নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মেঘেরদেশ

আমার মাঝে আলো আধার । তোমার মত করে খুজে নাও.। :)

মেঘেরদেশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্টের সাথে পোশাকের সম্পর্ক কতটুকু?

১৪ ই মে, ২০১৫ দুপুর ১২:০৩

প্রায়ই এই কথাটা উঠে আসে,প্রগতিশীল আধুনিক মনারা যতই বলুক না কেন যে সমস্যা পোষাকে না, সমস্যা মানসিকতায় সেটা বিশ্বাস করলেও ব্যক্তিগত ভাবে আমি মনে করি অবশ্যই পোশাকের সাথে সম্পর্ক আছে এবং পোশাকের কারণে এটা অনেক গুন বেড়ে যায়।

শালীন পোশাক পরলে যে উত্যক্ত কম হয় তা সরাসরি আল কোরআনেই আছে
“হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীগণকে, কন্যাগণকে ও মুমিনদের নারীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে দেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। (সূরা আহযাব : ৫৯)’’
একটা মেয়ে যখন প্রয়োজনের তুলনায় কম কাপড় যেমন টিশার্ট পরে স্বাভাবিকভাবেই তার শরীরের অংশ গুলো বোঝা যায় আর স্বাভাবিক ভাবেই কেউ যখন তাকায় মুখের বদলে আগে তাকায় বুকে!আর অন্যরকম ইচ্ছে জাগে।মানুষ তো, ভালো ছেলেরা চোখ ফিরিয়ে নেই, সবাই চোখ ফিরায় না, চোখ দিয়েই যতটা গিলতে পারে !আর ছেলেটা খারাপ হলে কোন ভাবে হলেও হাত লাগানোর সুযোগ খুঁজবে। এখন দোষ কার? আমার মতে মেয়েটার যেমন দোষ আছে তেমনি ছেলেটার। মেয়েটার দোষ হল এমন এক সমাজে সে এরকম কাপড় পরছে যেখানে সমাজ সেটা নিতে অভ্যস্ত না, ইন্ডিয়া বাংলাদেশ পাকিস্থানের মত দেশ গুলোতে এক দিকে যেমন ধর্মীয় কারণে মানুষ খোলামেলা নিতে পারে না আবার ডিজায়ার টাও কন্ট্রোল করতে পারেনা, একটু লাইন-চ্যুত হলেই হইছে !

এখন প্রশ্ন আমি আমার মত টিশার্ট, টাইট জিনস, ছোট কাপড় পরব, তাই বলে কি আমাকে হ্যারাস করতে হবে? না, কিন্তু সবাই তো এক না, আপনাকে বুঝতে হবে আপনি যেটাতে অভ্যস্ত সেটাতে অন্যরা অভ্যস্ত না।কেউ না কেউ যদি আপনাকে টিজ করে তাহলে কিছুটা দোষ আপনার ও কারণ আপনি ওই পরিবেশে এমন কিছু উপস্থাপন করেছেন যেটা ওখানের জন্য না! ইউরোপে আপনি টিশার্ট পরে ঘুরেন কেউ তাকাবেও না কিন্তু গ্রামে আপনি ওড়না ছাড়া কামিজ পরে যান দেখেন আশেপাশের মানুষ কেমন ভাবে তাকায়। একবার ক্লাসে বসে ক্লাস করছি, খুব ভালো,সহজ সরল এক বড় ভাই পাশে বসা। সামনে আমাদের সিনিয়র এক আপু, মোটা তার উপর ড্রেস দেখে ওই ভাইয়ের সমস্যা হচ্ছিল, আমাকে দেখিয়ে বলে এসব পরার কোন মানে হয়, হুদাই আমাদের সমস্যা করায়, ফাজলামি করে বলে বললাম আপনি উনাকে বলেন। বেচারা ভালোমানুষের মত উনাকে আস্তে আস্তে বলল,আপু ফিতাটা ঢাকেন ওড়না দিয়ে,বের হয়ে আছে অড লাগতেছে ।ওই স্বাধীনচেতা আপু স্যারের কাছে নালিশ-দেয় যে তাকে নাকি কাপড় নিয়ে ওড কথা বলছে।স্যার ডাকছিল ওই ভাই কে ,বেচারা লজ্জায় লাল,পরে আমাকে বলে শালার ভালোর জন্য বলছি,যদি গুঁতা দিতাম বেশী ভাল হইত,নালিশ ত একই করত।

ধরুন একটা ঘরে তালা থাকে না,খুব ভালো মানুষ হয়ত দেখে চলে যাবে কিন্তু মোটামুটি যারা তাদের কে এটা প্রলুব্ধ করবে যে আয় দেখে যা দামি কিছু আছে কিনা, আর সুযোগ সন্ধানীরা চুরি করবেই ! আর যদি তালা দেয়া থাকত তাহলে চুরিটা কি কম হত না? অবশ্যই তালা ছাড়ার চেয়ে অনেক কম হত। এখন বলতে পারেন ৬ বছরের শিশুরা ধর্ষিত হচ্ছে, এর কারণ কি কাপড়? অবশ্যই না, পাভার্ট থাকবেই, কোটি কোটি মানুষের দেশে এরকম বিকৃত মনা থাকবেই, যেমন আপনি যতই তালা সেফটি ইউজ করেন না কেন, জানু চোর চুরি করবেই,কিন্তু এই চিন্তা করে আপনি ঘরে তালা দিবেন না অথচ বলবেন কেন চুরি হচ্ছে এটা হিপোক্রেসি। শরীর দেখিয়ে চলবেন অথচ কেউ তাকিয়ে তাকলে অসভ্য স্টুপিড বলে গালি দিবেন, অথচ আপনি এসব পড়েন ই দেখানোর জন্য, পুঁজিবাদী মিডিয়া পানাকে বুঝিয়েছে এটা স্টাইল, আপনার সাজসজ্জা যাতে অন্যকে আকর্ষণ করে এমন ব্রেন ওয়াস টাই আপনাকে দিয়েছে! এর কিছু সাইড ইফেক্ট তো থাকবেই। আপনার নিজের নিরাপত্তা আপনাকেই রাখতে হবে,কারণ এই পরিবেশ টা একটা মেয়ের জন্য অতটা নিরাপদ না,পরিবেশ তো আপনি চাইলেই চেঞ্জ করতে পারবেন না,তাই আপনাকেই আপনার অবস্থা বুঝে নিতে হবে।

এদেশে শিশু কাল থেকেই সেক্সুয়াল হ্যারসমেন্ট শুরু হয় আপনদের মাঝ থেকেই, ভাইয়ের বন্ধু,কাজিন,এক সম্পর্কের চাচা,মামা ইত্যাদির। শিশু অবস্থাতেই যদি আপনরাই এডভান্টেজ নেয় তাহলে আপনি কিভাবে ভাবেন বড় অবস্থায় আপনি হ্যারাসমেন্টের স্বীকার হবে না? বন্ধু বলেন,নামকাওয়াস্তে ভার্সিটির বড় ভাই ছোট ভাইয়ের দাড়া? মজা করতে তাদের সাথে ঘুরে বেড়ান,বন্ধু বলে কোন দূরত্ব থাকে না,ড্রেসটাও ওরকম, কিভাবে ভাবেন যে ওই অবস্থায় তাদের মধ্যে চাহিদা তৈরি হয়না,তারা গায়ে হাত দেয়ার ছুতা খুঁজে না? ইসলাম যেখানে আপন ভাইয়ের সামনে পর্দা করতে বলেছে সেখানে আপনি বন্ধু,ভার্সিটি ভাই ছোট ভাইয়ের সামনে টিশার্ট পরে নাচানাচি করতেছেন কেউ আপনাকে নিয়ে পেতে চাইবেনা এটা আশা করা ভুল, আপনার বন্ধুরা হয়ত ভালো বলে কিছু করেনি কিন্তু তাই বলে তাদের কে উত্তেজিত করার দায়ভার টা কিন্তু আপনারই ।কোন ভাবে কেউ গায়ে হাত দিলে কিছুটা দোষ আপনার ভাগেও পরে কারণ আপনি এতগুলো ছেলের মাঝে আছেন সুযোগ সন্ধানী তো থাকবেই।নারী স্বাধীনতায় যারা বিশ্বাসী তারা এতক্ষণে দা কুড়াল নিয়ে রেডি হচ্ছেন কি কমেন্ট করা যায়,আমিও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী কিন্তু ততটুকুই যতটুকু স্বাধীনতা অন্যকে খারাপ হতে উস্কে না দেয়। আমার বাক স্বাধীনতা আছে বলেই আমি গালাগালি করব না, আমার পরিবেশ বুঝেই আমার ড্রেস পরতে হবে।পুল পার্টি, প্রাইভেট পার্টি ,আপনার বাসায় যা ইচ্ছে করতে পারেন কিন্তু হ্যারাসমেন্ট থেকে অনেক টাই রক্ষা পাবেন যদি পাব্লিক প্লেসে শালীন কিছু পরেন যা ওই পরিবেশকে ভায়োলেট করবে না।

আমার
নিজের দেখা কিছু অভিজ্ঞতা বলি
কক্সবাজারে গেছি একবার, একটা গ্রুপ দেখলাম প্রায় ১০-১১ জনের গ্রুপ।ফ্রেন্ড,ভার্সিটি বড় ভাই ছোট ভাই এমন।একজন মাত্র মেয়ে, স্বাস্থ্যের তুলনায় টিশার্ট টা ছোট,টাইট হয়ে আছে। পুলে নামল সবাই মিলে।১-২ জন ছাড়া প্রায় সবাই নানা অজুহাতে মেয়েটার গায়ে হাত দিছে,নানা ভাবে পানিতে চুবানোর চেষ্টা করছে,যেহেতু পুলে মানুষ বেশী নাই তাই অনেকেই এডভান্টেজ নেয়ার চেষ্টা করছে, মেয়েটার এক্সপ্রেশন দেখে বুঝলাম সে অভস্থ নয়ত বুঝে নাই সে হ্যারাসমেন্টের স্বীকার। সে হয়ত ভাবছে ছোট ভাই ই তো।সেও মজা করতে ওদের কে চুবানর চেষ্টা করছে। এখন সেখানে যদি কোন এক্সিডেন্ট হয়ে যেত দোষ টা কার হত? শুধুই কি ছেলেটার। ঢাকাতে এমন অনেক গ্যাং রেপের কথা শুনিছে যা ঘটিয়েছে কাছের বন্ধুরাই !!

কয়েক দিন আগে ফ্যান্টাসির ওয়াটার পার্কেও ৪-৫ জন ছেলের সাথে একটা মেয়ে ছিল।এ কোলে নেয়,ও সাতার শেখানোর ট্রাই করে,কেউ বা লাফ দেয়ায়। ৪-৫ জন পিং পং বলের মত টানা টানি করতে গিয়ে মেয়েটা পরে ব্যথা পায় না জানি কি হয় পরে কোলে করে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যেতে হয়!
ওখানে এক হুজুর কে দেখলাম বেচারা লজ্জায়,তার লেবাসের কারণে অনেক্ষন বসে ছিল নামে নি, কিন্তু কত আর কন্ট্রোল করা যায় নিজেকে চোখের সামনে ভেজা টিশার্ট পরা এত গুলা মেয়ে দেখে, সেও নেমে পরল,ঢেউ এর সামনে গিয়ে লাফ দিতে লাগল ;)

বছর খানেক আগে কিছু জুনিয়রদের নিয়ে কক্সবাজার গেছিলাম। গ্রুপে মেয়ে থাকলে যা হয়,জুনিয়র গুলোকে দেখলাম তাদের গ্রুপের মেয়েগুলারে মোটামোটি ২-৩ জন ছেলে ছাড়া প্রায় সবাই চুবানি খাওয়াতে নিয়ে গেছে।ইভেন সিনিয়র কয়েকজনও।মজা পেয়ে বিবাহিত পুরুষ কয়েকজন গেছিল ওদের চুবানি খাওয়াইতে।এ নিয়ে পরে কানাঘুষা ছিল অনেক দিন,কে কারে কি করছে! মেয়েগুলা যদি তাদেরকে একটা দূরত্বে রাখত তাহলে সেটা হয়ত হত না। ২-৩ জন মেয়ের ভাষ্য তারা খুব মজা পাইছে,একটু রিজার্ভ ২-৩ জন যারা অতি উৎসাহে ওখানে গেছে তাদের কথা হল তারা ভাবতেও পারেনাই তাদের ফ্রেন্ড রা এমন করবে,তারা হ্যারসমেন্টের স্বীকার, এখানে তাদের ড্রেস শালীন ছিল কিন্তু পানিতে নামার পর ছেলে মেয়ে খুব কাছে থাকলে যা হয় ! মজার ব্যপার একটা মেয়ে বেশ শালীন ভাবে একটু দূরে ছিল তাকে কেউ ধরেও নি।

আমরা কয়েকজন দূর থেকে জুরিয়রদের অবস্থা দেখছিলাম আর হাসিতেছিলাম। পরা রাতে শুনি একটা মেয়ে বন্ধুদের সাথে ড্রিঙ্ক করে বমি টমি করে অস্থির!

আমাদের ছেলেদেরও পর্দার বিধান আছে,সেটা হল চোখের পর্দা,সেটা ঠিক ভাবে না করলে আমাদের ও কঠিন শাস্তি।আমাদের ও উচিত সেটা মেনে চলা।

স্বাধীনতা আপনার,কিন্তু সেটা রক্ষা করার দায়িত্ব ও আপনার।আপনি নিজেও জানেন না স্টাইল,ফ্যাশন এর নাম করে আপনাকে মিডিয়া কি দিচ্ছে, এই সমাজ ভালো না ,নিজেই নিজেকে রক্ষা করতে হবে,উপায় নাই।অন্যরা এমন পরে কিছু হয়না তাই আপনাকেও পরতে হবে এমন যদি ভাবেন তাহলে ভুল হবে, বিপদ কখন কার আসে সেটা কি বলা যায়? অন্যরা যেভাবে আম পাব্লিক কে উত্তেজিত করছে আপ্নিও তেমন, গুনার কথা বাদ ই দিলাম আর যদি দেখাতেই চান তাহলে এমন কিছু অভিজ্ঞতা আপনাকে নিতেই হবে কারণ পর্দা-শীল রাই মাঝে মাঝে এমন অভিজ্ঞতার স্বীকার হয় আর আপনি তো খোলামেলা :/ সমস্যাটা সমাজের,একদিনে চেঞ্জ হবে না, কিতু আপনি নিজেকে প্রটেক্ট না করলে কিছুটা দায়ভার আপ্নাকেও নিতে হবে :(

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৪ ই মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৪

আকাশ আহমাদ বলেছেন: ভাই আপনার লেখাটি পরে অনেক অনেক অনেক খুশি হয়েছি। এই ধরনের কিছু একটা লেখা লিখব বলে অনেক দিন ধরে চিন্তা করতেছিলাম। কিন্তু সময় না পাওয়ার কারনে লেখা হয়নি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনি সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাইট তুলে ধরেছেন। আশাকরি আপনার সুন্দর লেখাটি পড়ে আমাদের সমাজের মডার্ণ দাবীকারী মেয়েরা যদি সচেতন না হয়, তাহলে বড়ই দু:খের বিষয়।

লেখক ভাই আবারো আপনাকে ধন্যবাদ।

২| ৩০ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১:১৯

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: ভাই তোমার আমারে যে সেক্সটা এসেছে তা কোথায় থেকে এসেছে ??????

পুরুষের সমস্যার জন্য নারীকে দায়ি করা যায় না ৷ ধর্ষণ কিন্তু পুরুষরা করে অতএব সমস্যা পুরুষের ৷ এতদিন যত নারী ধর্ষণ হয়েছে তার কত পারসেন্ট বিচার পেয়েছে জানাবে কি????

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.