![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন স্টুডেন্ট তাই ভালো কিছু করতে চাই।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার চালাগ্রামে এক সাধারণ পরিবারে মীর কাশেম আলীর জন্ম। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী তায়েব আলীর চতুর্থ পুত্র মীর কাশেম মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চট্টগ্রামে মুক্তিকামী মানুষের জন্য আবির্ভূত হয়েছিল ভয়ঙ্কর রূপ নিয়ে। গড়ে তোলে স্বাধীনতাকামীদের নির্যাতনের জন্য পাঁচটি টর্চার শেল। যার হেড কোয়ার্টার স্থাপন করা হয়েছিল একটিতে। যার নাম ছিল মহামায়া ভবন। ডালিম হোটেল নামে যার বহুল পরিচিতি। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে চট্টগ্রামে সে ছিল আলবদর বাহিনীর প্রধান। ডালিম হোটেলে স্থাপিত জল্লাদখানায় ধরে আনা বাঙালীদের সামনে তার পরিচিতি ছিল কখনও কমান্ডার, কখনও কমান্ডার খান, আবার কখনও বাঙালী খান রূপে। মীর কাশেম আলী আলবদর বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে সহযোগিতার হাত সম্প্রসারিত করে আসাদগঞ্জের দোস্ত মোহাম্মদ পাঞ্জাবির বিল্ডিং, পাঁচলাইশের সালমা মঞ্জিল, মদিনা হোটেল ও প্রবর্তক এলাকা মিলে চারটি সাব টর্চার শেল গড়ে তুলেছিল। চালিয়েছিল অপহরণ, হত্যা, জোর জবরদস্তিমূলক সই আদায় ও আটক-নির্যাতনসহ নানা অপরাধজনক কর্মকাণ্ড। পিডিবি কর্মচারী পিতা মীর তায়েব আলীর চাকরির সুবাদে চট্টগ্রাম এসেছিল মীর কাশেম। একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সে চট্টগ্রামে আলবদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে আবির্ভূত হয়। পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণের পূর্ব পর্যন্ত সে এ বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্বরত ছিল। সে পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের হাইকমান্ডের শীর্ষ নেতৃত্বে পর্যন্ত যেতে সক্ষম হয়েছিল। মীর কাশেম আলী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে চট্টগ্রামে বাঙালী কিলিং স্কোয়াডের প্রধান হিসেবেও নেতৃত্ব দিয়েছিল। এ জন্য সতীর্থ যুদ্ধাপরাধীরা তাকে ‘টর্চার আইডল’ নামেও ডাকতেন। একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের পর মীর কাশেম আলী ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে মিন্টু নাম ধারণ করে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দিত। কিন্তু একপর্যায়ে তার আসল পরিচয় উদ্ঘাটিত হলে সে আরেক যুদ্ধাপরাধী মাঈনুদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় লন্ডনে। পরে সেখান থেকে চলে যায় সৌদি আরবে। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি হওয়ার পর সে দেশে ফিরে আসে। ১৯৭৭ সালে তার সভাপতিত্বে জামায়াতের আর্মড ক্যাডার ইসলামী ছাত্র শিবিরের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরবর্তীতে সে জামায়াতে যোগ দিয়ে অদ্যাবধি দলটির শূরা সদস্য পদে আসীন। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুণ্ঠন, অপহরণ, ধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও অসংখ্য অপরাধের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা ছিল। আর এসব কারনেই সে জামায়াতের প্রান ভোমরা হিসেবে পরিচিত ছিল।
©somewhere in net ltd.