নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানিনা কি জন্য ব্লগ লিখতে শুরু করেছি। হয়তো আমার ভাবনা গুলো প্রকাশ করতে চাই। হয়তো আমার না বলা কথাগুলো, অনুভূতিগুলো অজানার কাছে চিৎকার করে বলতে চাই।প্রকাশ জিনিষটা একটুও সহজ না যখন আপনি একজন ইন্ট্রোভারট। জানিনা কতোটুকু পারবো, কতোদিন পারবো।

একান্ত নিনাদ

বাংলাদেশে জন্ম, কৈশোর ও তারুণ্য। রিটায়র্ড বাবা ও গৃহিণী মায়ের তিন ছেলের মাঝে দ্বিতীয়। বাবার আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৩৩ বছর চাকরির কারনে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত দেখার সুযোগ হয়। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছি, বর্তমানে সস্ত্রীক যুক্তরাষ্ট্রের টেকসাস অঙ্গরাজ্যের হিউসটন শহরে বসবাস। ভালো লাগে বেড়াতে, ছবি তুলতে, পড়তে, ভাবতে, লিখতে।

একান্ত নিনাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমার একান্ত নিনাদ (৪)

২৬ শে নভেম্বর, ২০১৮ ভোর ৫:৪৩

বাংলাদেশে তখন আমার সব মিলিয়ে জব করার বয়স ৭ বছরের একটু বেশি। এই বছর গুলোতে যে কয়টা প্রতিষ্ঠানে কাজের সুযোগ হয়, শেষ যেখানে কাজ করি সেখানেই বোধহয় এমন একটা কাজের ক্ষেত্র পেয়েছিলাম যেখানে কাজ করে যা কিছু এক্সপেক্ট করে একজন তার কাজের ক্ষেত্র থেকে, অনেক কিছুই পেয়েছিলাম। শুধু বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বলেই না, যাদের সাথে কাজের সুযোগ পেয়েছিলাম, যারা আমাকে সুপারভাইস করতেন, জব রোল, প্রতিষ্ঠান, সামগ্রিক ভাবে দেশের জন্যও কিছু করছি বলে তখন প্রথমবারের মতো মনে হোলো।
সময়ের পরিধিতে দুই বছরের চেয়ে ঠিক ১৫ দিন কম, সেখানে কাজ করেছিলাম আমি। এই সময়টাতে নিজে কিছু সরাসরি কন্ট্রিবিউট করছি সেই প্রথম মনে হতো আমার। হ্যা, এটা আমি ফিল করি, আমার আগের জব গুলোতে যতটুকুই শিখেছিলাম, তার সব কিছুই আমার শেষ কর্মস্থলে আমাকে কোনো বা কোনো ভাবে আমাকে হেল্প করেছে অবশ্যই। আগের গ্রুপ/ কোম্পানি গুলোর জবে কি আমি শিখেছিলাম এখন আমি পরিষ্কার করে এক্সপ্রেস হয়তো করতে পারবনা, এতোটুকু বলতে পারি ধারাবাহিক সিলেকশন প্রসেসের মধ্যে দিয়ে আপনি বহুজাতিক কোম্পানিগুলো সিলেক্টেড হবার মতো তৈরি করতে পারবেন নিজেকে শুধু যদি নিজের ক্যপাসিটির উপর বিশ্বাস আপনি রাখেন।
আমার কথা কে, কিভাবে নিবেন জানিনা, সবাই বলেন আমাদের দেশে জব স্ক্যারসিটি, প্রপার কাজের সুযোগ নেই, এক্সপেক্টেড স্যলারি নেই, আমি কেনো জানি এই কথাগুলোর সাথে নিজে যা দেখেছি এই অল্প সময়টাতে তা ঠিক মিলাতে পারিনা। মানুষে মানুষের মাঝে যেমন ভেদাভেদ থাকে, যার যার জীবনের গল্পগুলোও হয়তো ভিন্নই হয়। আমি বলবো, আশা, এক্সপেক্টেশন, সবারই থাকে, সুযোগ কিন্তু আল্লাহ সবাইকেই দেন। একটা নিদৃষ্ট সময় পর্যন্ত শুধু দরকার ধৈর্য, পসিটিভ মেন্টালিটি ধরে রাখা, আর সময় মতো নিজের বেস্ট পসিবল এফোরট-টা দেয়া। বিশ্বাস করেন, সত্যিই আপনার কোন রেফারেন্স দেবার মতো আত্মীয় দরকার নেই, দরকার শুধু নিজের উপর আস্থা রাখা আর অন্ধ বিশ্বাসগুলোর বাহিরে এসে কিছু করার প্রবল ইচ্ছেটা থাকা।
কি লিখতে বসে - কি সব লেকচার দেয়া শুরু করে দিলাম। না আমার উদ্দেশ্য কোন ক্যারিয়ার বিষয়ক লিখা নয়।এটুকুই বলতে আমি চাই যে, নিজের আর কাজের প্রতি সিন্সিয়ার থাকার চেষ্টাটুকু করার জন্য। সেই চেষ্টা বা নিজের কাছে সত্যিকারের জবাব দিহিতার অংশ হিসেবে, যেদিন প্রথম ইউএসভিসা ডেলিভারি সেন্টার থেকে স্ট্যাম্প সহ পাসপোর্টটা তুললামও তখন ঠিক করলাম যেহেতু আমার হাতে ছয় মাস সময় আছে, আমি অন্তত টু মান্থস নোটিস দিয়ে, প্রফেশনাল ম্যানার অনুযায়ী যাবো।
আমার ভাবনা শুনে “ও” যথারিতি-ই হতাশ, যার জন্য এতো প্রতিক্ষা, সেই গো-অ্যাহেড পাবার পরও আমি কেনও বসে থাকবো? যে চাকরি আমি কয়দিন পর করবোই না, তাদের সাথে কেন আমাকে ঠিক দুই মাসের কোম্পানি পলিসি ফলো করে, জব হ্যান্ড ওভার করে, তারপর আসতে হবে? এর চেয়ে কি এটাই বেশি বাস্তবস্মমত নয় যে, আমি যতো আর্লি ওখানে যেতে পারবো, ততো আর্লি আমি যেয়ে স্যাটেল হতে সময় পাবো? কেনো জানি, সব যুক্তির পরও মনে হল, লাইফে কতোই ভুল করলাম, দেরিও করলাম, আরো একটু না হয় করেই যাই। ঠিক করলাম আমি পরেই যাবো।
আসলে কি আমার মধ্যে তখন কেবল অফিসের জন্য রেন্সপন্সিবিলিটিই শুধু ফিল করেছিলাম? বাবা মায়ের জন্য, ছোট ভাইটার জন্য,কয়টা বন্ধুর জন্য,চেনা রাস্তার জন্য,জানালার জন্য,আকাশটার জন্য,কালো ধোঁয়া আর জ্যামের শহরটার জন্য কিছু কি ফিল করিনি? এটুকুই শুধু বলতে পারবো, মন তখন শুধু বলছিল আর একটু দেরি হোক।
যারা বাংলাদেশে অফিস করেন, থারসডে নাইট তাদের ফুরফুরে থাকে মন। এই রকম এক রাতে আব্বুর সাথে বসে টিভি দেখছি, একটু পর আব্বু বললো কালকে তো তোমার আম্মু আর আমি ডাইবেটিস হসপিটালে সুগার আর রেগুলার চেকআপে যাবো, তুমি উঠে সকালে নাস্তা করে নিও।কি মনে করে, আব্বুকে বললাম, কালকে আমিও তোমাদের সাথে যাবো।গেলাম সব শেষে বাসায়ও ফিরলাম।স্বাভাবিক ভাবে বাকি দিনগুলো অফিস করছি। মঙ্গলবার অফিসের মাঝে আমার ছোট ভাই আমাকে ফোন করলো, আব্বুর রিপোর্ট আজকে ডেলিভারি নেয়া হয়েছে, যার মাঝে ব্লাড রিপোর্টটা খারাপ আসছে। খারাপ মানে? ও বললো, রিপোর্ট অনুযায়ি হোয়াইট ব্লাড সেল অনেক বেশি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে। রিপোর্টের ভাষায় যাকে বলা হয়েছে ক্রনিক লিম্ফয়েড লিউকেমিয়া।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.