![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মুক্ত এই আকাশে স্বপ্নগুলো উড়িয়ে দিতে ছুটে বেড়াই দূর থেকে দূরে, আরোও দূরে।
(পরশুদিনের বিদ্যুৎ সমস্যার কথা সবার মুখে মুখে ফিরছে। সবাই টের পেয়েছি একদিন বিদ্যুৎ ছাড়া জীবন কেমন অচল, দেখেছি বিদ্যুৎবিহীন শহর সন্ধ্যার পর কেমন অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সম্ভবত বেশিরভাগ মানুষই দেখি নি, সেই অন্ধকারকে রূপোলি আলোয় উজ্জ্বল করা চাঁদটাকে। যারা দেখেছি, যারা দেখি নি, তাদের সবার উদ্দেশ্যে লিখছি।)
পরশু রাতের চাঁদটা ছিল অর্ধচন্দ্র। কিন্তু পূর্ণিমার চাঁদের চেয়েও তার সৌন্দর্য বেশি ছিল, কারণ পূর্ণিমার অপরূপা সুন্দরী চাঁদটা সবসময়ই আমাদের উজ্জ্বল শহরের ইলেক্ট্রিক বাতির কাছে ফিকে হয়ে যায়। বারান্দার মেঝেতে চাঁদের মুগ্ধতাকে আড়াল করে বৈদ্যুতিক বাতির উজ্জ্বল আলো। অথচ পরশুরাতে অর্ধেক চাঁদটা তার অর্ধেক সৌন্দর্য যেভাবে ঢেলেছে আমার বারান্দার মেঝেতে, গ্রিলে, গাছের পাতায় আর ফুলের পাপড়িতে- আমি তাতে মুগ্ধ। নারকেল পাতারা চাঁদের আলো গায়ে মেখে রূপো হয়ে উঠেছে, সামনের পুরনো হলদে বিল্ডিংটাও তার ঔজ্জ্বল্যের জন্য হয়েছে আধখানা চাঁদটার আলোপ্রার্থী। চাঁদের আলোয় হাত ভিজেছে, গাল ভিজেছে, রূপালি হয়ে উঠেছে আমার ফুল-পাতারা, আমার ছোট্ট বারান্দা পরিণত হয়েছে এক টুকরো স্বর্গে। যতক্ষণ বিদ্যুৎ ছিল না, ততক্ষণ আমি উপভোগ করেছি অর্ধেক চাঁদটার মুগ্ধতা ছড়ানো রূপ। চাঁদটা আমাকে কানে কানে বলেছে, তোমরা আমায় ছেড়ে দিতে পারো, আমি তো তোমাদের ছাড়তে পারি না। বিদ্যুৎ তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারে, আমি কখনোই করবো না।
সত্যি, আমরা মানুষেরা বড় স্বার্থপর। এই নিষ্পাপ উপকারী বন্ধুটার কথা আমরা ভাবি না, নিজেদের প্রয়োজনই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
হ্যাঁ রে চাঁদ, তোকে আর কেউ বুঝুক বা না বুঝুক, আমি সত্যিই তোর কষ্টটুকু টের পাই। আমি প্রতিদিন আলো নিভিয়ে দরজা ভিড়িয়ে বারান্দায় এসে তোর সাথে বন্ধুত্ব করতে চেষ্টা করি। পারি না। রাস্তার আলো, সামনের বাড়ির আলো- আমাকে- তোকে, আমাদেরকে হারিয়ে দেয়। সবার চিন্তাভাবনা আমার একার পক্ষে পাল্টে দেওয়া সম্ভব নয় ঠিকই, কিন্তু মানুষ মাত্রই স্বার্থপর। আমিও তার ব্যতিক্রম নই। তাই সবার কষ্ট হবে জেনেও আমার নিজের স্বার্থের কথা ভেবে আমি তো আশা করতেই পারি, কখনো কখনো এমন বিদ্যুৎ সমস্যা আশীর্বাদ হয়ে আসবে আমার জন্য, যেন আমি তোর অপার মুগ্ধতার কিছুটা অনুভব করতে পারি, আশীর্বাদ হয়ে আসবে প্রযুক্তিপাগল মানুষগুলোর জন্য, যারা প্রযুক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার কষ্টে একটাবার বারান্দায় এসে বা ছাদে দাঁড়িয়ে তোর দিকে তাকিয়ে, তোর আলো গায়ে মেখে বলবে, 'আজকের চাঁদটা এত সুন্দর!'
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬
সাহিত্যিক মীম বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা আপনাকেও।
২| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ১:১৮
আমিনুর রহমান বলেছেন:
চমৎকার লিখেছেন। আমি তো প্ল্যান করে ফেলেছিলাম রাতের সেই চাদের আলো উপভোগ করতে সারা রাত ঘুরবো। কিন্তু বিদ্যুৎ বুঝলো না আমার মনের কথা দপ করে চলে আসলো :/
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৩৬
সাহিত্যিক মীম বলেছেন: ধন্যবাদ।
৩| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২
লেখোয়াড় বলেছেন:
ভাল সাহিত্য।
+++++++++++++++++
৪| ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৫২
তুষার কাব্য বলেছেন: আমারও কিছ অন্যরকম প্লান ছিল...বাট বেরসিক কারেন্ট চলে এসে সব ভেস্তে দিল... :>
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা নভেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:১৪
দৃষ্টিসীমানা বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন ।আমিও সেদিন পশ্চিমের আকাশে দেখেছি অসমাপ্ত
প্রাসাধটার মাথার এক পাশে ঠিক টায়রার মত ঝুলে ছিল আধ খানা চাঁদ ।
আলোর কষ্ট ,পানির কষ্ট ,গরমের কষ্ট ,সিঁড়িভাঙার কষ্ট সব ভুলে আমি আর
আমার ছোট কন্যা চাঁদের রূপে অভিভুত হয়ে ছিলাম ।যারা এসুযোগ হারিয়েছেন তাদের জন্য কষ্ট হচ্ছে ।লেখকের জন্য অনেক অনেক শুভ
কামনা ।