![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিবেদতা সকাল থেকেই নিজেকে বেস্ত রাখার চেষ্টা করছে। তার আজ অসম্ভব অস্থির লাগছে। মনে হচ্ছে এমন একটা কিছু হবে যা হওয়ার কথা না। সাকালে তাড়াহুড়ো করে নাস্তা করে অফিসের জন্য তৈরি হতে বসলো। আলগা হাতে মাথায় চিরুনির আঁচর দিয়ে চোখে টানা করে কাজল দিলো আর ঠোঁটে ন্যাচারাল শাইন এর একটু ছোঁয়া দিয়ে নিজের মাঝে এক স্নিগ্ধ মাধুরী মিশিয়ে নিল। এটা তাঁর প্রতিদিনের সাজ। কিন্তু আজ সালওয়ার কামিজ ছেড়ে একটা হাল্কা কলাপাতা রঙের শাড়ি গায়ে জরিয়ে নিল। অন্য দিনের থেকে আজ তাঁর একটু কাজ বেশি। অফিস শেষে সাদাফ কে নিতে হবে। রাইয়ানের স্কুল দুইমাসের জন্য বন্ধ বলে মায়ের কাছে আসার জন্য ছটফট করছে। নিবেদিতা দুদিন ধরে সাদাফকে আনতে যেতে চেয়েও পারছে না। কাজের এতো চাপ তাছাড়া নতুন জয়েন করা চাকরী। কিছুতেই সময় হয়ে উঠছে না। নয় বছর বয়সী সাদাফ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে নিশ্চয়।
নিবেদিতা ঠিক করে আজ ছেলেকে আনবেই। বিকেল বিকেলে অফিস থেকে বেরিয়ে যাবে। বাকি কাজ অয়ন কে বুঝিয়ে করতে বলবে।
অফিসে আজ কেমন জানি সাজ সাজ রব। মনে হচ্ছে নতুন কিছু হবে। নিবেদিতার অস্থির ভাব এখন যেন আরও বাড়ল। সময় মতো সাদাফের স্কুলে যেতে পারবে কি না কে জানে। আজ না গেলে আর তাকে আনা যাবে না। যা অভিমানী হয়েছে ছেলেটা। বার বার করে ফনে বলে দিয়েছে যেন আজই তাকে নিয়ে আসা হয়। এতো দূরে থাকে ছেলেটা , নিবেদিতার মন টিকে না। এবার তাকে নিজের কাছেই রাখবে বলে ঠিক করে।
সাদাফ নিবেদিতা আর আবিরের একটা অংশ যেটা নিবেদিতা ভেবেছিলো তাঁদের ভালোবাসার সৃষ্টি। কিন্তু যখন সাদাফ তাঁদের মাঝে নিজের অস্তিত্বের জানান দিলো তখন নিবেদিতার বুঝতে বাকি থাকে না সাদাফ শুধু তাঁর একার অংশ। সেই অংশকে উপড়ে ফেলে দিতে চেয়েছিল আবির। কিন্তু নিবেদিতা শক্ত হয়ে সাদাফকে এই পৃথিবীতে আনে। তখন তাকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। বাবার সাথে যতটুকু সম্পর্ক ছিল তার অবসান হয়ে যায়। একদিন সকালে সে নিজেকে একা এবং একাই পায়। কিন্তু সাদাফকে তার পরেও আঁকড়ে রাখে।
সাদাফের জন্মের আগেই সে হোস্টেল ছেরে একটা বাসা ভাড়া করে। সেখানে একাই থাকে। যখন সাদাফ পৃথিবীতে এলো নিবেদিতার পৃথিবী বদলে গেলো। এতো বেস্ত হয়ে পড়লো যে তাঁর অতীত ঝাপসা হয়ে পড়লো। কিন্তু সমস্যা হল যখন সাদাফের স্কুলে যাওয়ার সময় হল। বাবার পরিচয় যেন একটা মানুষের সব কিছু। কোন স্কুলেই সাদাফের এডমিশন পাওয়া গেলো না। এবং এর মাঝে সবাই প্রায় নিবেদিতার সম্পর্কে গুজব করতে শুরু করেছে। নিবেদিতা শুনেও না শুনার ভান করতো। তারপর একদিন বাড়িওয়ালা তাকে ডেকে পাঠিয়ে বাড়ি ছেড়ে দিতে বলল। নিবেদিতা সেই এলাকা এমন কি সেই যায়গা ছেড়ে চলে এলো। সাদাফকে বহু কষ্টে একটা বোর্ডিং স্কুলে দেয়া গেলো। পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকেই নিবেদিতা এবার স্কুলে আবিরের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যায়। বড় স্কুল, আর শহরের বাইরে। খরচ বেশি হলেও সাদাফের সেখানেই ভর্তি হয়ে গেলো। না , পারতপক্ষে খুব বেশি প্রয়োজন না হলে নিবেদিতা কারো সাথে কথা বলে না। সাদাফের ব্যাপারে কেউ জানেনা বললেই চলে।
নিজের ক্যাবিনে বসে নিবেদিতা ভাবতে থাকে এবার সাদাফকে নিয়ে আসবে নিজের কাছে। এখানেই রাখবে। যে যা বলে বলুক। চটপট ওয়েবসাইট ঘেঁটে কয়েকটা স্কুল দেখে নেয়। এর মাঝে কোন একটায় ভর্তি করাতে হবে সাদাফকে।
- আমি আসতে পারি ?
দরজার ওপাশে অয়ন। নিবেদিতা স্কুলের ওয়েব ট্যাবটা বন্ধ করে ফেলে দ্রুত হাতে।
- আরে হ্যাঁ। আসবে না কেন? আমি কি তোমাকে আসতে বারন করেছি? আর অয়ন তুমি আমার অনুমতি ছাড়াই আমার ক্যাবিনে আসতে পারো।
- আরে নাহ। কি যে বোলো না তুমি? তার পর বোলো , করছিলে নি?
নিবেদিতা একটু অপ্রস্তুত হয়ে পরে। সাদাফ সম্পর্কে এই অফিসের কেউ কিছু জানে না। বলেনি কখনো। তাই এড়িয়ে যায়।
- তেমন কিছু না। এই আমাদের ডিলটার জন্য সেই কোম্পানির কিছু ইনফরমেশন নিচ্ছি ওয়েব থেকে। আজকে প্রেসেন্টেশান আছে, ভুলে গেছো?
- ওবাবা! এতো সেরিয়াস আর হয়েওনা। আমাদেরও কিছু জায়গা ছাড় দেও। সব বাহবা দেখি তুমি নিবে। পরে আমাদের ভিক্ষা না করা লাগে।
কপট রসিকতা করে অয়ন। দুজনেই হেসে উথে।
- আচ্ছা আজ আমার হয়ে তিনটার পর মিটিংটা তুমি হ্যান্ডেল করতে পারবে একটু? আমার একটা খুব জরুরী কাজ আছে ঢাকার বাইরে। আজ বৃহস্পতিবার। শনিবার নাগাদ ফিরে আসবো। খুব আর্জেন্ট।
হঠাৎ করে হাসি থামিয়ে অয়ন কে অনুরধের সুরে বলে নিবেদিতা।
- আমি তো তোমার কাজ সামলাতেই পারি কিন্তু আমাকে এভাবে বললে আমি কোন হেল্প করি না।
- তাহলে কিভাবে বলতে হবে আপনাকে?
নিবেদিতার গলায় ঠাট্টার সুর।
- হুকুম করো আকা।
আবার দুজনেই হাসতে থাকে। অয়ন নিবেদিতাকে দেখছে। আজ যেন অন্য দিনের তুলনায় বেশি হাসছে নিবেদিতা। একবার ভাবে জিজ্ঞেস করবে কেন এতো খুশি কিন্তু পরক্ষনেই নিজেকে আটকে ফেলে। এই নিবেদিতাই সুন্দর, অপ্সরী ।
পর্ব ১ Click This Link
পর্ব ২ Click This Link
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:১৭
তানি তানিশা বলেছেন: থেংক্স
২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:১০
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: ইন্টারেস্টিং!
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:১৯
তানি তানিশা বলেছেন: তাই?
৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৪২
অপরাজিত আল আমিন বলেছেন: সুন্দর
২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:২১
তানি তানিশা বলেছেন: থেংক্স
৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৩:২৭
আশরাফুল ইসলাম দূর্জয় বলেছেন:
ভালো লাগলো। কিছু টাইপো আছে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ৯:০৫
নুরএমডিচৌধূরী বলেছেন: বন্ধু
বেশ ভাল লিখেছ
ভাল লেগেছে
শুভ কামনা