নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

DEATH IS BETTER THAN DISGRACE

রসায়ন

রসায়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বলে বেড়ানো ও লোক দেখানো(আল রিয়া)

৩১ শে মে, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৯

বিঃদ্রঃ বড় পোস্ট হলেও সবার এই পোস্টটি পড়া জরুরি কেননা আমি দেখেছি অনেক মুসলিমই এসব কাজ করেন হয়তো বা অজ্ঞতাবশত । তাই জানা দরকার ।


বলে বেড়ানো মানে হলো কোন কাজ করে সেটার ঢোল পেটানো । সেই কাজটি ভালোও হতে পারে আবার খারাপও হতে পারে ।


প্রথমে যদি ভালোর ব্যাপারটা বলি তাহলে , কোন সৎ বা ভালো কাজের উদ্দেশ্য যদি হয় লোক দেখানো তবে সেটির কোন ফল আসে না ভালো।
যেমন পবিত্র কুরআনের দ্বিতীয় সূরা অর্থাৎ সূরা আল বাকারার ২৬৪ নাম্বার আয়াতে আল্লাহ বলেছেন দান করে বা সাহায্য করে সেটি নিয়ে প্রচার করে যদি খ্যাতি অর্জন উদ্দেশ্য হয় এই সৎ কাজের কোন প্রতিদান আল্লাহ দেবেন না ।

যেমন উদাহরণ দিয়ে যদি বলি, জনাব রহিম সাহেব অভাবে আছেন। আপনি জনাব রহিমকে ১০০০ টাকা দিয়ে সাহায্য করলেন এরপর এটা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে নিজের বদান্যতা প্রকাশ করলেন । কিন্তু জনাব রহিম দান নেয়ার সময় চুপিসারে আপনার কাছে এসেছিল ও চেয়েছিল লোকলজ্জার ভয়ে । কিন্তু আপনার বদান্যতার প্রচারের ফলে জনাব রহিমের দুর্দশা জনসম্মুখে প্রকাশ পেয়ে গেলো যাতে তার সামাজিক মর্যাদার হানী ঘটলো।

সুতরাং ঢোল পেটানো এরকম দান বা সাহায্য করলে সওয়াব তো হবেই না বরং মানুষকে হেয় করার জন্য পাপের খাতায় উঠে যাবে ।

এই কথাটা যদি আমি হুবহু কোরআন থেকে উদ্ধৃত করি তবে পড়তে হবে সূরা আল বাকারার ২৬৩ নাম্বার আয়াত । যেখানে আল্লাহ ঘোষণা করেন,

"একটি হৃদ্যতাপূর্ন কথা এবং কোন অপ্রীতিকর ব্যাপারে সামান্য উদারতা ও ক্ষমা প্রদর্শন ওই দানের চাইতে উত্তম যে দান নিয়ে আসে দুঃখ আর মনের যন্ত্রণা"

অর্থাৎ কাউকে কিছু দিয়ে সেটা ফলাও করে প্রচার করার ফলে যদি সাহায্যপ্রাপ্ত ব্যক্তির সম্মানহানি হয় তবে এমন দান বা সাহায্য আল্লাহর কাছে মূল্যহীন ও ক্রোধের কারণ ।

এরপর কোরআনের ১০৭ নাম্বার সূরা অর্থাৎ সূরা আল মাউন যদি পড়ি সেখানে আল্লাহ স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন আশেপাশের লোকজন কেমন আছে না আছে সেটার খোঁজ না নিয়ে, গরীবদের সাহায্য না করে , এতিমদের সাথে দুর্ব্যবহার করে , প্রতিবেশীদের নিত্যপণ্য দিয়ে সাহায্য না করে কেবল নামাজ পড়লে বা আল্লাহকে ডাকলে এটার কোন মূল্যই নেই আল্লাহর কাছে বরং আল্লাহ দুর্ভোগ ঘোষণা করছেন সেসব মুসলিমদের প্রতি যারা এসব কাজ না করে কেবল লেবাসধারী মুসলিম । অর্থাৎ নামাজ রোজা ইবাদত করলেও দান খয়রাত, প্রতিবেশীদের সাথে ভালো আচরণ , এতিমের হক আদায়ে উদাসীন ।


এবার আসি দ্বিতীয় ব্যাপারে অর্থাৎ খারাপ কাজ করে ঢোল পেটানো।

আমাদের সমাজে আমরা অনেক দেখেছি এমন ব্যক্তিকে যারা গর্ব করে বলে আমিই তো এই খারাপ কাজ করেছি , পারলে কিছু করে দেখাও !
কিংবা আমিই অপরাধী !!! আমার যা পারো করো।
আমিই সেই দুষ্কৃতীকারী ব্যক্তি !


এছাড়া সমাজে আরো কিছু লোক আছে যারা খারাপ জিনিস বা খারাপ লোকের পরিচয় দিয়ে গর্ব বোধ করে । যেমন ধরুন, কেউ বললো আমার চাচা হলো ওই এরিয়ার ত্রাস, ক্যাডার বাহীনির নেতা । তার কথায় সব উঠে বসে ।


লজ্জা আর অপমানের ভয় অনেকসময় মানুষকে অনেক খারাপ কাজ করা থেকে বিরত রাখে। হতে পারে এই ভয়টাই একদিন তাকে আল্লাহ্‌র দিকে নিয়ে যাবে, যখন সে তার ভুল বুঝতে পারবে এবং তার কৃত অপরাধের জন্য আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাইবে। কিন্তু যখন তার অপরাধ জনসমক্ষে প্রকাশ করে দেওয়া হয় তখন সেই ভয়টা আর তার মাঝে কাজ করে না । সে তখন ভাবতে থাকে, ‘কি হবে আর ভাল থেকে, ক্ষতি যা হবার তা তো হয়েই গেছে, লোকজন তো জেনেই গেছে ইতোমধ্যে’, তখন সে প্রাকাশ্যে পাপ কাজে লিপ্ত হতে থাকবে।


তাছাড়া বারবার পাপের কথা বলতে থাকলে মানুষের অন্তর থেকে পাপের ভয় দূর হয়ে যায়। তখন পাপকে আর পাপ বলে মনেই হয়না। যে পাপের কথা বলে বেড়াতে লজ্জাবোধ করেনা, একই পাপে লিপ্ত হওয়া তার জন্য অসম্ভব কিছু নয়। আর এভাবেই সমাজে পাপ ছড়িয়ে পড়তে থাকে!


তাই এক মুসলমান অন্য কোন মুসলমানকে পাপ করতে দেখলে তার উচিত তা গোপন রাখা। সেই পাপ প্রকাশ করে দিয়ে লোকজনকে পাপের দিকে ঠেলে দেওয়া তার পক্ষে সমীচীন নয়। আল্লাহ্ পবিত্র কোরআনে শুধুমাত্র গুনাহগারদেরকেই সতর্ক করেননি, যারা গুনাহের কথা বলে বেড়ায় তাদেরকেও সতর্ক করে দিয়েছেন। তিনি বলেনঃ

“যারা পছন্দ করে যে,ঈমানদারদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার লাভ করুক, নিঃসন্দেহে ইহাকাল ও পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। আল্লাহ্ জানেন,তোমরা জানো না”। [সূরা আন-নূর; ২৪:১৯]


সূরা আন-নিসা এর মধ্যে আল্লাহ্ বলেনঃ

“আল্লাহ্ কোন মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না। তবে কারো প্রতি জুলুম হয়ে থাকলে সে কথা আলাদা। আল্লাহ্ শ্রবণকারী,বিজ্ঞ”। [সূরা আন নিসা, ৪:১৪৮]

তার মানে একমাত্র অন্যায়ের বিচার করার জন্য পাপ কাজ খুঁজে বের করা দরকার ।


এই প্রসঙ্গে একটি হাদীস খুঁজে পেলাম ,


সহীহ বুখারীতে একই সাথে মুসলিম শরীফেও বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

كُلُّ أُمَّتِى مُعَافًى إِلاَّ الْمُجَاهِرِينَ ، وَإِنَّ مِنَ الْمَجَاهرة أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلاً ، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ سَتَرَهُ اللَّهُ ، فَيَقُولَ يَا فُلاَنُ عَمِلْتُ الْبَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا ، وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ

“আমার উম্মতের সকলকেই ক্ষমা করে দেয়া হবে। তবে ঐ সকল লোককে ক্ষমা করা হবে না যারা পাপ করার পর তা অন্যের নিকট প্রকাশ করে দেয়। অন্যের নিকট প্রকাশ করার একটি দিক হল, কোন ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোন গুনাহ করল এবং মহান আল্লাহ তার পাপটা গোপন করে রাখলেন। কিন্তু ভোর হলে সে নিজেই অন্য মানুষের নিকট বলল, হে উমুক, জানো, রাতে আমি এই এই কাজ করেছি। সারা রাত আল্লাহ তার পাপটাকে ঢেকে রেখেছিলেন কিন্তু ভোর হলে নিজেই আল্লাহর ঢেকে রাখা বিষয়টি প্রকাশ করে দিল।

যারা পাপাচার কারার পর আবার মানুষের সামনে বলে বেড়ায় যে, আমি এই এই কাজ করেছি আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করবেন না।


আর পাপ কাজ করে সেটা বলে বেড়িয়ে ঔদ্ধত্য প্রকাশ করলে আল্লাহ তার জন্য জাহান্নামের শাস্তি বরাদ্দ করেছেন বলে কুরআনের সূরা আল কাসাসের ৮৩ নাম্বার আয়াতে ঘোষণা করেছেন ।


আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আল্লাহ আমাদের লোক দেখানো
রিয়া থেকে হেফাজত করুন। আমিন

৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:০৬

রসায়ন বলেছেন: আমিন

২| ৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩৯

বিচার মানি তালগাছ আমার বলেছেন: সুন্দর পোস্ট। চিন্তার অনেক অবকাশ আছে...

৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১

রসায়ন বলেছেন: হুম

৩| ৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:


কুরানে যা আছে, আপনি কি মনে করেন, সেগুলোর ব্যাখ্যা করার মতো যোগ্যতা আপনার আছে? আপনার পোষ্ট টোষ্ট দেখে আমার সন্দেহ হয়

৩১ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪২

রসায়ন বলেছেন: আমার ক্যাপাসিটি অনুযায়ী আমি করবো। ধন্যবাদ

৪| ৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৫

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুক

৩১ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪২

রসায়ন বলেছেন: আমিন

৫| ৩১ শে মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৪১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সবাই পবিত্র কোরআনুল করিমেরে ব্যাখ্যা করার যোগ্যতা রাখেনা,
এমনকি অনেক আলেম, মওলানারা, তাই বলেকি তারা ধর্মীয় আলাপ
আলোচনা করতে পারবেনা ? ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় তুমি
তোমার অপর ভাইকে সৎ কাজের পরামর্শ দাও যতটুকু তুমি জানো।

এখানে নিরুৎসাহিত করার কোন কারণ দেখছিনা, সবখানে মাতাব্বরি !

৩১ শে মে, ২০১৮ রাত ৯:৪২

রসায়ন বলেছেন: ধন্যবাদ

৬| ০১ লা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম। জানলাম।

১২ ই জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৭

রসায়ন বলেছেন: ধন্যবাদ । দেরীতে উত্তর দেয়ার জন্য দুঃখিত ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.