![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অভ্যাস : জীবন চালনার হাতিয়ার
কারো ব্যপারে আমরা প্রায়শই মন্তব্য করি, “ গালি দেওয়া ব্যতীত সে যেন কথাই বলতে পারে না” “সারাদিন খিটমিট বা খ্যাট খ্যাট করা তার (স্বামীর ব্যপারে স্ত্রীদের মন্তব্য) স্বভাবে পরিণত হয়েছে” “ কথায় কথায় রাগ দেখানো বা গাল ফুলানো ওর স্বভাবের অংশ” ইত্যাদি। আমরা যাকে বলে থাকি বদঅভ্যাস বা ভালো অভ্যাস নয় এমন। যা সমাজের বিচারে দৃষ্টিকটু তা বাজে অভ্যাস বা বদঅভ্যাস বলে ধরে নেওয়া হয়।
কথায় বলে, “ মানুষ অভ্যাসের দাস” । মানুষ অভ্যাসের দাস না অভ্যাস মানুষের দাস এ বিতর্কের শেষ হয়তো কোন দিন হবে না। তবে, চীরন্তন সত্য এই যে, মানুষ তার অভ্যাসের দ্বারাই পরিচালিত হয় এবং অভ্যাসের কারণেই তার ভবিষ্যত ভাল-মন্দ নির্ধারিত হয়ে যায়।
পাশ দিয়ে ছুটে চলা যানবাহন হতে ছুঁড়ে ফেলা থুথু, পানের পিক, পানির বোতল, সিগারেটের উচ্ছৃষ্টাংশ, কলার খোসার দ্বারা কখনো আহত হয়েছেন কি? আমাদের জীবনে আমরা প্রায়ই এমন আজব অভিজ্ঞতা লাভ করে থাকি। আমি প্রায়ই এমন আক্রমণের শিকার হই। কটুকথা বলা আমাদের অনেকের আচার-ব্যবহারের অংশ হয়ে পড়েছে, গালি-গালাজ করা ব্যতীত আমাদের আলোচনা যেন অপূর্ণ্ই থেকে যায়। পরনিন্দা, পরচর্চা, গীবত-শেকায়েত না করলে যেন পেটের ভাতই হজম হয়না। শিক্ষিত লোকগুলো (সবাই নয়) যখন এমন কর্মকান্ডে শরম বিলিয়ে দেয় তখন তা সচেতনের মনে প্রশ্নের জন্ম দেয় যে, শিক্ষা থেকে আমরা কি শিক্ষা নিয়েছি।
জেনেবুঝেও আমারা এসকল মন্দ কাজে নিজেদের কেন জড়িয়ে ফেলি। এক ধরণের আত্নতৃপ্তি আর বদঅভ্যাসই এর জন্য দায়ী। অর্থ-বৃত্তের অধীকারী হওয়া সত্ত্বেও আমরা দিবা-নিশি অর্থের পিছনে কেন ছুটি? নিজে অভাবী না হয়েও অভাবীর প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে কুন্ঠিত হই কেন? দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ ইত্যাদি পাপাচারে লিপ্ত হয়ে পড়ি কেন? বদঅভ্যাসের পুনঃপুনঃ অনুশীলন, সদ অভ্যাসের চর্চা না থাকা এর পিছনে দায়ী।
স্বভাবগত ভাবেই বনি আদম মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকার আর ভাল কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখার মনবাসনা অন্তরে লালন করে থাকে। মন্দ কাজ থেকে ফিরে আসার চেষ্টা করে, আবার জড়িয়ে পড়ে। প্রত্যহ প্রতুষ্যে ফজরের সালাত আদায় করে একটু কোরআন তেলাওয়াত, ফুরফুরে হাওয়ায় সামান্য প্রাতঃভ্রমন চায়না এমন মুসলমান দুনীয়ায় একজনও পাওয়া যাবে না। ইচ্ছাশক্তি থাকা সত্ত্বেও কে তাকে বিরত রাখে? ভাল কাজে অভ্যস্ত না হওয়ায় তা আর হয়ে উঠে না। সত্য কথা বলা, মিথ্যা ত্যাগ করা, অন্যায়কে ঘৃণা করা, আদর্শ সমাজ ব্যবস্থা আমাদের সবার কাম্য। সে লক্ষ্যে শিশু কাল থেকেই ভাল কাজের অনুশীলন আর মন্দ কাজ সমূহকে এড়িয়ে চলা কর্ত্বব্য। কোন কারণে চরিত্রের কোন দোষত্রুটি প্রকাশ পেলে সাথে সাথে তওবার কোন বিকল্প নেই। আমরা যারা আজীবন বাঁকা রাস্তায় চলতে অভ্যস্ত হঠাৎ সোজা রাস্তায় চলা তাদের জন্য অনেকটা কঠিন হবে। কিন্তু অভ্যস রপ্ত করতে পারলে তাও অত্যন্ত সহজ হবে বলে জ্ঞান করি।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের সবাইকে, আমরা যারা সহজ সরল রাস্তায় চলে, সরল জীবন-যাপন করতে ইচ্ছুক সকলকে চারিত্রিক যাবতীয় দোষত্রুটি সংশোধন করে, বদঅভ্যাস ত্যাগ এবং সদঅভ্যাসকে আকড়ে ধরে আমৃত্যু চলার তাওফিক দিন । আমিন
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:২১
মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: আপনার মূল্যায়নও চমৎকার, ধন্যবাদ।
২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৪২
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: আপনার লেখাটি বেশ ভালো লেগেছে।
অভ্যাসটাই মানুষের দাস। মানুষ চাইলেই তার অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে। যেমন - ছোট একটা কাজ, গালি ছাড়াই আমি কথা বলব। কাজটা খুবই সহজ। গালি ছাড়াই কথা বলা যায়। কিন্তু, সাথে থাকা বাকিদের অনেকেই আবার তাদের অভ্যাসসরূপ এটাকে নিয়ে গালিগালাজ শুরু করে, পক্ষান্তরে আমার ভাল উদ্যোগটাও অল্পতেই শেষ হয়ে যায়।
আসলে আমরা অভ্যাস বদলানোর যতই চেষ্টা করি, অন্যদের অভ্যাসগুলো সেটার উপর চেপে বসে এবং আমাদেরকে তাদের দাস বানিয়ে ফেলে। কিন্তু আমরা চাইলেই পারি বদলানোর জন্য। চাইও কিন্তু, পুরোটা সময় ঐ চাওয়াটা আর থাকে না।
এখন থেকে চেষ্টা করা দরকার, ঐ চাওয়াটাই থাকার অভ্যাস বানানোর। তাহলেই, অভ্যাস তার জায়গায় চলে যাবে।
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:৩৪
মোঃ খুরশীদ আলম বলেছেন: জ্বি, আজ হতে ভাল কাজের অনুশীলন চালিয়ে যাব।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১২:১১
কিরমানী লিটন বলেছেন: সুন্দর বোধের লিখনি- চমৎকার ...