নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"নিশ্চয়ই তিনি (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং শেষনবী।\" - সূরা আহযাব : ৪০

NurunNabi

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক

NurunNabi › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতে যীশু\'র আগমনে তথাকথিত নথি-পুঁথি ও নিকোলাস নটোভিচের ভ্রষ্ট ধারণা

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১১:১১



ছবিঃ নিকোলাস নটোভিচ

ভারতের একটি পরিচিত বৌদ্ধ গুম্ফা হল লাদাখের ‘হেমিস’। 'লেহ' শহর থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে এই গুম্ফা পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল ১৬৭২ সালে। তৈরি করেন লাদাখের রাজা সেঙ্গে নামগিয়াল। গুম্ফার সঙ্গে জড়িত সাধক নারোপা'র নামানুসারে এখানে অনুষ্ঠিত হয় ‘নারোপা উৎসব’। তাঁর জীবন-কাহীনির অনুবাদ পাওয়া যায় এই গুম্ফায়। কথিত আছে, তার সঙ্গে তিব্বতী ভাষায় রচিত হেমিস গুম্ফায় রক্ষিত পনেরশ বছরের পুরনো মূল্যবান একটি পুঁথিও পাওয়া যায়। দোভাষীর সাহায্যে সেই তিব্বতী পুঁথিকে অনুবাদ করেন এক রুশ অভিযাত্রী ও লেখক Nicolas Notovitch [নিকোলাস নটোভিচ] (১৮৫৮-১৯১৬ইং)। তিনি তিব্বতী পুঁথি থেকে যীশু (ঈসা)'র ভারতে আসার ধারণা আবিস্কার করেন। বইটিতে নটোভিচ দাবী করেনঃ যীশু খ্রিস্ট তাঁর জীবনের ১৩ থেকে ৩০ বছরের মধ্যবর্তী তাঁর অজানা বছরগুলিতে ভারতের জন্য গ্যালীল ছেড়েছিলেন এবং জেরুজালেম ফিরে আসার আগে সেখানে বৌদ্ধ ও হিন্দুদের সাথে অধ্যয়ন করেছিলেন। (নাউযুবিল্লাহ)। এই কথা জানিয়ে নটোভিচ ১৮৯৪ সালে তাঁর The Unknown Life of Jesus Christ (দি আননওন লাইফ অব জেসাস ক্রাইস্ট) বইটিতে প্রথম এই দাবী তোলেন।

উইকিপিডিয়া (ইংলিশ ভার্সন) সূত্রে আরো জানা যায়, নটোভিচ তার বইটিতে আরো লিখেছেনঃ "ঊনবিংশ শতাব্দীতে ঈসা নিজের দেশে (জেরুজালেম) ফিরে এসে তাঁর শিক্ষা প্রচার করতে শুরু করেন। তিনি জেরুলালেমে যান। যেখানে ইহুদি নেতারা যদিও তার শিক্ষা সম্পর্কেও অবাক হয়েছেন, তবুও তিনি তিন বছর ধরে তার কাজ চালিয়ে যান। অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং খোদার পুত্র হওয়ার দাবীর জন্য তাঁকে হত্যা করা হয়। তার অনুগামীদের অত্যাচার করা হয়। কিন্তু তার শিষ্যরা তার বার্তা বিশ্বব্যাপী বহন করেন।" তথ্যসূত্রঃ ক্লিক করুন

অবাককরা ব্যাপার হল, আলোচ্যবিষয়ে আহমদী সম্প্রদায় পবিত্র কুরআন হাদীস কিবা ইসলামী নির্ভরযোগ্য কোনো সোর্সের দ্বারস্থ না হয়ে-ই নটোভিচের ধারণাকে অকাট্যভাবে গ্রহণ করে থাকেন। অথচ নটোভিচ যীশু সম্পর্কে যে ধারণা দিলেন সেটি ছিল যীশু'র নবুওতের আগেকার সময়ের কথা। নটোভিচের দাবী মতে, তারপর যীশু (ঈসা) আবার জেরুজালেম ফিরেও যান। সেখানে তিনি তিন বছর ধরে তার কাজ চালিয়ে যান। তারপর তিনি ইহুদীদের হাতে গ্রেপ্তার হন। পরিশেষে হত্যার শিকার হন। (মনে রাখতে হবে যে, একথাগুলো ইসলামের দৃষ্টিতে বাতিল ও কুফুরী বিশ্বাস)। পবিত্র কুরআন এবং সহীহ হাদীসের আলোকে হযরত ঈসা (সাঃ) এখনও জীবিত, কেয়ামতের আগে তাঁর পুনঃ আগমন অকাট্য সত্য। এখানে ক্লিক করুন

কিন্তু কাদিয়ানী সম্প্রদায় কি নটোভিচের এই বক্তব্যগুলোর সাথেও একমত হবেন? আমার তো মনে হয়না!

কিন্তু পরবর্তীকালে নটোভিচের ফরাসী ভাষার বইটির ইংরেজি অনুবাদ করেন অ্যালেক্সিনা লোরেঞ্জা। তিনি সেখানে নটোভিচের এই দাবীকে সরাসরি নস্যাৎ করে দেন। এমনকি 'হেমিস' গুম্ফার অধ্যক্ষও 'হেমিস' গুম্ফায় কোনো বিদেশীর আগমন অস্বীকার করেন। ‘দি ফোর্থ আর’ নামে পত্রিকায় রবার্ট প্রাইস নামক এক গবেষক লিখক ২০০১ সালে জানিয়েছেন, আগ্রার জনৈক অধ্যাপক ডগলাস তিনি নটোভিচের বই প্রকাশের সমকালে 'হেমিস' গুম্ফায় গিয়ে 'লামাদ' (হেমিস এর প্রধান)'র কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বিগত পনেরো বছরেও কোনো পর্যটক ঐ গুম্ফায় আসেননি এবং নটোভিচের কোনো পুঁথিও 'হেমিস' মঠে ছিলনা।

মজার ব্যাপার হল, পরবর্তীতে নটোভিচ নিজেও বলেছেনঃ তার পূর্ব ধারণাটি সত্য নয়, বরং মিথ্যার মিশ্রণ ছিল। (উইকিপিডিয়া)।

আহমদীবন্ধুরা, ঈসা (আঃ) সম্পর্কে তাঁর ভারতে আগমন করা বিষয়টিকে সাব্যস্ত করতে বিভিন্ন নথি-পুঁথি'র পাশাপাশি কাশ্মীর ইতিহাসের অন্যতম উৎস ‘রাজতরঙ্গিনী’ বইকেও দলিল বানিয়ে থাকেন। অথচ এটি রচিত হয় ১১৪৮ খ্রিস্টাব্দে। তথা ক্রুশীয় ঘটনার প্রায় ১১১৫ বছর পরে। ফলে এর তথ্য-উপাত্তে কিভাবে নির্ভর করা যেতে পারে! সংক্ষেপে।

লিখক, প্রিন্সিপাল নূরুন্নবী

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.