নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইন্টারনেট জগতের সাথে পরিচিত হওয়ার পর থেকে এর গভীর পর্যন্ত জ্ঞান আহরণের চেষ্টা করেছেন, যতই গভীরে গিয়েছেন ততই এর প্রতি আরও আকৃষ্ট হয়েছেন। নিজে জানার আর অন্যকে জানানোর অদম্য ইচ্ছার প্রয়াসে আজ সম্যহার ইন ব্লগের সাথে এতটা জড়িয়ে আছেন।

মোঃআশরাফ উদ্দিন খান

আমি একজন ৭ম শ্রেণীর ছাত্র।

মোঃআশরাফ উদ্দিন খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মুঘলদের আদিকথা

১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩২

যদি বলা হয়, ভারতবর্ষের শেষ মুঘল সম্রাট কে? তবে হয়তো অনেকেই উত্তর দিবেন শেষ মুঘল সম্রাট আওরেঙ্গজেব। যারা হয়তো আরেকটু বেশি জানেন তারা হয়তো উত্তর দিবেন সে সিরাজ উদ্দৌলা ছাড়া আর কেউ নন। কিন্তু সত্য হচ্ছে, শেষ মুঘল সম্রাট ছিলেন সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ যাকে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লব/বিদ্রোহের পর রেঙ্গুনে নির্বাসন দেওয়া হয়। তো ৩৩০ বছর ভারতবর্ষ দুর্দান্ত দাপটের সাথে শাসন করা এই মুঘলরা প্রকৃতপক্ষে কারা ছিলেন? অনেকে ঐতিহাসিক তাদের বলেন মোঙ্গল, আবার অনেকে বলেন তুর্কি। তো একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যাওয়া যাক।



ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করেন বাবর আফগানিস্তানে ১৫২৬ সালে। তারপর পর্যায়ক্রমে তা ভারতবর্ষের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পরে। বাবর ছিলেন মধ্য এশিয়ার সমরখন্দ ও ফারগানার অধিপতি যদিও পরে তা হাতছাড়া করে ফেলেন তিনি। তিনি ছিলেন প্রকৃতপক্ষে দিগ্বিজয়ী তৈমূর লং এর অধতন পুরুষ। আর চেঙ্গিস খান ছিলেন এই তৈমুরেরই পূর্বপুরুষ (কি এতটুকুতেই মাথা হ্যাং অন হচ্ছে? সামনে বিভীষণ!)!

ত্রয়োদশ শতকের শুরুর দিকে চেঙ্গিস খানের রাজ্য বৃদ্ধি পায় এবং তিনি একটি স্থায়ী রাজ্যের পত্তন করেন। তো এই চেঙ্গিস খানের বংশধরদের অর্থাৎ চেঙ্গিস,তৈমূর, বাবর সবাইকেই মোঙ্গল বলা হয়। তাদের আবার তুর্কি/টার্কি(Turkic) ও বলা হয়। এখন আমরা আরো একটু পিছনে যাবো কেন তাদের তুর্কি বলা হয়।



ইসলাম ও অন্যান্য ধর্মের নবী নূহ (Noah) এর এক ছেলে ছিলেন ইয়াফেস (Japeth)। তারই নাতি ছিলেন তোগারমা (Togarmah)। আর এই তোগারমাকেই তুর্কি ( Turkic, Turkish নয়।বর্তমানে যারা Turkey এর আশেপাশে বসবাস করেন তাদের Turkish বলা হয়। ) জাতির আদি পিতা বলা হয়। এই তোগারমারই বংশধরেরই দুই আপন ভাইর নাম ছিলো ‘মোঙ্গল ‘ এবং ‘তাতার’। আর এই দুইজন থেকেই দুটি জাতি মোঙ্গলিয়ান এবং তাতারিয়ান জাতির উদ্ভব ঘটে। অর্থাৎ মোঙ্গলিয়ান ও তাতারিয়ান জাতির উদ্ভব ‘তুর্কি জাতি’ থেকে।একইসাথে অটোমানদের (Ottoman Empire) উদ্ভবও এই তুর্কি জাতি থেকে। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দের আগেই পৃথিবীতে তুর্কি জাতি বিস্তৃতি লাভ করে।

তাতারিয়ানরা বসবাস শুরু করে চীন থেকে একটু দূরে রাশার ভল্গার তীরে, উজবেকিস্তান, তাজাখস্তান, টার্কি, আজারবাইজানের দিকে।তাতারিয়ানরা নিজেদের মোঙ্গোলি্যানদের থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করতো।মোঙ্গলিয়ান দাসীদের গর্ভে তাতারিয়ানদের যে সন্তান জন্ম নিতো তাদের তুর্কমেন বলা হতো।

অপরপক্ষে মোঙ্গলিয়ানরা বসবাস শুরু করে চায়না, মংগোলিয়া, রাশিয়াতে। আর এই মোঙ্গলদের থেকেই কালক্রমে আবির্ভাব ঘটে চেঙ্গিস খান (১৩শ শতক), বাতু খান (১৪শ শতক), তৈমূর লং (১৫শ শতক), সম্রাট বাবর (১৬শ শতক), সম্রাট আকবর (১৭শ শতক), আওরঙ্গজেব (১৮শ শতক), বাহাদুর শাহ (১৯শ শতক)।

মোঙ্গলিয়ানদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত ছিলেন চেঙ্গিস খান। তিনি বিক্ষিপ্ত মোঙ্গলিয়ানদের একত্রিত করে দক্ষিণ চীন প্রথম দখল করেন। এরপর তার সাথে মধ্য প্রাচ্যের খারেজম শাহী বংশের সংঘর্ষ হয়। চেঙ্গিস খারেজম দখল করে রাশিয়ার বিস্তীর্ণ স্তেপভূমির দিকে মনোযোগ দেন এবং যতদূর চোখ যায় একের পর এক রাজ্য দখল করতে থকেন। এভাবে বিস্তীর্ণ মধ্য এশিয়া দখলের মাধ্যমে চেঙ্গিস মোঙ্গলদের নিয়ে এক স্থায়ী রাজ্যের পত্তন করেন। চেঙ্গিস খান ১২২৭ সালে মারা যান। চেঙ্গিসের পরপরই তার পৌত্র হালাকু খান ১২৫৮ সালে বাগদাদ দখলের মাধ্যমে আব্বাসীয় খিলাফতকে ক্ষতবিক্ষত করে। এই ইনভেইশনের পরই বাগদাদের খলিফাগণ মিসরের মামলুকদের অধীনে চলে যান।

এরপর পর্যায়ক্রমে মোঙ্গলদের মধ্যে আবির্ভাব ঘটে চেঙ্গিসের নাতি বাতু খানের। বাতু খান চীনের উপর একের পর এক হামলা করে বিস্তীর্ণ চীনের প্রায় সমগ্র অংশ দখল করে নেন। এরপর এক সময় আবির্ভাব ঘটে মোঙ্গলদের মধ্যে তৈমুর লঙ এর।দুর্ধর্ষ তৈমুর তার রাজধানী সমরকন্দ থেকে একের পর এক রাজ্য দখল করতে থাকেন এবং এক সময় আঙ্কারায় মুখোমুখি হোন অটোমান সুলতান বায়োজিদ ইয়ালদিরিমের সাথে। সে সময়ে বায়োজিদ ছিলেন পূর্ব ইউরোপ জয়ী আর মধ্য এশিয়া জয়ী। আঙ্কারায় এই দুই বীরের মুখোমুখিতে তৈমুর জয় লাভ করেন। এরপর তৈমুর চীনের দিকে মনোযোগ দেন। তবে মোঙ্গলদের নির্দিষ্ট বংশ ভাগে জন্ম না হওয়ার কারণে তার মোঙ্গলদের অধিপতি হওয়া সম্ভব ছিলো না। তিনি পৃথকভাবে তিমুরিন্ড এমপায়ার প্রতিষ্ঠা করেন। আর এই তৈমুরের চতুর্থ অধঃতন পুরুষ বাবর। বাবর ছিলেন ফারগানার অধিপতি। তিনিই ১৫২৬ সালে আফগানিস্তান দখলের মাধ্যমে উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তি পর্বগুলোতে আমরা দেখবো কিভাবে এই ছোট্ট মুঘল সাম্রাজ্য বিস্তৃতি লাভ করে।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ বিকাল ৪:৩৩

মোঃআশরাফ উদ্দিন খান বলেছেন: সূত্রঃhttp://shoshikkha.com/archives/3423

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.