয়াতে কাফের, কাজ্জাব ইত্যাদি সাব্যস্ত হয়ে গেলেন তখন তো সহজেই প্রশ্ন উঠে আসবে যে, কোনো কাফের/কাজ্জাব আদৌ ইমাম মাহদী হবার যোগ্যতা রাখেন কিনা? সংক্ষেপে কয়েকটি কথা বললাম। আশাকরি বুঝতে পেরেছেন।
লেখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী
ইমেইল [email protected]
©somewhere in net ltd.