![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সমাজের অসঙ্গতীঃ রুখতে সকলের সহযোগিতা চাই (পর্ব- 3)
======= মোঃ খুরশীদ আলম
স্বাধীনতাকামী নারী তাহাদের অংশ লইয়া তথা সমান অংশের দাবী লইয়া কেন পৃথিবী চষিয়া বেড়াইতেছে তাহার কোন সুখকর অর্থ আবিষ্কার করিতে অদ্যাবধি সফল হই নাই। তুলনামূলক তত্ত গাবেষণা করিয়া দেখিয়াছি যে, ইসলাম তাহাদিগকে যথার্থই সম্মানীত করিয়াই ক্ষান্ত হয়নি, অধিকারও নিশ্চিত করিয়াছে। পিতৃস্নেহের সুশীতল ছায়ায় গড়িয়া উঠিবে, পিতৃবিয়োগে ভাতৃমহলে জীবন কাটাইবে, স্বামী সোহাগে সিক্ত হইয়া জীবনভর তাহার অধাঙ্গরূপে স্বামীর অন্নাদীভোগে নিজেকে সুসজ্জিত রাখিবে, পিতৃবিয়োগে তার সম্পত্তির নির্ধারিত অংশ বুঝিয়া পাইবে এবং স্বামী বিয়েগেও অনুরুপ ভাগিদার হইবে। ইহা ইসলামের সাম্য-শান্তির বার্তা বহনকারী আজ্ঞা। নারী তার জীবন চালাইতে গিয়া অন্নের সন্ধানে পথে নামিতে হইবে এমন শক্ত হুকুম ইসলাম চড়াইয়া দেয় নাই। যে সকল পুরুষগণ শক্তি-সামর্থ্য অর্জণ করিয়াও স্ত্রীলোকগণকে অর্থউপার্জনের জন্য পথে নামাইতে মনে ভাবনার উদ্রেগ হয়না তাহারা বড়ই জালিম। সেই সকল নারী যাহারা জ্ঞানে গরিমায় সবিশেষ হৃষ্টপুষ্ট হইয়াছে তাহারা নিজেদেরকে চিকিৎসা সেবায়, শিক্ষাদানে, পযুক্তিবিদ্যার সাথে মিল রাখিয়া জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকিতে পারে। ইহার অভিপ্রায় হওয়া উচিত তাহার জ্ঞানকে হীতকর কাজে খাটানো, কেবল অর্থ উপার্জন নয়, কেবলমাত্র রুটি-রুজি আর স্বামী দেবতার
উদরপূর্তী করা নয়। সেই সকল স্বামী দেবতাগণও বড়ই নিঠুর যাহারা স্বীয় বিলাসিতা ভোগ করার তাগিদে পরম ভালবাসার, আদরের অর্ধাঙ্গীকে রুজির উদ্দেশ্যে পথে নামাইয়া দুষ্টের হাসি-তামাশার লক্ষ্য বানায়।
স্ত্রীর মৌলিক অধিকারসমূহ নিজ সামর্থানুযায়ী আদায় করিয়া দেওয়া স্বামীদেবতার পবিত্র কার্যাদির অন্যতম। কিসে অর্ধাঙ্গী সুখী হয়, কি উপায়ে সংসারধর্ম বিশুদ্ধভাবে চালনা করা যায়, তাহা উভয়ে শলা করিয়াই করিবে। আজকাল স্ত্রীগণের মতামত শুনিবার সময় স্বামীগণের কৈ? সে তো গৃহিনী। রন্ধনশিল্পের কারুকাজ ব্যতীত অন্য কিছুতে সে ভাবিবে কেন। এমন ভাবনা পৌরুষ বাড়ায় কিনা তা জ্ঞাত হইতে পারিলাম না। ত…বে জোর গলায় কহিতে পারি এমন ভাবনা অন্তরে বাসা বাধিলে বাঢিতে সুখ ফলিবে না। দিনকেদিন তথায় দুঃখ উৎপাদন হইবে। সেই সংসারে অনিষ্ট বৈ ইষ্ট আশা করিব কি রূপে।
“স্ত্রীলোকগণের অন্ন ব্যবস্থাপনা ব্যতীত সম্পদে অংশীদারিত্বের বচনটুকু খামোখা, প্রয়োজন বোধ করিনা।” অন্যধর্মের বুলিটুকু আজকাল অধিক মুসলমানকেও হৃদয়াঙ্গম করিছে বলিয়া শ্রুত। বউয়ের হকটুকু যতোতাড়াতাড়ি গ্রাস করিয়া ভোগ করা যায় ততই মঙ্গল ঠাওর করিতেছেন কোন কোন জামাই। তাহারা মনে করে, বউগণ সাজিবে, পড়িবে, ঠোট রাঙ্গাইবে আর স্বামীর পদতলে পূজা-অর্চনা করিবে, স্বামী বুক ফুলাইয়া সুখ সাগরে ভাসিতে থাকিবে। হায় ! কি নিষ্টুর মানসিকতা গো ! মরি: মরি, কবে, কোন কালে, পুরুষ তার শয্যাসঙ্গিনী বিহীন পুনঃ হইয়াছে কে জানে । ধর্মকর্মে কৃতকার্য় হইলেওতো নারীর সুধা দরকার। কে বুঝাইবে তারে, যেবা এমন ধারনাপ্রসূত মনের অধিকারী।
প্রযুক্তিমাতার আশীর্বাদে আজকাল নারী জাতি পূর্বের রূপে নাই। তাহারা এখন গৃহকোঠরের চৌকাঠ মাড়িয়ে প্রকাশ্য বাহির হয়, কিরনমালা, পাখিড্রেস পরিহীতা হইয়া। পাড়ার সুচতুর পায়রা সকল দৃষ্টি ফেলিয়া অবলকন করে কোমড় দোলানো, উন্মুক্ত পবনে এলোকেশের উথালপাথাল ঢেউ। আর মনে মনে ঝড়উঠে তাহাদের ভিতরে-বাইরে। সেই উন্মাতাল ঢেউয়ে নিজকে মাঝিরূপে আবিষ্কার করে।
নারীগণ এখন বিদ্বান হইয়াছে, চিকিৎসাবিদ হইয়াছে, বৈমানিক হইয়াছে, দেশ চালাইছে, বিচারকার্য় সূচারুরুপে পরিচালনা করিতেছে, শাহাদাত আঙ্গুলী হেলিয়ে তাহারও এখন লালদিঘীর মাঠে, পল্টনের জনশ্রোতে দিকনির্দেশনা দেয়। আগের মতো রহিয়াছে কিছু পুরষদিকের মানসিকতা। তাহারা ফাঁক পাইলেই নারীর সৈন্দর্য়ে শকুন দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, তাহারা বিশ্বাস করে নারী যাহা হউক না কেন পরের চুলায় লাকড়ি ঠেলইতো তাহাদের কম্ম। যাক, সেই কথা চুলায় যাক।
আমাদিগের লজ্জাবতীগনও কম কিসে । বিদ্যার্জনের তাগিদে ইসকুলে যাইবে, বেশ ভাল। তবে ঠোঁট রাঙ্গাইয়া, কেশ ছাড়িয়া, শ্রি খানারে বিদেশী পাউডার আর সুগন্ধী মাখিয়া এতো আয়োজন কেন? এগুলি দেখিয়াইতো বাদরগুলোর বাদরামীর সূচনা হয়। বুড়া বাদগুলোও শরীর ঝাঁকা্ইয়া উঠে আর পিটপিট করে মজা লয়। এই বাদরামী সময়ে সময়ে হিংসা-ঠেলাঠিলিতে রূপ নেয় । মারামারি আর লাঠালাঠির ঠেলায় পাড়াশুদ্ধ পুরুষ শূণ্য হয়।
বিদ্যা শিখিবে, জ্ঞান গরিমায় বড় হইয়া জাতির সেবায় আত্ননিয়োগ করিবে, ইহা সকলের ব্রত হইলিই হীতকর। ইসকুল ফাঁকি দিয়া আগ্রাবাদ শিুশুপার্কে ভমর লইয়া গুনগুন করিয়া, নেভালে, সমুদ্র সৈকতে, রেস্টুরেন্টের হালকা আলোয় শিুশুত্ব জাহির করা কোন বিদ্যায় পড়ে তাহা এই বুড়া বয়সে ভাবিয়া পাইনা। আজ্ঞে ইহাও শিক্ষার অংশবিশেষ। এক্ষুনি রপ্ত না করিলে ভবিষ্যত কি হইবে?
©somewhere in net ltd.