![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্ত এই আকাশে স্বপ্নগুলো উড়িয়ে দিতে ছুটে বেড়াই দূর থেকে দূরে, আরোও দূরে।
মনোমুগ্ধকর একটি ফুলের নাম আইরিস ফুল। তার জন্মস্থান জাপান। জাপানের মানুষ এ ফুলটি খুব পছন্দ করে। হঠাৎ দেখলে মনে হবে হয়তো টিউলিপ ফুলের জাত ভাই আইরিস। টিউলিপের সঙ্গে এর মিল আছে বটে, কিন্তু সেটা খুবই সামান্য। তাই টিউলিপের দোহাই দিয়ে নয়, বরং নিজের সৌন্দর্যেই মানুষের মন জয় করার ক্ষমতা রয়েছে আইরিস ফুলের।
সম্প্রতি এই আইরিস ফুল পাপড়ি মেলেছে রাজধানীর নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিশু চিকিৎসক ও সার্জন ডাঃ আবদুল হানিফ টাবলুর বাসায়। আগে কখনো ঢাকায় এ ফুলটি ফুটেছে বলে আমার জানা নেই।
এক বছর আগে ডাঃ টাবলু জাপানে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েছিলেন। সে সময় সেখানকার ওসাকা শিশু হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের পরিচালক আকিও কুবোতা তাঁকে একটি আইরিস ফুলের চারা উপহার দেন। দেশে ফিরে সে চারাকে যত্ন নিয়ে লালন-পালন করেন ডাঃ টাবলু। আর তাঁর পরিশ্রমের ফল হিসেবে তাঁর ছাদের বাগানে স্বমহিমায় উজ্জ্বল হয়ে ফুটে আছে আইরিস ফুল।
আইরিস ফুলের গাছ হয় অনেকটা রজনীগন্ধার মত। কুন্দ থেকে নতুন চারা হয়। পাতাগুলো হয় লম্বা। প্রায় সব ঋতুতেই এ ফুল ফোটে। নীল, বেগুনী, হালকা গোলাপি এবং কমলা, সাদা এবং হলুদ রঙের হয় আইরিস ফুল। সবচেয়ে বেশি দেখা যায় বেগুনি আইরিস। কালেভদ্রে কালো রঙের আইরিস ফুলও পাওয়া যায়। বিশ্বের নানা স্থানে প্রায় ২০০ ধরনের আইরিস ফুল রয়েছে। তাদের কোন কোনটি মরুভূমিতে হয়, কোনটি শীতপ্রধান অঞ্চলে, কোনটি বা উষ্ণ এলাকায়। একেক জাতের ফুল একেক রকম হয়। ডাঃ টাবলুর ছাদে যেটি ফুটেছে সেটির সঙ্গে টিউলিপ ফুলের কিছুটা মিল রয়েছে।
আইরিস ফুল শুধু সৌন্দর্যের দিকেই মনোমুগ্ধকর নয়, তার রয়েছে অসাধারণ সব গুণাগুণও। এই ফুলের শিকড় ব্যাবহৃত হয় ত্বকের সমস্যার চিকিৎসায়। ত্বকের দাগ দূর করতে কসমেটিকসও তৈরি হয় ফুলটির রস থেকে।
আইরিস একটি গ্রীক শব্দ যার অর্থ রংধনু। আইরিস একজন গ্রীক দেবীর নামও বটে। গ্রীকদের বিশ্বাস অনুযায়ী দেবী আইরিস রংধনু ব্যবহার করে চলতে পছন্দ করতেন। তিনি ছিলেন ভালবাসার বার্তাবাহক। তাই আইরিস ফুলকেও বার্তা প্রেরণের প্রতীক হিসেবে মনে করা হয়। মজার কথা হল, বিভিন্ন ধরনের আইরিসের মাধ্যমে বিভিন্ন রকম বার্তা পাঠানো হয়। প্রিজনকে এই ফুল উপহার দেওয়ার মাধ্যমে মানুষ মনের নানা অনুভূতি প্রকাশ করে। যেমন- নীল আইরিস ফুল আস্থা-বিশ্বাস এবং আশার প্রতীক। আবার সাদা আইরিস পবিত্রতার পরিচয় বহন করে।
আইরিস ছিল ডাচ শিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যানগগের প্রিয় ফুল। অল্প বয়সে মা-বাবকে হারালে তাঁকে ফ্রান্সের প্রতিবন্ধীদের আশ্রয়খানা পল-দ্য-মাসলে ভর্তি কড়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি চলে তাঁর পরিচর্চা। সেই আস্রয়কেন্দ্রে ছিল বিশাল সুদৃশ্য ফুল বাগান। নানা ধরনের ফুলের গাছ ছিল সে বাগানে। তার মধ্যে আইরিস ফুলও ছিল। আর এটি ছিল ভ্যানগগের প্রিয় ফুল। ১৮৮৯ সালে ওখানে থেকে ভ্যানগগ ১৩০টি চিত্র আঁকেন। তার অনেকগুলোই তিনি আঁকেন আইরিস ফুল নিয়ে। এই ফুলের ছবি এঁকে ভ্যানগগ ফ্রান্সে চিত্রশিল্পী হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। আর সেজন্য বিশ্বের মানুষ আইরিসকে চেনে ভ্যানগগের ফুল হিসেবে।
বাংলাদেশের অনেক মানুষের কাছে অপরিচিত হলেও আইরিস বিশ্বের খুব পরিচিত ও জনপ্রিয় একটি ফুল। আর ঢাকায় এই ফুলটির ফোটার মাধ্যমে প্রমাণিত হল যে বাংলাদেশেও এই ফুল চাষে সফলতা অর্জন করার সম্ভাবনা রয়েছে। আইরিস যেমন সুন্দর একটি ফুল, তেমনি সব সুন্দর বার্তা বহন করে একেকটি আইরিস। একবার ফুলটা দেখলে যে কারো ভালো লাগতে বাধ্য। বাণিজ্যিকভাবেও এর চাহিদা অনেক। তাই বাংলাদেশে এই ফুলের ফোটার ঘটনাটি আমাদের জন্য সুসংবাদই বটে!
১২ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:১৮
সাহিত্যিক মীম বলেছেন: দুুঃখিত। ছবির কথাটা খেয়াল ছিল না। আইরিস ফুল অনেক রকম, অনেক জাতের হয়। এটা টিউলিপের মতই দেখতে অনেকটা।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই মে, ২০১৩ দুপুর ১:১৪
অকপট পোলা বলেছেন: ছবি দিলে ভালো করতেন। আমার জানামতে, আইরিস ফুল দেখতে অনেকটা অপরাজিতার মতো দেখতে কিন্তু মোটেও টিউলিপের মতো না!!