নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"নিশ্চয়ই তিনি (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং শেষনবী।\" - সূরা আহযাব : ৪০

NurunNabi

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক

NurunNabi › বিস্তারিত পোস্টঃ

কাদিয়ানীদের ইসলামি শিক্ষা-দীক্ষায় কোনো জ্ঞান নেই বললেও ভুল হবেনা কেন?

২৫ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১২:০১

প্রশ্নকর্তা : ঈসা (আঃ)-কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হলে "আকাশ" শব্দ কুরআনের কোথায় আছে?

উত্তরদাতা :

যে সব কাদিয়ানী জ্ঞানপাপী প্রশ্ন করবে, ঈসা (আঃ)-কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হলে "আকাশ" শব্দ কুরআনে নেই কেন?

তাকে পাল্টা প্রশ্ন করতে হবে যে, ইসলামের সব বিষয়াবলীর সুস্পষ্ট দলিল প্রমাণ কি শুধু কুরআনেই থাকতে হবে? সহীহ হাদীসে থাকলেও কি হবেনা?

উল্লেখ্য, পবিত্র কুরআনের আয়াতগুলো "নস"-এর মাপকাঠিতে চার ধরনের। ১. ইবারাতুন নস (عبارة النص), ২. ইশারাতুন নস (اشارة النص) ৩. দালালাতুন নস (دلالة النص), এবং ৪. ইক্বতিদ্বাউন নস (اقتضاء النص)। পবিত্র কুরআনের সূরা নিসার ৫৮ নং আয়াত بل رفعه الله اليه (আল্লাহ ঈসাকে তাঁর দিকে উঠিয়ে নিয়েছেন)-এর اليه (তাঁর দিকে) শব্দটি ঈসা (আঃ)-কে স্বশরীরে উপরের দিকে অর্থাৎ আকাশে উঠিয়ে নেয়ার পক্ষে দ্ব্যর্থবোধক ইংগিতবিশিষ্ট। এর খোলাসা রয়েছে একাধিক সহীহ হাদীসে। কারণ ঈসা (আঃ)-কে আকাশে উঠিয়ে না নিলে হাদীসগুলোয় তার সম্পর্কে ينزل عيسى ابن مريم من السماء (ঈসা ইবনে মরিয়ম আকাশ থেকে নাযিল হবেন) কেন বলা হল? দেখতে এখানে Click করুন

সুতরাং যারা বলে ঈসা (আঃ)-কে "আকাশে" উঠিয়ে নেয়ার কথা কুরআনে মোটেই নেই, তারা প্রকৃতপক্ষে কথাটি ঠিক বলেনা। বরং এধরণের কথা তাদের উসূলে ফিকহ শাস্ত্রে চরম অজ্ঞতারই পরিচায়ক।

উসূলে ফিকহ-এর গ্রন্থসমূহে "ইশারাতুন নস" এর সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, المراد بما يفهم من إشارة النص المعنى الذي لا يتبادر فهمه من ألفاظه ولا يقصد من سياقه ولكنه معنى لازم للمعنى لازم للمعنى المتبادر من ألفاظه، فهو مدلول اللفظ بطريق الالتزام. ولكنه معنى التزامياً وغير مقصود من السياق كانت دلالة النص عليه بالإشارة لا بالعبارة.

অর্থ : 'ইশারাতুন নস' বলতে এমন অর্থকে বুঝায় যা তার শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্য হয় না এবং এর প্রসঙ্গ থেকেও উদ্দিষ্ট হয়না। এটি তার শব্দ থেকে আসা অর্থের জন্যই একখানা প্রয়োজনীয় অর্থ। তবে কিন্তু এটি প্রাসঙ্গিক এমন একটি বাধ্যতামূলক এবং অনিচ্ছাকৃত অর্থ, যা ইংগিতবিশিষ্ট বটে, শব্দগত নয়।



➡পবিত্র কুরআন দ্বারাও ঈসা (আঃ) এখনো জীবিত থাকার সুস্পষ্ট ও প্রামাণ্য ইংগিত Click

➡ঈসা (আঃ) -কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া ও সেখানে থেকে অচিরেই নাযিল হওয়া মর্মে কয়েকটি সহীহ হাদীস Click

➡ঈসা (আঃ) স্বশরীরে আকাশে রয়েছেন—পবিত্র কুরআনে কি হুবহু এইভাবে থাকতে হবে? Click

➡ঈসা (আঃ) পুনরায় আগমন করলে তখন শেষ নবী কে হচ্ছেন? Click

আচ্ছা তোমরা যে কৃষ্ণ, গৌতমবুদ্ধ আর এরিস্টটল প্রমুখকে "নবী" ছিল বলে বিশ্বাস করে থাক, পবিত্র কুরআনের কোথায় কৃষ্ণ, গৌতমবুদ্ধ আর এরিস্টটলের নাম আছে?

তোমরা যে ঈসা (আঃ)-এর কবর কাশ্মীরে আছে বলে বিশ্বাস কর, পবিত্র কুরআনের কোথায় "কাশ্মীর" শব্দের উল্লেখ আছে?

তোমরা যে শেষ যুগে আগমনকারী ঈসা (আঃ) একজন "রূপক" ঈসা হবেন বলে বিশ্বাস কর, পবিত্র কুরআনের কোথায় আগমনকারী ঈসার সংবাদ দেয়ার ক্ষেত্রে তাঁর সম্পর্কে "রূপক" শব্দ এসেছে?

তোমরা যে শেষ যুগে আগমনকারী ঈসার আবির্ভাবকালে প্লেগের প্রাদুর্ভাব হওয়ার সংবাদ কুরআনেও এসেছে বলে বিশ্বাস কর (কিশতিয়ে নূহ [বাংলা] ৫), পবিত্র কুরআনের কোথায় "প্লেগ" এর ঐ বর্ণনা রয়েছে দেখাও! ইত্যাদি।

তোমরাও কিন্তু আমাদের মুসলমানদের ন্যায় সালাত দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ বলে-ই বিশ্বাস কর। এখন তোমাদেরকে যদি একইভাবে প্রশ্ন করা হয় যে, সালাত দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ, একথা কুরআনের কোথায় আছে?

তখন তোমরা (কাদিয়ানীরা) এর সমাধানের জন্য অবশ্যই সহীহ হাদীসের দিকে move করতে চাইবে, তাই নয় কি?

হ্যাঁ, এটাই সঠিক এবং এটাই একমাত্র বাস্তবতা। কেননা ইসলামের বিধিবিধান সাব্যস্ত হয় প্রথমত কুরআন দ্বারা দ্বিতীয়ত সহীহ হাদীস দ্বারা। এই দুটিই মূল বিষয়। কুরআনের ভাষ্য, فردوه الى الله والرسول (সূরা নিসা, আয়াত ৫৯ দ্রষ্টব্য)। তারপর পর্যায়ক্রমে সাহাবীদের ইজমা আর মুজতাহিদগণের গবেষণালব্ধ রায় তথা ফিকহ। উল্লেখ্য, ইসলামি আকীদা সাব্যস্ত হয়ে থাকে স্রেফ কুরআনের সুস্পষ্ট অর্থবোধক আয়াত আর সহীহ হাদীস দ্বারা।

আর তাই ঈসা (আঃ)-কে আকাশে উঠিয়ে নেয়া হলে "আকাশ" শব্দ কুরআনের কোথায় আছে, এমন প্রশ্নটাই ভুল। আর এটা সবারই জানা কথা যে, ভুল প্রশ্নের কখনো উত্তর দেয়া হয়না।

লিখক, প্রিন্সিপাল মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
০১৬২৯-৯৪১৭৭৩

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.