![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্লেনের ছোট্ট সীট-টায় বসে আরো দেড় ঘন্টা কাটাতে হবে, সাথে বই/ল্যাপটপ কিছুই নেই। অনেকক্ষন অখাদ্য মাগাজিন এর পাতা উল্টিয়ে দেখি মাত্র পাঁচ মিনিট পার হয়েছে।সাথের ব্যাগ টায় একটা কলম ছিল। কি মনে করে বিমানবালার দেয়া টিস্যু কাগজ এর উপর লেখা শুরু করলাম।
ঠিক এক বছর আগে এই সময়টায় দিনলিপি লেখার কথা ভাবছিলাম। ভাবনার পেছনে মূল কারণ আমেরিকার কলোরাডো প্রদেশ এর ছোট্ট একটা শহর - ফোর্ট কলিন্স। ইন্টার্নশীপ করতে তিন মাসের জন্য এখানে আসা। বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় আসার পর এই প্রথম একটা অচেনা শহর একা থাকছি যেখানে আক্ষরিক অর্থেই কাউকে চিনি না (শেষ পর্যন্ত মাত্র একজন ভারতীয় বাঙ্গালী পেয়েছিলাম)।
প্রথম যেদিন ডেনভার এয়ারপোর্ট থেকে আমার অস্থায়ী বাসায় এসে পৌছালাম, বেশ রাত হয়ে গেছে। পরদিন সকালেই ইন্টার্নশীপ এর প্রথম দিন। একরাশ জল্পনা-কল্পনা আর সকালে ঘুম থেকে না উঠতে পারার দুশ্চিন্তা নিয়ে ঘুমাতে গেলাম। তিনটা মাস একটা অচেনা শহরে, পরিচিত বন্ধু-বান্ধব ছেড়ে অচেনা মানুষের সাথে কাটাতে হবে ভেবে কেমন যেন লাগছিল। সকালে বাসস্টপ এ পৌঁছে আশেপাশে তাকাতেই মনটা অসম্ভব ভাল হয়ে গেল - ঝকঝকে সকালের রোক এ দূরে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে 'হর্স ট্যুথ' পাহাড়, যেন অভিবাদন জানাচ্ছে শহরের নতুন অতিথিকে!
"ফোর্ট কলিন্স শহর হর্স ট্যুথ রক এর উপর থেকে "
প্রথমদিনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে রিসিপশন এ দাঁড়িয়ে আছি - বুঝতে পারছি না এরপর কি করব। কিছুক্ষনের মধ্যেই একজন হাসি-খুসি চেহারার বয়স্ক একজন আমেরিকান মহিলা এসে হাত বাড়িয়ে বলল - "আমি টেরি, তোমার সুপারভাইজার। চল তোমাকে সব ঘুরিয়ে দেখাই।" টেরির পেছন পেছন একে একে ক্যাফে, কিচেন, জ্যিম সব ঘুরে দেখা হলো। আমার প্রজেক্ট নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষ এ যখন আমরা আমার কিউব এর সামনে এসে দাঁড়ালাম, মনের খুব গভীরে লুকানো একটা ছোট দীর্ঘশ্বাস টের পাচ্ছিলাম। সব কিছুর মধ্যেও কি যেন একটার অভাব বোধ করছিলাম। কিন্তু পর মুহুর্তেই আমার জীবনের অন্যতম বিস্ময় অপেক্ষা করছিল- টেরি হঠাৎ দুহাত দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে আর্দ্র গলায় বলল, "তোমাকে অভিবাদন"। হঠাৎ করে অপরিচিত শহর আর অপরিচিত মানুষগুলোকে খুব আপন লাগল। মনে হল, এই মমতা আর ভালবাসার জন্যই তো বেঁচে থাকা - অদ্ভুত সুন্দর এই বেঁচে থাকা!
অগাস্ট, ২০১২
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৫
মেঘ রঙ মেয়ে বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৭:৩৫
সামুর ভক্ত বলেছেন: পৃথিবীর সব দেশে সব জায়গায় মমতা আর ভালোবাসার রঙ মনে হয় একি হয়।
লিখা ভালো লেগেছে।
৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ৯:৪৬
মেঘ রঙ মেয়ে বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ ভোর ৫:৩২
খেয়া ঘাট বলেছেন: লুজিয়ানার বেটনরোজে এক সপ্তাহ থাকার পর এক বাঙালী পেয়ে কী যে আনন্দ লেগেছিলো। পৃথিবীর সব দেশে সব জায়গায় মমতা আর ভালোবাসার রঙ মনে হয় একি হয়।
লিখা ভালো লেগেছে।