নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পেশায় সরকারি চাকুরে। বই আমার কাছে একটা বিশাল জানালার মত। যে জানালা দিয়ে আকাশ দেখা যায়, সাগর দেখা যায়, পাহাড় দেখা যায়। ঘোরাঘুরি আমার নেশা। পাশাপাশি খেলাধুলা ভালবাসি। ছোটবেলা থেকেই টুকটাক লেখালেখি করি। একটাই জীবন, তার প্রতিটি দিনই \'বাঁচতে\' চাই।

মাশ-নুর

ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন লেখালেখি করার। নানান কারণে লেখাগুলো কখনো গোছানো হয়নি। এই ব্লগ আমার সেই এলোমেলো লেখাগুলোকে গোছানোর একটা ক্ষুদ্র প্রয়াস।

মাশ-নুর › বিস্তারিত পোস্টঃ

পথশিশু

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:১৮

Some people sell happiness while they don’t taste any of it.

সাতমসজিদ রোডে দাঁড়িয়ে ছিলাম। সময় রাত ১০ টা। অনেক দিন পর একটা বড়সড় ছুটির দেখা মিলেছে, রোজার ঈদের ছুটি। বগুড়া থেকে আসার সময় কতকিছু প্লান করে এসেছিলাম, কিন্তু বাসায় আসারর পর খালি বিছানায় শুয়ে বসে থাকা ছাড়া আর তেমন কোন কাজ হয়নি। বাইরে বের হতে ইচ্ছে করছিল না কেন জানি। এটা আমার কাছে নতুন না, প্রায়ই এমন হয়। মাঝেমাঝে মনে হয় বয়স হবার আগেই বুড়ো হয়ে গেছি।

ঈদের পরদিন সায়মন ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করল আমি কোথায়। একরকম কমান্ডই দিয়ে দিল যেন এর পরদিন বিকাল পাঁচটায় ধানমন্ডি চলে যাই। সবকিছু উপেক্ষা করা গেলেও কমান্ড উপেক্ষা করা সম্ভব না। মাথার মধ্যে কেমন যেন গেঁথে গেছে বিষয়টা। কাজেই পরদিন বিকাল পাঁচটায় আমাকে রবীন্দ্র সরোবরের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেল। সেখানে পোলাপানের সাথে দেখা হল, তারপর আমরা খেতে গেলাম ধানমন্ডি বারো নাম্বারে, সেখান থেকে বের হতে হতে রাত ১০টা। বের হতেই দেখা কাজলের সাথে।

বড়জোর পাঁচ-ছয় বছর হবে ছেলেটার বয়স। পরনে একটা গোলাপি টি-শার্ট, আর একটা জীর্ণ থ্রি-কোয়ার্টার। রাজধানীর অসংখ্য জীবন-যোদ্ধার কাতারের একজন সৈনিক। কাজল কিছু বলছিল না, শুধু একবার আমার শার্টের হাতাটা টান দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিল। আমি ওয়ালেটটা বের করার জন্য পকেটে হাত দিলাম। না, বেলি ফুলের মালা কিনব সে জন্য না, ছেলেটার শুকনা মুখ দেখে খারাপ লাগছিল এজন্য। দশ টাকার একটা নোট বের করে ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম।
একটা মালা পনের টাকা।
মালা লাগবে না, তুই এমনিই রাখ।
না-না পনের টাকা।
অনেক খুঁজেও ওয়ালেট থেকে আর ভাংতি পাওয়া গেল না। ছেলেটার সাথে গল্প জমানোর চেষ্টা করলাম। বাড়ি কোথায়, বাবা-মা কি করে এগুলো। যেটুকু জানতে পারলাম তা হল – ছেলেটার নাম কাজল। বাসা মোহাম্মদপুরের ওদিকে, মা’র সাথে থাকে।
মা কি করে?
বাসায় কাজ করে।
বাবা?
নাই।
ভাই-বোন?
নাই।
স্কুলে পড়িস?
প্রশ্নটা করতেই ছেলেটা আমার দিকে এমনভাবে তাকাল যে আমার বুকটা ভেঙে গেল একদম। চলে আসার সময় ওর হাতে দশটা টাকা ধরিয়ে দিলাম এই বলে যে, আমার কাছে তো এখন আর টাকা নাই, তুই এই দশ টাকা রাখ। আমি কালকে এসে বাকি পাঁচ টাকা দিয়ে যাব। মালাটাও তখনই নিব, ঠিক আছে?

চলে আসতে আসতে পিছনে ফিরে তাকালাম একবার। কাজল আরেকটা ছেলের কাছে গিয়ে তার শার্টের হাতা ধরে টানছে। ঘরে হয়তো মা অপেক্ষা করছে কখন ফিরবে ও, হয়তো আমার মত আরো কয়েকজনের কাছে এভাবে বেলি ফুল বিক্রি করে সেই টাকাটা দিয়ে আজকে রাতের খাবার হবে ওদের। কিংবা হয়তোবা মালাগুলো বিক্রি হবে না, আজ রাতেও না খেয়ে থাকতে হবে ওদের। খিদেয় চোখ বুজে আসবে, শুধু অভুক্ত মাথার কাছে বেলি ফুলের মালা গুলোর সুবাস ভরিয়ে রাখবে ওর ঝাপসা পৃথিবীটাকে।

ভালো থাকুক কাজল, ভালো থাকুক পৃথিবী।

মন্তব্য ১১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২২

শাহিন-৯৯ বলেছেন: এদের দেখলে খুবই মায়া লাগে, এই বয়সে আমরা খেলতে খেলতে দিন কাটিয়েছি, আর তাদের জীবন-যুদ্ধ শুরু করতে হয়েছে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩৪

মাশ-নুর বলেছেন: কিছু সমস্যা না চাইতেও আমাদেরকে পাশ কাটিয়ে যেতে হয়। খারাপ লাগে, কিন্তু কিছু করার থাকে না।

২| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২২

মৌরি হক দোলা বলেছেন: সত্যিই কাজলেরা ভালো থাকুক।

৩| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


এদের খাওয়ানো, স্কুলে রাখা, পড়ালেখা করানোর দায়িত্ব কার?

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৩৩

মাশ-নুর বলেছেন: আপনিই বলুন, কার?

৪| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৪৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


প্রশ্ন করলে উত্তর দিতে হয়; প্রশ্নের বিপরীতে, প্রশ্নকারীকে একই প্রশ্ন করা কমবুদ্ধির পরিচয়!

-দায়িত্ব সরকারের; এদের ভরণ-পোষণ করার মত সম্পদ জাতির কাছে আছে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:৫০

মাশ-নুর বলেছেন: 'কমবুদ্ধির পরিচায়ক' হিসেবে আমাকে আখ্যায়িত করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। দোয়া করি, আপনি একদিন সরকারি নীতি-নির্ধারক পর্যায়ের একজনে উন্নীত হন। সেদিন এই পথশিশু গুলোর প্রতি আপনার সুদৃষ্টি পড়ুক, এই দিনের প্রত্যাশায়। ধন্যবাদ।

৫| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
গাজী সাবের জখন উত্তরটা জানা তা হলে
অপরকে প্রশ্ন করে বিব্রত করার মানে কি?
সবখানে মাস্টারি ??

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:১১

মাশ-নুর বলেছেন: শুভকামনা।

৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:২৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


@নূর মোহাম্মদ নূরু ,

এসব ব্যাপারে সবার উ্ত্তর এক নয়, সবার ভাবনা এক নয়; উনার ভাবনা বুজার জন্য প্রশ্ন করা হয়েছিল

কবি জনরুল নিয়ে আপনার একটা ভাবনা আছে, লিখুন, দেখবেন গড়ে ২০০ পড়েছেন; ড: আলী লিখুক, দেখবেন ১০০০ জন পড়েছেন।

৭| ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৮ সকাল ১১:০৮

রাজীব নুর বলেছেন: একজনও পথ শিশু পথে থাকবে না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.