![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন স্টুডেন্ট তাই ভালো কিছু করতে চাই।
পৃথিবীর সবচেয়ে সক্রিয় বদ্বীপ হচ্ছে বাংলাদেশ। একদিকে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দুর্যোগের পর দুর্যোগ বয়ে আসছে দারিদ্র্যপীড়িত বাংলাদেশের ওপর। অপরদিকে, জনসংখ্যাও বেড়ে চলেছে। ৫৬ হাজার বর্গমাইলের দেশটি অর্থনৈতিকসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত লড়াই করেই যাচ্ছে। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙ্গন, দ্বীপ ভাঙ্গন; ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে অসংখ্য দ্বীপ। বাস্তুহারা হয়ে ভাসমান জীবনে প্রবেশ করছে আদম সন্তানের দল। এর ওপর রয়েছে প্রতি মৌসুমে দেশের বিভিন্ন্ এলাকা অথৈই পানিতে তলিয়ে যাওয়া এবং এতে সাধিত হচ্ছে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি। আবার বছরের গ্রীষ্ম মৌসুমে অতিরিক্ত তাপদাহে নরক যন্ত্রণায় সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাসের ঘটনা। এর ওপর রয়েছে উপকূলে দুর্যোগ কবলিত মানুষের দুর্ভোগ, শহরে-বন্দরে সুপেয় পানি সমস্যা, কৃষিকাজে পানির স্বল্পতা, বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা এবং বিভিন্ন নদীর নাব্য রক্ষায় সঙ্কট এবং সর্বোপরি ব্যবস্থাপনা না থাকায় বহু নদীর অবস্থা একেবারে খারাপের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়া নিয়ে উৎকণ্ঠায় জর্জরিত এদেশ। এমনিতর অবস্থায় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নেদারল্যান্ডসের (ডাচ্) রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাতে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুরোধ করেছিলেন বাংলাদেশের এসব সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করে একটি দীর্ঘমেয়াদের পরিকল্পনা করে দেয়ার। নেদারল্যান্ডস অতীতে এ ধরনের সমস্যা উত্তরণ করে এসেছে। ফলে তাদের অভিজ্ঞতার ভান্ডার সমৃদ্ধ। বাংলাদেশের অবস্থান সমতলভূমি থেকে নেদারলান্ডসের মতো নিচু না হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। তাই তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সঙ্কট উত্তরণে একটি মহাপরিকল্পনা পেশ করার অনুরোধ করেছিলেন রাষ্ট্রদূতকে। প্রধানমন্ত্রীর এ অনুরোধের পর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তা নিয়ে বিভিন্ন চিঠি চালাচালির পর নেদারল্যান্ডস সরকার এ ধরনের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা দিতে সম্মত হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ জিইডির অধীনে এই মহাপরিকল্পনা প্রণয়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৭ কোটি টাকা; যার পুরোটিই আসবে নেদারল্যান্ডস সরকারের অনুদান হিসেবে। মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন প্রকল্পে যুক্ত করা হয়েছে নেদারল্যান্ডসের ৯টি এবং বাংলাদেশের দুটি প্রতিষ্ঠান। এ ডেল্টা প্ল্যান প্রণয়নে ইতোমধ্যেই নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। গত মার্চ মাস থেকে কাজও শুরু হয়েছে। আগামী আড়াই বছরের মধ্যে এ মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন কাজ সম্পন্ন করার সম্ভাব্য সময় ধরা হয়েছে। পানি ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় পুরো বাংলাদেশকে নিয়ে প্রণীত হবে একটি সমন্বিত কারিগরি ও প্রযুক্তিগত মহাপরিকল্পনা। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতির প্রভাব ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির ক্রমাগত চাপ মোকাবেলায় পুরো দেশকে নিয়ে ১শ’ বছর মেয়াদী ‘বদ্বীপ মহাপরিকল্পনা’ প্রণীত হবে। পরিকল্পনায় থাকবে পানি সমস্যা সমাধান, কৃষিতে পানির সর্বোত্তম ব্যবহার, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, নদী ভাঙ্গন রোধ এবং নাব্য রক্ষা।
©somewhere in net ltd.