নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

জানিনা কি জন্য ব্লগ লিখতে শুরু করেছি। হয়তো আমার ভাবনা গুলো প্রকাশ করতে চাই। হয়তো আমার না বলা কথাগুলো, অনুভূতিগুলো অজানার কাছে চিৎকার করে বলতে চাই।প্রকাশ জিনিষটা একটুও সহজ না যখন আপনি একজন ইন্ট্রোভারট। জানিনা কতোটুকু পারবো, কতোদিন পারবো।

একান্ত নিনাদ

বাংলাদেশে জন্ম, কৈশোর ও তারুণ্য। রিটায়র্ড বাবা ও গৃহিণী মায়ের তিন ছেলের মাঝে দ্বিতীয়। বাবার আধা সরকারি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ ৩৩ বছর চাকরির কারনে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত দেখার সুযোগ হয়। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করছি, বর্তমানে সস্ত্রীক যুক্তরাষ্ট্রের টেকসাস অঙ্গরাজ্যের হিউসটন শহরে বসবাস। ভালো লাগে বেড়াতে, ছবি তুলতে, পড়তে, ভাবতে, লিখতে।

একান্ত নিনাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমেরিকায় প্রবেশের আগে ১০টি চেকলিস্ট

১০ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ৮:৫৩

এই লিখাটা শুরু করেছিলাম বেশ কিছুদিন আগে। একটু লিখি, তারপর আবার বিভিন্ন কারনে লিখা হয়না, কখনো আবার ইচ্ছা হয়না। এর মধ্যে শুনলাম বুয়েটে সদ্দ্য ঘটে যাওয়া নেক্কার জনক ঘটনা। যা হয়েছে, যা হচ্ছে, আমার নিজের কোনো ভাষা নেই। কিন্তু এইটুকু বলবো, যারা করেছে, যারা জড়িত, তারা আমার দেশের মানুষ, আমার মতোই বাংলাদেশের মানুষ, এই দেশে জন্ম নিয়ে আমার যেমন গর্ব, এই ঘটনা এবং এই ধরনের ঘটনাগুলোর পর আমি নিজে লজ্জিত, নিজের প্রতি ঘৃণা হয় আমার। আব্ব্রার-এর মতো কেউ আমার ভাই হতে পারতো, আমার পরিবারের সন্তান হতে পারতো, নিজেকে একবার অই জায়গায় যদি বসাই, বুকটা ছিড়ে যায়। আমি ঘৃণা করি এই রাজনীতিকে, এই ছোট্ট পরিসরে আমার ক্ষোভ, আমার নিন্দা জানাই। আমি স্যরি আব্ব্রার, মাফ করে দিস ভাই আমার।
--
লিখাটা আমেরিকা ছাড়াও অন্য দেশগুলোতে যারা ইমিগ্রেন্ট হিসেবে পাড়ি জমাতে যাচ্ছেন, তাদের জন্যেও উপকারি হতে পারে, কিন্তু আমি লিখছি একান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আর উপলব্ধির আলোকে। আশা করছি হেল্পফুল হলেও হতে পারে।

১। যিনি আপনার ইমিগ্রেশনের জন্য আপ্লাই করেছেন, আপনার ফ্যামিলি মেম্বার, হাসবেন্ড বা ওয়াইফ – তার সাথে আপনার বিভিন্ন সময়/ বিভিন্ন অকেশনে তোলা বেশ কিছু প্রিন্টেড ছবি রাখবেন আপনার হ্যান্ড ব্যাগে। ফার্স্ট টাইম ইমিগ্রেন্ট হিসেবে এই দেশে প্রবেশের সময় কাস্টমস অফিসার আপনার এপ্লিকেন্টের সাথে আপনার রিলেশনের প্রুফ হিসেবে ছবিগুলো এভিডেন্স হিসেবে দেখতে চাইতে পারেন। স্পাউসের মাধ্যমে আসলে, আপনাদের অরিজিনাল ম্যারেজ সার্টিফিকেট, নিকাহ নামা এই ডকুমেন্ট গুলোও সাথে রাখবেন।

২। যদিও আপনি ইমিগ্রেন্ট হিসেবে যাচ্ছেন, আপনার ক্যারিয়ার প্ল্যান আমেরিকাতে যাবার পর যাই হোক না কেনো, আমি বলবো, বাংলাদেশে আপনার, আপনার স্ত্রী ও সন্তানদের একাডেমিক কোয়ালিফিকেশনের ইভালুয়েশন করিয়ে নিবেন। এখানে আসার পর যদি আপনাদের কারো এখানে পড়াশুনা করার ইচ্ছে থাকে বা প্রয়োজন হয়, এই একাডেমিক ক্রিডেনশিয়াল ইভালুয়েশন প্রয়োজন হবে। এই কাজটা বিদেশে আসার পর অনেকে উপলব্ধি করেন, কিন্তু আপনাদের এই প্রসেসটা দেশে থাকতেই নিজে করে আসতে পারলে ভালো হয়। ইন্সটিটিউট ভেদে অনেক সময় ৪-৬ মাস সময় লেগে যায় এই প্রসেসটা কমপ্লিট করতে। আমার নিজস্ব ক্রিডেনশিয়াল ইভালুয়েশন এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে একটা আলাদা পোস্ট দেয়ার ইচ্ছে আছে।

৩। বুদ্ধিমানের কাজ হবে, দেশে আপনার নিজস্ব গাড়ি থাকুক না থাকুক, এদেশে আসার আগে ড্রাইভিংটা শিখে আসলে। এখানে আসার পর প্রথমেই বা ক্ষেত্র বিশেষে কিছুদিন পর আপনার গাড়ি কিনার প্রয়োজন হবে। এখানকার ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য কিছু প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়, আমি আলাদা করে একটা পোস্ট দেয়ার চেষ্টা করবো কিন্তু, পুরো প্রসেসটা অনেক সহজ হয়ে যাবে, যদি আপনি ড্রাইভিংটা অলরেডি জানেন (জদিও এখানে এসেও আপনি শিখতে পারবেন)। পাশাপাশি যদি সম্ভব হয়, ড্রাইভিং বেসিক ইমারজেন্সি সাপোর্টইং গুলো (টায়ার চেঞ্জ, ব্যাটারি বিষয়ক ব্যাপারগুলো) কিছুটা জানা থাকে আপনার।

৪। আমেরিকার নর্থ, সাউথ, ইস্ট আর ওয়েস্ট- এর একেকটা স্টেট বছরের একেক সময় একেক রকম ওয়েদার থাকে, আপনি বছরের কোন সময় কোন স্টেটে যাচ্ছেন, ওয়েদার জেনে ড্রেস আনলে ভালো হবে। কেউ হয়তোবা মত দিবেন, যে প্রয়োজনীয় জামা কাপড় এই দেশ থেকেই কিনবেন, অনেকেই হয়তো পারবেন, কিন্তু আমি বলবো, প্রথম কয়েক মাস আরো অনেক কিছুতে আপনার খরচ হবে, ইনিশিয়াল সময়ের কথা ভাবলে এবং এখানকার দামের তুলনা করলে, বাংলাদেশ থেকেই দরকারি জিনিসগুলো কিনে আনতে পারলে ভাল হবে। যেহেতু আমি ছেলে, আমি বলবো, বেশ কয়েকটা টিশার্ট, ২/৩টা জিন্স, ফরমাল ড্রেস (ইন্টারভিউ এর জন্য), ক্যাসুয়াল শার্ট – হাফ ও ফুল স্লিভ, অন্ততঃ এক জোড়া ফরমাল শু, অন্তত একটা স্যান্ডেল, বেশ কয়েকটা মোজা, অ্যান্ডারওয়্যার ইত্যাদি। একটা লেইস বিহীন স্নিকার সম্ভব হলে আসার সময় পরে আসবেন এখানে রেগুলার ইউজের জন্য। দরকার না হলে, ট্রাভেলের সময় রিস্ট ওয়াচ, বেল্ট বা কোনো এক্সেজরিস আইটেম পরবেন না। কারন বিভিন্ন এয়ারপোর্টে চেকআপের সময় বারে বারে এই জিনিসগুলো খুলতে হয়।

৫। কেউ যদি চশমা পরে থাকেন, অন্তত দুই পেয়ার সদ্য ডাক্তার দেখানোর পর পাওয়ার অ্যাডজাস্টেড চশমা নিয়ে আসবেন। কারো যদি কোন রেগুলার প্রেসক্রাইবড ঔষধ থেকে থাকে, অন্তত ৫/৬ মাসের জন্য ঔষধ নিয়ে আসবেন। মনে রাখবেন, এখানে আসার পর আপনার ডাক্তার দেখানোর আগে বা ঔষধ কিনার জন্য মেডিকেয়ার ইনস্যুরেন্স থাকতে হবে, ইনস্যুরেন্স ছাড়াও পারবেন, কিন্তু সেক্ষেত্রে আপনাকে যা গুনতে হবে সেটা কল্পনারও বাহিরে। ব্যাক্তিগত ভাবে/ প্রাইভেট ইনস্যুরেন্সও অনেক এক্সপেন্সিভ, চাকরী হবার পরে, এমপ্লায়ার কন্ট্রিবিউটেড ইনস্যুরেন্স নিতে পারলে সেটা আপনার ও আপনার ফ্যামিলির জন্য ইফেক্টিভ হবে।

৬। যদি জানা থাকে যে, কি কি লাগবে এখানের পড়াশুনার সুবিধার জন্য, সে জন্য বই নিয়ে আসতে পারেন, এখানে বই আর স্টেশনারি আইটেমগুলো বাংলাদেশ থেকে অনেক এক্সপেন্সিভ।

৭। কেউ যদি রান্না না জানেন বা বাংলাদেশে রান্না করার অভ্যাস না থাকে, বেসিক রান্নাটা শিখে আসবেন, দাওয়াত দিয়ে অন্যকে ভালো খাওয়ানোর উপযোগী না হলেও চলবে, কিন্তু আপনি নিজে জানি খেতে পারেন। ভাত, ডাল, ডিম ছাড়াও, যেকোনো ভাজি, ভর্তা, খিচুড়ি, মুরগী, গরু আর টুকটাক মাছ রান্না জানা থাকলে খুব ভালো হয়।

৮। যদি আপনি এখানে স্টুডেন্ট হিসেবে আসেন, আপনার সাথে, নিজের পাসপোর্ট, ভিসার ফটোকপি ছাড়াও ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল অফিসের কন্ট্যাক্ট নাম্বার রাখবেন। অলরেডি নিজের একটা ল্যাপটপ না থেকে থাকলে কিনে আনার দরকার নেই, এখানে আপনি সুইটেবল দামে আপনার প্রয়োজন মতো ল্যাপটপ কিনতে পারবেন।

৯। দামি ফোন না আনলেই ভালো, কারন এখানে এসে আপনার এখানকার লাইন সংবলিত ফোন প্ল্যান নিতে হবে কিছুদিন পর। সেট ছাড়াও প্ল্যান নেয়া যায়, কিন্তু সেগুলোতে আপনার ক্ষেত্র বিশেষে খরচ আরো বেশি পড়বে।

১০। প্রসাধনী আইটেম যেমন, বডি লোশন, স্প্রে, শ্যাম্পু, পারফিউম, টুথব্রাশ, পেস্ট, শেইভিং কিট, এইগুলো না আনলেও হবে, কারন এখানে এগুলো রিজনেবল, আনলেও কখনই কোনো লিকুইড আইটেম আপনার সাথের হান্ডব্যাগে করে আনবেন না। হান্ডব্যাগে একটা কালো বলপয়েন্ট কলম রাখতে পারেন, এখানে প্রবেশের সময় কাস্টমস ফর্ম পূরণে কাজে লাগবে। সর্বোচ্চ ১০হাজার ডলার আপনি সাথে করে আনতে পারবেন, কিন্তু এয়ারপোর্ট/ কাস্টমসে ডিক্লারেশন দিতে হবে। কিছু খুচরা ডলার আনলে, এয়ারপোর্টে কিছু কিনতে সুবিধা হবে।

এই হচ্ছে, এই মুহূর্তে যতটুকু মনে পড়ে, ভিসা হবার পর এবং এখানে আসার পূর্বে খেয়াল রাখার মতো দিকগুলো।
আমার ইচ্ছা আছে ভিসার জন্য প্রেপ এবং এখানে আসার পর ইনিশিয়াল কি কি করতে হবে প্রথম ১/২ মাসের মধ্যে সেই জিনিস গুলো নিয়ে আলাদা ভাবে লিখার – কিন্তু অবশ্যি যদি আপনারা চান আর আপনাদের এতটুকুও উপকারে আসে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১০:১২

ইসিয়াক বলেছেন: আপনার জন্য শুভকামনা রইলো ।
শুভরাত্রি

২| ১০ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১১:১৫

একান্ত নিনাদ বলেছেন: আপনাকে ও :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.