নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"নিশ্চয়ই তিনি (হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল এবং শেষনবী।\" - সূরা আহযাব : ৪০

NurunNabi

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক

NurunNabi › বিস্তারিত পোস্টঃ

রাসূল সাঃ এর কি ছায়া ছিলনা? ইবনু আব্বাস রাঃ এর বর্ণনাটি প্রসঙ্গে

০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

রাসূল (সা.)-এর ছায়া ছিলনা-সংক্রান্ত 'মুসান্নাফ' গ্রন্থের নামে এবং মুসান্নাফ ইবনু আব্দির রাজ্জাক এর সনদে ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনাটির তাহকিক, (খন্ডন ১)

বর্ণনাটি সনদ সহ নিম্নরূপ,

عن عبد الرزاق عن إبن جريج قال اخبرني نافع ان ابن عباس قال: لم يکن لرسول الله صلی الله عليه وسلم ظلّ، ولم يقم مع شمس قط إلا غلب ضوءه ضوء الشمس ، ولم يقم مع سراج قط إلا غلب ضوءه ضوء السراج.

অর্থাৎ ইবনে আব্বাস রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহু বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো ছায়া ছিল না। সূর্যের আলোতে তাঁর ছায়া পড়তো না বরং তাঁর নূরের ঝলক সূর্যের আলোর উপর প্রভাব বিস্তার করতো। কোনো বাতির আলোর সামনে দাঁড়ালেও বাতির আলোর উপর তাঁর নূরের আলো বিস্তার করতো।

এর রেফারেন্স হিসেবে ইমাম আব্দুর রাজ্জাক ইবনু হুমাম আস সান'আনী (মৃত. ২১১ হি.) সংকলিত 'মুসান্নাফ আব্দির রাজ্জাক' এর হাদীস নং ২৫ উল্লেখ করা হলেও মূলত ঐ গ্রন্থে উক্ত সনদে এধরণের কোনো "মতন" (Taxt-মূলপাঠ) খোঁজে পাওয়া যায়না। বরং এটি বানোয়াট ও ফেইক একটি 'মতন' যেটি দুবাইয়ের ডক্টর ঈসা মানে আল হিমইয়ারী কর্তৃক প্রকাশিত "আল জুযউল মাফক্বূদ" এরই সৃষ্টি, যেটি অপ্রমাণিত ও অনির্ভরযোগ্য একটি গ্রন্থ। দুনিয়ার সকল মুহাক্কিক গ্রন্থটিকে মওযূ ও জাল আখ্যা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, শায়খ হিমইয়ারী সাহেবকে ইলমি খিয়ানতের অভিযোগে দেশটির কেন্দ্রীয় উলামা পরিষদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বিতর্কিত জাল গ্রন্থ 'আল জুযউল মাফক্বূদ" এর খণ্ডন করে ১৪২৮ হিজরীতে সৌদি আরবের রাজধানী 'রিয়াদ দারুল মুহাদ্দিস' প্রকাশনী থেকে প্রকাশ করা হয়েছে, مجموع فى كشف حقيقة الجزء المفقود গ্রন্থটি। এর গ্রন্থকার উক্ত বর্ণনাটির "মতন" সম্পর্কে নিম্নোক্ত মন্তব্য করেন,

قلت: هذا المتن ليس له أصل مرفوعاً، وإنما يذكره المتوسعون في كتب السيرة والخصائص المتأخرة التي يجمع مؤلفوها بين الثابت وما لا يثبت والموضوع وما لا أصل له!

অর্থ -আমি বলি, এই মতনটির এই ধরনের মারফূ কোনো ভিত্তি নেই, বরং প্রচারকগণ পরবর্তীতে রচিত 'খাসায়েস' এবং 'সীরাত'-এর বইগুলিতে এটি উল্লেখ করেছেন, যাদের লেখকরা ভিত্তিহীন, বানোয়াট এবং প্রমাণিত ও অপ্রমাণিত বর্ণনাসমূহ একত্রিত করে গেছেন।

আমার প্রিয় আশেক বন্ধুদের উদ্দেশ্যে কয়েকটা প্রশ্ন,

১. ইমাম জালালুদ্দীন আস সুয়ূতী (মৃত. ৯১১ হি.) তাঁর 'খাসায়িসুল কোবরা' গ্রন্থে ইবনু আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে মুসান্নাফ ইবনু আব্দির রাজ্জাক এর সনদে উল্লিখিত রেওয়ায়েতটি আনেননি। কিন্তু কেন? তিনি বরং নাওয়াদিরুল উসূল গ্রন্থের উদ্ধৃতিতে হাকিম তিরমিজি থেকে তাবেয়ী যাকওয়ান (রহ.)-এর রেওয়ায়েতটিই এনেছেন। এতে কী পরিষ্কার বুঝা যায় না যে, মুসান্নাফ ইবনু আব্দির রাজ্জাক এর সনদে ঐ মতনটি মূলত বানোয়াট ও দুবাইয়ের ঈসা মানে' আল হিমইয়ারীর-ই জালিয়াতি?

২. মুসান্নাফ ইবনু আব্দির রাজ্জাক গ্রন্থে যদি থেকেই থাকে তাহলে আর দেরি কেন, আপনারা সেটির পুরনো কোনো নুসখা থেকে দ্রুত উদ্ধার করে আমাকে দেখিয়ে দিন। আল্লাহর শপথ! আমি নিঃশর্ত মেনে নেব, ইনশাআল্লাহ।

আশাকরি, জ্ঞানীদের জন্য এটুকুই যথেষ্ট। ধন্যবাদ।

প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ আরও আর্টিকেল -

রাসূল (সা.) এর ছায়া থাকা সংক্রান্ত মারফূ ও মুত্তাসিলুস সানাদ এবং টনটনে সহীহ হাদীস - Click This Link

রাসূল (সা.)-এর ছায়া মুবারক ছিলনা- সংক্রান্ত প্রথম রেওয়ায়েত এর তাহকিক -
Click

রাসূল (সা.)-এর ছায়া মুবারক ছিলনা- সংক্রান্ত দ্বিতীয়তম রেওয়ায়েত এর তাহকিক - Click This Link

তাবেয়ী যাকওয়ান (রহ.)-এর রেওয়ায়েত ও তার তাহকিক - Click This Link

সর্ব প্রথম সৃষ্টি কোনটি? আরশ নাকি পানি? Click This Link

জাবের (রা.)-এর নামে "নূর" এর রেওয়ায়েতটির তাহকিক - Click This Link

লিখক শিক্ষাবিদ ও গবেষক
মুহাম্মদ নূরুন্নবী এম.এ
অ্যাডমিন : ফিকহ মিডিয়া ((Click This Link))

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.