![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্ত এই আকাশে স্বপ্নগুলো উড়িয়ে দিতে ছুটে বেড়াই দূর থেকে দূরে, আরোও দূরে।
এ বাসায় আসার পর অনেকদিন কেটেছে মন খারাপ করে থেকে। বারান্দাটা ভীষণ ছোট, গাছ রাখার জায়গা কম। পরে অবশ্য বাপি গাছ রাখার খুব সুন্দর ব্যবস্থা করে দিয়েছে, সে বিষয়ে অন্যদিন বলব। তো মনের দুঃখ কিছুটা হলেও কমানোর উদ্দেশে আমি এ বাসায় আসার বেশ কিছুদিন পর থেকে নতুন রূপে গাছ লাগানো শুরু করি। সেটা হলো বোতল কেটে গাছ লাগানো। এভাবে খুব অল্প ধরনের গাছই লাগানো যায়, আমি সেগুলোই লাগাতে শুরু করি। সেসময় গোলাপি ঘাসফুলের একটা ডালও পুঁতেছিলাম।
ঘাসফুলটা ধীরে ধীরে বড় হতে থাকল, ঝাঁকড়ানো বড় বড় চুল। সবসময় তার ডালে ডালে থাকত অনেকগুলো কুঁড়ি। সেগুলোর সব'কটা শেষ পর্যন্ত না থাকলেও বেশ কিছু ফুল ফুটত। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখতাম ঘাসফুলের আশ্চর্য রূপ।
অনেকদিন ধরে আমার ঘাসফুলটায় কোনো ফুল ফোটে না। অনেক কুঁড়ি আসে, কিন্তু সবটাই ঝরে যায়। এই একই জাতের অন্য গাছগুলোতে অবশ্য প্রতিদিনই অনেক ফুল ফোটে। আমি একদিন ওকে জিজ্ঞেস করলাম, কী হয়েছে রে তোর? তুই আর ফুল ফোটাচ্ছিস না কেন?
আমার ঘাসফুল রেগেমেগে একজনের নাম বলে উত্তর দিল, সে আমাকে দেখতে আসে না কেন? সে তোমাকেই বা দেখতে আসে না কেন? তুমি অসুস্থ থাকাতেও তার একবার মনে হলো না তোমায় দেখতে আসবে? আমি তার উপর অনেক কষ্ট পেয়েছি। সে এসে আমাকে আদর না করে দিলে আমি আর ফুটব না।
আমি ঘাসফুলকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি। পারি নি। অগত্যা তার দোষী সাব্যস্ত করা ব্যক্তিটিকে ফোন করে বলেছি এ সমস্যার কথা। তিনি অবশ্য আসেন নি। একটা ফুল হয়তো খুব তুচ্ছ একটা জিনিস। তার জন্য কাজ ফেলে ছুটে আসা হয়তো শুধুই পাগলামি।
কিছুদিন আগের কথা। হঠাৎ দেখি আমার ঘাসফুলটায় একটা নাদুসনুদুস কুঁড়ি। কুঁড়ির কোল ছেড়ে উঁকি দিচ্ছে তার গোলাপি পাপড়ি। সেদিনই ফুলটা ধীরে ধীরে ফুটে উঠল। আমি আবার উপভোগ করলাম তার অপার সৌন্দর্য। আজ সে আরো বেশি সুন্দর, অনেক অনেক বেশি। এরপর অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, তুই ফুটলি কেন? তুই না বলেছিলি সেই মানুষ না এলে ফুটবি না?
ফুলটা কিছুক্ষণ চুপ থাকল। এরপর কী বলল জানেন? বলল, 'আমি ভেবে দেখলাম, যে রাগ করার যোগ্যই না তার উপর রাগ করে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না। বরং নিজের সাফল্যের মাধ্যমে তার উপরে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। আমার সাফল্যে একদিন সে-ই আফসোস করবে, কেন সেদিন আমাকে গুরুত্ব দেয় নি। কিন্তু তার উপরে রাগ করে আমি হাত-পা গুটিয়ে মন খারাপ করে থাকলে আমার সময়টাই শুধু নষ্ট হবে, আর কিছুই হবে না। তাতে আমার কোনো কৃতিত্ব যেমন নেই, তেমন সেই মানুষটারও কিছুই হবে না। তাই আমি আবার ফুটব, অনেক সুন্দর হয়ে ফুটব। আমার সাফল্য তাকে আমার কাছে ফিরে আসতে বাধ্য করবে, সে তার ভুল বুঝতে পারবে। সেটাই আমার জন্য সম্মানজনক।'
আমি মুগ্ধ হয়ে ফুলটার কথা শুনলাম। এটা কিছুদিন আগের কথা। আজকেও আমার আরেকটা ঘাসফুল ফুটছে। আমি ভাবলাম, ভাবলাম, একটা ফুল যা বোঝে, আমি তা বুঝি না। আমি বারবার এই একই ভুল করি। সত্যি, আমরা মানুষরা সবচেয়ে বোকা। একটা পাতার চেয়ে, মৃদু হাওয়ার চেয়ে, একটু অনুভূতির চেয়ে, এমনকী একটা ঘাসফুলের চেয়েও বোকা।
২| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ৮:০৪
দীপংকর চন্দ বলেছেন: আমি ভেবে দেখলাম, যে রাগ করার যোগ্যই না তার উপর রাগ করে নিজেকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না
ভালো লাগলো বেশ।
শুভকামনা জানবেন।
৩| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:১১
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লিখেছেন । শুভেচ্ছা
৪| ২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:১৭
রাশেদ আহমেদ শাওন বলেছেন: ভালো লাগলো
৫| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:২৪
আমিনুর রহমান বলেছেন:
এখনো সময় আছে নিজেকে ফিরে পাবার। ফিরে আসুন। ভালো থাকুন।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে অক্টোবর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩২
পিনিকবাবু বলেছেন: সুন্দর লিখেছেন।