নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি মাসউদুর রহমান, আব্বা আম্মা ডাকেন রাজন নামে। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পারফর্মিং আর্টস-এর শিক্ষক। ফিল্মমেকিং, অভিনয়, পাবলিক স্পিকিং, প্যান্টোমাইম- এইসব বিষয় পড়াই। এর আগে স্কুলে মাস্টারি করতাম। শিক্ষকতা আমার খুব ভালোবাসার কাজ।

মাসউদুর রহমান রাজন

একজন মানুষ, শিক্ষক ও সবার আমি ছাত্র তবে সব শিক্ষকের পড়া আমি শিখি না।

মাসউদুর রহমান রাজন › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘ভাব’ বিনিময়

০৬ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৩০



আমি বাপের বাধ্য ছেলে না। তিনি আমাকে ডানে বললে আমি যথেষ্ট যুক্তি প্রমাণ দিয়ে বাম দিকে চলতাম। সে হিসেবে আমি “এই ছেলের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না” টাইপের একটা ছেলে ছিলাম। তো একরাতে ঘরে মেহমান আসলো। রাতের বেলা তাই আব্বাকে আমার রুমে এসে ঘুমাইতে হইলো। রাত বারোটার দিকে কারেন্ট গেলোগা। তখন ছিল গ্রীষ্মকাল। সেই গরম। গরমে সারা শরীর ঘেমে বিতিকিচ্ছিরি অবস্থা। আব্বাকেও দেখলাম খালি এই পাশ ওই পাশ করতাছেন। হঠাৎ মাথায় আসলো, আজকে একটু ভালো ছেলে হই। যতক্ষণ কারেন্ট আসবে না ততক্ষণ আব্বারে হাতপাখা দিয়া বাতাস করমু। যেই ভাবা সেই কাজ। আব্বারে বাতাস করতে শুরু করলাম। আব্বা ভদ্রতাবশত কইলেন, “লাগবো না।” আমি বাতাস করতে থাকলাম। আব্বা চুপচাপ শুইয়া আছেন। বুঝা যাইতাছে আব্বা আরাম পাইতাছেন। কিছুক্ষণ পরেই আব্বার নিঃশ্বাস ভারি হইতে থাকলো। আব্বার নাক ডাকার শব্দ শুনতে পাওয়া যাইতেছিল। আব্বার আরামটা আমিও পাইতেছিলাম। পাখা ঘুরাইতে ভালো লাগতেছিল। সিদ্ধান্ত নিলাম, যতক্ষণ কারেন্ট না আসে, পাখা ঘুরামু। আব্বার নাক ডাকার শব্দটা ভালোই লাগতেছিল। এইভাবে এক ঘণ্টা গেল। আব্বার নড়াচড়া নাই। এক ঘণ্টা পর আব্বা ডান কাত থেকে বাম কাতে ঘুরলেন। ঘুরার সময় ঘুম ঘুম কণ্ঠে একটু কইরা কইলেন, “আর লাগবে না, ঘুমায়া যা।” আমি বাতাস করতেই থাকলাম। আমার আসলেই আব্বাকে আরামে ঘুমাইতে দেখে মজা লাগতেছিল। কারেন্ট আসলো রাত সাড়ে তিনটায়। এর মধ্যে আব্বা আরো একবার বলছিলেন, লাগবে না। সাড়ে তিনটায় আমি ঘুমাইতে গেলাম। মনের মধ্যে একটা পরিতৃপ্তি। আজ অনেক পিতৃসেবা হইলো।

সকাল সাতটায় আবার কারেন্ট গেলো। আমি তখন গভীর ঘুমে। গরমে ঘুম একটু ভাঙছিলো মনে হয়। কিন্তু সাথে সাথেই ঘুমায়া পড়লাম। যথারীতি নয়টার পর ঘুম থেকে উঠলাম। আব্বা তখন বাজারে। দাঁত মাজতেছিলাম বেসিনের সামনে। হঠাৎ ছোটবোন একটা ঝাড়ি দিয়া কইলো, “ভালোই তো ঘুম দিলি। সকাল থেকে কারেন্ট নাই, গরমে আমরা কেউ ঘুমাইতে পারি নাই। তুই কেমন পোলা, সকাল সাতটা থেকে আব্বা তোরে বাতাস করছে আর তুই হা কইরা ঘুমাইছস।”

রাত্রে আব্বারে বাতাস কইরা নিজের সাথে নিজে যে ভাবটা নিছিলাম, আব্বা সেইটা একটা বেলাও রাখতে দেন নাই। আহা আব্বা।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৬

আমি রানা বলেছেন: ছোট গাছটার নাম কি?

০৬ ই জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২২

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: আগাছা।

২| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৩০

জটিল ভাই বলেছেন:
সাধারণ কোনো লিখা নয় :)

০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৩১

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: কী যে কন, ভাইজান! ধন্যবাদ।

৩| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৪৩

জুন বলেছেন: অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনাদের বাবা ছেলের মায়া মমতার কথা পড়ে।
+

০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৩১

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: ধন্যবাদ জুন আপা।

৪| ০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৩

কুশন বলেছেন: বদ পোলাপান বাপের মতো হতে পারে না। আফসোস।

০৬ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৩৩

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: বাপের মত হওয়া কি জরুরী? সে তো আলাদা একটা মানুষ!

৫| ০৭ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:১৬

নূশাদা বলেছেন: বাপরা এমনই হয়।ভালোবাসা সকল বাবার জন্য।

০৭ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৫

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: ভালোবাসা।

৬| ০৮ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১:৪১

আমি সাজিদ বলেছেন: প্লাস। কাছাকাছি ঘটনা আমার সাথেও ঘটেছে।

০৮ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৮:৩৭

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: সাজিদ ভাই, সব বাবারা তো একই রকম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.