নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

there is no truth but Allah

i want to live simple and die simple

আল মোমিন

i want to live simple and die simple

আল মোমিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৃষ্টি-স্নান

০২ রা অক্টোবর, ২০১৩ রাত ১০:৫৭





বৃষ্টি –স্নান



আজ চাকুরি জিবনে একটি অন্যরকম দিন কাটালাম।



সকালে একগাদা রোগী দেখলাম । এরই মাঝে মাঝে অফিসের নানা ফাইলের কাজ ও সারলাম । দুপুর দুইটার



দিকে আমি আর আমার অফিসের ক্যশিয়ার মাহমুদ সাহেব বের হলাম তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিকের নলকূপ ঠিকমত বসানো হয়েছে কিনা তা দেখতে ।( ঠিকাদার তাগাদা দিচ্ছে টাকার জন্য কিন্তু কাজ ঠিকমত হয়েছে কিনা তা না দেখে কিভাবে টাকা দেই ? )। ভাত না খেয়েই বের হলাম । ভেবেছি এক দেড় ঘণ্টায় কাজ সেরে এসে খাব ।



মাহমুদ সাহেবের মোটরবাইকের পিছনে সওয়ার হলাম । (মোটরসাইকেল এ চড়াতে আমার নিদারুন ভীতি আছে । চাকুরির সুবাদে চড়তে হয় । ইয়া হাইয়ু , ইয়া কাইউম পরতে থাকি সওয়ার অবস্থায় ) । কিছুদূর যেতেই ঝুম বৃষ্টি । কোনমতে এক যায়গায় আশ্রয় নিলাম । বৃষ্টি হাল্কা হলে বৃষ্টির মধ্যেই “মাস্টারহাট কমিউনিটি ক্লিনিক” এর নলকূপ দেখলাম।



বৃষ্টির জোর দেখে মাহমুদ সাহেবের বড় ভাই এর বাসায় থামলাম । ভিজা কাক অবস্থা থেকে কিছুটা শুকাতে শুকাতেই খাবার হাজির । এ ব্যাপারে আবার মাহমুদ সাহেবের কুখ্যাত রকমের বাড়াবাড়ি রয়েছে ।তাই বিনা নোটিশের এই খাবারের আয়োজনেও নানা ব্যঞ্জনের আধিক্য দেখে মোটেও অবাক হলাম না। এবং নিজের শারিরিক অসুবিধা ও ডায়েট কন্ট্রোলের চোখ রাঙ্গানিকে কাঁচকলা দেখিয়ে ঢেঁকি গিললাম ।



এর পর দশ মিনিট বিশ্রাম না নিলেই নয় ।



বিশ্রাম নিতে নিতেই দেখি বৃষ্টি শেষ ! আবার পথে নামলাম । কিন্তু কিছুদূর যেতেই আবার ঝুম বৃষ্টি । বৃষ্টিতে মোটরবাইকে সাঁতার কাটতে কাটতে – সিরাজগঞ্জ কমিউনিটি ক্লিনিক । পাকা সড়ক হতে ক্লিনিক একটু দূরে , তাই স্যান্ডেল খুলে খালি পায়ে ক্ষেতের আল বেয়ে ক্লিনিকের আঙিনায় পৌঁছলাম ।



নলকূপ দেখছি এমন সময় চোখের কোণে নড়াচড়া দেখে তাকিয়ে দেখি – ক্লিনিকের সামনে একটা মাছ । পুকুর থেকে সাঁতরে চলে এসেছে । মাহমুদ সাহেবকে বললাম –ধরেন ।মাহমুদ সাহেব মনপুরার ই লোক । প্রথমবারে ডজ দিলেও দ্বিতীয় বারে মাছ বাবাজি ঠিকই ধরা খেলেন।



পাশের বাসা থেকে পলিথিন ধার করে মাছ হাতে ঝুলিয়ে আমি আর মাহমুদ সাহেব ঝুম বৃষ্টিতে হাসপাতালের দিকে ফিরে চললাম । ( বৃষ্টির কারনে তিন নম্বর কমিউনিটি ক্লিনিক এ আর যাবনা ।)



এতক্ষণ ঘুরাঘুরি করে ক্লান্ত হয়েছিলাম খুব । তাছাড়া কাল রাতে ঘুমাইনি ঠিকমত আর আজ দিনেও সারাদিন ছিলাম ব্যস্ত । তাই ভেবেছি – বৃষ্টিতে তো আর চেম্বারে রোগী আসবেনা , রুমে গিয়ে দিব ঘুম । ওমা ! হাসপাতালের কাছে এসে দেখি এদিকে বৃষ্টি হয়নি মোটেই । আর কিছু রোগী যথারীতি বসে আছে । আর রোগীর যা স্বভাব কাকভেজা আমাকে দেখেও রোগীর লোক বলল – স্যার রোগী আছে । যেন আমি ভিজা কাপড়েই রোগী দেখতে বসে যাব! বললাম – বসেন দেরি হবে ।



রুমে ঢুকে কাপড় পালটে নামাজ পরলাম । এরপর অনেক কষ্টে ক্লান্ত দেহটা চেম্বারে টেনে নিয়ে গেলাম । অনেক কষ্টে রুগীগুলো দেখে শেষ করলাম ( বিঃ দ্রঃ- মনপুরায় প্রাইভেট প্রাকটিস বাধ্যতামুলক। কারন সরকারি ডাক্তার ছাড়া এখানে আর কোন পাস করা ডাক্তার নাই , তাই রোগীরা বহু দূর-দুরান্ত থেকে আসে হাসপাতালের বড় ডাক্তার দেখাতে । তাই নিজে শত অসুস্থ হলেও এক দিনের জন্য ও এখানে চেম্বার কামাই করা যায় না। নিজের প্রচণ্ড দাঁতে ব্যাথা বা প্রচণ্ড জ্বর নিয়েও রোগী দেখেছি । অবশ্য এখানে রোগী প্রচুর তা নয় কিন্তু যে কয়জন ই আসুক না কেন দেখে দিতে হবে । নইলে খুব অন্যায় হয়।)



রোগী দেখা শেষে ঘরে এসে দেখি সারা ঘর মাছে আঁশটে গন্ধে ভরা । আর মাঝ বাবাজি বালতি থেকে ( বালতির মধ্যে পানি দিয়ে তাতে মাছ রেখে ছিলাম ) লাফিয়ে ঘরের মাঝখানে চলে এসেছেন । যেহেতু আমি ইলিশ মাছ ছাড়া আর কোন মাছই খাই না সেহেতু মাছটা শেষ পর্যন্ত ইউসুফকে ( হারবাল এসিসটেন্ট ) দান করার মাধ্যমে এই লাফালাফি থেকে বাঁচলাম ।







অনেক দিন পর এমন ঝুম বৃষ্টিতে ভিজলাম । আসলেই – লাইফ ইজ বিউটিফুল।











ইউসুফ সম্পর্কে আমার একটি নোট –

Click This Link



মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.