![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই পর্বটি পড়ার আগে প্রথম পর্ব থেকে শুরু করতে পারেন ... ...
পর্ব ০: প্রারম্ভিকা: আমার লেখার কারন ও আপনার অংশগ্রহণ
পর্ব-০১
পর্ব-০২
-------------------------পর্ব ০৩-------------------------------------
শুরু হল নতুন জীবন, অনেক নতুন বন্ধুদের সাথে পরিচয় হল। ঢাকার ছেলেরাই সবচেয়ে বেশি। সারাক্ষণই আমাদের পাশে আছেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষকরা, কখনোবা আমাদের নির্দেশনা দিচ্ছেন জলপাই পোশাকধারী আর্মির ননকমিশন স্টাফরা। কখন খাব, কি খাব, কিভাবে খাব, কোথয় যাব, কিভাবে যাব, কি পোশাক পরব, কিভাবে পরব ইত্যাদি সব বিষয়েই বলে বলে দিচ্ছেন কখনো শিক্ষকরা, কখনো স্টাফরা, কখনোবা সিনিয়ররা... হঠাৎ নিজেকে একেবারে পিচ্চি মনে হতে লাগল। এতদিন যে মিঠু সাইকেল নিয়ে মেতে থাকত শহরের অলিগলি, সাঁতরে একাকার করত কীর্তনখোলার ঢেউ, সেই আমাকে এতটা কঁচি খোকা ভাবা হচ্ছে কেন- সেটা বুঝতে পারছি না। প্রথম ২/৩ দিনে আমাদের মোটামুটি ক্যাডেটিয় জীবন ব্যাবস্থার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হল। শেখানো হল ডাইনিং হলে চামচের ব্যাবহার, গ্লাস ধরার নিয়ম থেকে শুরু করে সিনিয়রের সাথে কথা বলার ভঙ্গি পর্যন্ত সবকিছুই। ১ম টার্মে মাত্র ১৫ দিন ছিলাম আমরা, তারপরেই ছুটি। এই ১৫ দিনে একটা মজার অভিজ্ঞতা হয়েছিল আমার; দেখেছিলাম সব নতুন ক্যাডেটরাই নতুন জীবনে এক নতুন ধরণের অস্বস্তিতে আছে। এই অস্বস্তিটা দুই দলের ক্ষেত্রে দুই রকম...
একদল আমার মত যারা আগে ছিল অনেক মুক্ত, যাদের বিচরণক্ষেত্র ছিল অনেক বিস্তৃত, খোলা আকাশের মত বিশাল; এদের অবস্থা হয়েছিল জঙ্গল থেকে তুলে এনে চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দী করা বাঘের মত, যে বাঘকে নিয়মিত খাবার দেয়া হয়, নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়, তবুও বাঘটার কাছে মনে হয় "কি যেন নেই...."
দ্বিতীয় দলটার অস্বস্তির কারণটা একটু ভিন্ন। এরা হচ্ছে সেই দল যারা আগে কোনদিন নিজে কিছুই করেনি, খাওয়া, কাপড় পড়া, গোসল ইত্যাদি সব কিছুই করে দিতেন আম্মু... কিন্তু ক্যাডেট কলেজেতো আম্মু নেই... বাসার মত টেবিলে সাজানো ব্রেকফাস্ট আছে, কিন্তু... ক্লাসে যাবার সময় এখানেও আগের মত জুতা-মোজা পড়তে হয়, কিন্তু আম্মুটাকে যে কোথায় পাই... ...!! সবকিছু থেকেও "কি যেন নেই..."
আমাদের ব্যাচে আমরা ছিলাম ৫৫ জন। তার মধ্যে একজন ছিল আমাদেরই এক স্যারের ছেলে, আর একজন মাত্র আর্মি অফিসারের ছেলে, দুজন আমাদের কলেজের দুইজন অফিস কর্মকর্তার ছেলে, বাকি সবাই সাধারণ ছাত্র। নিয়ম অনুসারে, সামরিক কর্মকর্তা (আর্মি, বিমান বা নৌ সেনা বা অফিসার) কিংবা ক্যাডেট কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা বা কর্মচারীর সন্তানদেন জন্য ১০%, অর্থাৎ ৫০ জনে ৫ জনের জন্য সংরক্ষিত আসন ছিল। অন্য কোন ধরণের কোন কোঠা পদ্ধতি নেই। ক্যাডেট কলেজ শুরু করেছিলাম মাসিক মাত্র ৬৫০ টাকা বেতনে, এই বেতনটা নির্ধারিত হত পরিবারের আয়ের উপর শতকরা হারে। তবে সরকারী চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এই শতকরা পরিমাণটা অনেক কম ছিল, বেসরকারী পেশাজীবী বাবা-মায়েদের অনেক বেশী হারে বেতন দিতে হত। ৬৫০ টাকায় শুরু করে ক্যাডেট জীবন শেষ করেছিলাম মাসিক ২৪০০ টাকা বেতনে, প্রতি বছর জুনে পারিবারিক আয়ের সনদপত্র জমা দিতে হত, জুলাই থেকে নতুন বেতন কার্যকর করা হত। তবে আমাদের ক্যাডেট জীবনের শেষ দিকে একটা নিয়ম করা হয়েছিল যে কারও মাসিক বেতন ১৫০০ টাকার নিচে করা হবে না এবং দিন দিন বেতনের জন্য নির্ধারিত শতকরা হারের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছিল। আমাদের এক জুনিয়রের বেতন ছিল মাসিক ১০,০০০ টাকা এবং সেটা শেষ পর্যন্ত বেড়ে কত হয়েছিল তা জানি না।
ক্যাডেট কলেজ পরিচালনা ফান্ড নিয়েও আলোচনা করার প্রয়োজন মনে করছি। ক্যাডেট কলেজগুলোর পরিচালনার জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয় প্রতিরক্ষা বাজেট থেকে, শিক্ষা খাত থেকে নয়। ক্যাডেট কলেজগুলো পরিচালিত হয় সরাসরি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রনে "Cadet College Governing Bodies" -এর মাধ্যমে। সেনাবাহিনীর পক্ষে প্রতিটি ক্যাডেট কলেজে নিযুক্ত থাকেন একজন মেজর, যার পদকে বলা হয় "এ্যাডযুটেন্ট ( ADJUTANT ) ", তবে কখনো কখনো প্রিন্সিপালও সামরিক ব্যাক্তিত্ব হয়ে থাকেন। সাধারণত ক্যাডেট কলেজে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করা কেউ প্রোমোশন প্রক্রিয়ায় প্রিন্সিপাল হয়ে থাকেন, তবে ব্যাতিক্রম ঘটে যখন সরাসরি আর্মি এজুকেশন কোর থেকে কাউকে সরাসরি প্রিন্সিপাল নিয়োগ দেয়া হয় এবং দিন দিন ব্যাতিক্রমটা ক্রমের মতই হয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু ব্যাতিক্রম ছাড়া এটা এক বাক্যে বলা যায় যে এ্যাডযুটেন্টই হচ্ছে ক্যাডেট কলেজের সর্বময় কর্তা। এ বিষয়গুলো পরবর্তীতে আরও পরিস্কার হয়ে যাবে বলে আশা করি। যাই হোক, পরবর্তী পর্বে আবার আমরা ফিরে যাব গল্পে... ততদিনে আমি ফিরে এসেছি মায়ের কোলে... ১৫ দিনের একটা ছোট্ট টার্ম শেষ করে। পরের পর্বে আমার মাকে শোনাব সেই ১৫ দিনে আমার অভিজ্ঞতা... এবং তারপর আমরা আরও সামনের দিকে এগিয়ে চলব... ... ...
ওহহো বলতে ভুলে গিয়েছিলাম. ঐ ১৫ দিনে মাকে দুটো চিঠি লিখেছিলাম, তবে... ... সেটাও ছিলো নিয়ম... স্যাররা বলেছিলেন, সবাই বাসায় চিঠি লিখবে। চিঠিগুলো পোস্ট করার আগে তারা আবার সেইগুলো পড়ে দেখতেন, "কেউ আবার কোন দুর্নাম লিখল কি না... ..."
[চলবে]
------পরের পর্বগুলি------
পর্ব -০৪
০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৫:৫২
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: দাদা... সময় পাই না... তবে কাহিনী পরবর্তীতে একটু ফাস্ট করে দিব... পরামর্শের জন্য অজস্র ধন্যবাদ...
২| ০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৫:৫৭
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: আমার এই লেখার অন্যতম উদ্দেশ্য সবাইকে ক্যাডেট কলেজ সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা দেয়া এবং আমার দৃষ্টিতে বিভিন্ন ভাল ও মন্দ দিকগুলো তুলে ধরা। তাই ব্লগাররা যে কোন বিষয়ে প্রশ্ন করতে পারেন... চেষ্টা করব আপনার কনফিউশন দূর করতে...
৩| ০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৬:১১
মাহবুব সুমন বলেছেন: ক্যাডেট কলেজের অর্থ শিক্ষাখাত হতে আসে, প্রতিরক্ষা খাত থেকে নয়। এটা প্রথম থেকেই চলে আসছে। এবং চরম বিতর্ক এটা নিয়ে।
০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৬:২৬
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: দয়া করে আপনার তথ্যসূত্র জানান।
"এটা প্রথম থেকেই চলে আসছে। এবং চরম বিতর্ক এটা নিয়ে" - কি প্রথম থেকেই চলে াসছে এবং বিতর্কটা কোথায়...?
আপনি কি ক্যাডেট ছিলেন?
৪| ০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৬:২৬
মাহবুব সুমন বলেছেন: আপনি আপনার তথ্য সুত্র জানান, আমিও জানাবো
০৯ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:৪৪
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: http://www.mod.gov.bd/responsibilities.html এর ১১ নং পয়েন্ট ... ...
৫| ০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৬:২৯
আসিফ আহমেদ বলেছেন: অনেক অজানাকে জানলাম।
খুব ভালো হচ্ছে আপনার লেখা।
আমি ঝিনাইদহ ক্যাডেটে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। কেমন করে যেন লিখিত পাস করে গিয়েছিলাম। তারপর প্রতিদিন দোয়া করতাম যেন ভাইভা তে না টিকি। আমার দোয়া কবুল হয়েছিলো।
সুন্দর লেখার জন্য প্লাস।
৬| ০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ৭:৩৭
ঘোর বলেছেন: @মাহবুব...
ক্যাডেট কলেজের ব্যয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে, শিক্ষা থেকে নয়।
৭| ০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ৭:৪২
ঘোর বলেছেন: আর তারিক! মালটা খুবই ভালো হবে যদি ঠিক মতো বানাতে পারো। তোমাকে তুমি করেই বলছি, কারণ ইউ আর মাই জুনিয়র।
----------------------------------------------------------
হিউমার দাও... হাউসের পেছনের সেই আমরা গাছ, হাসপাতালের পেছনের কাঠাল গাছ, একাডেমিক ব্লকের পেছনের আম আর পুকুর পাড়ের পেয়ারা গাছ, চুরি... আর গার্ডদের সঙ্গে লুকোচুরি..
০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৩৩
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: আরে ভাই... তুমি করেইতো বলবেন...
================================
কেবলতো সেভেনে আছি... একটু ডানা গজালেই হিউমার চলে আসবে... ওগুলো না এসে যাবে কৈ?
অজস্র ধন্যবাদ...
৮| ০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ৭:৫২
নির্বাক সুশীল বলেছেন:
ক্যাডেট কলেজ দিয়ে একটা গুগল সার্চ দিয়েন তো।
পাকিস্তান আর বাংলাদেশ ছাড়া আর কিছু আসে না।
এইটা তখনকার পাকিস্তানি ছামরিক ুতিয়াদের মস্তিষ্কপ্রসূত একটা আইডিয়া।
যে দেশের লোকের শরীরে কাপড় নাই তারা ফ্যাক্টরী দেয় বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের।
০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৩৬
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: আমার লেখাটা পড়তে থাকেন- এটাই অনুরোধ। তারপর ইনশাআল্লাহ বুঝতে পারবেন, ক্যাডেট কলেজের কোন জিনিসগুলো negative এবং কোন জিনিসগুলো positive.
সঙ্গে থাকুন, ধন্যবাদ...
৯| ০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ৮:৫৫
তাসনিম নাহিদ বলেছেন: প্রারম্ভিকাসহ আজই পড়লাম আপনার লেখা।খুবই ভালো লাগছে।আর আমরা যারা "ভবিষ্যৎ মা" তারা উপকৃত হবো,চালিয়ে যান ।
০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ১১:৩৭
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: আপনাদের কথা চিন্তা করেই আমার লেখা... ধন্যবাদ
১০| ০২ রা জুন, ২০০৮ সকাল ১০:০২
মুহিব বলেছেন: চালিয়ে যান, একটু ফাষ্ট হলে মনে হয় খারাপ হবে না।
১১| ০২ রা জুন, ২০০৮ দুপুর ২:৪৮
ফারহান দাউদ বলেছেন: পড়ছি।
১২| ০৭ ই জুন, ২০০৮ রাত ৯:২০
মেহরাব শাহরিয়ার বলেছেন: চিঠি লিখা নিয়ে সবাই প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে যেত । লেখার কিছু খুঁজে পেত না ।
আল্লাহ রহম করসে , আমি ক্যাডেটের দিকে পা বাড়াই নাই । নয়তো আমার মত অলসের দুনিয়া বর্বাদ হয়ে যেত
০৮ ই জুন, ২০০৮ রাত ২:৩৪
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: বস... ভালই কইছেন... আসলেই চিঠি............... তয় কিছু চিঠি লিখতে মজাই লাগত... তবে সেগুলোর ঠিকানা ভিন্ন... বিস্তারিত পরে লিখব... ততক্ষণ সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন, শুভ রাত্রি...
১৩| ১১ ই জুন, ২০০৮ বিকাল ৩:২৮
সীমান্ত আহমেদ বলেছেন: তোমার লেখা ভাল লাগছে।আর একটু জীবন্ত করো।ফ্যাক্টের সাথে ফিকশন ঢুকা ও।ক্যাডেট কলেজের সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা যাতে আসে সবার।সুন্দর প্রচেষ্টা।আমার লেখার ইচ্ছা ছিল ক্যাডেট কলেজ বিরোধীদের স্বচ্ছ ধারণা দিতে।কিন্তু মেহরাবের মত আমিও অনেক অলস।
ভালো কথা , তুমি কোন হল,কোন ডিপ,কোন ব্যাচ।
১৪| ১৬ ই জুন, ২০০৮ রাত ২:০৭
জিহাদ বলেছেন: কি মিয়া ব্লগে এইগুলা দেওনা ক্যান??
১৮ ই জুন, ২০০৮ সকাল ৮:৫১
মো. তারিক মাহমুদ বলেছেন: এইগুলা যখন সা.ইনে দিছি, তখন সিসিবি বন্ধ ছিল, সমস্যা নাই, দিয়া দিমু...
১৫| ১২ ই অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৪:১৯
আলী বলেছেন: অনেক অজানাকে জানলাম। খুব ভালো হচ্ছে আপনার লেখা।
১৬| ১২ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ১০:০১
তিতা করোলা বলেছেন: ভাল লাগছে। চালিয়ে ্যান।
১৭| ১৮ ই অক্টোবর, ২০০৮ বিকাল ৫:৩৮
আহ্সান বলেছেন: অসাধারণ.।.।.।।
১৮| ০২ রা নভেম্বর, ২০০৮ দুপুর ২:৫৯
রবিন৭৫৭ বলেছেন: মনে পড়ে যায় সেই দিন গুলো...
১৯| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:২০
চিন্তা শিল্পী বলেছেন: এখন কিন্তু চিঠি লেখা নাই.....যখন ক্লাস ১০ এ পড়ি তখন থেকে মোবাইল যুগ চালু হইসে......এইতা নিয়াও ব্যাপক কাহিনী আছে.....
©somewhere in net ltd.
১|
০২ রা জুন, ২০০৮ ভোর ৫:৪৮
বিবর্ণ বলেছেন: খুব ইনজয় করছি দাদ। চালিয়ে যান, একটু ফাষ্ট হলে মনে হয় খারাপ হবে না।